অর্থ পাচারে লাগাম টানলেও আ’লীগ ফ্যাসিস্টদের হুন্ডি নেটওয়ার্ক সক্রিয়

বিপুল অংকের টাকা যাচ্ছে ভারতে


১ মে ২০২৫ ১৭:৫১

॥ উসমান ফারুক॥
কাতার থেকে গ্যাস কেনার পর বকেয়া রাখে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকা ফ্যাসিস্ট সরকার। মুসলিম দেশ হওয়ায় বিবেচনায় নিয়ে কাতারও অপেক্ষা করতে থাকে বকেয়া অর্থ ফেরত পেতে। নানা সময়ে বকেয়া রাখায় অর্থের পরিমাণ ৩২২ মিলিয়ন ডলার বা ৩ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকায় উঠে। সেই বকেয়া এবার বাংলাদেশ শোধ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাতার সফর শুরু হওয়ার দিনে। এতে কাতার সরকারও বাংলাদেশকে উচ্চস্তরের মেহমানদারি করে। শুধু কাতারই নয়, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের বকেয়া রেখে যাওয়া ফ্যাসিস্ট সরকারের তিন দশমিক ২ বিলিয়ন বা ৩৯ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে বর্তমান সরকার। এভাবে আরো অনেক দেশের বকেয়া পরিশোধ করে চলেছে সরকার। অন্যদিকে আমদানির অর্থ পুরোটা দেশে আসা ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়ায় নিয়মিত বৈদেশিক ব্যয় মেটানোর পরও মাত্র আট মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ সমৃদ্ধ হতে শুরু করেছে। অন্তত পাচার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হওয়ায় রিজার্ভ চুরি বন্ধ হয়ে কিছুটা হলেও জমা হচ্ছে। সেই জমার ওপর ভর করেই বাংলাদেশ পুরনো দায় মেটানো শুরু করেছে। এটি সম্ভব হয়েছে রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায়। আর সেটি সম্ভব হয়েছে অর্থ পাচারে লাগাম টানতে পারায়। এভাবে বিশ্বের প্রায় সবগুলো দেশে পাচার বন্ধ হওয়ায় ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে কষ্টার্জিত রিজার্ভ। সবগুলো দেশে লাগাম টানতে পারলেও ভারতের হুন্ডি নেটওয়ার্ক চালাচ্ছে আশ্রয় নেয়া ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কয়েক লাখ নেতাকর্মী দুর্নীতির টাকায় দেশটিতে বিলাসবহুল হোটেলে মিটিং ও বসবাসে কোটি কোটি ডলার নিয়ে যাচ্ছে হুন্ডিতে। ভারতে যাওয়া ডলার আটকাতে পারলে রিজার্ভের অঙ্কটা আরো বাড়ত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়মী লীগের পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর প্রক্রিয়ায় গতি এলে ও ভারতে পাচার করা বন্ধ করতে পারলে রিজার্ভ আরো বাড়বে। পাচারের সব ধরনের কাগুজে ডকুমেন্ট বন্দর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেই রয়েছে। অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত রাঘব-বোয়ালদের দেশের শত্রু হিসেবে ঘোষণা করতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গঠন করতে পারে সরকার। অর্থ উদ্ধার ও পাচারের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করা প্রয়োজন। বিচারের মাধ্যমে অর্থ পাচারকারীদের দেশ-বিদেশে থাকা সকল সম্পদ রাষ্ট্রের অনূকূলে বাজেয়াপ্ত করতে হবে। জনগণের সম্পদ তারা পাচার করেছিলেন। পাচারের কারণে মূল্যস্ফীতির মতো চাপ সাধারণ মানুষকেই পোহাতে হয়েছে। অতি দামে কম মূল্যর জিনিসপত্র কিনতে হয়। তাই অর্থ উদ্ধারের পর জনকল্যাণে ব্যয় করাটা সরকারের উচিত হবে।
যেভাবে ক্ষয় হয় রিজার্ভ
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের এপ্রিল শেষে রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার। এ বছরের এপ্রিল শেষে তা হয় ২৬ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। এক বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ বেড়েছে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক সব ধরনের দায় দেনা মেটানোর পর এ পরিমাণ অর্থ রিজার্ভে যোগ হয়।
এর বাইরে শুধু জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে বকেয়া পরিশোধ না করতে হলে রিজার্ভে আরো সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার যোগ হতো। তখন রিজার্ভের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেত।
২০২১ সালে করোনা মহামারির সময়ে বাংলাদেশের রিজার্ভ সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলারে। প্রবাসীরা দেশে আসার আগে জমানো সব পুঁজি বাংলাদেশে পাঠায়। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থে রিজার্ভ ফুলেফেঁপে ওঠে। একটি দেশের রিজার্ভ তার অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে ফুটিয়ে তোলে। রিজার্ভ বেশি থাকা মানেই টাকা শক্তিশালী হওয়া, বৈদেশিক কেনাকাটায় দরকষাকষি করে তুলনামূলক কম দামে পণ্য আমদানি করার ক্ষমতা বেড়ে যাওয়া।
কিন্তু রিজার্ভে শ্যেন দৃষ্টি পড়ে আওয়ামী লীগের। ভারতের পরামর্শে রিজার্ভ খরচ করতে শুরু করে। কারণ দেশটি বুঝেছিল, বাংলাদেশের রিজার্ভ বেশি থাকা মানেই অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশে পরিণত হওয়া। ভারতের রুপির সঙ্গে টাকা শক্তিশালী বা সমকক্ষ হয়ে যাওয়া। আওয়ামী লীগ সরকারও সেই পরামর্শ মেনে রিজার্ভ খরচ করতে শুরু করে।
রিজার্ভ থেকে ঋণ দেওয়া ও বিমানে বিলাসী ক্রয় শুরু করে। শুধু ফ্যাসিস্ট হাসিনা নিজের বোন রেহানা ও ভাগ্নি টিউলিপের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা-লন্ডন রুটের জন্য ড্রিমলাইনার কেনেন। সারা বিশ্বে এ মানের উড়োজাহাজ কেনা বাদ দিয়েছে অনেক আগেই। লম্বা রুটে এসব উড়োজাহাজ চালানো বিলাসিতা ও ব্যয়বহুল। যাত্রী ধারণক্ষমতা এতটাই কম যে, পুরো যাত্রী তুললে তাদের লাগেজ বহন করার ক্ষমতা হারায়। তখন ড্রিম লাইনার শুধু যাত্রী নিয়ে যায়, তাদের লাগেজ অন্য উড়োজাহাজে পাঠাতে হয়। এজন্য এ বিমানে যাত্রীরা সাধারণত ভ্রমণ করতে চান না।
সারা বিশ্বের এয়ারলাইন্সগুলো লম্বা রুটে বোয়িং বা ৭৭৭ মানের উড়োজাহাজ ব্যবহার করে। এ উড়োজাহাজ যাত্রী ও কার্গো তথা মালামাল একসঙ্গে বহন করতে পারে। কিন্তু হাসিনা সেই পথে যাননি। রিজার্ভের অর্থ ধার দিয়ে পায়রা বন্দর নির্মাণকাজ করেছে। যে বন্দর এখন বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বন্দর সচল রাখতে প্রতি বছর ড্রেজিং করতে হবে। বিশাল এ ব্যয় বন্দর পরিচালনা করে আয় করা সম্ভব নয়।
রিজার্ভ থেকে হাসিনার সরকার নিজেদের পছন্দের ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয় সাত বিলিয়ন ডলারের মতো। সেই অর্থ এখন খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে সালমান এফ রহমান একাই নিয়েছে দুই বিলিয়ন ডলার। এভাবে রিজার্ভের অর্থ ভাগবাঁটোয়ারা করে নেয় ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীরা।
রিজার্ভ কমার পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয় অর্থ পাচারকে
করোনা মহামারি শেষের দিকে ব্যবসায়ী ও সরকার মিলে অর্থ পাচার শুরু করে বেপরোয়াভাবে। আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং করে পরিমাণ বাড়াতে শুরু করে। কোনো কোনো মাসে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি বাড়ানো হয়। কম দামের পণ্য বেশি দামে কেনার ভাউচার দেখিয়ে বিদেশে অর্থ পাচার করা হয়। বিশেষ করে অপ্রচলিত ও মূলধনী পণ্যে এসব কারসাজি করা হয়। তখনই অতিরিক্ত আমদানি নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও কোনো সদুত্তর আসেনি কোনো মহল থেকে।
অর্থ পাচার করতে ডলারের মান টাকার বিপরীতে একই অবস্থানে ধরে রাখা হয়। এক বছরের মধ্যেই রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যায় লাগামহীন আমদানির মাধ্যমে অর্থ পাচার করায়। আওয়ামী লীগ সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা থাকাকালীন ম. তামিম নিজেই রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিদেশি তেল কোম্পানিগুলো কয়েক বছরে অতিরিক্ত ৪৫ বিলিয়ন ডলার নিয়ে গেছে বাংলাদেশ থেকে।
তার স্বীকারোক্তির পেছনের গল্পটি হলো, গুটিকয়েক ব্যবসায়ী ও আমলা মিলে কমিশনে বাকিতে বেশি দামে তেল কিনেছে। বাকিতে তেল কিনলে দাম বেশি দেখানো যায় ও কমিশনের অঙ্কও বেশি। তাই আমলারা সবসময়ই স্পট অর্থাৎ নগদের বদলে বাকিতে তেল কিনেছে। এভাবে শুধু কমিশন বাণিজ্যেই বাংলাদেশ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার বা এক লাখ ৮৩ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে কয়েক বছরে। শুধু আওয়ামী লীগের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান একাই পাচার করেছেন লাখ কোটি টাকার বেশি। এভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের শেষ সময়ে বাংলাদেশ থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা পাচার হওয়ায় রিজার্ভ তলানিতে নেমে যায়। যার ফলে টাকার মান কমে গিয়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়।
যেভাবে তিলে তিলে বাড়ছে রিজার্ভ
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে পতন হয় শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকা সরকারের। নিজের রক্তের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যায় ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা। এরপর সরকারের দায়িত্বে আসে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
আর্থিক খাতের সংস্কার ও মন্দার কবলে পড়ে থাকা অর্থনীতি মেরামতের কাজটি শুরু হয়। অর্থ পাচারকারীদের তালিকা করা হয়, খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের বলা হয় অর্থ ফেরত দিতে। নতুন করে বড় অঙ্কের ঋণ দেয়া বন্ধ করে পুরনো ঋণ ফেরতের নিদের্শনা দেয়া হয় ব্যবসায়ীদের। এতেই বাজার থেকে বড় অঙ্কের টাকা চলে যায় ব্যাংকে।
অন্যদিকে প্রবাসী আয় পাঠাতে হুন্ডি বন্ধ করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা করে প্রবাসীরাও ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার পাঠানো কমিয়ে দিয়েছিলেন। নতুন সরকার ক্ষমতায় এলে প্রবাসীরাও আস্থা পেতে শুরু করেন। হুন্ডির বদলে এবার দেশের উন্নয়নে প্রবাসী আয় ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানো শুরু করেন।
এতে গত কয়েক মাস ধরে আড়াই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসছে দেশে। এপ্রিলের ২৭ দিনে দুই দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার দেশে আসে। সাধারণত গড়ে প্রতি মাসে ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে দেড় বিলিয়ন থেকে ১৭০০ বা ১৮০০ কোটি ডলার দেশে আসতো। বর্তমানে তা বাড়তে বাড়তে তিন বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
একদিকে অর্থ পচার বন্ধ ও অন্যদিকে হুন্ডিতে টাকা পাচার অনেকটাই কমে গেছে। রিজার্ভের অর্থ অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না। নীতিমালা কড়াকড়ি করায়, আমদানির মাধ্যমে অর্থ পাচার করতে ওভার ইনভয়েসিং প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হতে শুরু করেছে। অর্থ পাচার বন্ধ, অপচয় কমে যাওয়া, অহেতুক সরকারি প্রকল্প না নেয়ায় প্রকল্পের আমদানি কমে যাওয়া ও প্রবাসী আয় দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ছে রিজার্ভ। মোটাদাগে বলা যায়, রিজার্ভের টাঙ্কির ফুটো বন্ধ করা গেছে। লুটপাট বন্ধ হওয়ায় তিলে তিলে জমা হচ্ছে রিজার্ভ। এখন শুধু ভারতে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দেশ থেকে টাকা পচার করছে হুন্ডিতে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অঙ্কটা কমে গেলে রিজার্ভ আরো বাড়বে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্রিয়তার দাবি বিশেষজ্ঞের
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনামলে দেশ থেকে গড়ে প্রতিবছর ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হওয়ার ধারণা দেওয়া হয়েছে শ্বেতপত্রে। এ প্রতিবেদন ১ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হয়।
দেশের অর্থনীতির হালচাল জানতে গঠিত শ্বেতপত্র কমিটির পর্যবেক্ষণ হলো, আওয়ামী লীগ সরকারের একটানা তিন মেয়াদে ২৪০ বিলিয়ন ডলার বা ২৪ হাজার কোটি ডলার বিভিন্ন দেশে পাচার হয়েছে। এ অর্থ বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৮ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
আর্থিক খাতের গোয়েন্দা হিসেবে পরিচিত বিএফআইইউ এ খাতের বিভিন্ন অনিয়ম রোধের পাশাপাশি অর্থ পাচার ঠেকানো নিয়ে কাজ করে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা ক্ষমতায় থাকাকালে কোনো সংস্থাকেই স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। পছন্দ অনুযায়ী ব্যক্তিকে প্রধান করায় তারা দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মতো বিষয়ে সরকারের সহযোগী হয়ে কাজ করছে। এখন তো কোনো রাজনৈতিক দলের সরকার ক্ষমতায় নেই। বর্তমান সরকারও অর্থ পাচার বন্ধ করতে চায় আন্তরিকভাবেই।
এ সময়ে সীমান্ত দিয়ে অর্থ পাচার বন্ধ করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউ’র কর্মকর্তাদের আরো সক্রিয় হওয়ার দাবি করেছেন দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্ট্যারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, অর্থ পাচারের জন্য সরাসরি নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায় বেশি। হুন্ডি ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে এখন ছোট অঙ্কের অর্থ বেশি পাচারের সুযোগ রয়েছে। এসব বন্ধ করতে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করলে কোনো বাধা আসার কথা নয়।
বিশ্লেষক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের মতে, সীমান্তে আরো কড়াকড়ি করার সময় হয়েছে। ভ্রমণ কোটায় ভারতে যাওয়ার সীমান্তগুলো দিয়ে নগদ ডলার বহন করার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। এসব রুট দিয়েই হুন্ডির মাধ্যমে ডলার নিয়ে যাচ্ছে একশ্রেণির ব্যক্তিরা। পাশাপাশি বিকাশসহ অন্যান্য মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা নিতে পারছেন আওয়ামী লীগের পলাতক কর্মীরা। অর্থ পাচারের এসব রুট বন্ধ করতে পারলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ডলার পাচার করতে পারবে না। অর্থপাচারকারীদের তালিকা প্রকাশ করে দূতাবাসের মাধ্যমে সকল দেশে পাঠানোর মতো যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকারদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে পারলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এক ধাপ এগিয়ে যাবে।