ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের চাবি কার হাতে?
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:২৪
॥ সরদার আবদুর রহমান ॥
বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপশাসনের কালসমূহ বিভিন্ন তকমায় চিহ্নিত হয়েছে। এগুলো বহুল প্রচলিতও হয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘একদলীয় শাসনব্যবস্থা’, ‘স্বৈরশাসন’, ‘ফ্যাসিবাদী শাসন’ ইত্যাদি। এর মধ্যে সর্বশেষ পলাতক আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনকাল ‘ফ্যাসিবাদী’ শাসন হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।
প্রায় ৯ মাস হতে চললো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন হওয়ার বয়স। এখন পরবর্তী অধ্যায়ে দুই প্রকার ফ্যাসিবাদের মোকাবিলা করতে হবে জাতিকে। এর একটি হলো, বিদায়কৃত ফ্যাসিবাদের পুনঃপ্রত্যাবর্তনের ফাঁকফোকর বন্ধ করা এবং দ্বিতীয়টি হলো, পরবর্তী ক্ষমতা গ্রহণকারীদের সম্ভাব্য ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করার আশঙ্কা দূর করা। এখন প্রশ্ন উঠছেÑ এ ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের চাবি কার হাতে?
ফ্যাসিবাদ কী?
রাষ্ট্র ও রাজনীতি বিজ্ঞানীরা ফ্যাসিবাদ সম্পর্কে বলছেন, শব্দটি ইতালীয় শব্দ ‘ঋধংপরংসড়’ থেকে উদ্ভূত, যা ‘ঋধংপরড়’ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ ‘লাঠির বান্ডিল’, যা প্রাচীন রোমান প্রতীক ‘ঋধংপবং’ থেকে উদ্ভূত। এ প্রতীকটি একাধিক লাঠির বান্ডিলের সাথে একটি কুড়ালকে ঘিরে রাখা হতো, যা শক্তি এবং ঐক্যের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ফ্যাসিবাদের মূল আদর্শ ছিল একদলীয় শাসনব্যবস্থা, যেখানে কর্তৃত্ববাদ ছিল প্রধান বৈশিষ্ট্য। ফ্যাসিবাদ কেবল একটি রাজনৈতিক আদর্শ নয়; এটি মনে করিয়ে দেয় যে কর্তৃত্ববাদ এবং স্বাধীনতা হরণের মধ্যে কী ক্ষতি লুকিয়ে থাকে। শক্তি এবং ঐক্যের ভুল ব্যাখ্যা মানবজাতির জন্য ধ্বংস ডেকে আনে।
হাসিনার ফ্যাসিবাদ
দুনিয়ার দেশে দেশে যে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা এযাবত প্রত্যক্ষ করা গেছে, তাতে এমনটি মনে করার অবকাশ আছে যে, বাংলাদেশে হাসিনার ফ্যাসিবাদ সবকিছুকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিটি অঙ্গ, বিভাগ ও শাখা-প্রশাখাকে কব্জা এবং কুক্ষিগত করে, প্রভাবিত ও প্রতারিত করে, রাজনীতিকরণ ও দলীয়করণ করে এবং ভীতসন্ত্রস্ত করে ব্যক্তি ও দলের পক্ষে ব্যবহার করার এক অভতূপূর্ব নজির স্থাপন করেছিল। কোনটি বাদ ছিল? জাতীয় সংসদ, নির্বাচন কমিশন, সিভিল প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশ, প্রতিরক্ষা, সীমান্তরক্ষী, গোয়েন্দা সংস্থা, ব্যাংকিং সেক্টর, ফাইনান্স সেক্টর, শিক্ষা-উচ্চশিক্ষা, সংস্কৃতি, গণমাধ্যম, আবাসনÑ অর্থাৎ রাষ্ট্র্র ও সরকারের প্রতিটি অংশকে দলের আজ্ঞাবহ করতে সব কৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে।
যে কোনো ‘আদর্শ’ সম্পর্কে কথা বললে একটি ইতিবাচক চিত্র ফুটে ওঠার কথা। কিন্তু এ ফ্যাসিবাদও ফ্যাসিস্টের শক্তিমত্তা প্রয়োগ করে ক্ষমতা ধরে রাখার চরিত্র থেকে লাফ দিয়ে ‘নির্যাতক’ রূপে আবির্ভূত হয় শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের হাত ধরে। অতঃপর তারা দুর্নীতি ও লুটপাটের মহানায়কে পরিণত হয়। রাষ্ট্রের এমন কোনো বিভাগ ছিল না, যেখানে এ দুর্নীতি ও লুটপাটের গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে রাখা হয়নি। নির্যাতনের প্রতীক হিসেবে ‘আয়নাঘর’, লুটপাটের প্রতীক হিসেবে ‘টাকা পাচার’, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসের প্রতীক হিসেবে ‘রাতের ভোট’ ও ‘ডামি প্রার্থী এবং অবিচারের প্রতীক হিসেবে ‘যুদ্ধাপরাধ’ নামক অলীক অভিযোগের মামলা ও তার রায় বাংলাদেশের ইতিহাসকে কলঙ্কের মহাসাগরে নিমজ্জিত করে। এ ফ্যাসিবাদের সবচেয়ে বড় অভিভাবক হিসেবে মাথার ওপরে ছাদ হিসেবে থাকে প্রতিবেশী বৃহৎ দেশটি। তাদের প্রদত্ত প্রহরায় ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ ও নির্বিঘœ করতে একদিকে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নিজস্বতা ধ্বংস করা হয়েছে। প্রতিবেশীর গোয়েন্দা প্রহরাকে নির্ভরতার প্রতীকে পরিণত করা হয়। দেশটির জন্য নানা প্রকার সুযোগ-সুবিধা অবাধ করে দেয়া হয়। নিজেদের প্রতিরক্ষা, শিল্প, যোগাযোগ, আইনপ্রয়োগ, গণমাধ্যম ইত্যাদি বিষয়গুলো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাটির নিয়ন্ত্রণে ন্যস্ত করা হয়। আর এ নিয়ে শীর্ষ ব্যক্তি গর্বভরে (অথবা নির্লজ্জের মতো) বলতে পারেন, ‘তাদের (ভারতকে) যা দিয়েছি, তা তারা কোনোদিন ভুলতে পারবে না।’
ইনক্লুসিভের দোহাই
এই সেই ফ্যাসিবাদী শাসনÑ যাদের মনস্তত্ত্বই গড়ে উঠেছে ‘ধরো মারো কাটো, আর শাসন করো, শোষণ করো আর লুট করোÑ এ চিন্তার মধ্য দিয়ে। ভাবতে পারা যায়, শুধুমাত্র ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য তিন সন্তানের জননীকে ধর্ষণ করা হয়েছে! গত দেড় দশকে এরকম হাজার হাজার ঘটনা রয়েছে। এখন এই দলটিকে যুক্ত করে আগামী নির্বাচনকে ‘ইনক্লুসিভ’ তথা অন্তর্ভুক্তিমূলক করার দোহাই তোলা হচ্ছে। এজন্য দেশের অভ্যন্তরের এবং বিদেশের কোনো কোনো শক্তি এজন্য তদবির করছে বলে লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু এ মহলটি গত দেড় দশকে কোথায় ছিল? ২০১৪ সালের নির্বাচন করে ফেলা হলো একেবারে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তোমরা চুপ করে থাকলে। ২০১৮ সালের নির্বাচন হলো ‘দিনের ভোট রাতে।’ তোমরা টু-শব্দটি করলে না। সর্বশেষ ২০২৪-এর ‘ডামি’ নির্বাচনের কথাই যদি ধরা হয়, তাহলে প্রশ্ন করাই যায়Ñ তখন হে ইনক্লুসিভ-এর এজেন্টরা তোমরা কোথায় ছিলে?
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের দোহাই দিয়ে এ ধরনের আবদার তোলা হচ্ছে। এমনকি সেটি ‘চাপ’ প্রয়োগের আকারেও প্রকাশ পাচ্ছে। তো তারা কি একবারও এসে আওয়ামী লীগকে বলেছে যে, তুমি এ ইলেকশনটি কেন বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যদের বাদ দিয়ে করছো? ২০২৪-এও ‘ডামি’ নির্বাচনকে মেনে নিয়ে তাদেরকে আরামে ক্ষমতায় থাকতে দিয়েছো। এই নষ্ট রাজনীতির বাহকরা যখন দেখেছে যে, তারা যত অপকর্মই করে যাক- তাদের ঠেকানোর কেউ নেই, তখন তারা শুধু ক্ষমতায়ই থাকেনি, সেজন্য নির্বিচার গণহত্যা চালানোর ঔদ্ধত্যও দেখিয়েছে। এখন তারা ডেমোক্রেসির জন্য ‘ইনক্লুসিভ’ পলিটিকসের সবক দেয়।
জার্মানির দৃষ্টান্ত
এ পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা জার্মানির দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন। তারা প্রশ্ন করছেন, ইউরোপে গিয়ে কি আপনি বলতে পারবেন জার্মানিতে নাৎসি পার্টিকে রাজনীতি ও নির্বাচনে সুযোগ দেয়ার কথা? জার্মানিতে শুধু নাৎসির পার্টি বলা তো পরের কথা, ‘নাৎসি’ বলাটাও অপরাধ। নাৎসিরা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। সেই ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে যারা কায়েম করেছিল, তাদের পক্ষে যারা উপদেশকের ভূমিকা নিয়েছেন, তাদের বদমতলব সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলছেন রাজনীতির ভাষ্যকাররা।
এযাবত ঐক্যবদ্ধভাবে যে দাবি উঠছে তাতে বলা হচ্ছে, হাসিনা পালিয়ে গেছে ঠিকই, কিন্তু হাসিনার অর্থ ও লাঠিয়ালরা পালায়নি। সবাইকে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এখন পর্যন্ত বিচার দৃশ্যমান নয়। হাসিনার পরিবারের যারাই দুঃশাসন, দুর্নীতির সাথে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
জাতি দ্রুত দৃশ্যমান বিচার দেখতে চায়। কেউ বলছেন, নির্বাহী আদেশে এবং কেউ বলছেন, বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ এদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। যেকোনো কায়দা-কৌশলে এরা যদি রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়ে আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করে, তাহলে জনগণের দুর্ভোগ আছে। জনগণের ক্ষতি করার জন্য এরা ওত পেতে আছে। এদের যে ভুল হয়েছে একবারও এসে সেকথা জনগণকে বলেনি, বরং হুংকার দিচ্ছে, ঝটিকা মিছিল করে দেখিয়ে দেবে। পতনের পরও হুঙ্কার, হুমকি, দেখে নেয়া, চৌদ্দগোষ্ঠী ধ্বংস করে ফেলার আস্ফালন দেখাচ্ছে।
মূলে পরিবর্তনের দাবি
এত গেল বিতাড়িত ও পলাতক ফ্যাসিবাদের কথা। এখন এর সঙ্গে দাবি উঠছে ‘মূলে পরিবর্তনের’। বলা হচ্ছে, সদ্যসমাপ্ত গণআন্দোলনের লক্ষ্য ছিল কেবল একটি শাসকদলের পরিবর্তন নয়, বরং গোড়ায় পরিবর্তন এনে একটি দায়বদ্ধ ও জনবান্ধব শাসনব্যবস্থা কায়েম করা। দল পাল্টানোর রাজনীতি নয়Ñ জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি। এ জাতি যে অভ্যুত্থান দেখেছে, তাতে ছিল একটি রাজনৈতিক দর্শন পরিবর্তনের প্রতিফলন। এমন একটি সংবিধান হতে হবে, যেখানে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতা নয়, প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য থাকবে। যেখানে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে, বিচার বিভাগ হবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, আর সংসদ হবে কার্যকর। এমন একটি সনদ রচিত হবে, যেটি হবে ‘জুলাই সনদ’। এই সনদ জাতির সামনে স্পষ্টভাবে উপস্থাপন হতে হবে। এ সনদে থাকবে একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার, যা নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি রচনা করবে। দাবি করা হচ্ছেÑ এটি শুধু একটি দল বা জোটের বিষয় নয়, এটি একটি জাতীয় প্রতিশ্রুতি। রাজনৈতিক সংস্কৃতির যে দুর্বলতাÑ স্বৈরতন্ত্র, দলীয় দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারÑ তা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে এ সনদের বাস্তবায়ন জরুরি। আরো বলা হচ্ছেÑ একটিকে বিদায় করে আরেকটি স্বৈরাচার কিংবা ফ্যাসিবাদকে এদেশে জায়গা দেয়া যাবে না। ইতিহাস বার বার শিখিয়েছে, যখন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল থাকে, তখনই স্বৈরাচার মাথা তোলে। আর পেছনে ফিরে যাবার অবকাশ নেই। তাই পথ একটাইÑ একটি স্বাধীন, শক্তিশালী এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়া। আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে, যাতে কোনো ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।
বিগত নির্বাচনগুলোর দিকে নজর
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া-পদ্ধতিকে সুষ্ঠু ও নির্বিঘœ করতে হলে এ সঙ্গে বিগত অর্থাৎ শেষ তিনটি নির্বাচনের অনিয়ম, অব্যবস্থা ও দুর্নীতিগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। এর মধ্যে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাগুলো হতে পারে এরকমÑ বিতর্কিত এবং অগ্রহণযোগ্য ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত আমলনামার তালাশ করা। এ পর্যন্ত সম্ভবত মাত্র ২২ জন জেলা প্রশাসককে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ওএসডি করে দায়িত্ব সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকিদের বিষয়ে তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবা জরুরি। একই সঙ্গে বিনাভোটের, মধ্যরাতের বা গায়ের জোরের এসব নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির অনেক নেতা, ব্যবসায়ীসহ সুবিধাভোগী-ক্ষমতার অপব্যবহারকারীরা অনেকেই বিভিন্ন সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভিড়তে শুরু করেছে। কেউ কেউ নতুন দলও গড়ছে। বিগত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনে অংশ নেয়া লোকেরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদরা যেন আগামী কয়েকটি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। এ বিষয়ে সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে বা কোর্টের আদেশে দ্রুততার সঙ্গে এ পদক্ষেপ নিতে পারে। যেভাবে সম্পদ লুণ্ঠনকারী, গণহত্যার সহায়তাকারীরা পুনর্বাসিত এবং শক্তিশালী হচ্ছে, তা একসময় বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শেষ কথা
এ কথা এখনো পুরনো হয়ে যায়নি যে, গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। ফলে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরশাসকের অবসান ঘটে। হাজারো শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ফের বড় ফ্যাসিস্ট হয়ে ফিরে আসার জানান দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এমনকি এখন তারা দেশের মধ্যে সংগঠিত হতে শুরু করেছে। তাদের মাথার ওপর প্রতিবেশী বড় দেশের ছায়া রয়েছে। সেই ছায়া যদি কায়া হয়ে স্বরূপে আবির্ভূত হয়, তাহলে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের সকল ত্যাগ ও বিসর্জন মূল্যহীন হয়ে যাবে। বাংলাদেশের এই চমকপ্রদ ইতিহাসকে আর কলঙ্কিত হতে দেয়া যাবে না। বিদায়কৃত ফ্যাসিবাদ যেমন আর ফিরে আসবে না, তেমনি নতুন কোনো ফ্যাসিবাদও তৈরি হওয়ার সুযোগ পাবে না- এ অঙ্গীকার ধরে রাখতে হবে দেশপ্রেমিক প্রতিটি দল ও ব্যক্তির। ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের চাবি এদের হাতেই রয়েছে। একাত্তর, পঁচাত্তর, নব্বই ও চব্বিশের সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসা নতুন বাংলাদেশের সে পথে যাত্রা শুভ হোক।