সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ


৬ মার্চ ২০২৫ ১২:১২

তুরস্ক ছাড়া ইউরোপের নিরাপত্তা অসম্ভব: এরদোগান
তুরস্ক ছাড়া ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান। তিনি বলেছেন, তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং সদস্যপদ পাওয়া তার কৌশলগত অগ্রাধিকার। গত সোমবার (৩ মার্চ) রাজধানী আঙ্কারায় বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এরদোগান বলেন, ইউরোপের উচিত তুরস্কের গুরুত্ব স্বীকার করা এবং তার সদস্যপদ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়া। তিনি বলেন, তুরস্ককে উপেক্ষা করে ইউরোপের ‘গ্লোবাল অ্যাক্টর’ হিসেবে এগিয়ে যাওয়া ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। ইউরোপে ইসলামফোবিয়ার বিস্তার নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এরদোগান বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলোয় লাখ লাখ মুসলিম বাস করে, অথচ সেখানে ইসলামোফোবিয়া এবং সাংস্কৃতিক বর্ণবাদ বিষের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। পবিত্র কুরআনের ওপর আক্রমণকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’
এরদোগান আরও বলেন, তুরস্ক পূর্ব ভূমধ্যসাগর এবং এজিয়ান অঞ্চলে স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে চায়। গ্রিসের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখার ইচ্ছাও ব্যক্ত করেন তিনি। পাশাপাশি বলকান অঞ্চলের স্থিতিশীলতায় তুরস্কের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন। তুরস্ক তার ভূরাজনৈতিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এরদোগানের মন্তব্য ইইউ’র সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন আলোচনা উসকে দিতে পারে। এখন দেখার বিষয়, ইউরোপ তুরস্কের এ আহ্বানে কীভাবে সাড়া দেয়। আনাদলু এজেন্সি।

ভারতে ৪২ হাজার মসজিদ দখলের পরিকল্পনা মোদির!
বরাবরই ইসলামবিদ্বেষী ভারতের মোদি সরকার। মোদির সময় মুসলমানদের ওপর ভারতে যে নির্যাতন চলছে তা অমানবিকও বটে। একের পর এক মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে একের পর এক আঘাত দিয়েছে মোদি। জয় শ্রীরাম না বলায় পিটিয়ে মুসলিম হত্যার ঘটনাও ঘটেছে ভারতে। এবার সেদেশেরই এক নাগরিক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন মোদি সরকারের মুসলিম নির্যাতন নিয়ে। যে ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে এখন ভাইরাল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এ নাগরিককে বলতে শোনা যায়, বিজেপি সরকার ভারতে ৪২ হাজার মসজিদ দখলে নিবে। শুধু তাই নয়, মুসলমানরা যাতে তাদের নামাজ ঠিকভাবে আদায় না করতে পারে সেজন্য ভারতের সব মসজিদই দখলে নিবে মোদি। এ ভারতীয়কে কবরস্থানের জায়গা দখলের অভিযোগ করতেও দেখা যায় এসময়। মুসলমানদের মৃত্যুর পর যাতে দাফন না করতে পারে, সেজন্য কবরস্থানের জায়গাও দখল করবে মোদি, এমন বিস্ফোরক মন্তব্যই করেছেন এ ভারতীয় নাগরিক।
ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তা নিয়ে শুরু হয় নেটিজেনদের আলোচনা সমালোচনা। মনজুর আহমেদ নামের একজন ভিডিও‘র কমেন্ট বক্সে লিখেছেন, বিজেপি দলটা হিন্দত্ববাদী! তারা মুসলিম দেখতে চায় না! আবার বলে গণতন্ত্রের দেশ ভারত। ফারজানা বীথি নামের একজন লিখেছেন ধ্বংস হয়ে যাবে মোদি সেদিন আর বেশি দূর নয়, বাংলাদেশকে নিয়ে প্রোপাগান্ডা চালায় আর এদিকে নিজ দেশেই সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নির্যাতন করে। ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভেঙে রামমন্দির স্থাপনের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনাও ঘটিয়েছে মোদি। সে সময় এই মসজিদকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণও হারায় বেশ কিছু ধর্মপ্রাণ মুসলমান। এরপরও থেমে নেই কট্টরপন্থী মোদি সরকার। মুসলমানদের ওপর নির্যাতন যেন তার থামানোর কোনো ইচ্ছেই নেই। ডেইলি সিয়াসত।

সাধারণ ক্ষমায় ভিন্নমতাবলম্বীদের সৌদি আরবে ফেরানোর ঘোষণা
সৌদি আরব সরকার দেশের বাইরে অবস্থানরত ভিন্নমতাবলম্বীদের ফেরার আহ্বান জানিয়েছে এবং আশ্বাস দিয়েছে যে, যদি তারা গুরুতর কোনো অপরাধে জড়িত না থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। দেশটির রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রধান আব্দুল আজিজ আল-হোওয়ারিনি এ ঘোষণা দেন। গত রোববার (৩ মার্চ) এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে আল-হোওয়ারিনি বলেন, সৌদি আরব শাস্তির পরিবর্তে পুনর্বাসনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে এবং যারা বিদেশি প্রভাবের কারণে বিভ্রান্ত হয়েছে, তাদের স্বদেশে ফিরে আসার জন্য উন্মুক্ত আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশনায় এ সাধারণ ক্ষমার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা নিরাপদে দেশে ফিরতে পারে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যারা শুধুমাত্র মতাদর্শগত বিভ্রান্তির শিকার হয়েছেন এবং কোনো গুরুতর অপরাধে জড়িত নন, তারা নির্দ্বিধায় দেশে ফিরতে পারেন। তাদের ফিরে আসার বিষয়টি গোপন রাখা হবে এবং প্রকাশ করা হবে না। ফেরার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি জানান, আগ্রহীরা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার নির্ধারিত নম্বর (৯৯০)-তে যোগাযোগ করে তাদের পরিচয় ও অবস্থান জানাতে পারেন। এছাড়া তারা চাইলে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। সৌদি আরবের বিভিন্ন দূতাবাসও এ কাজে সহায়তা করবে বলে জানানো হয়।
সাক্ষাৎকারে আল-হোওয়ারিনি বলেন, সৌদি সমাজ উগ্রবাদ ও সন্ত্রাস দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে দেশটির আটক বন্দিদের প্রায় ২০ শতাংশই পরিবারের অনুরোধে বা তাদের সহযোগিতায় গ্রেফতার হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সৌদি সরকার নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা তাদের শোষণ রোধে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এজন্য পরিবারের সদস্যদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সৌদি আরবের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টা, পুনর্বাসন নীতির গুরুত্ব এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতি আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়। দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় উগ্রবাদ দমনে যে অগ্রগতি অর্জন করেছেন, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সৌদি গেজেট।

আরাকান আর্মির দখলে রাখাইনের ১৪ শহর
মিয়ানমারের রাখাইনে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে জান্তা সরকার। আর মাত্র তিনটি জায়গা তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গত সোমবার (৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতি নিউজ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যের রাজধানী শহর সিত্তে, বন্দরনগনরী কিয়াউকফিউ এবং বঙ্গপসাগরীয় দ্বীপাঞ্চল মানাউং জান্তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাকি ১৪টি শহর দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, প্রায় এক বছরের বিরতির পর আরাকান আর্মি এখন কিয়াউকফিউয়ের জান্তার নৌঘাঁটিতে হামলা শুরু করেছে। একইসঙ্গে তারা আশপাশের সামরিক ফাঁড়ি এবং একটি পুলিশ ব্যাটালিয়নে আক্রমণ চালাচ্ছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি এ হামলা শুরু হয়েছে। জান্তা ক্ষমতা গ্রহণের আড়াই বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে দেশটির তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী- তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), আরাকান আর্মি (এএ) এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) জোটবদ্ধ হয়। নতুন এই জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ নামে সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’।
বিদ্রোহীদের মদদপুষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠী ‘দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি (ইউডব্লিউএসপি)’ ইতোমধ্যেই কয়েকটি প্রদেশে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা শুরু করে দিয়েছে। থাইল্যান্ডে নির্বাসিত মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নাগরিকদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম বিদ্রোহীদের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়েছে জান্তা সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মায়ানমারের রাজধানীসহ বড় জনপদগুলোয় মূলত সংখ্যাগুরু বামার জনগোষ্ঠীর বাস। তাদের বড় অংশই জান্তা সরকারের সমর্থক। প্রভাবশালী বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এখনো জান্তার পাশে রয়েছেন। অন্যদিকে মূলত প্রান্তিক এলাকার জনজাতি গোষ্ঠীগুলো রয়েছে বিদ্রোহীদের জোটে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বড় শহরগুলোর বাইরে কার্যত পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জান্তা সরকার কতক্ষণ ক্ষমতায় টিকে থাকে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। অন্যদিকে রাখাইনসহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলো যদি সম্পূর্ণভাবে বিদ্রোহীরা দখল করে নেয় তাহলে ভেঙে যেতে পারে মিয়ানমার। স্বাধীন রাখাইন নামে বাংলাদেশের পাশে নতুন একটি দেশ তৈরি হতে পারে। ইরাবতী।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান