ডিম ও সবজির মূল্য হাতের নাগালে ভোজ্যতেলে কৃত্রিম সংকট, বাড়তি চালের বাজার


১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪০

স্টাফ রিপোর্টার : ভোজ্যতেল ও মুদিবাজারে সরকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। বিশেষ করে গত কয়েক মাস ধরে চালের দাম বেড়েই চলেছে। চালের বাজার কেউ মনিটরিং করছে বলেও মনে করছেন না ভোক্তারা। তবে বাজারে সুখবর হচ্ছে সবজির দাম হাতের নাগালে। প্রায় সব সবজি অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে বেচাকেনা হচ্ছে। ডিমের দামও তুলনামূলকভাবে কমেছে। অন্যদিকে বাজারে সয়াবিন তেলে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ী। চালের দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে এবং ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট ঠেকাতে অভিযান চালানোর পরামর্শ ভোক্তাদের।
খবর নিয়ে জানা গেছে, বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট। অধিকাংশ দোকানে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। খোলা তেল পাওয়া গেলেও কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে। আবার কোনো কোনো এলাকায় অন্য পণ্য কেনার শর্তে দেওয়া হচ্ছে বোতলজাত তেল। তবে ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর দাবি, তেলের কোনো সংকট নেই। বরং আগের চেয়ে এখন সরবরাহ বেশি দেওয়া হচ্ছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বাজারে সরবরাহ বেশি। গত ৯ ফেব্রুয়ারি রোববার ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের বৈঠক হয়েছে। ভোজ্যতেলের বাজারে সার্বিক সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে ওই বৈঠকে কমিশনের চেয়ারম্যান (সচিব) ড. মইনুল খান সভাপতিত্ব করেন। সেখানে দেশের শীর্ষ ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ছিলেন। সভায় বাজারে সয়াবিন তেলের ঘাটতি রয়েছে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তখন কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা জানান, তেলের কোনো সংকট নেই। বরং আগের চেয়ে এখন সরবরাহ বেশি দেওয়া হচ্ছে।
বাজারে শীতকালীন সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম অনেক কম। ফুলকপি ২০ টাকা, টমেটো ১০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা কেজি, লালশাক ৩০ টাকা, লাউ ৩০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, পালংশাক ২০ টাকা, কাঁচকলা ৩০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু, পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ কেজি দরে, রসুন ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের দামও বাড়তি। বাজারে তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি প্রকারভেদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, পাঙাশ আকারভেদে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারে অস্থিরতা কোনোভাবেই কমছে না। প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়। মিনিকেট প্রকারভেদে ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা, আতপ চাল খোলা ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা, গরুর গোশত ৭০০ টাকা ও খাসির গোশত ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সাশ্রয়ীমূল্যে বোতলজাত সয়াবিন তেলসহ পাঁচটি পণ্য বিক্রি করেছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রাক থেকে এসব পণ্য ক্রয় করতে পারবেন যেকোনো ভোক্তা। টিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকিমূল্যে টিসিবির পণ্য (ভোজ্যতেল ও ডাল) সাশ্রয়ীমূল্যে বিক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর পাশাপাশি সাধারণ ভোক্তার কাছে রাজধানী ঢাকা এবং চট্টগ্রামে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকিমূল্যে টিসিবির পণ্য তেল, ডাল, চিনি, ছোলা ও খেজুর বিক্রি করা হবে। যেকোনো ভোক্তা লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। একজন সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি করে মসুর ডাল ও ছোলা, এক কেজি চিনি এবং ৫০০ গ্রাম খেজুর কিনতে পারবেন। এর মধ্যে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম রাখা হবে ১০০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকা, মসুর ডাল ও ছোলা ৬০ টাকা এবং খেজুর প্রতি কেজি ১৫৬ টাকা দামে বিক্রি করবে টিসিবি।