২০২৪ সালে চীনে বিবাহ হারে রেকর্ড পতন, জন্মহার নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩৬
দ্য প্রিন্ট : চীনে ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা বাড়াতে অল্পবয়সী যুগলদের বিয়ে ও সন্তান জন্ম দিতে উৎসাহিত করছে প্রশাসন। কর্তৃপক্ষের বহুমুখী প্রচেষ্টা সত্ত্বেও চীনে ২০২৪ সালে বিয়ের হারে রেকর্ড পতন লক্ষ করা গেছে। সিভিল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর চীনে বিয়ে হয়েছিল ৬.১ মিলিয়ন দম্পতির। তার আগের বছরে এ সংখ্যা ছিল ৭.৬৮ মিলিয়ন।
উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাবিদ ইয়ি ফক্সিয়ান এ ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, করোনার সময়েও চীনে বিয়ের হার এতটা কমেনি। ২০২০ সালে অর্থাৎ করোনার সময়ে চীনে বিয়ের হার কমেছিল ১২.২ শতাংশ। ফক্সিয়ান জানিয়েছেন, গত বছর চীনে যেসংখ্যক বিয়ে নথিভুক্ত করা হয়েছে, তা ২০১৩ সালের ১৩.৮৭ মিলিয়নের চেয়ে অর্ধেকেরও কম। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে চীন সরকারের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যে উচ্চাকাক্সক্ষা রয়েছে, তা জনসংখ্যাগত দুর্বলতার কারণে নষ্ট হয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার অধিকারী চীন। দেশের ১.৪ বিলিয়ন জনসংখ্যা দ্রুত বার্ধক্যের দিকে যাচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সমস্যা মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেখানে জন্মহার বৃদ্ধি করার জন্য বিয়ে, প্রেম, সন্তান জন্ম ও পরিবার সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এজন্য চীনের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ভালোবাসা বিষয়ক শিক্ষা দেয়ার আহ্বন জানানো হয়েছে। জনসংখ্যার সমস্যা মেটাতে সঠিক সময়ে বিয়ে এবং সন্তান ধারণ করার জন্য উৎসাহ দিতে স্থানীয় প্রশাসনকে পদক্ষেপ নেয়ার জন্যও নির্দেশ দিয়েছিল জিনপিং সরকার।
চীনে ১৯৮০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এক-সন্তান নীতি এবং দ্রুত নগরায়ণের কারণে জন্মহার কয়েক দশক ধরে কমেছে। আগামী দশকে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন চীনা নাগরিক, যা প্রায় সমগ্র মার্কিন জনসংখ্যার সমতুল্য-অবসর জীবনে প্রবেশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে চীনে বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদের হার। গত বছর ২.৬ মিলিয়ন দম্পতি বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছেন। এ সংখ্যা তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১.১ শতাংশ বেশি।