মক্তব শিক্ষা
কাজী মো. ফরহাদ হোসেন
আদর্শবান খোকাখুকু
গড়ে তোলার তরে-
মা বাবার পর মক্তব শিক্ষক
অনেক কষ্ট করে।
ফজর শেষে বসেন তিনি
শিশুদের নিয়ে,
শুরু করেন তাউজ এবং
তাসমিয়া দিয়ে।
মুখে মুখে কিতাবুল্লাহ
শেখান মধুর সুরে,
শিশু মুখের নরম আওয়াজ
যায় যে বহু দূরে।
সাথে শেখান পাঁচ স্তম্ভ
হাদিস মহানবীর-
বিদ্যালয়ে যেতে ছাড়েন
দেখা পেলে রবির।
বাংলাদেশ
মুহাম্মদ আলম জাহাঙ্গীর
বসুন্ধরায় সবুজ-শ্যামল আমার জন্মভূমি
কারও সাথে নেই তুলনা ধরায় সেরা তুমি।
আমার প্রিয় বাংলাদেশে ছয়টি ঋতু আছে
সব ঋতুতে ফুল-ফসলে ভরে থাকে গাছে।
গ্রীষ্মঋতু নিয়ে আসে ফসল পাকা গরম
নানা স্বাদের ফল খেয়ে ভাই
তৃপ্তি পাই যে চরম।
বর্ষাকালে বৃষ্টি পড়ে খাল-বিল মাঠে ঢেলে
বৃষ্টি জলে হয়রে সতেজ
ঘাস লতা গাছ জেলে।
শরতকালে ফুলে ফুলে যায়
ছেয়ে বাগ-বাগান
কৃষক মাঠে ব্যস্ত তখন নানা সবজি লাগান।
হেমন্তে মৌ ছুটে বেড়ায় সরষে ফুলের ঘ্রাণে
নাতিশীতোষ্ণ এ ঋতু উদাস করে প্রাণে।
শীতহীম বায়ু নিয়ে আসে
সাথে হাজার সবজি
কষ্ট হলেও খাই, পিঠা খাই ডুবিয়ে
হাতের কবজি।
বসন্ততে গাছে আসে নতুন কুঁড়ি মুকুল
এই দেশে বাস করিতে চাই
ইহজগৎ দু-কূল।
বাংলাদেশে বাস করি ভাই
হিন্দু মুসলিম সবাই
সতত চলি মিলেমিশে আমরা
যেনো ক’ভাই॥
জাগো বীর
আবুল খায়ের বুলবুল
দিনের শেষে সন্ধ্যা নামে
রাতের শেষে হয় ভোর
এখনো তোমার কাটেনি
কেন নেশার যত ঘোর।
উত্তরিয়া বায়ু ছুটছে জোরে
ছুটছে জোরে তুফান
ছিঁড়ে নিচ্ছে ঘরের ছাদ আগল
বাজছে জোরে বিষাণ।
প্রতিবাদীর থাকে না ঘুম
নিদ্রালু তারা হয় না
জাতির দিকে খেয়াল রাখলে
জানি ঘুম আসে না।
এখনো যে সময় আছে
জেগে ওঠো বীর
তোমরা যদি না জাগো আজ
সব হবে যে চৌচির।
একটা খোকা
সাদমান হাফিজ শুভ
একটা খোকা নয়কো বোকা পরিপাটি,
কয় না কথা যথাতথা কয় সে খাঁটি।
নাহি হেলা কোনো বেলা
আপন কাজে,
ভোরে জাগে পাখির আগে
দাতটা মাজে।
অজু করে পথটা ধরে
মসজিদে ওই,
কুরআন পড়ে মধুর স্বরে
কান পেতে রই।
পাঠশালে যায় মাতে খেলায়
নিয়মমতো,
ভাঙে না সে আসুক না যে
আঘাত যত।
খাবার যাচে তবেই বাছে
যা স্বাস্থ্যকর,
হাসির রাজা মনটা তাজা
উদার সাগর।
নাহি গালি নাহি কালি সুহৃদ সজন,
ফুল যে গাঁয়ে ধন্য মা’য়ে
এমন ক’জন!
দেশটা আমার
শাকের আব্দুল্লাহ (শান্ত)
দেশটা আমার একী হাল হলো
নেই তো আগের মতো,
চলে গেছে কত ভাই-বোন মোর
আবু সাঈদ, আরো কত।
যুদ্ধে ভরা, রক্তে রাঙা
পুরো বাংলাদেশে,
জীবন দিল ন্যায় প্রতিষ্ঠায়
নির্ভয়ে হেসে হেসে।
গুলি খেয়ে মরে ছোট্ট শিশু
আহাদ, সামির, রিয়া,
এত জান নিয়েও হায়েনাদের হায়
কাঁপে না তবুও হিয়া।
হোসাইন, মোবারক, তাহমিদ, ইফাত
সবাই ছিল শিশু,
তোমাদের তরে লড়ছি মোরা
হটবো না কভু পিছু।
অর্থ চাহিদা
মোস্তাহিদুর রহমান
এ জাতি মোরা সৃষ্টির সেরা
জগতে করি যে বাস
যদিবা মহৎ কেউ বা অনাথ
শ্রেষ্ঠ খোদার দাস।
প্রীতি বন্ধনে সুখ সন্ধানে
অগ্র আশাতে থাকি।
হলেও পূর্ণ যে আশার চাহিদা
মন বলে আজো বাকি
ক্ষণকাল তরে স্বপনের মাঝে
বাঁধি যে বাসা বাঁধনে
এ বাসা নহে চিরকাল তার
পূর্ণ পাওয়া সাধনে।
পর অর্থে কাতর এমন
পেতে কেন এত আশা
নীতির বালাই চূর্ণ করে
দুনিয়াতে বেঁধে বাসা
অর্থ চাহিদা কারো বা ফুরায়
সারা দিন রাত খেটে
নিয়মের কত শৃঙ্খল ভেঙে
অর্থ চাহিদা মেটে।
সোনার বাংলাদেশ
ফাতেমা আলী
এ কী হাল আজ, এ কী দুর্দশা
সোনার বাংলাদেশে!
হাজার হাজার তাজা প্রাণ কেন
ঝরছে নির্বিশেষে?
সোনার বাংলা শ্মশান কেন?
কেন এত রক্তবান?
একি তবে সেই ’৭১-এর
ফের পুনরুত্থান!
বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা
স্বৈরাচারের বলি
নরপশু আজ উল্লাস করে
মায়ের কোলকে খালি,
কতশত বোন, ফুলের মতোন
অকালে যাচ্ছে চলে
নারীর গায়ে যে হাত তোলে
তাকে আদৌ পুরুষ বলে?
তবে জেনে রাখো অধিকার ছাড়া
বাঁচতে চায় না কেউ,
তাই আজ এই বাংলার বুকে
ওঠে জনতার ঢেউ।
চেয়ে দেখো এই রাজপথ আজ
কৃষ্ণচূড়ায় রাঙা,
তার বিনিময়ে পরাধীনতার
শেকল পড়ছে ভাঙা।
চেয়ে দেখো ঐ প্রীতিলতা
আজ দাঁড়িয়ে বুলেট মুখে,
মৃত্যুর ভয় না করে সে যে
শত্রু দিচ্ছে রুখে।
রফিক, সালাম, বরকত
তারা যায়নি কখনো চলে,
আবু সাঈদ আর মীর মুগ্ধরা
তাদের কথাই বলে।
ওরাই পারবে আকাশের বুকে
ফোটাতে ভোরের আলো,
এই দেশ থেকে মুছে যাবে
সব ইতিহাস যত কালো।
শুধু চাই এই সোনার বাংলা
আবার উঠুক হেসে,
শহীদের জীবনের বিনিময়ে
সাজুক নতুন বেশে।
টিয়া পাখি
আব্দুস সাত্তার সুমন
টিয়া পাখি টিয়া পাখি
ঠোঁটটি তোমার লাল,
রঙিন তোমার পাখনাগুলো
মিষ্টি তোমার গাল।
কথা বলো মধুর সুরে
শরৎমাখা ঝিলে,
সকাল বেলায় ঘুম ভাঙাতে
তোমরা সবাই মিলে।
মানবজাতির মতো করে
কথা বলো নাকি!
কিচিরমিচির ডাকো তুমি
রাঙা টিয়া পাখি।
দেখা মিলে গাঁয়ের বনে
পাহাড় টিলার ঢালে,
গাছের বুকে বাসা বাঁধো
থাকে উঁচু ডালে।