বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন আহতরা

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীসহ সারা দেশে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ফ্যাসিবাদ হটাতে রাজপথে গুলির মুখে দাঁড়িয়ে আন্দোলন চালিয়ে নেওয়া ছাত্র-জনতা। অনেকে এখনো রয়েছেন আশঙ্কাজনক অবস্থায়। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও আহতদের মধ্যে থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর খবর আসে। কোথাও কোথাও চিকিৎসার খরচ চালাতে অসামর্থ্যরে কথা উঠে আসে। সাধারণ মানুষের ভাষ্য, রাষ্ট্র সংস্কারসহ নানা উন্নয়ন কাজের ফাঁকে যেন আহতদের চিকিৎসার কথা ভুলে না যাওয়া হয়।   
  গত ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার স্বৈরাচারী সরকার পতনের আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রায় ২ মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান কারিমুল। ওইদিন ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) তিনি মারা যান। হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার কারিমুল পরিবার নিয়ে থাকতেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে। তিনি কাঁচাবাজার আড়তের কর্মচারী ছিলেন। ১ বছর আগেই বিয়ে করেছিলেন তিনি। স্ত্রী ময়না ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গেছে। স্বজনরা জানান, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন কারিমুল। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের দিন দুপুরে যাত্রাবাড়ী থানা থেকে বের হয়ে পুলিশ মুহুর্মুহ গুলি চালালে বুকেসহ শরীরে ৩টি স্থানে গুলি লাগে তার। উদ্ধার করে আন্দোলনরতরা ওইদিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
 এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে চাচার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম। আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট নগরের সিআরবি এলাকায় সে গুলিবিদ্ধ হয়। এরপর থেকে চিকিৎসাধীন ছিল। অবশেষে ৫৭ দিন পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) সাইফুলের মৃত্যু হয়েছে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে কান্না থামছে না মা-বাবার। সাইফুল ইসলামের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের কৌশল্যা এলাকায়। কৃষক আলতাফ হোসেনের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সাইফুল সবার বড়। তাঁর চাচা আমজাদ হোসেন বলেন, মা-বাবার একমাত্র ছেলে সাইফুল চট্টগ্রামে বড় চাচা আবুল কাশেমের বাসায় বেড়াতে গিয়ে আন্দোলনে অংশ নেয়। ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে তাকে বেধড়ক মারধর করে আওয়ামী লীগের লোকজন। একপর্যায়ে তার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে এক মাস সাত দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তাকে নেওয়া হয় ঢাকার সিএমএইচে। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।