রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ৮ম সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ॥ ৮ জিলকদ ১৪৪৫ হিজরী ॥ ১৭ মে ২০২৪

॥ মা সু ম  খ লি লী ॥
ভারতে এবারের নির্বাচনের শুরুতে মনে হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি ও তার দল বিজেপি তেমন কোনো জোরদার প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হবে না। কিন্তু চার দফা নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর অবস্থাটা সে রকম আর মনে হচ্ছে না। দ্বিতীয় মেয়াদের সর্বশেষ সংসদ অধিবেশনে বিজেপি একাই ৩৭০ আসন এবং এনডিএ চারশ’ পার করবে বলে উল্লেখ করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। এখন বিজেপি ২৭২ আসনের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এমন কথাও বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বিজেপি ২০০ আসনের আশপাশে আটকে যেতে পারে।
অনেক কার্ড কাজ করছে না
নির্বাচনী কৌশলের যেসব কার্ড নিয়ে মোদি নির্বাচনে নেমেছিলেন তার অনেকগুলো এখন সেভাবে কাজ করছে না। তিনি রামমন্দিরের কাজ শেষ হওয়ার আগেই ঘটা করে এর উদ্বোধন করে ধর্মীয় কার্ডটি খেলার প্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়েছিলেন। কিন্তু সনাতন ধর্মের চার প্রধান নেতা এ বিষয়ে ধর্মীয় বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন। এখন মনে হচ্ছে এ ইস্যুটি আগের মতো এবারের নির্বাচনে সেভাবে প্রভাব ফেলছে না।
এরপর তিনি সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের কার্ড খেলতে শুরু করেন। এর আগেও তিনি এ কার্ড খেলেছেন। কিন্তু এবারের মতো এতটা বেপরোয়াভাবে তিনি সেটি সামনে আনেননি। তিনি বলছেন কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে হিন্দুদের কাছ থেকে দুটি মোষের একটি কেড়ে নিয়ে অধিক সন্তানওয়ালা মুসলমানদের কাছে বিতরণ করবেন। এখানেই তিনি থামেননিÑ বলেছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে হিন্দুদের মঙ্গলশোভা কেড়ে নেবে, আর রামমন্দিরে ঝুলিয়ে দেবে তালা।
নরেন্দ্র মোদি দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিষয়ে ঘৃণামূলক অসত্য বক্তব্য প্রদানের পর সর্বশেষ আরো এক ধাপ এগিয়ে তার অতিঘনিষ্ঠ শিল্পগ্রুপ হিসেবে স্বীকৃত আদানি ও আম্বানির বিরুদ্ধে কংগ্রেসকে বস্তা ভর্তি করে ট্যাম্পোভ্যানে কালো টাকা দেয়ার অভিযোগ করেছেন। এসবের পর দিল্লি প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও খ্যাতনামা সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী এক টকশো অনুষ্ঠানে বাংলার গরু হারানোর প্রবাদবাক্য স্মরণ করে মন্তব্য করেছেন, মোদি সম্ভবত তার নির্বাচনী সাফল্যের আশাবাদে চিড় ধরেছে দেখতে পেয়ে গরু হারানোর মতো খেই হারিয়ে ফেলেছেন।
মোদির ‘আপকি বার চারশ পার’
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের চারটি পর্বে চারশ’র কাছাকাছি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের প্রচারাভিযানের শুরুতে নরেন্দ্র মোদি ‘আপকি বার চারশ পার’ স্লোগান দিলেও সেই ধরনের কথা এখন বিজেপির নেতারা আর বলছেন না। দলনিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরাও বলছেন, মোদির বিজেপি চার দফায় দুই-তৃতীয়াংশের কাছাকাছি আসনের নির্বাচনে আগের বার পাওয়া অনেক আসন হারাবেন। দক্ষিণের যেসব রাজ্যে বিজেপি ঐতিহ্যগতভাবে খারাপ ফল করে থাকে, সেখানে নতুন কোনো সাফল্যের সম্ভাবনা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। একই সাথে হিন্দি বলয়ের যেসব রাজ্যে গতবার বিজেপি জোট ভালো ফল করেছিল, সেসব রাজ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আসন হারাতে পারেন। এর মধ্যে অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ চারটি রাজ্যে বিজেপি আসন হারাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  
দেশের বৃহত্তম রাজ্য উত্তরপ্রদেশে ৮০ আসনের মধ্যে সবকটি বিজেপি পাবে বলে মোদি আদিত্যনাথের সরকার প্রত্যাশা করেছিল। এ যাবত সম্পন্ন হওয়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে বলা হচ্ছে এ রাজ্যে ৫০ আসনের বেশি জয় পাওয়া বিজেপির জন্য এক প্রকার অসম্ভব। ভারতের এ রাজ্যে বিজেপির জন্য ইতিবাচক ইস্যু ছিল তিনটি। প্রথমত, রামমন্দিরের উদ্বোধন এ রাজ্যের হিন্দুত্ববাদী সেন্টিমেন্টকে চাঙ্গা করবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ইস্যুটি ভোটে খুব বেশি প্রভাব ফেলেছে বলে দেখা যাচ্ছে না। দ্বিতীয় ইস্যুটি ছিল রাজ্যটির নিম্নবর্ণের হিন্দুদের আঞ্চলিক দল বিএসপি বিরোধী জোটে না গিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছে। তৃতীয়ত, চৌধুরী চরণ সিংয়ের লোক দলের সাথে বিজেপি শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী জোট গঠন করেছে।
শেষোক্ত দুই রাজনৈতিক মেরুকরণ থেকে বিজেপি লাভবান হতে পারে। কিন্তু সেটি দুটি কারণে খুব উল্লেখযোগ্য হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথমত, বিএসপি তার প্রভাব হারিয়ে ক্ষয়িষ্ণু দলে পরিণত হতে চলেছে। বিগত রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে বিএসপি আলাদা নির্বাচন করে তাদের ভোট শতাংশ অনেক সংকোচনের মুখে পড়েছে আর এক্ষেত্রে লাভবান হয়েছে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি-এসপি। অন্যদিকে চরণ সিংয়ের সমর্থন মূলত ছিল জাঠদের ওপর। জাঠরা এবার কৃষক আন্দোলনে অংশ নিয়েছে ব্যাপকভাবে আর তারা বিজেপির প্রতি বেশ খানিকটা বিরূপ হতে শুরু করেছে। এসব কারণে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ভালো সাফল্য পাবার আশাবাদ কম দেখা যাচ্ছে।
তবে কিছু কৌশল বিজেপির আসন সংখ্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। এর মধ্যে একটি হলো  রাজপূত বা ঠাকুর প্রার্থী না দিয়ে মায়াবতীর বিএসপির পক্ষ থেকে যাদব প্রার্থী বেশি দেয়া, সাধারণভাবে যাদবরা অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিকে সমর্থন করে থাকে। মুসলিমপ্রধান নির্বাচনী এলাকাগুলোয় স্বতন্ত্র অথবা অন্য কোনো দল থেকে বেশি বেশি মুসলিম প্রার্থী দাঁড় করানো হয়। এর বাইরে মোদির মুসলিম বিদ্বেষের বক্তব্য উত্তর প্রদেশের বিজেপি নেতারা ব্যাপকভাবে প্রচার করছেন। ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রভাব ফেললে বিজেপি কিছুটা ভালো করতে পারে। তবে তা ২০১৯ সালের অবস্থায় ফিরবে বলে মনে হয় না।
এবার উত্তরপ্রদেশের লক্ষণীয় দিক হলো, রাজ্যটিতে এসপি-কংগ্রেস জোট একটি গতিময় প্রচারাভিযান সংঘটিত করতে সক্ষম হয়েছে। রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা দুজনই ব্যাপক প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন উত্তরপ্রদেশে তাদের আসন ৩০ ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র ছিল বিহার। একটি ছাড়া সবকটি আসনে বিজেপি-নীতীশের জেডিইউ জোট পেয়েছিল। নীতীশ একাধিকবার ডিগবাজি দিয়ে আবার বিজেপির সাথে জোট তৈরি করেছেন। কিন্তু সেই জোট বিহারে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাবার সম্ভাবনা কম বলে মনে হচ্ছে। লালু যাদব ও তেজস্বি জাদবের আরজেডি বিগত বিধানসভা নির্বাচনে যথেষ্ট ভালো করেছে। আরজেডি-কংগ্রেস জোট সেই ধারা বজায় রাখতে পারলে তাদের আসন সংখ্যা ২০-এর কাছাকাছি চলে যাওয়াটা অস্বাভাবিক হবে না। প্রশান্ত কিশোর মনে করেন, এবার বিহারে বিজেপি-জেডিইউ জোট অনেক খারাপ ফল করবে। এমনকি অর্ধেকের বেশি আসন হারানোও বিচিত্র হবে না বলে প্রশান্ত মনে করেন।
এবারের লোকসভা নির্বাচনের ফল নির্ধারণের ক্ষেত্রে তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য হলো মহারাষ্ট্র। এ রাজ্যে ক্ষমতাসীন জোটের দুই অংশীদার দল শিবসেনা ও জাতীয় কংগ্রেসকে ভাগ করে বিজেপি সরকার গঠন করে। এখন সেখানে শরদ পাওয়ারের জাতীয় কংগ্রেস আর উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা কংগ্রেসের সাথে মিলে বিরোধী জোট করেছে। প্রথম দুই দলের খণ্ডিতাংশ নিয়ে বিজেপির জোট এবার খুব ভালো ফল করবে এমনটা মনে হচ্ছে না। ৪৮ আসনের এ রাজ্যে লোকসভার আসন সংখ্যা আধাআধি ভাগ হয়ে যেতে পারে।
৪২ আসনের পশ্চিমবঙ্গকে এবারের নির্বাচনে বিজেপির ট্রাম্পকার্ড হিসেবে প্রচার করা হচ্ছিল। প্রশান্ত কিশোরের মতো ব্যক্তিও বলেছিলেন বিজেপি এবার পশ্চিমবঙ্গে এক নম্বর দলে পরিণত হতে পারে। এক্ষেত্রে সন্দেশখালীর কথিত ধর্ষণকাণ্ড এবং মাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির দুটি মুখ্য ইস্যু। তৃতীয় দফা ভোটগ্রহণের আগেই ইস্যু দুটি বিজেপির জন্য বুমেরাং হয়ে গেছে। প্রথমত, সন্দেশখালীর ঘটনা নিয়ে দুটি স্ট্রিং অপারেশনের ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায় যে, সেখানে তৃণমূলের মুসলিম নেতার বিরুদ্ধে যে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছিল সেই কথিত ভিকটিমের শিকার মেয়েরা বলছেন, এ ঘটনা ছিল সাজানো। স্থানীয় বিজেপি নেতাকে বলতে শোনা যায়, রাজ্য বিজেপি প্রধান শুভেন্দু অধিকারী টাকা দিয়ে এ ধরনের ঘটনার অভিযোগ করতে উৎসাহিত করেছে অভিযোগকারীদের। অন্যদিকে হাইকোর্ট মাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় যে রায় ঘোষণা করেছিল, তা সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত ঘোষণা করে দেয়। এ রায়ের প্রভাব শেষ তিন দফার ভোটে পড়ার কথা। সেটি হলে বিজেপির আসন সংখ্যা দুই অংকের শুরুর দিকে নেমে আসতে পারে।
এর বাইরে হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলোয় দুটি ইস্যু প্রভাব ফেলতে পারে। প্রথমত, কৃষক আন্দোলন আর দ্বিতীয়ত, সেনাবাহিনীতে নিয়োগের সময় সীমিতকরণ ইস্যু। এ দুই ইস্যুতে হরিয়ানা, রাজস্থান; এমনকি উত্তর-প্রদেশের কিছু ভোট প্রভাবিত হতে পারে। এর বাইরে রয়েছে বেকারত্বের ইস্যু। মোদি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কিছু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন কিন্তু ২ কোটি কাজ সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি পূরণের ধারে-কাছেও তিনি যেতে পারেনি। বরং যা কিছু জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে তার সুবিধা গেছে তার আনুকূল্যপ্রাপ্ত অলিগার্কদের কাছে। আদানির ‘আঙুল ফুলে তালগাছ’ হওয়ার তথ্য-পরিসংখ্যান সামনে রাখলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। যার কিছুটা হিন্ডেনবার্গ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। হিন্দুত্ববাদী পরিচয়ের রাজনীতি এসবকে কতটা প্রভাবিত করতে পারে, তার ওপর নির্ভর করবে তৃতীয় দফায় মোদির সরকার গঠনের ইস্যুটি।
মোদির কর্তৃত্ববাদী মেরুকরণ
এর মধ্যে নরেন্দ্র মোদি তার দল ও জোটে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এককেন্দ্রিক মেরুকরণ করে ফেলেছেন। তিনি ৭৫ বছর বয়স হওয়ার যুক্তি দেখিয়ে প্রবীণ নেতা এলকে আদভানি মনোহর যোশিসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতাকে অবসরে পাঠিয়েছেন। এখন মোদি নিজে পরবর্তী সেপ্টেম্বরে ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ করায় সেই ইস্যুটি সামনে চলে এসেছে। কারামুক্ত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ইস্যুটির উল্লেখ করে বলেছেন, এবার কি মোদি তার উত্তরসূরি অমিত শাহের জন্য প্রচার চালাচ্ছেন। এর একদিন পরই অমিত শাহ বলেছেন, পরের মেয়াদে মোদিই সরকারে নেতৃত্ব দেবেন।
তবে এ ইস্যুতে মোদির সুবিধাবাদী রাজনীতির বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। এমনকি আরএসএস পটভূমি থেকে মোদির উত্থান হলেও সুবিধাবাদী রাজনৈতিক কৌশলের ফলে আরএসএসের সাথে মোদির একটি দূরত্ব তৈরির কথাও বলা হচ্ছে। মোদি-অমিত শাহের অনুগতরা এখন আরএসএস থেকে আসা নেতাদের ছাপিয়ে প্রভাব বিস্তার করার কথা বলা হচ্ছে। আরএসএসের একটি অভ্যন্তরীণ জরিপ ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে বিজেপির আসন এবার ২১৭-এর আশপাশে থেমে যেতে পারে। এ জরিপটি কতটা সত্যি, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে আরএসএস এটি স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটাই করেনি।
এর বাইরে আরেকটি ইস্যু এসেছে, সেটি হলো প্রশাসনকে রাজনৈতিক কারণে নির্বিচারে ব্যবহার করা। দুনীতির বিভিন্ন ইস্যুকে ইডি সিআইডি ব্যবহার করে দুই মুখ্যমন্ত্রীসহ অনেক বিরোধী রাজনীতিককে জেলে পাঠিয়েছেন মোদি সরকার। কিন্তু এসব মামলা হওয়ার পর বিজেপিতে যোগ দিলে তাদের মামলা অচল হয়ে পড়ে। এ বিষয়টি সামনে আসার সাথে সাথে মোদি প্রশাসনের সরকারি ক্ষমতা অলিগার্কদের সুবিধা দেওয়ার জন্য ব্যবহারের ব্যাপক অভিযোগ বিরোধী পক্ষ করছেন। কেজরিওয়াল এ ধরনের অভিযোগগুলো জনগণের সামনে জোরালোভাবে নিয়ে আসায় তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে বলে মনে করা হয়।
গভীর ক্ষমতা বলয়ে মোদি সমর্থন হারাচ্ছেন?
এসব কিছুর পর একটি ইস্যু এখন বেশ বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, সেটি হলো ভারতের গভীর ক্ষমতা বলয়ে কি মোদি সমর্থন হারাচ্ছেন? মোদি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও ইসরাইলের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক বেশি তৈরির ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। গাজা যুদ্ধে অনেক ভারতীয় ইসরাইলের পক্ষে যুদ্ধ করছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ার রিপোর্টে এসেছে। আর এর সুবিধা মোদি প্রশাসন নিয়েছে, যখন রাশিয়ার সাথে বেশি ঘনিষ্ঠ হতে গিয়ে ওয়াশিংটন বিরূপ হয় তখন যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যানেজ করার ক্ষেত্রে। মোদি সেই সমীকরণের কার্যকারিতা আগের মতো সম্ভবত এখন পাচ্ছেন না। বিশেষত ইউক্রেন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ইস্যুতে আমেরিকান অবস্থানের বিপরীত দিকে গিয়ে মোদি পশ্চিমের সমর্থন নিয়ে কিছুটা অবিশ্বাসের মুখে পড়েছেন। এর প্রভাব এবারের লোকসভা নির্বাচনে পড়ছে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন অনেক বিশ্লেষক।
মোদি শাসনের ১০ বছরে বিজেপি আরএসএস দেশটির গণমাধ্যম, নিরাপত্তা সংগঠন, গোয়েন্দা পরিষেবা এবং বিচার প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ পরিসরে বড় প্রভাব সৃষ্টি করেছিল। এখন সেখানে কিছুটা চিড় ধরেছে বলে মনে হচ্ছে। এবার নির্বাচন চলাকালে ‘গদি মিডিয়া’র অংশ হিসেবে পরিচিত অনেক প্রতিষ্ঠান সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে ভারসাম্য দেখাতে শুরু করেছে। সুপ্রিম কোর্টের কয়েকটি সংবেদনশীল রায়ে বিজেপি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ৪০০ আসন নিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করার বক্তব্য নিরাপত্তা সংগঠন ও গোয়েন্দা পরিষেবার অনেকে রাষ্ট্রকে কর্তৃত্ববাদী গণতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাওয়ার লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করছে।
এত কিছুর পরও বিজেপি এবারের নির্বাচনে নিশ্চিতভাবে ক্ষমতা হারাচ্ছে- এমন অনুসিদ্ধান্তে নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা এখনই আসতে চাইছেন না। শেষ তিন দফার নির্বাচন এক্ষেত্রে নির্র্ণায়ক হয়ে দাঁড়াতে পারে। ভোটারদের একটি অংশের ভোটদানে অনীহার বিষয়টি যদি সত্যি সত্যি বিজেপির ভোটারদের মোহভঙ্গের কারণে হয়ে থাকে, তাহলে বিস্ময়কর কিছু ফলাফল আসা অস্বাভাবিক হবে না। এটি কিছুটা জানা যাবে ১ জুন ভোট ফেরত সমীক্ষা প্রকাশ হওয়ার পর। আর ৪ জুন পূর্ণ ফলাফল বলে দেবে, আসলেই পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতি ভারতে কতটা ভূমি হারিয়েছে।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।