সোনার বাংলা ডেস্ক : দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ দশমিক ৭ শতাংশ গরিব। এর মধ্যে গ্রামাঞ্চলে ২১ দশমিক ৬ এবং শহরাঞ্চলে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। সম্প্রতি প্রকাশিত সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। গবেষণায় আরও বলা হয়, গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্যের হার ২০১৮ সালে ছিল ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২৩ সালে সেটি কমে ২১ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। একই সময়কালে শহরে দারিদ্র্যের হার ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে। বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের ক্ষেত্রেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে। গ্রামীণ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের হার ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে কমে ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে শহরাঞ্চলে ২০১৮ সালে ছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ শতাংশে।
গবেষণায় বলা হয়, নিম্ন দারিদ্র্যসীমা ব্যবহার করে জাতীয় পর্যায়ে চরম দারিদ্র্যের হার পরিমাপ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় ৮ দশমিক ৯ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। বিভাগীয় পর্যায়ে দারিদ্র্যের হার সর্বোচ্চ রংপুরে, ৪২ দশমিক ৯ শতাংশ। এর পরই আছে বরিশাল, ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ।
মৌলিক চাহিদার খরচভিত্তিক দারিদ্র্য এবং বহুমাত্রিক দারিদ্র্য পদ্ধতি- উভয় ক্ষেত্রেই শহুরে দারিদ্র্য বৃদ্ধির পেছনের দুটি কারণ অনুমান করা হয়েছে গবেষণায়। প্রথম কারণটি হলো- নাজুক দরিদ্রদের (যারা দারিদ্র্যসীমার ওপরে থাকলেও যেকোনো ধাক্কার প্রভাব তাদের দারিদ্র্যসীমার নিচে নামিয়ে দিতে পারে) একটি বড় অংশ শহরাঞ্চলে বাস করে। যারা দারিদ্র্যের হাত থেকে বাঁচতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রভৃতি কারণে শহরে স্থানান্তরিত হয়েছিল। সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির মতো উল্লেখযোগ্য ধাক্কাগুলো এ নাজুক লোকদের দারিদ্র্যসীমার নিচে নামিয়ে দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, শহুরে এলাকাগুলো বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোতে এ শ্রেণি ব্যাপকভাবে আওতাভুক্ত না হওয়া। যার ফলে অনেক শহুরে পরিবার ধাক্কা খাওয়ার ক্ষেত্রে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে।
ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্যের হারের পাশাপাশি গবেষণায় দেশে ক্রমবর্ধমান আয়বৈষম্যও লক্ষ করা গেছে। গিনি সহগ ব্যবহার করে দেখা যায়, জাতীয় পর্যায়ে বৈষম্যের হার ২০১৮ সালে ০.৩১ থেকে ২০২৩ সালে কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ০.৩২-এ। তবে ধনী-দরিদ্রের আয়ের অংশের দিক থেকে পর্যবেক্ষণ করলে, অর্থাৎ সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশের আয়ের অংশের তুলনায় দরিদ্রতম ২০ শতাংশ পরিবারের আয়ের অংশ বিবেচনায়, অনুপাতটি ২০১৮ সালে ২.১ থেকে ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.৪-এ। সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশের সঙ্গে সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশের ব্যয়ের শেয়ারের অনুপাত ২০২০ সালে ১.৩ থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে ২.১-এ দাঁড়িয়েছে। তবে বেশিরভাগ অতিশয় ধনী পরিবারকে সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা না যাওয়ায় অসমতার প্রকৃত রূপ এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে বলেও ধারণা করা হয়েছে ওই গবেষণায়।
এ পাতার অন্যান্য খবর
- উৎকণ্ঠা বাড়ছে শাসকশিবিরে
- আমাদের আগামী দিনের পথচলায় আপনাদেরকে পাশে চাই
- তৎপর হচ্ছে বিএনপি
- উন্নয়নের বয়ান ও স্বাধীনতার স্বপ্ন
- সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে নাস্তিকের কারখানা বানানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : ডা. শফিকুর রহমান
- আকাশচুম্বী ঋণের বোঝায় অর্থনীতি বিপর্যস্ত
- স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত : মিয়া গোলাম পরওয়ার
- ঈদযাত্রা : পথে পথে দুর্ভোগের হাতছানি