ইন্ডিয়া আউট এবং ভারতীয় পণ্য বর্জন
তৎপর হচ্ছে বিএনপি
॥ জামশেদ মেহ্দী॥
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনসহ সাম্প্রতিক সরকারবিরোধী আন্দোলনে কোটি কোটি মানুষের সমর্থন থাকা সত্ত্বেও কেন সেই আন্দোলন ব্যর্থ হলো, সেটি নিয়ে এখন বিএনপির মধ্যে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। বিএনপির অত্যন্ত সিনিয়র পর্যায়ের দুই নেতা অনানুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনায় হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, যে বিজয়টি ছিল অবশ্যম্ভাবী, সেই বিজয়টি আমাদের হাত থেকে বেরিয়ে গেল। কেন বেরিয়ে গেল, সেটি নিয়ে নিরপেক্ষ বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। সাপ্তাহিক সোনার বাংলার এ প্রতিনিধি এ ব্যাপারে ব্যাপক অনুসন্ধান করেছেন। তার অনুসন্ধানে এ অকাট্য সত্যটি বেরিয়ে এসেছে, বিএনপির একটি অংশের ভেতর এখন ভারতবিরোধী মনোভাব ক্রমান্বয়েই জোরদার হচ্ছে। তৃণমূল থেকে শুরু করে সিনিয়র পর্যায়ের একটি অংশ মনে করছেন যে, ২০১৪ সালের পর থেকে বিএনপির কার্যক্রম তথা আন্দোলনে অকস্মাৎ ভারত সম্পর্কে কোনো কথা বলা সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়। অথচ মরহুম জিয়াউর রহমান যখন বিএনপি গঠন করেন, তখন লাখ লাখ মানুষ বিএনপির পেছনে যে কারণে কাতারবন্দি হয়েছিল, তার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল ভারতীয় প্রভুত্ব থেকে বাংলাদেশকে বের করে আনা। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর বিএনপির এ অবস্থানে আমূল পরিবর্তন আসে।
বিএনপির একশ্রেণির নেতা প্রকাশ্যে না হলেও নিজেদের মধ্যে বলাবলি করেন যে, ভারতের ভৌগোলিক অবস্থা এমন এবং এখন ভারত সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, ক্ষমতায় যেতে হলেও ভারতের বন্ধুত্ব প্রয়োজন। আবার সেই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্যও ভারতের বন্ধুত্ব প্রয়োজন। দুঃখজনক হলেও সত্য, এ ধরনের চিন্তাধারা বা প্রোপাগান্ডা বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির সংখ্যাগুরু অংশকে গ্রাস করেছিল। এরপর থেকেই ভারত সম্পর্কে বিএনপি সম্পূর্ণ নীরব হয়ে যায়। শুধু নীরবতাই নয়, ভারতের সাথে বন্ধুত্ব করার প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির একাধিক ডেলিগেশন দিল্লি যায়। কিন্তু এসবে বরফ গলে না।
প্রথমে প্রচার করা হয়েছিল যে বাংলাদেশ চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। তাই মোদি সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু এটি ছিল একটি সুসংগঠিত প্রোপাগান্ডা, যার লক্ষ্য ছিল জনমত এবং বিএনপির তৃণমূলকে বিভ্রান্ত করা। বিএনপি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি দল। এ দল ভারতীয় আধিপত্য সম্পর্কে কথা বললে জনগণ ভারতবিরোধী হয়ে যাবে।
এরপর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার গালভরা বুলি নিয়ে আমেরিকা ঢাকায় আসা-যাওয়া শুরু করে। তখন আবার প্রচারণা চালানো হয়, এবার আমেরিকা মাঠে নেমেছে। তাই ভারত খামোশ হয়ে গেছে। কিন্তু সাপ্তাহিক সোনার বাংলা থেকে একাধিক ভাষ্যে সতর্ক করা হয়েছিল, ভূ-রাজনীতির আমূল পরিবর্তনের ফলে ভারতকে চটিয়ে আমেরিকা কোনো কাজ করবে না এবং ২৮ অক্টোবরের পুলিশি অভিযানের পর থেকে আজ পর্যন্ত আমেরিকা সেই কাজটিই করে গেছে। যার ফলে ভারত আবার ড্রাইভিং সিটে বসেছে এবং এবার আওয়ামী লীগকে সর্বাত্মকবাদ (Totalitarianism) থিওরি মোতাবেক অত্যন্ত শক্তিশালী ব্যক্তি স্বৈরতান্ত্রিক সরকার বসিয়ে দিয়েছে।
অনেকে বলছেন, বাংলাদেশি জনগণের প্রতি এটা আমেরিকার বিট্রেয়াল। অনেকে হতাশ হয়ে বলছেন, ভারত আরো জেঁকে বসেছে। জনগণের সব আশা ভরসা শেষ। তবে যারা সূক্ষ্মভাবে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বিশ্লেষণ করেন তারা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন যে, এ নির্বাচনের পর বাংলাদেশে ভারত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কথাটি সোনার পাথর বাটির মতো মনে হলেও এটিই বাস্তব সত্য। বাংলাদেশের কোটি কোটি জনগণ এ সরকারের অপসারণ চেয়েছিল। তাদের মনে গত ৭ জানুয়ারি তথাকথিত নির্বাচনের পর এ ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে যে, ভারত আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রেখে কোটি কোটি জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
এই যখন জনগণের মনোভাব, তখন পিনাকী ভট্টাচার্য নামে এক ব্লগার বিদেশ থেকে দুটি স্লোগানভিত্তিক বক্তব্য তার ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা শুরু করেন। একটি হলো, ‘ভারতীয় পণ্য বর্জন করো’। আরেকটি হলো, ‘ইন্ডিয়া আউট’। গভীরভাবে লক্ষ করার বিষয় হলো এই যে, পিনাকীর আগে বিএনপি বা তার জোটসঙ্গীদের কেউই ভারত সম্পর্কে এর আগে কথা বলেনি। পিনাকী যখন অবিরাম বয়কট ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন বিদেশে যারা ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করেন, তারাও ঐ স্লোগানের পক্ষে নিজেরাও একই লক্ষ্যে প্রোগ্রাম করতে থাকেন। কয়েকদিনের মধ্যেই দেখা যায় যে, বাংলাদেশে সীমিতভাবে হলেও এ প্রচারণার প্রভাব পড়েছে। নুরুল হক নূরের গণঅধিকার পরিষদ এবং বিএনপির মিত্র ১২ দলীয় জোট ভারতীয় পণ্য বর্জন এবং ইন্ডিয়া আউট কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে। কিন্তু তারা ছোট দল হওয়ায় পুলিশি জুলুমের মুখে তাদের আন্দোলন তারা বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেনি।
এমন একটি ধোঁয়াটে পরিবেশে গত ২০ মার্চ বুধবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আগুে ঘি ঢেলে দিলেন। প্রায় ১০ বছর পর এই প্রথম বিএনপির এক সিনিয়র নেতা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, ভারত বাংলাদেশকে স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। নয়াপল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভারতীয় পণ্য বয়কটকারীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। একাত্মতা ঘোষণার সিম্বল হিসেবে তিনি তার গায়ের একটি ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলে দেন। রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ ভারতের ব্যাপারে আর কোনো রাখঢাক করছে না। ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে, ভারত আমাদের পাশে ছিল বলেই বাংলাদেশের নির্বাচনে বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্র অশুভ হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। যখন দেশ-বিদেশে নির্বাচনবিরোধী ষড়যন্ত্র হচ্ছিল, তখন ভারত স্ট্রংলি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। রিজভী আরো বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেই সময় ভারত আমাদের পাশে ছিল। একই ষড়যন্ত্র হয়েছিল ২০১৮ সালে। তখনো ভারত আমাদের পাশে ছিল। এবারো একাধিক বৃহৎ শক্তি নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল। কিন্তু এবারো ভারত আমাদের পাশে আছে এবং তাদের জন্যই ঐসব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে এখন ভারতীয় পণ্যের বাজার রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এদেশের কোনো কোনো আওয়ামী নেতা বুক ফুলিয়ে বলেছেন, ভারত আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি ভারতের প্রার্থী।
তিনি প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশ কি পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি হয়ে গেল? আওয়ামী লীগ কি তলে তলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়েছে? ভারতের বিরুদ্ধে জনগণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে ভারতীয় পণ্য হটানোর আন্দোলন শুরু করেছেন জনগণ। তিনি বলেন, সর্বহারা জনগণের এ আবেগকে আমরাও ধারণ করি। তিনি আরো বলেন, মওলানা ভাসানী বলেছেন, দিল্লির দাসত্ব করার জন্য পিন্ডির গোলামির জিঞ্জির ছিন্ন করিনি। তাই জনগণের দল হিসেবে বিএনপিসহ ৬৩টি গণতন্ত্রকামী দল এবং দেশপ্রেমিক জনগণ ভারতীয় পণ্য বর্জনের এ আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করছেন।
গত ২১ মার্চ ইংরেজি দৈনিক নিউএজের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একটি খবরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে উদ্ধৃত করে বলা হয় যে, রিজভি যা বলেছেন সেটি তার ব্যক্তিগত মতামত। এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রিজভী এর পাল্টা জবাবে বলেছেন, এটা যেমন তার ব্যক্তিগত মতামত, তেমনি তার দলেরও মতামত। অবশ্য গত ২৩ মার্চ দৈনিক সমকালে প্রকাশিত গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্যে অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত আছে।
কিন্তু সময় যতই গড়িয়ে যায়, ততই দেখা যায় যে, বিএনপির অভ্যন্তরে ভারতীয় প্রভুত্ববিরোধী লবিটি দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। দীর্ঘ ২০ বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ গত ২৩ মার্চ আরো কঠোর কথা বলেছেন। তিনি প্রশ্ন করেছেন, দিল্লির অধীনস্থ হওয়ার জন্য কি আমরা এ যুদ্ধ (মুক্তিযুদ্ধ) করেছি? কখনোই না। বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা মানুষ কখনো এ ধরনের গোলামি মেনে নেবে না। গত ২৩ মার্চ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভায় মেজর হাফিজ যা বলেন, সেটি বাংলাদেশের মানুষের কাছে ছিল অনেকটা বিদ্যুৎ চমকের মতো। তিনি বলেন, এখানে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বলেছেন যে, আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করে সঠিক কাজ করেছি- নাকি ভুল করেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মনে এ প্রশ্ন আজকে জাগরূক হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কেন এ প্রশ্ন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মনে আসবে? কাদের দুঃশাসনের ফলে আজকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা আত্মসমালোচনায় লিপ্ত? মুক্তিযুদ্ধকে বর্তমানকালে শাসকগোষ্ঠী একটি হেলা-ফেলার বিষয়ে পরিণত করেছে। ভারত বন্দনায় সরকারের সমালোচনা করে মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, দিল্লি থাকলে এ সরকার আছে। কতখানি নির্লজ্জ তারা যে, এখন প্রতিবেশী দেশের আশ্রয়ে আনুগত্য স্বীকার করে যাচ্ছে। আমরা কি এজন্য যুদ্ধ করেছি? রাওয়ালপিন্ডি থেকে সরে এসে আমরা কি দিল্লির অধীনস্থ হওয়ার জন্যই যুদ্ধ করেছি? কখনোই না। বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা মানুষ কখনোই এ ধরনের গোলামি মেনে নেবে না। মেজর হাফিজ এ সভায় আরো কতিপয় বিস্ফোরক মন্তব্য করেন, যা স্থানাভাবে প্রকাশ করা সম্ভব হলো না।
এর আগের দিন বিএনপির অপর এক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমরা আর ভারতের গোলামি করবো না। ভারতীয় পণ্য বর্জন এবং ইন্ডিয়া আউট দাবি নিয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তার সাথে বিএনপি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছে।
ঐদিকে আওয়ামী লীগও এ ব্যাপারে ভারতের পক্ষে প্রকাশ্য দালালিতে নেমেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একাধিক বক্তব্যে অভিযোগ করেছেন যে, ভারতীয় পণ্য বয়কটের নামে বিএনপি নাকি বাজার ব্যবস্থা অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। ভারতীয় পণ্য বয়কট করলে বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থা কীভাবে অস্থিতিশীল হয়, সেটি মানুষের বোধগম্য নয়। মেইনস্ট্রিম পত্রিকা বলে জাহিরকারী দু-একটি ইংরেজি ও বাংলা পত্রিকা বলেছে, ভারতের ব্যাপারে ক্ষোভ থাকলেও ভারতবিরোধিতার ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান নাকি এখনো অস্পষ্ট।
কিন্তু সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, বিএনপির হাইকমান্ডে ইতোমধ্যেই ভারতের প্রভুত্ববিরোধী এজেন্ডা নিয়ে নাকি মাঠে নামার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, ভারতীয় পণ্য বয়কট এবং ইন্ডিয়া আউট প্রোগ্রামে কোনো আপস নাই। কিন্তু জিও-পলিটিক্স বিবেচনায় নিয়ে বিএনপিকে এ ব্যাপারে সতর্কভাবে পা ফেলতে হবে। ২৪ মার্চ দৈনিক সমকালের রিপোর্ট মোতাবেক, ‘এবার ভারত বিরোধী আন্দোলনকে আরো জোরদার করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলের বেশিরভাগ নেতাকর্মী মনে করছেন, তাদের সামনে এর কোনো বিকল্প নাই। যতই কূটনৈতিক শিষ্টাচারের কথা বলা হোক না কেন, ভারত যে একটি নির্দিষ্ট দলের জন্য কাজ করছে, এ ব্যাপারে আর কোনো অস্পষ্টতা নাই।’
দলটির সূত্র জানায়, ঈদুল ফিতরের পর ভারতবিরোধী ইস্যু আরও জোরালো করে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপির হাইকমান্ডের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়াও লিফলেট বিতরণ, সভা-সমাবেশে এ ইস্যুতে কর্মসূচি পালন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া সমমনা বিভিন্ন দল, জোট ও সংগঠনকেও মাঠে নামানোর ইচ্ছা রয়েছে দলটির। দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করেছেন বিএনপির শীর্ষনেতারা।
দুদিন আগেও যে গয়েশ্বর বলেছিলেন, ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলনের সাথে রুহুল কবির রিজভীর সংহতি প্রকাশ তার ব্যক্তিগত মতামত, সেই গয়েশ্বরও এখন সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বলছেন। ২৩ মার্চ দৈনিক সমকালকে গয়েশ^র বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের খুঁটির জোর জনগণ নয়, একটি দেশ। সে দেশের জনগণ নয়, তার পরিচালকদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ ফুঁসে উঠেছে। তারা ঐ দেশের পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। তার মতে, কবে না জনগণ বলে ওঠে, ঐ দেশেই আর যাবো না। শুরুতে দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতা এভাবে প্রকাশ্য ভারতবিরোধী অবস্থানে যাওয়ার ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। কিন্তু জনমত লক্ষ করে তারাও অবস্থান বদলেছেন এবং দলের সর্বোচ্চ নেতাসহ বিএনপির সব নেতা এবং কর্মীই এখন ইন্ডিয়া আউট প্রোগ্রামের স্লোগান নিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এখন তারা ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, মালদ্বীপের মতো এত ছোট একটি দেশ, যার আয়তন মাত্র ১২০ বর্গমাইল এবং যার জনসংখ্যা মাত্র ৫ লাখ ২২ হাজার, তারা যদি ভারতীয় সৈন্য হটাতে পারে, তাহলে তার চেয়ে অনেক বড় এবং ১৭ কোটি জনগণ নিয়ে বাংলাদেশ সেটা পারবে না কেন?
এ পাতার অন্যান্য খবর
- উৎকণ্ঠা বাড়ছে শাসকশিবিরে
- আমাদের আগামী দিনের পথচলায় আপনাদেরকে পাশে চাই
- উন্নয়নের বয়ান ও স্বাধীনতার স্বপ্ন
- সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে নাস্তিকের কারখানা বানানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : ডা. শফিকুর রহমান
- আকাশচুম্বী ঋণের বোঝায় অর্থনীতি বিপর্যস্ত
- স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত : মিয়া গোলাম পরওয়ার
- ঈদযাত্রা : পথে পথে দুর্ভোগের হাতছানি
- শহরাঞ্চলে গরিব মানুষ বাড়ছে