নওয়াপাড়া পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বেহাল অবস্থা : প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা

নওয়াপাড়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে খানাখন্দে জমে আছে পানি

মফিজুর রহমান, অভয়নগর (যশোর) থেকে : যশোরের শিল্পশহর নওয়াপাড়া পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দীর্ঘদিন যাবৎ বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। যেন দেখার কেউ নেই। বছর আসে বছর যায় সড়কটির অবস্থা পাল্টায় না। পৌরসভা গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত সড়কটিতে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যে কারণে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেনে ওই এলাকার বাসিন্দারা।

জানা গেছে, যশোর জেলার শিল্পশহর নওয়াপাড়া পৌরসভার ঐতিহ্যবাহী ধোপাদী গ্রামের চৌরাস্তা থেকে দপ্তরীপাড়া যাওয়ার পথে আব্দুল মজিদ সরদারের বাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তাটির বেহাল দশা। অবস্থাদৃষ্টে রাস্তাটি দেখে যে কেউ আঁতকে উঠবে। প্রায় দুই যুগ পূর্বে নওয়াপাড়া পৌরসভাটি গঠন হলেও এযাবৎকাল কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এ সড়কটিতে। ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, ভোট আসে ভোট যায় কিন্তু কোন উন্ননের ছোয়া লাগেনি এই রাস্তাটিতে। প্রায় ২০-২২ বছর আগে পৌরসভাটি গঠন হলেও এ পর্যন্ত কোন মেয়র কিংবা স্থানীয় কাউন্সিলররা কেউ ফিরেও তাকায়নি ওই রাস্তাটির দিকে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

পথচারীরা অভিযোগ করে বলেন, একটু বৃষ্টি হলে এই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে থাকা বড় বড় খানাখন্দের মধ্যে বৃষ্টির পানি জমে সাড়া রাস্তা জুড়ে কাঁদাপানির সৃষ্টি হয়। ফলে এই রাস্তাটি একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাছাড়া গ্রামের মধ্যের রাস্তা হওয়ায় এখানে নেই কোন সড়ক বাতির ব্যবস্থা। ফলে রাতের বেলায় চলার সময় ওই খানাখন্দের মধ্যে পড়তে হয়েছে অনেককেই। আবার বাই সাইকেল কি মোটরসাইকেলে চলতে গিয়ে কাঁদামাটি নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে, গন্তব্যে যেতে পারেনি।

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, একে তো রাস্তার অবস্থা এই রকম খারাপ, তার উপর এই রাস্তা দিয়ে গভীর রাতে পোল্ট্রি লেটারের (মুরগির বিষ্টা) বড় বড় ট্রাক চলতে গিয়ে আটকে পড়ে। এ সময় এই লেটারের গন্ধে আর আশপাশে বসবাস করার যায় না। এগুলো দেখার কেউ নেই। ঘের ব্যবসায়ীরা জানান, আমাদের এখানে প্রায় শতাধিক মৎস্য ঘের রয়েছে। এই মৎস্য ঘেরের অধিকাংশ খাবারগুলো নওয়াপাড়া থেকে এই একমাত্র রাস্তা দিয়ে নিয়ে আসতে হয়। ২০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা দিলেও ওই রাস্তা দিয়ে কেউ আসতে চায়না। আবার মাছ বিক্রি করতে গিয়ে একই অবস্থায় পড়তে হয়। মাছের বাজার দাম থেকে প্রতি মণে ২শ’ থেকে ৫শ’ টাকা কম নিতে হয়। তাতেও আবার হুমকি থেকে যায়। যদি কিনা ওই রাস্তা দিয়ে মাছের গাড়ি যাওয়ার সময় পাল্টি খেয়ে পড়ে যায় কিংবা মাছ মারা যায় তাহলে আবার টাকা ফেরৎ দিতে হয়। ব্যবসার সব লাভ খেয়ে যায় ওই রাস্তায়। আমরা বছর শেষে লাভের খাতায় কিছু যোগ করতে পারিনা। সামান্য রাস্তার জন্য আমাদের এত বেশি দুর্ভোগ কেউ যেন শুনেও শোনেনা।

গত বছর বৃষ্টির সময় রাস্তা দিয়ে চলাচল একেবারে অযোগ্য হয়ে পড়লে এলাকার মানুষের বিক্ষোভের মুখে তখনকার মেয়র রবিউল হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রাস্তা পাকাকরণের আশ্বাস দেয় এবং তাৎক্ষণিক মেরামতের জন্য কয়েক গাড়ি আদলা ও ঘ্যাশ দেয়। যা দিয়ে কোনমতে তখন চলাচলের উপযোগী করা হয়। কিন্তু বছর যেতেই ওই সড়কের আবারও একই দশায় পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর বর্তমান মেয়র সুশান্ত কুমার দাস শান্তর আশু হস্তক্ষেপে এই করুণ পরিণতি থেকে মুক্তি পেতে চাই।