আত্রাইয়ে ভুট্টার বাম্পার ফলন : দাম না থাকায় কৃষকরা হতাশ

নওগাঁর আত্রাইয়ে কৃষকরা এখন ভুট্টা উত্তোলনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। ছবিটি পাকাসুন্দা গ্রাম থেকে তোলা

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) সংবাদদাতা : নওগাঁর আত্রাইয়ে এবারে  ভুট্টার ফলন ভালো হলেও দাম না থাকায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে। বিঘাপ্রতি ফল ৩০ থেকে ৩৫ মণ হলেও বাজারে ৫০০ থেকে ৫৩০ টাকা মণ বিক্রি হওয়ায় কৃষকরা অনেক ক্ষেত্রে লোকসানের শিকার হচ্ছে। এমনিতেই গত ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বন্যার পানি নামার সাথে সাথে তারা বিভিন্ন চাষাবাদ করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েন। সে অনুযায়ী গতবারের তুলনায় এবারে অনেক বেশি জমিতে ভুট্টার চাষ করা হয়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে দেখা যায়, ভুট্টার ফলন ভালো হলেও বাজারে ভালো দাম না থাকায় কৃষদের মুখে হাঁসি ফুটছে না। বরং লোকসানের শিকার হয়ে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এবারে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে গতবারের চেয়ে বেশি জমিতে ভুট্টাচাষ করা হয়েছে। শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে।

উপজেলার পারকাসুন্দা গ্রামের ভুট্টাচাষি হোসেন আলী বলেন, আমি বীজ ক্রয়ে কিছুটা প্রতারণার শিকার হয়ে আমার ভূট্টার ফলন আশানুরুপ হয়নি। তথাপি বাজারে দাম কম থাকায় উৎপাদন খরচই তুলতে পারছি না। অন্যের জমি লিজ নিয়ে ভুট্টাচাষ করায় আমাকে বিঘা প্রতি প্রায় ৩ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। কাঁন্দওলমা গ্রামের মোজাহার আলী বলেন, আমাদের এলাকায় ভুট্টার ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে দাম কম হওয়ায় আমরা হতাশ হয়ে পড়েছি। তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে হালচাষ থেকে শুরু করে ভুট্টা বাজারজাত করতে বিঘাপ্রতি প্রায় সাড়ে ১১ হাজার টাকা খরচ হয়। যারা অন্যের জমি লিজ নিয়ে আবাদ করেন তাদের আরও ৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হয়। কিন্তু এক বিঘা জমির ভুট্টা সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকার উপর বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম কাউছার হোসেন বলেন, ভুট্টা লাগানোর শুরু থেকেই আমাদের উপসহকারী বৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায় চাষিদের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী প্রযুক্তি ব্যবহারে এবারে ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে। বর্তমানের এ বাজার থাকবে না। অল্প সময়ের মধ্যেই ভুট্টার দাম বাড়বে বলে আমি আশাবাদী।