সংবাদ শিরোনামঃ

মাওলানা সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড ** আমরা আশা করেছিলাম তিনি খালাস পাবেন ** বৃহস্পতি ও রোববার সারাদেশে হরতাল ** ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা : ইমেজ সঙ্কটে মিডিয়া ** সন্ত্রাসবাদের ইস্যুকে উজ্জীবিত রাখতে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্র ** মুক্ত চিন্তা বন্ধ করতেই মাহবুব উল্লাহর ওপর হামলা ** বিরোধী দলের প্রতি সরকারকে আরো সহনশীল হতে হবে ** এবার কোটি কোটি টাকার গালগল্প ** ঈদকে সামনে রেখে দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে চোরাচালান বাড়ছে ** প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে বেঁচে আছে তিস্তাপাড়ের মানুষ ** মৌলভীবাজার মনুব্যারেজ ও লেকে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় ** কাজী নজরুল ইসলামের শিক্ষা ভাবনা **

ঢাকা, শুক্রবার, ৪ আশ্বিন ১৪২১, ২৩ জিলক্বদ ১৪৩৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪

তৌহিদুর রহমান
মোবারক সাহেব সরকারি চাকরি করেছেন প্রায় চল্লিশ বছরের অধিক। বর্তমানে অবসর যাপন করছেন। অবসর গ্রহণ করেছেন সরকারের একটি মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে। কয়েক বছর আগে। অবসর নিলেও সরকার তাকে ছাড়েনি। সরকারি চাকরির এই একটা ঝামেলা। তবে মোবারক সাহেব এটাকে ঝামেলা মনে করেন না। ঝামেলা মনে করেন না তার মতো অনেকেই। অনেকের মতো মোবারক সাহেব সরকারি যে কোনো হুকুম তামিল করতে বেশ আনন্দ পান। নিজেকে সরকারের লোক ভাবতেই তিনি বেশ গর্ব অনুভব করেন। যাকে বলে খাস গোলামি চরিত্র।

তাই একটি প্রকল্পের দায়িত্ব দিয়ে নতুন একটি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের চিঠি হাতে পেয়ে তিনি বেশ খুশি হলেন। যদিও কাজটি মাত্র তিন মাসের জন্য। গত ক’বছর একটানা বসে থেকে তিনি বেশ হাঁপিয়ে উঠেছিলেন। তাই একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বাঁচলেন।

জীবনে তিনি কখনো নিরুম্ব বসে সময় কাটাননি। কাজের লোক কাজ ছাড়া মোটেও থাকতে পারেন না। মাত্র পনের বছর বয়সে দেশ ছেড়েছিলেন। সে এক করুণ গাঁথা। ১৯৪৭ এর দেশ বিভাগের সময়ের কথা। সেই দাঙ্গায় তার পরিবারের অসংখ্য সদস্য নিহত হয়েছিল। তাদের বাড়ি-ঘর সব জ্বালিয়ে দিয়েছিল হিন্দু দাঙ্গাবাজরা। জমি-জিরাতও সব দখলে নিয়েছে হিন্দুরাই। পরিবারের চৌদ্দজন সদস্যকে হারিয়ে কোনো মতে জান নিয়ে পালিয়ে এপার বাংলার এই ঢাকার শহরে এসেছিলেন একেবারে খালি হাতে।

যাহোক, নিজের যোগ্যতায় গাড়ি বাড়ি সবই করেছেন। গুজব আছে ঢাকাতে কয়েকটি বাড়ি তার এবং ওপারেও নাকি মাথা গোজার মতো একটা ব্যবস্থা করেছেন। দুটো সংসার তার। দুই সংসার মিলে ছেলে মেয়ে এগারো জন। সবাইকে দুনিয়াবি ও পরকালীন আদলে যোগ্য করে গড়েও তুলেছেন। মোবারক সাহেবের এই সাফল্যের পেছনে একটি বিষয় তাকে আলাদিনের চেরাগের মতো সাহায্য করেছে। আর তা হলো তার অরাজনৈতিক পরিচয়। তিনি একটি দলের স্থানীয় আমীর। তবে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে কখনো যুক্ত না হয়ে নিজের অরাজনৈতিক চরিত্র পুরোপুরি বজায় রাখতে পেরেছেন। এতে করে সব আমলের সরকাই তাকে বেশ কদর করেছে এবং কদর করে এখনো। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি ছেলেমেয়েদের জন্য ভালো চাকরিও যোগাড় করে নিয়েছেন। সবাই তারা এখন বেশ প্রতিষ্ঠিত।

মোবারক সাহেব দেশবিভাগের সময় আত্মীয়-পরিজনদের রক্ত বুকে নিয়ে শূন্য হাতে দেশ ছাড়লেও সেই দেশের প্রতি তার মহব্বত আগের চেয়ে হাজার গুণ বেড়েছে। তিনি মহান আল্লাহর কৃপায় ঐ দেশে প্রতিষ্ঠিত একটি রাজনীতি নিরপেক্ষ দলের এদেশীয় আমীরও হয়েছেন। এতে তার উন্নতিও হয়েছে শনৈ শনৈ। যে কোনো সরকারের সাথে ঐ দেশের যে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরে তিনি সব সময় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এটা নাকি তার পিতৃপুরুষের রক্তের ঋণ পরিশোধ। তার জন্য বেশ কিছু নামি-দামি পুরস্কারও তিনি পেয়েছেন। এমন নিরপেক্ষ চরিত্রের জন্য চাকরির ক্ষেত্রে প্রমোশনও তার কেউ কখনো আটকায়নি। তা ছাড়া উপঢৌকনও পেয়েছেন কম নয়। তিনি এসব জায়েজ মনে করেন তোহফা হিসেবে। ঘুষ হিসাবে নয়!

কিন্তু চাকরি জীবনের শেষ সময় মানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সময় সরকারি অফিসারদের এক কনভেনশনে তিনি বেশ লজ্জায় পড়েছিলেন। সেটা কেয়ারটেকার সরকারের আমলের ঘটনা। তৎকালীন প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে একজন অফিসার ফান করার জন্য তুলে ধরলেন এক অভিনব প্রস্তাব। উদ্দেশ্য কে কোন দলের সমর্থক তা প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো। প্রধান উপদেষ্টাও তাতে সমর্থন দিলেন। তাহলে এই কেয়ারটেকার সরকারের পক্ষে নিরপেক্ষভাবে কাজ করা অনেক সহজ হবে মনে করে। লান্সের পর এক ঘণ্টার বিরতি চলছিল। সহসা প্রধান উপদেষ্টার পিএস সাহেব ঘোষণা দিলেন, ‘ভদ্র মহোদয়গণ, শুধুমাত্র একটু আনন্দ-কৌতুকের জন্য আমরা একটা নতুন ধরনের খেলা খেলতে চাই, আর তা আপনাদের সবাইকে নিয়ে। মানে আপনারা সবাই হলেন, এই খেলার খেলোয়াড়। সবাই হাস্য কৌতুকের সাথেই তা গ্রহণ করল। ইতঃপূর্বে আপনারা অনেকেই নিজেদের রাজনীতি নিরপেক্ষ হিসেবে দাবি করেছেন। এখন এই খেলার মাধ্যমে তার একটা প্রমাণ দিতে হবে। আমরা জানি আমরা কেউই একেবারে নিরপেক্ষ নই। তবে আন্তরিকভাবে সৎ হলে, মনে খোদাভীতি থাকলে, দায়িত্ববান হলে নিরপেক্ষভাবে সকলের পক্ষে কাজ করা সম্ভব। তাই এই খেলার আয়োজন। খেলাটা হলো, আপনারা মনেপ্রাণে যে দলের সাপোর্ট করেন অনুগ্রহ করে সেই দলের প্রতীকের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যাবেন। এটা সম্পূর্ণ আপনাদের ঈমানদারীর উপর ছেড়ে দেয়া হলো। উল্লেখ্য, এখানে সব দলেরই প্রতীক আছে এমনকি রাজনীতি নিরপেক্ষ দলেরও একটি প্রতীক আছে। কারণ আমাদের জানা মতে এখানে প্রায় দুই শতাধিক রাজনীতি নিরপেক্ষ দলের নেতা-কর্মী উপস্থিত আছেন। আবারও বলছি মনে রাখবেন, এটা শুধুমাত্র খেলা, এর কোন প্রকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। ধন্যবাদ সকলকে। খেলা এখন শুরু হচ্ছে। সময় মাত্র দশ মিনিট। স্টার্ট!’

যথানিয়মে খেলা শুরু হলো, সবাই নির্দ্ধিধায় যার যার প্রতীকের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেলেন। দেখা গেল মোবারক সাহেব কোন লাইনেই দাঁড়াননি। সকলেরই দৃষ্টি মোবারক সাহেবের দিকে নিবদ্ধ। একেকজন একেকভাবে মোবারক সাহেবকে প্রশ্ন করছেন, কেন তিনি কোনো লাইনে দাঁড়ালেন না? তিনি নির্বাক। এক সময় প্রধান অতিথির জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি অবাক হচ্ছি এজন্য যে, আমার দলের মানে রাজনীতি নিরপেক্ষ দলের প্রায় দুই শতাধিক নেতা-কর্মী এখানে উপস্থিত ছিলেন, যাদেরকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি ও জানি! কিন্তু সেই লাইনে আমি কাউকে দেখছি না! আমার প্রশ্ন হলো, তারা সবাই গেল কোথায়?’ তাহলে তুরাগের তীরে যে লক্ষ লক্ষ লোকের জমায়েত হয় তারা কেউ কি নিরপেক্ষ নয়?

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।