সংবাদ শিরোনামঃ

গাজায় ইসরাইলি হামলা : বিপন্ন মানবতা ** ঈদের পর আন্দোলন ** ঈদবাজারের সিংহভাগই বিদেশী পণ্যের দখলে ** দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও দেশ গড়তে হলে রোজার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করতে হবে : মাওলানা আব্দুল হালিম ** রাজনীতিতে বদ্ধ ও গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে ** ঈদের আনন্দ সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে ** এ যেন সেই ‘ভাতে মারবো, পানিতে মারবো’র মতো ব্যাপার-স্যাপার! ** সারাদেশে বিভিন্ন সংগঠনের ইফতার মাহফিল ** ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ ** ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য ** সেকালের ঈদ **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ শ্রাবণ ১৪২১, ২৬ রমজান ১৪৩৫, ২৫ জুলাই ২০১৪

বরিশাল সংবাদদাতা : নদী ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে বরিশাল বিমানবন্দর, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু (দোয়ারীকা সেতু) সহ বাবুগঞ্জ উপজেলার বৃহৎ অংশ। সর্বনাশা আড়িয়াল খাঁ, সুগন্ধা ও সন্ধ্যা নদী ক্রমশই গ্রাস করছে এখানকার বিস্তীর্ণ এলাকা। বাবুগঞ্জের একটি ইটভাটা ও বসতঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘর রা করতে গিয়ে স্বপন ব্যাপারীসহ ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। স্থানীয়দের তথ্যমতে, আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে ইটভাটা ও বসতঘর দেবে যায়। এগুলো রার চেষ্টাকালে ঘরের মালিক স্বপন ব্যাপারীসহ ৪জন নদীতে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন।

নদী ভাঙনে শাহ আলম মোল্লা ও জামাল হোসেন পুতুলের ৫টি ঘর হুমকির মুখে রয়েছে। উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আড়িয়াল খাঁ, সুগন্ধা ও সন্ধ্যা নদীর ভাঙনের ফলে প্রতি বছরই উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটিই নদী ভাঙনের শিকার হচ্ছে। আশির দশক থেকে নদী ভাঙনের ফলে উপজেলার মানচিত্র ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের রফিয়াদী, কুমারিয়ার পিট, কোলচর, নমরহাট, রহমতপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শত বছরের পুরনো বাবুগঞ্জ বাজার, মীরগঞ্জ বাজার, লোহালিয়া, রাজগুরু, নতুনচর, দ্রুকাঠী, মানিককাঠী, দোয়ারিকা, বাহেরচর, ঘোষকাঠী, রাকুদিয়া, রাহুতকাঠী, ছানি কেদারপুর, কেদারপুর, মোল্লারহাট, ভাঙারমুখ, লাশঘাটা ও রহিমগঞ্জ এলাকার হাজার হাজার মানুষ নদী ভাঙনের ফলে গৃহহীন হয়ে পড়েছে। অনেকে আবার সড়কের পাশে পলিথিনের চালা দিয়ে ঝুঁপড়ি ঘর বানিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। একই সঙ্গে বসতবাড়ির পাশাপাশি কয়েক হাজার একর আবাদি জমি, গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙনের ফলে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবার। রাসি আড়িয়াল খাঁ, সুগন্ধা ও সন্ধ্যা এ তিনটি নদী শুধু ঘরবাড়ি কেড়ে নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, বিভিন্ন সময় কেড়ে নিয়েছে এ উপজেলার কয়েক শতাধিক মানুষের প্রাণ। সরেজমিন দেখা গেছে, রাুসি নদীগুলোর তাণ্ডবে মীরগঞ্জ বাজার, ফেরিঘাট, বরিশাল বিমানবন্দর, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বাবুগঞ্জ বাজার, আবুল কালাম ডিগ্রি কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার এখন চরম হুমকির মুখে রয়েছে। বিশেষ করে বিমানবন্দর ও দোয়ারিকা সেতুর উত্তর পাশে সুগন্ধা নদীর ভাঙন শুরু হওয়ায় এ দুটি স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে এসব সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ২০১২ সালে আকস্মিকভাবে আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে মীরগঞ্জ বাজার সংলগ্ন চারটি বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার সময় আনোয়ার হোসেন নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। ২০১১ সালে তৎকালীন সরকারের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহাবুবুল হক তালুকদার সুগন্ধা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। ওই সময় তিনি জরুরি ভিত্তিতে নদী ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আশ্বাসের বাণী আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। নদী ভাঙনকবলিত এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এদিকে পূর্ণিমার জোয়াড় ও পূবালী বাতাসে হিজলার ৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে গেছে। মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের স্রোতে বেড়িবাঁধটি পুরাতন হিজলা বন্দর দিয়ে ভেঙে ৫০টি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গত ৬ দিনের চেয়ে ১৭ জুলাই ৩-৪ গুণ পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের ফসলি জমি ও বাড়ি ঘর তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকের পানের বরজের পান ঝরে পড়তে শুরু করছে। চাষিদের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। সরেজমিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, মানবেতর জীবনযাপন করছে চরাঞ্চলের ৩টি ইউনিয়নের কয়েকশ’ পরিবার। পরিবারগুলোতে রান্নার উপায় না থাকায় খাদ্য পানি এবং আবাসন সঙ্কট মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়াও শিশু ও বয়স্কদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন মহামারি রোগ। এ ব্যাপারে হিজলা গৌরবদী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিলন জানান, পূর্ণিমার জোয়ারে ইউনিয়নের একতা বাজার থেকে মেমানিয়া টেকেরহাট পর্যন্ত পিচ ঢালাই রাস্তটি পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়াও ঐ ইউনিয়নের চরহিজলা, দেবুয়া, কাকরিয়া, জানপুর, চরকিলা, লালপুরসহ বিভিন্ন রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। ইউনিয়নের কয়েক লাখ টাকার মাছ, পানের বরজ, পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মেমানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন জানান, তার ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর থেকে ইন্দুরিয়া রাস্তা, দেবুয়া, চরমেমানিয়া রাস্তাগুলো পানিতে ভেঙে গেছে। বড়জালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান জানান, পূর্ণিমার জোয়ারে পানির স্রোতে পুরাতন হিজলা বন্দর দিয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে কয়েক লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এ ছাড়াও কয়েক হাজার পানের বরজ পানির নিচে রয়েছে। ধুলখোলা ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন মাতুব্বর জানান, তার ইউনিয়নের কুঞ্চপট্টি গুচ্ছগ্রাম সংযোগ রাস্তা পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আব্দুল আউয়াল আল মেহেদী জানান, প্রত্যেকটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে বিভিন্ন ইউনিয়নের তালিকা প্রদান করার জন্য নির্দেশ করা হয়েছে।

এছাড়া পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় লেবুখালীতে ডুবে যায় গ্যাংওয়ে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ফেরিঘাটের বেইলি ব্রিজ ও গ্যাংওয়ে ডুবে থাকায় বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটাগামী বাস চলাচলে বিঘœ ঘটছে। প্রতিদিন দিনে ও রাতে আট ঘণ্টা এ অবস্থা চলছে। গত ১৮ জুলাই পর্যন্ত তিনদিনে ২৪ ঘণ্টা বন্ধ ছিল সড়ক যোগাযোগ।

এদিকে জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে সদ্য রোপিত আমন ফসলের তির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।