সংবাদ শিরোনামঃ

গাজায় ইসরাইলি হামলা : বিপন্ন মানবতা ** ঈদের পর আন্দোলন ** ঈদবাজারের সিংহভাগই বিদেশী পণ্যের দখলে ** দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও দেশ গড়তে হলে রোজার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করতে হবে : মাওলানা আব্দুল হালিম ** রাজনীতিতে বদ্ধ ও গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে ** ঈদের আনন্দ সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে ** এ যেন সেই ‘ভাতে মারবো, পানিতে মারবো’র মতো ব্যাপার-স্যাপার! ** সারাদেশে বিভিন্ন সংগঠনের ইফতার মাহফিল ** ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ ** ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য ** সেকালের ঈদ **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ শ্রাবণ ১৪২১, ২৬ রমজান ১৪৩৫, ২৫ জুলাই ২০১৪

সাতক্ষীরার তালায় পুলিশের গুলিতে নিহত বিএনপি নেতা আ. হালিম

আবু সাইদ বিশ্বাস, সাতক্ষীরা থেকে : সাতীরায় পুলিশ কিলিং কণ্টাকের মাধ্যমে এক বিএনপি নেতাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও জামায়াত-শিবিরের বহু নেতা-কর্মীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ রয়েছে এ বাহিনীর বিরুদ্ধে। প্রায় ১০ ল টাকার বিনিময়ে বিএনপির এ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে বলে এলাকায় গুজব ছড়িয়েছে।

জানা যায়, ১৮ জুলাই শুক্রবার সাতীরার তালায় পুলিশের গুলি ও আ’লীগের নির্যাতনে  স্থানীয় বিএনপি নেতা শেখ আব্দুল হালিম(৩৫) বিপ্লব খুন হন। নিহত বিপ্লব তালা উপজেলার দোহার গ্রামের মৃত শেরে আলীর ছেলে, জালালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও শালিখা কলেজের প্রভাষক। আব্দুল হালিম বিপ্লব হত্যার নেপথ্যে ছিল পারিবারিক বিরোধ ও জমি দখল। নিহতের পরিবার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত ১৮ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহতের লাশ দাফনের প্রস্তুতিকালে এলাকায় পরিকল্পিতভাবে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিপ্লবকে হত্যা করানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিকল্পনাকারী তোজাম শেখের বাড়ি ভাঙচুর ও আসবাবপত্র বের করে আগুন ধরিয়ে দেয় বিুব্ধ জনতা।

নিহতের চাচী রাবেয়া খাতুন জানান, বিপ্লবের বাবা শের আলীর মৃত্যুর পর তার অধিকাংশ সম্পতি তার চাচা মোকসেদ শেখের আট ছেলে জোর করে দখল করে রেখেছিল। পরে অনেক জমিই উদ্ধার করা সম্ভব হলেও ১৬ বিঘা বিলান জমি দখলে নিতে পারেননি বিপ্লব। বিপ্লব বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত অপর চাচাতো ভাইদের সঙ্গে তার রাজনৈতিক ও পারিবারিক বিরোধ ছিল। একে অন্যের বিরুদ্ধে মামলা-পাল্টা মামলা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় ছিল। বিপ্লবের বিরুদ্ধে হত্যাসহ কমপে ১৬টি মামলা করে ছিল তার প্রতিপক্ষ। যার অধিকাংশ মামলার বাদী ছিলেন চাচাতো ভাই তোজাম্মেল, মোজাম্মেল ও মাহমুদুর রহমান।

ঘটনার রাতে বিপ্লব সবেদ শেখ নামের এক চাচার বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। মধ্য রাতে তালা থানা পুলিশের এসআই আকরাম সাতীরা ডিবি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সবেদ শেখের বাড়িতে হানা দেয়। বিপ্লবকে ধরিয়ে দিতে সহযোগিতা না করায় পুলিশ সবেদ শেখকে বেধড়ক পেটায়। একপর্যায়ে তার ডান হাতে গুলি করে পুলিশ। এদিকে পুলিশের সঙ্গে থাকা প্রতিবেশী শাহাবুদ্দীন শেখের ছেলে ফোজদার শেখ ও শাহীন শেখের নেতৃত্বে সাত-আট জন সন্ত্রাসী বিপ্লবকে ঘর থেকে বাইরে এনে পেটাতে থাকে। বিপ্লব চিৎকার করতে করতে তাদের কাছ থাকে নিজেকে ছাড়িয়ে পাশের একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। তাতেও রা হয়নি। পুলিশের উপস্থিতিতে শাহীন তাকে পুকুর থেকে তুলে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। বিপ্লব জ্ঞান হারিয়ে ফেললে পুলিশ তাকে তুলে মাগুরা এলাকায় নিয়ে গিয়ে পাঁয়ে গুলি করে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য সাতীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানেও যথাসময়ে চিকিৎসা না পেয়ে অতিরিক্ত রক্তরণে সকাল ৭টার দিকে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

এদিকে বিপ্লবকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে স্থানীয়রা গত ১৮ জুলাই শুক্রবার বিকেলে তার চাচাতো ভাই তোজাম্মেল হোসেনের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। তারা ঘরের আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। তালা থানার ওসি বাড়ি ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ১৮ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে বিপ্লবকে দাফন করা হয়। এর আগে এলাকার হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে তার নামাজে জানাজা হয়।

 à¦¸à¦°à¦•à¦¾à¦° বিরোধী আন্দোলনে তিনি এলাকায় ব্যাপক জনমত গড়ে তোলেন বলে স্থানীয় বিএনপির কর্মীরা জানান। শালিকা কলেজের শিকরা জানান, বিপ্লব একজন ভালো মানুষ ছিল। সে এলাকার মানুষের বিপদে-আপদে ছুটে আসতেন। এমনকি মায়ের সেবা করার জন্য তিনি নিবেদিত প্রাণ ছিল।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিকী জানান, রাতে ইসলামকাটি-সুজনশাহ যাত্রী ছাউনি সংলগ্ন এলাকায় কতিপয় দুর্বৃত্ত সংঘবদ্ধ হয়ে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা পুলিশকে ল্য করে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে বিপ্লব গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য সাতীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাতটার দিকে তিনি নিহত হন।

 à¦à¦° আগে গত ২৮ জানুয়ারি  সাতীরার তালায় যৌথবাহিনীর গুলিতে ইসলামকাটি ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি আজহারুল ইসলাম  নিহত হয়।  এসময় তাকে কথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহতের কথা বলে পুলিশ।

আজহারুলকে তার মাছের ঘের থেকে আটক করে থানায় নিয়ে রাতে হত্যা করা হয়। আটকের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের প থেকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়  তাকে ক্রসফায়ারের নাটক সাজিয়ে হত্যা না করতে। পরিবারের প থেকেও দাবি করা হয় তাকে হত্যা না করতে।

 à¦à¦¦à¦¿à¦•à§‡ পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সাতীরায় বিএনপি নেতা কলেজ শিক এসএম বিপ্লবকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি এক প্রতিবাদ বার্তায় বলেছেন, ‘এ ধরনের ঘটনা কেবল আওয়ামী সন্ত্রাসীরাই ঘটাতে পারে। মানুষ হত্যা ও মিথ্যা কথা বলা আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য।’ এক বিবৃতিতে গত ১৮ জুলাই শুক্রবার দুপুরে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘তালা উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কলেজশিক বিপ্লবকে গত ১৭ জুলাই রাতে (বৃহস্পতিবার) পুলিশ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে বন্দুকযুদ্ধের নামে তার পায়ে গুলি করে অকথ্য নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরাও পুলিশের সহযোগী হয়ে বিপ্লবের ওপর অমানুষিক ও পৈশাচিক নির্যাতন করায় তার মৃত্যু ঘটে।’

বিবৃতিতে এস এম বিপ্লবকে হত্যাকারী পুলিশ ও আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান মির্জা ফখরুল। একইসঙ্গে বিপ্লবের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

সর্বেেত্র বর্তমান সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতা, বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের নির্মমভাবে হত্যা, মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে নিপে, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন উস্কানীমূলক বক্তব্য ও হিংসাত্মক আচরণে দেশের মানুষ ভয়াবহ নির্মমতার যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংঘাতপূর্ণ অনিশ্চিত পরিবেশ বাংলাদেশে এর আগে আর কখনও সৃষ্টি হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে নির্লজ্জ ও জঘন্য দলীয়করণ, বর্বর ও পৈশাচিক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী তাণ্ডব এবং বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদেরকে হত্যা, গুম, অপহরণ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের মানুষের আর কখনও দেখেনি।’

তিনি বলেন, ‘৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গায়ের জোরে রাষ্ট্রীয় মতা দখলকারীদের বিরুদ্ধে গোটা জাতি যখন সোচ্চার তখন তারা আরও অস্থির ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীকে তারা দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর মতো ব্যবহার করে গণহত্যা চালাচ্ছে। একইসঙ্গে দলীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ জনগণের ওপর প্রকাশ্য হামলা চালানোর মদদ দেয়া হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে যাদের বড় বড় বুলি আওড়াতে দেখা যায় তাদের হাতেই আজ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব চরম হুমকির মুখে।’ এ সময় দেশের চলমান রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আইন-শৃংখলা পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।