ঐতিহাসিক ২৮ অক্টোবর জাতির কাছে প্রেরণার বাতিঘর : মুহাম্মদ শাহজাহান
৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৫৮
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামী আপসহীন। যার প্রমাণ ঐতিহাসিক ২৮ অক্টোবর। সেদিন সারা দেশে জামায়াতের কর্মীরা জীবন উৎসর্গ করেছে ইসলামী আন্দোলন ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য। আমাদের শহীদরা শুধু জামায়াতের কাছে নয়, পুরো জাতির কাছে প্রেরণার বাতিঘর।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর উদ্যোগে ফেডারেশনের নগর কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডবে শাহাদাতবরণকারী শহীদ রুহুল আমিন ও শহীদ হাবিবুর রহমানসহ সকল শহীদদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও নগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও নগরের ভারপ্রাপ্ত আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
মুহাম্মদ শাজাহান বলেন, সেই সময় আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের কী পরিকল্পনা ছিল, তা পরবর্তী ১৭ বছরে জাতি পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছে। তারা বাংলাদেশকে ভারতের একটি তাঁবেদার রাজ্যে পরিণত করার জন্য সেদিন এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী জামায়াতে ইসলামী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর চূড়ান্ত আঘাত করেছিল। তারা চেয়েছিল এদেশের মাটি থেকে ইসলামী আন্দোলন ও তার নেতৃত্বকে মুছে ফেলার। তার প্রথম পরিকল্পনা হিসেবে তারা সেই সময় ২৮ অক্টোবরকে বেছে নিয়েছে। তারা সারা দেশে লগি বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে শহীদ মুজাহিদ, মাসুম, জসিম, হাবিবুরসহ অসংখ্য নেতাকর্মী ও সাধারণ নাগরিককে হত্যা করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে পঙ্গু করে দিয়েছে। আমাদের অফিসগুলো জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিয়েছে। একই সাথে বহু মানুষের ঘরবাড়ি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও প্রতিষ্ঠান পুড়িয়েছে। পুরো বিশ্ব সেদিন হতবাক হয়ে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, রাজনীতির নামে এ কোন ধরনের জ্বালাও-পোড়াও নীতি। আসলে তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতার মসনদ দখল করা। তারা ভারতের প্রেসক্রিপশনে এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিলিয়ে দিয়ে দেশ ও জাতির ওপর অসভ্য ও বর্বর আঘাত হেনেছে।
মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, সেদিন জামায়াতের কর্মীরা জীবনবাজি রেখে নেতৃবৃন্দকে রক্ষা করেছে। ফলে তাদের একটি বড় পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে যায়। জামায়াতের দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব থাকতে এদেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য পরিণত করা যাবে না এ বিশ্বাস তাদের ছিল। পরবর্তীতে ভারতের অন্য একটি প্রেসক্রিপশনে তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের নামে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে। নেতৃবৃন্দ জীবন দিয়েছেন, কিন্তু আপস করেননি। তাদের সেই আত্মত্যাগের ফসল জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। আজকে দেশের মানুষ জানে কাদের কাছে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ। আজকে জামায়াতের যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তার পেছনে ২৮ অক্টোবরের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ২৮ অক্টোবের স্মৃতি ভুলবার নয়। আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা লগি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে মানুষ হত্যার যে পৈশাচিক দৃশ্যের অবতারণা করেছিল, যা মানবজাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে রচিত হয়েছে।
এস এম লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মকবুল আহমেদ ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুন্নবী, দপ্তর সম্পাদক স ম শামীম, সহ-প্রচার সম্পাদক আব্দুর রহীম মানিক, ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম ও পাঠাগার সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।