সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ


১৫ মে ২০২৫ ১৫:৩৯

‘কাশ্মীরের ৯৩ শতাংশ মুসলিম ভারতের সঙ্গে থাকতে চায় না’

পাকিস্তান-ভারত দ্বন্দ্বের মূলত কাশ্মীর সংকটকে ঘিরেই এবং সেখানকার ৯৩ শতাংশ মুসলিম ভারতের সঙ্গে থাকতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব আয়াজ আহমদ চৌধুরী। রোববার (১১ মে) জিও পাকিস্তানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি। আয়াজ আহমদ চৌধুরী বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের ৯৩ শতাংশ মানুষ মুসলিম, কিন্তু ১৯৪৭ সালে গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এ অঞ্চল পাকিস্তানের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তার মতে, সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা আবারও প্রমাণ করেছে, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারতের উচিত বুঝে নেওয়া যে, কাশ্মীরিরা তাদের সঙ্গে থাকতে চায় না। তাদের দমননীতিই সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করছে। পাকিস্তানের সাবেক এ পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, পাকিস্তানের ‘পরিমিত পাল্টা জবাবে’ ভারতের আতঙ্ক এটা প্রমাণ করে, ন্যায়বিচারের শক্তি এখনো আছে। ভারত যত দ্রুত বাস্তবতা মেনে আলোচনা শুরু করবে, ততই উভয় দেশের মঙ্গল।
এদিকে কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ২০১৯ সালে ভারতের সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর থেকেই অঞ্চলটিতে স্বায়ত্তশাসন বিলুপ্ত এবং রাজনৈতিক অধিকার খর্ব হয়েছে। সেই সময় হাজারো রাজনীতিককে গ্রেফতার করা হয়, ইন্টারনেট বন্ধ থাকে মাসের পর মাস এবং কড়া সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত থাকে। মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ, কাশ্মীরে মানুষের বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে। প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে গত ৭ মে দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশকিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও। এরপর থেকে দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে পরিস্থিতি, গত কয়েকদিনে রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করে যা। এমন পরিস্থিতিতে চিরবৈরী দুদেশের মধ্যকার উত্তেজনা থামাতে এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। টানা ৪৮ ঘণ্টা আলোচনার পর গত শনিবার (১০ মে) দুদেশকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে সক্ষম হয় দেশটি। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীর সংকট থেকে নজর সরিয়ে রাখলে এ যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। আল জাজিরা।

অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশনের অভিযোগে আবুধাবিতে বন্ধ করে দেয়া হলো বাঙালি রেস্তোরাঁ

আবুধাবি কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাঙালি খাবার পরিবেশনকারী একটি রেস্তোরাঁ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খাদ্য নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য সরাসরি হুমকিস্বরূপ খাবার পরিবেশনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আবুধাবির হামদান বিন মোহাম্মদ স্ট্রিটে অবস্থিত রূপশি বাংলা রেস্তোরাঁ এলএলসিকে পরিদর্শনকারী কর্মকর্তারা প্রশাসনিক নোটিশ দিয়েছেন। বাণিজ্যিক লাইসেন্স নম্বর ঈঘ-১০৩৭৩৮৮-এর অধীনে পরিচালিত রেস্তোরাঁটি আমিরাতে খাদ্য নিরাপত্তা এবং সংশ্লিষ্ট বিধিমালা সম্পর্কিত ২০০৮ সালের আইন নং (২)-এর গুরুতর লঙ্ঘন করেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের মতে, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ প্রতিবেদনে বারবার উচ্চঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পূর্ববর্তী সতর্কতা সত্ত্বেও রেস্তোরাঁটি এ সমস্যাগুলো সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে, যা ভোক্তা স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করে এবং প্রতিষ্ঠিত খাদ্য নিরাপত্তা মান লঙ্ঘন করেছে। সব লঙ্ঘন সংশোধন না করা, রেস্তোরাঁটি সম্পূর্ণরূপে পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা মেনে চলা এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি দূর না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ কার্যকর থাকবে। প্রতিষ্ঠানটি সমস্ত বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা মানদণ্ড পূরণ করার পরেই কেবল কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা যেতে পারে। গত সপ্তাহে কর্তৃপক্ষ আরও দুটি খাদ্য-সম্পর্কিত ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে: মানা রুচুলু রেস্তোরাঁ এবং ওয়াফি হাইপারমার্কেট। খালিজ টাইমস।

চেনাব নদীর পানি ছাড়তে বাধ্য হলো ভারত

অবশেষে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরদিন গত রোববার (১১ মে) চেনাব নদীর বাগলিহার ও সালাল বাঁধের একাধিক গেট খুলে দিল ভারত। একরকম বাধ্য হয়েই ভারতকে পানি ছাড়তে হলো। এর ফলে আবারো পাকিস্তানের দিকে পানি প্রবাহিত হতে শুরু করেছে। পেহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত একাধিক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। খবর দ্যা ডনের। এর মধ্যে অন্যতম ছিল পাকিস্তানের দিকে পানি প্রবাহ বন্ধ করা এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ। ভারত সরকার সাময়িকভাবে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে এবং চেনাব নদীর প্রবাহ আটকে দেয়। ফলে পাকিস্তানের দিকে চেনাব নদীর পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। ভারতের প্রশাসন জানিয়েছে, সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে টানা বৃষ্টির কারণে বাগলিহার ও সালাল বাঁধে পানিরস্তর বেড়ে গিয়েছিল। বাঁধে অতিরিক্ত পানি জমে থাকায় তা ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পানি না ছাড়লে বাঁধের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারত। যদিও সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত বাঁধের গেট খোলার প্রকৃত কারণ জানানো হয়নি। গেট খোলার ফলে পাকিস্তানে চেনাব নদীর শুকিয়ে যাওয়া এলাকাগুলোতে আবারো পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে একইসঙ্গে নদীর নিচু অঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানি প্রশাসন ইতোমধ্যেই কিছু এলাকায় বন্যার সতর্কতা জারি করেছে। দ্য ডন।

সংলাপের মধ্যেই ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা
আলোচিত পরমাণু প্রকল্পকে ঘিরে ইরানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের মধ্যেই দেশটির বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার এ নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে ইরানের সামরিক বাহিনীর সমরাস্ত্র বিষয়ক গবেষণা সংস্থা অর্গানাইজেশন অব ডিফেন্সিভ ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চের (এসপিএনডি) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হয়েছে এ নিষেধাজ্ঞা। তিন কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের নাম-পরিচয় গোপন রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়া এ কর্মকর্তারা ইরানের পরমাণু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ওই তিন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় সম্পদ ইতোমধ্যে ফ্রিজ করা হয়েছে এবং যতদিন এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠানও তাদের সঙ্গে কোনো প্রকার আর্থিক চুক্তি করতে পারবে না।
পৃথক এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও বলেছেন, ‘ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি ধারাবাহিক ও উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারণ করে চলেছে এবং পারমাণবিক অস্ত্র এবং পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য দ্বৈত-ব্যবহারের গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বে ইরানই একমাত্র দেশ যাদের কোনো পরমাণু অস্ত্র নেই কিন্তু ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত রয়েছে।’ প্রসঙ্গত, ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে গত বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যাপক অস্বস্তিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ ওয়াশিংটনের অভিযোগ ইরানের পরমাণু প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য পারমাণবিক বোমা বানানো। দেশটিকে এ কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ‘জ্যাকোপা’ নামে একটি চুক্তি করেছিলেন। তবে তার উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে তার প্রথম শাসন মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রকে এ চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। ফলে চুক্তিটি অকার্যকর হয়ে যায় এবং ইরানও তার পরমাণু প্রকল্পে মনোনিবেশ করে। গেল কয়েক বছরে পারমাণবিক বোমার প্রধান উপকরণ ইউরেনিয়ামের মজুদও সমৃদ্ধ করেছে দেশটি।
গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে পরমাণু শক্তির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) জানিয়েছিল, ইরান ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ করছে। যদি এই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা হয়, সেক্ষেত্রে অনায়াসে এই ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে অন্তত ৬টি পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব। আইআইএ-এর এই তথ্যে সচেতন হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। ট্রাম্প নিজে ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি দেন। ইরানের সরকারও তাতে সাড়া দেয়। কাতারের রাজধানী দোহায় চলছে ওয়াশিংটন ও তেহরানের কর্মকর্তাদের সংলাপ এবং ইরানের চাওয়া অনুযায়ী সংলাপে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় আছে ওমান। সংলাপের চতুর্থ রাউন্ড শেষ হয়েছে গত ১২ মে সোমবার। ওই দিনই দেশটির বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করল যুক্তরাষ্ট্র। এএফপি, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড।

ইসরাইল থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করছে নরওয়ে

দখল করে নেয়া পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের জ্বালানি সরবরাহ দেয়ার অবকাঠামোর মালিক এবং তা অপারেট করে বলে ইসরাইলের পাজ রিটেইল অ্যান্ড এনার্জিতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে নরওয়ের সার্বভৌম সম্পদ বিষয়ক তহবিল। তহবিলের এথিকস ওয়াচডগ বলে পরিচিত কাউন্সিল অন এথিকস ব্যবসার মানদণ্ড বজায় রাখা নিয়ে কঠোরতা অবলম্বন করে গত আগস্টে। তারপর গত ১১ মে রোববারের এ অর্থ প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘটনা দ্বিতীয়। ফিলিস্তিনের দখল করে নেয়া ভূখণ্ডে ইসরাইল যেসব অপারেশন চালাচ্ছে তার প্রতিবাদে এভাবে অর্থ বা বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছে দেশটি। প্রথমে তারা গত ডিসেম্বরে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয় ইসরাইলি টেলিযোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান বেজেক থেকে। ওই তহবিলের বিশ্বজুড়ে ৯ হাজার কোম্পানিতে শেয়ার আছে। তার মধ্যে তারা শতকরা ১.৫ ভাগের মালিক। নরওয়ের পার্লামেন্টের নির্দেশনা অনুসরণ করে তারা এ ব্যবসা পরিচালনা করে। একই সঙ্গে নিজেদেরকে পরিবেশ, সামাজিক ও সুশাসনের ক্ষেত্রে নিজেদের নেতৃস্থানীয় হিসেবে দেখে তারা। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ইসরাইল থেক যেসব কোম্পানি তাদের সম্পর্ক কর্তন করেছে তার মধ্যে ইউরোপিয়ান এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি অন্যতম। উল্লেখ্য, ইসরাইলে গ্যাস স্টেশন বিষয়ক সবচেয়ে বড় অপারেটর পাজ রিটেইল। দখল করে নেয়া পশ্চিমতীরে আছে তাদের নয়টি স্টেশন। সর্বশেষ বিনিয়োগ প্রত্যাহারের সুপারিশের বিষয়ে কাউন্সিল অন এথিকস বলেছে, পশ্চিমতীরে ইসরাইলি বসতিতে জ্বালানি সরবরাহ করে এমন অবকাঠামো পরিচালনায় জড়িত পাজ রিটেইলার। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এসব বসতি স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া তাদেরকে টিকিয়ে রাখার মধ্য দিয়েও আন্তর্জাতিক আইন অব্যাহতভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত বছর জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, অবৈধভাবে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে আছে ইসরাইল এবং সেখানে তারা বসতি নির্মাণ করেছে। রয়টার্স।

শেষ হলো তুরস্কের চার দশকের সংঘাত
কুর্দি সংগঠন পিকেকের বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তুরস্কের চার দশকের সংঘাত। গত ১২ মে সোমবার সংগঠনটি পিকেকের নামে পরিচালিত সব ধরনের কার্যক্রমের বিলুপ্তির ঘোষণা দেয়। এক বিবৃতিতে বলা হয়, কুর্দি সমস্যা এখন এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে তা গণতান্ত্রিক রাজনীতির মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। সংগঠনের ১২তম কংগ্রেসে পিকেকের কাঠামো ভেঙে দেয়া ও সশস্ত্র সংগ্রামের অবসানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়া পরিচালনা করবেন কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওকালান। অবশ্য বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়নি যে এ সিদ্ধান্ত ইরাক, সিরিয়া ও ইরানের পিকেকে-সম্পৃক্ত গোষ্ঠীগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য কিনা। নিরস্ত্রীকরণের পদ্ধতি বা যোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ নিয়েও কিছু বলা হয়নি। তারা জানায়, ‘তুর্কি-কুর্দি সম্পর্ক পুনর্গঠন অনিবার্য’। এ সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির দ্বারা প্রভাবিত। এটি তুরস্কের সরকার ও সব রাজনৈতিক দলকে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় বলেছে, এ সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে ‘উগ্রবাদমুক্ত তুরস্ক’ গঠনের উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। সরকার এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।
ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (একে) পার্টির মুখপাত্র ওমর সেলিক বলেছেন, ‘যদি উগ্রবাদ পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়, তাহলে একটি নতুন যুগ শুরু হবে।’ তিনি যোগ করেন যে, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবে কার্যকর করতে হবে এবং সব দিক থেকেই তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।’ ১৯৭৮ সালে ওকালান পিকেকে গঠন করেন। তৎকালীন লক্ষ ছিল দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে একটি স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। পরে তারা তুরস্কের অভ্যন্তরে স্বায়ত্তশাসনের দাবি তোলে। মার্চে ওকালান অস্ত্র ত্যাগ ও দল ভাঙার আহ্বান জানান। এরপর পিকেকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। দীর্ঘ সংঘাতে অন্তত ৪০ হাজারের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এরদোগানের সাথে কুর্দিদের সম্পর্ক জটিল। তিনি একসময় তাদের অধিকার সমর্থন করে ভাষা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। ২০১৩ সালে তিনি এইচডিপির মাধ্যমে পিকেকের সাথে শান্তি আলোচনা শুরু করেন। কিন্তু ২০১৫ সালে আলোচনা ভেঙে পড়ে এবং সম্পর্কের অবনতি ঘটে। পরে কুর্দিপন্থী দলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়ন চালানো হয়। সরকার তাদের পিকেকের সাথে সম্পর্কিত বলে অভিযুক্ত করে। মাইনরিটি রাইটস গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, কুর্দিরা তুরস্কের বৃহত্তম সংখ্যালঘু। তারা দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৫-২০ শতাংশ। কুর্দিদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে উত্তর সিরিয়া, ইরাক ও ইরানেও। সিএনএন।

ট্রাম্পকে বিলাসবহুল জেট ‘উপহার’ দিচ্ছে কাতার
হোয়াইট হাউস ও কাতারের রাজপরিবারের মধ্যে একটি বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭-৮ জেট বিমানের সম্ভাব্য হস্তান্তর নিয়ে আলোচনার খবর সামনে এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন উপহার হিসেবেই এ জেট বিমান হস্তান্তর করছে কাতার। তবে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা এ বিমানটি ‘সাময়িকভাবে’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ান হিসেবে দেয়ার কথা ভাবছে কাতার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ রোববার (১১ মে) এক পোস্টে একে ‘উপহার’ হিসেবেই উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প লিখেছেন, ‘৪০ বছরের পুরোনো এয়ার ফোর্স ওয়ান-এর পরিবর্তে, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, তারা (কাতার) আমাদের প্রতিরক্ষা বিভাগকে একটি ৭৪৭ বিমান উপহার দিচ্ছে। এটা দেখেই ডেমোক্র্যাটরা বিরক্ত।’ তবে এক বিবৃতিতে কাতারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি উপহার হিসেবে নয় বরং ‘সাময়িক ব্যবহারের’ জন্য দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা কাতারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘বিষয়টি এখনো কাতারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের আইনি বিভাগে পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে। এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের বিমান হস্তান্তরের বিষয়টি আইনগত ও নৈতিকভাবে নানা প্রশ্নের জন্ম দিতে পারে। কারণ কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে উপহার গ্রহণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে কড়া আইন ও নীতিমালা রয়েছে। আইনি বিষয় নিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বিদেশি সরকার থেকে যে কোনো উপহার সম্পূর্ণ আইন মেনে গ্রহণ করা হয়। ট্রাম্প প্রশাসন স্বচ্ছতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ট্রাম্পের মেয়াদ শেষে এ বিমানটি তার প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরিতে ‘দান’ করা হতে পারে। উল্লেখ্য, এয়ার ফোর্স ওয়ান সাধারণত পরবর্তী প্রশাসনগুলোর জন্য রেখে দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র রোনাল্ড রিগানের লাইব্রেরিতেই একটি পুরনো এয়ার ফোর্স ওয়ান সংরক্ষিত আছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কাতারের সঙ্গে তার কূটনৈতিক সম্পর্ক ইতিবাচক ছিল। রয়টার্স।

ইচ্ছাকৃত যুদ্ধ দীর্ঘায়ন করছে ইসরাইল: স্টিভ উইটকফ
গাজা যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে এ যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছে এবং একইসঙ্গে বন্দি মুক্তি সংক্রান্ত যেকোনো চুক্তিকে বাধাগ্রস্ত করছে। তাঁর এমন বক্তব্য মার্কিন কূটনীতির চেনা ধারা থেকে এক ধরনের ভিন্ন সুর তুলে ধরছে; বিশেষ করে এমন সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্কের জটিলতা বাড়ছে।
এ মন্তব্যের পেছনে রয়েছে সম্প্রতি একটি বৈঠকের প্রসঙ্গ। উইটকফ ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে আটক থাকা ইসরাইলি বন্দিদের পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন, যেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই বন্দিরা ফিরে আসুক, কিন্তু ইসরাইল এখনো যুদ্ধ থামাতে প্রস্তুত নয়।’ এ বৈঠকের সময় ও স্থান নির্দিষ্ট না হলেও, ইসরাইলের চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র উইটকফের বক্তব্য নিশ্চিত করেছে। তাঁর মতে, বর্তমানে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তির চুক্তিই সবচেয়ে যৌক্তিক এবং বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ।
স্টিভ উইটকফ এ আলোচনায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘ইসরাইল সরকার যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছে, অথচ বাস্তবে আর কোনো অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখনো একটি সুযোগ রয়েছে, যা আমরা আশা করি ইসরাইল ও মধ্যস্থতাকারীরা কাজে লাগাবে। আমরা সকল পক্ষের ওপর চাপ দিচ্ছি এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে।’ এ বক্তব্য এসেছে এমন সময়ে, যখন হামাস যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলেকজান্ডার ইদান নামের এক মার্কিন-ইসরাইলি নাগরিক সৈনিকের মুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য নতুন পথ তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আনাদলু এজেন্সি।

সামরিক আগ্রাসনের মাধ্যমে গাজা যুদ্ধ সমাধানযোগ্য নয়: জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন ইসরাইলে সফররত জার্মানির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ভাডেফুল। জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত পোস্টে বলা হয়, ভাডেফুল স্থানীয় সময় গত রোববার (১১ মে) ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তিনি উল্লেখ করেন যে গাজায় সংঘাত সামরিক উপায়ে সমাধান করা সম্ভব নয়। তিনি ‘হামাস’ ছাড়াই গাজার পুনর্গঠনের জন্য একটি রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানান। ভাডেফুল বলেন, যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজা পুনর্গঠনের যেসব পরিকল্পনা প্রস্তাব আরব রাষ্ট্রগুলো দিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে একটি ভালো সূচনা হতে পারে। তিনি যোগ করেন, ‘গাজা ফিলিস্তিনি অঞ্চলের অংশ। আমি আমার ইসরাইলি সমকক্ষের সাথে একমত হয়েছি যে গাজার ফিলিস্তিনিদেরও নিজেদের ভবিষ্যৎ রয়েছে। তাদের কাউকে জোরপূর্বক সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হবে না এবং ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গাজায় উপস্থিতি কেবল অস্থায়ী হতে পারে। এপি।

ফিলিস্তিনপন্থী সেই রুমিয়াসার জামিন
গ্রেফতারের প্রায় ছয় সপ্তাহ পর লুইজিয়ানার একটি অভিবাসী আটককেন্দ্র থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুমিয়াসা অজটুর্ক। এ সময় তার মুক্তির জন্য কাজ করেছেন কিংবা সমর্থন দিয়েছেন, এমন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। গত ৯ মে শুক্রবার তাকে মুক্তির আদেশ দেন একটি ফেডারেল আদালত। ছাড়া পাওয়ার পরদিনই বোস্টনে ফিরে এসেছেন রুমিয়াসা। ৩০ বছর বয়সী রুমিয়াসা তুরস্কের নাগরিক। তিনি টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের পিএইচডি গবেষক ছিলেন। গত ১০ মে শনিবার বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের রুমিয়াসা বলেন, ‘অত্যন্ত কঠিন একটি সময় অতিবাহিত করার পর লেখাপড়ায় ফিরে যেতে চাই।’ ‘গত ৪৫ দিনে আমার স্বাধীনতা ও শিক্ষা দুটিই হারিয়েছি আমি। তবে যারা আমাকে সমর্থন, সহায়তা কিংবা এ খারাপ সময়ে খোঁজ নিয়েছেন তাদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ’, বলেন তিনি।
এর আগে গত ২৫ মার্চ ম্যাসাচুসেটসের সামারভিলে নিজের বাসা থেকে বের হলে তাকে অনেকটা ‘অপহরণের’ কায়দায় গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তার ঘনিষ্ঠরা। অ্যাসোসিয়েটস প্রেসের (এপি) ভিডিওতে দেখা যায়, মুখঢাকা সাত ব্যক্তি তাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন তিনি চিৎকার করছিলেন। এরপর তাকে নিউ হ্যাম্পশায়ার ও ভার্মন্টে নিয়ে যান ম্যাসাচুসেটসে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। পরে লুইজিয়ানার বাসিলের একটি আটক কেন্দ্রে পাঠানো হয় রুমিয়াসাকে। তার ভিসাও বাতিল করা হয়। পরে তার আটকের বিরুদ্ধে মামলা করেন রুমিয়াসা। মামলাটি বর্তমানে ভার্মন্টের বার্লিংটনে ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ উইলিয়াম সেশন্সের কাছে বিচারাধীন রয়েছে।
ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ, গত বছর ইসরাইল ও গাজা যুদ্ধ সম্পর্কে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে আরেকজন লেখকের সঙ্গে মিলে একটি কলাম লিখেছিলেন তিনি। এ কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এতে সাংবিধানিক অধিকার ও বাকস্বাধীনতার ভয়াবহ লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি করেন রুমিয়াসা। রুমিয়াসার এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার দাবির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান।

যুদ্ধবিরতির সময়সীমা সত্ত্বেও ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা
ইউক্রেন জানিয়েছে, গত ১২ মে সোমবার কিয়েভের মিত্ররা মস্কোকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু করতে রাজি করানোর চেষ্টা করলেও রাতভর শতাধিক ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, স্থানীয় সময় রাত ১১টা থেকে রাশিয়া ১০৮টি ‘শাহেদ’ এবং অন্যান্য ধরনের ড্রোন দিয়ে হামলা চালায় শত্রুপক্ষ। এর মধ্যে ৫৫টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানায় বিমান বাহিনী। এএফপি।

বাণিজ্য যুদ্ধ প্রশমনে শুল্ক কমিয়ে আনার চুক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পারস্পরিক শুল্ক ১১৫ শতাংশ কমাতে একমত হয়েছে। এতে বিশ্ব অর্থনীতিকে বিঘ্নিত করা দীর্ঘদিনের বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তাপ কিছুটা প্রশমিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত সোমবার (১২ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সোমবার ঘোষণা করেছে যে তারা পারস্পরিক শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে জেনেভায় চীনা প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকের পর মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট সাংবাদিকদের জানান, উভয় দেশ পরবর্তী ৯০ দিনের জন্য নতুন কোনো বাণিজ্য পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময়ে পারস্পরিক শুল্ক ১১৫ শতাংশ হ্রাস পাবে।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, এ চুক্তির মাধ্যমে দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিলো। দীর্ঘদিনের শুল্ক আরোপ ও পাল্টা জবাব বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছিল। উল্লেখ্য, এ পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আরো স্থিতিশীল আলোচনার ভিত্তি গঠনে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিবেশও স্বস্তিদায়ক হতে পারে। রয়টার্স।

ইসরাইলকে ধুলায় মিশিয়ে দেয়ার হুমকি ট্রাম্পের!
ইসরাইলকে ধুলায় মিশিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ইসরাইল যদি কথা না শোনে, তাহলে ধুলায় মিশিয়ে দেয়া হবে। গত শনিবার (১০ মে) মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট মনে করছেন, ইসরাইল তার উপসাগরীয় সফর নষ্ট করে দিতে পারে। সেজন্য তারা সমস্যার সৃষ্টি করছে। সূত্রটি আরো জানিয়েছে, গত ৬ মে মঙ্গলবার থেকে তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় অঞ্চলে সফর করবেন ট্রাম্প। তিনি চান, এ সময় যেন মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি পায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইসরাইল যদি কথা না শোনে, তাহলে ধুলায় মিশিয়ে দেবেন।
এক সিনিয়র পশ্চিমা কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের মধ্যে যে ফাটল তৈরি হয়েছে, তা খুবই তীব্র। ইসরাইল ইস্যুতে হতাশাজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।’ বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের মতে, সফরের আগেই কিছু সংবেদনশীল ইস্যু নেতানিয়াহুকে বিব্রত করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইরানের সাথে চলমান পারমাণবিক আলোচনা। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সম্প্রতি এ আলোচনার প্রতি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মার্কিন প্রোগ্রাম পরিচালক মাইকেল ওয়াহিদ হান্না বলেন, ট্রাম্প এখন ইসরাইলের স্বার্থ বিবেচনা না করেই ইরান ও ইয়েমেন বিষয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। অবশ্য এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি ইস্যুতে তেমন কিছু দেখা যায়নি। মিডল ইস্ট আই।

মিয়ানমারে স্কুলে জান্তা বাহিনীর বর্বর হামলায় শিশুসহ ২২ জন নিহত
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে সামরিক জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় একটি স্কুলে ২২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২০ জনই শিশু। আর অন্য দুজন শিক্ষক। গত সোমবার (১২ মে) এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল। ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের ওয়ে থেইন কুইন গ্রামে। এটি সম্প্রতি সংঘটিত ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ওই ভূমিকম্পে ইতোমধ্যে নিহত হয়েছে অন্তত ৩,৮০০ জন মানুষ। এই প্রেক্ষাপটেই সেনাবাহিনী মে মাসজুড়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল, যাতে করে পুনর্গঠন ও ত্রাণ তৎপরতা চালানো যায়। কিন্তু সেই ঘোষণার মধ্যেও স্কুলে চালানো হলো এ নিষ্ঠুর হামলা। এক শিক্ষক জানান, ‘আমরা শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু যুদ্ধবিমান এত দ্রুত ছিল যে পালানোর সময়ই পাইনি।’ স্থানীয় শিক্ষা বিভাগও প্রাণহানির এ সংখ্যা নিশ্চিত করেছে। জান্তার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
মিয়ানমারে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ চলছে। জান্তা সরকার একদিকে বিক্ষোভ দমন করছে বর্বরভাবে, অপরদিকে বহু জাতিগত গোষ্ঠী ও গণতান্ত্রিক প্রতিরোধ যোদ্ধারা যৌথভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। বিশেষ করে সাগাইং, কারেন এবং চিন প্রদেশে লড়াই তীব্রতর হয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় জান্তা বাহিনী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে বড় ধরনের ক্ষতিও স্বীকার করেছে। কিন্তু এসব প্রতিরোধ এবং বিশ্বজনমতের চাপে পড়েও জান্তার বর্বরতা থামছে না। শিশুদের ওপর এই হামলা প্রমাণ করে, মিয়ানমারে শান্তির প্রত্যাশা এখনো অনেক দূরের পথ। টিআরটি গ্লোবাল।

ত্রিপোলিতে আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নাগরিকদের ঘরে থাকার আহ্বান
উত্তর আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ লিবিয়ায় আবারও নতুন করে সহিংসতার আগুন জ্বলে উঠেছে। রাজধানী ত্রিপোলিতে হঠাৎ শুরু হওয়া সশস্ত্র সংঘর্ষে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে দেশের জাতীয় ঐক্য সরকার (জিএনইউ) নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে, আর এ পরিস্থিতিতে জনজীবন একরকম অচল হয়ে পড়েছে। গত সোমবার (১২ মে) রাতে সংঘর্ষ শুরু হয় রাজধানী ত্রিপোলির সালাহ আল-দিন ও আবু সালিম এলাকায়। সংঘর্ষে লিবিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ৪৪৪তম ব্রিগেড সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। এ সময় ‘স্ট্যাবিলিটি সাপোর্ট অ্যাপারাটাস’ নামে একটি আধাসামরিক বাহিনীর প্রধান আবদুল গনি আল-কিকলির মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে। দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে বাসিন্দাদের ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যেন কোনোরকম প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে।
এমন সহিংস পরিস্থিতিতে ত্রিপোলির মিতিগা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রাখে, যদিও কিছুক্ষণ পর বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার (১৩ মে) সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টারগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে যাতে দ্রুত চিকিৎসাসেবা দেওয়া যায়। জাতিসংঘের লিবিয়া সহায়তা মিশন (টঘঝগওখ) পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং উত্তেজনা কমাতে সব পক্ষকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের লিবিয়া দূতাবাসও শান্তির পক্ষে সোচ্চার অবস্থান জানিয়েছে। ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকেই লিবিয়ায় চলছে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও মিলিশিয়াদের দখলদারিত্বের লড়াই। আজকের ত্রিপোলির সংঘর্ষ সেই দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতেরই আরেকটি রূপ। সাধারণ নাগরিকদের জীবন যখন বার বার বন্দুকের গর্জনের নিচে থমকে যায়, তখন আন্তর্জাতিক মহলের দায়িত্ব আরও বড় হয়ে দাঁড়ায়। শান্তি, সংলাপ এবং নিরাপত্তা- এ তিন পথেই কেবল উত্তপ্ত লিবিয়ায় স্থিতিশীলতার আশা জাগানো সম্ভব। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান