জামায়াত বঞ্চিত মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত ছিল আছে এবং থাকবে : নূরুল ইসলাম বুলবুল
১ মে ২০২৫ ১৭:৪৪
অতীতে নির্বাচনের মাধ্যমে কেবল ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বার বার অসৎ নেতৃত্বের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যাওয়ার কারণে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। বরং যখন যেই দল ক্ষমতায় বসে, তখন সেই দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে তৃণমূলের কর্মী পর্যন্ত সবাই দুর্নীতি, চাঁদাবাজি আর সন্ত্রাসীতে লিপ্ত হয়েছে। জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি বলে তাদের কোনো দায়বদ্ধতা ছিল বলে তারা মনে করেনি। নিজের খেয়াল-খুশিমতো রাষ্ট্র পরিচালনা করে জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে। জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। আর জামায়াতে ইসলামী জনগণের অধিকারের দাবিতে রাজপথে এলেই রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে দমন-নিপীড়ন চালিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর চেয়ে বড় কোনো মজলুম দল বাংলাদেশে নেই। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর, সেক্রেটারি জেনারেলসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে বাছাই করে হত্যা করেছে। দলের নিবন্ধন কেড়ে নিয়েছে, প্রতীক কেড়ে নিয়েছে, সর্বশেষ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধও করেছে।
গত ২৭ এপ্রিল রোববার রাতে শাহজাহানপুর পূর্ব থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ভিন্ন ধর্মাবলম্বী প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী কেন গণমানুষের সংগঠন হলো? কারণ জামায়াতে ইসলামী কখনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না গিয়েও দেশ ও জাতির কল্যাণে নীরবে-নির্বিঘেœ কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীর ৪ দফা কর্মসূচির অন্যতম একটি সমাজ সংস্কার ও সমাজসেবা। সমাজসেবার অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী সমাজের শোষিত, নিপীড়িত, বঞ্চিত মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত ছিল, আছে এবং থাকবে। দল-মত, ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে জামায়াতে ইসলামী মানবিক প্রয়োজনে সমানভাবে সমাজসেবা করে আসছে। এটাই ইসলামের শিক্ষা। এটাই ইসলামী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য। ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ হলে ভিন্নধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা হবে। তাদের জান ও মালের সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রই পালন করবে। সকল ধর্মের মানুষ সমাজে সমান মর্যাদা ও অধিকার লাভ করবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও হিন্দুদের মন্দির পাহারা দিতে হচ্ছে, সম্পদ পাহারা দিতে হচ্ছে কেন প্রশ্ন রেখে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, কারণ মানুষের তৈরি আইনে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে, ধর্মের বিভেদ সৃষ্টি করে।
জামায়াতে ইসলামী একটি কল্যাণ ও নিরাপদ বাসযোগ্য বাংলাদেশ জাতিকে উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সেই বাংলাদেশ গড়তে দেশের প্রতিটি নাগরিককে অংশগ্রহণ করেত হবে। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়তে তিনি দল-মত, ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমীর মুহাম্মদ শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন। তিনি আরো বলেন, ঢাকা-৮ আসনের জনগণ তাকে সুযোগ দিলে তিনি এই আসনকে সম্প্রীতির নতুন বাংলাদেশের অনুসরণীয় একটি এলাকায় রূপ দেবেন। ঢাকা-৮ আসনের প্রতিটি মানুষ নাগরিক হিসেবে সমান অধিকার লাভ করতে পারবে। মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্রের ভিত্তি ঢাকা-৮ আসন থেকেই স্থাপিত হবে।
থানা সেক্রেটারি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ওয়ার্ড সভাপতি মোশাররফ হোসেন চঞ্চল, থানা অফিস সম্পাদক নাহিদ জামাল, থানা প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. আবদুল খালেক, থানা সমাজ কল্যাণ সম্পাদক এস.এম আজীম উদ্দিন, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের মধ্যে কালী পদ চন্দ্রশীল, লতিফ চন্দ্রশীল, লোকনাথ সরকার, স্বপন চন্দ্রশীল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে থানা দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দসহ শাহজানপুর থানা এলাকার ভিন্নধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।