শ্যামাসুন্দরী খাল দখল-দূষণমুক্ত করতে হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশ


২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:০৩

মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, রংপুর: রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শ্যামাসুন্দরী খাল দূষণ ও দখল থেকে রক্ষায় সরকারি কাজে নিয়োজিত বিবাদীগণের ব্যর্থতা সংবিধান ও প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন হওয়ায় কেন তা অসাংবিধানিক, বেআইনি এবং বিধিবহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট বিভাগ জেলা প্রশসানসহ ১৩ দপ্তরের বিবাদীগণের ওপর রুল জারি করেছেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট এস হাসানুল বান্না স্বাক্ষরিত এক বার্তায় জানানো হয়েছে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার জারিকৃত এ রুলে সিএস জরিপ ও মূল প্রবাহ অনুযায়ী উল্লেখিত শ্যামাসুন্দরী খালের সীমানা নির্ধারণের, স্থানীয় বাসিন্দাদের চাষাবাদ ও মৎস্য শিকারের অধিকার সুরক্ষা করতে এবং তাদের জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়ন করতে খাল থেকে দখলদার উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে খালটি পুনরুদ্ধারপূর্বক পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে যথাযথ সংরক্ষণ করার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
মামলায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব; ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব; জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক; রংপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার; রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক; রংপুর পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী; রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক এবং রংপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণকে বিবাদী করে এ রুল জারি করা হয়েছে।
রুল জারির পাশাপাশি আদালত উল্লেখিত খালের মূল প্রবাহ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ, দখলদার উচ্ছেদ, দূষণের উৎস চিহ্নিতকরণ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও খালের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করে খাল পুনরুদ্ধার করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা প্রতিবেদন আকারে আদালতে ৩ মাসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেছেন। আদালতের আদেশ পালন সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রংপুরের জেলা প্রশাসক, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক, রংপুর পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালককে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক দায়েরকৃত একটি জনস্বার্থমূলক (মামলা নম্বর- ১৫৫৭১/২০২৪) মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেন।
বেলার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট এস হাসানুল বান্না এবং তাকে সহযোগিতা করেন এডভোকেট তৌহিদুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।