॥ আসমা খাতুন ॥
ব্যর্থতার খোলসে বন্দি হয়ে থাকার চেয়ে কঠোর পরিশ্রম করে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার লড়াইয়ের নামই জীবন। পরিশ্রম জীবনে কল্যাণ বয়ে আনে। পরিশ্রম জীবনকে প্রকৃত সফলতার দারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়। সৌভাগ্যের বার্তা নিয়ে কোনো মানুষ পৃথিবীতে জন্মায় না। কর্মের মাধ্যমে নিজ নিজ জীবন গড়ে নিতে হয়।
জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে হলে জ্ঞানার্জন করতে হয়। আর জ্ঞানার্জনের জন্য অবশ্যই মেহনত ও পরিশ্রম করতে হবে।
মন দিয়ে কথাগুলো শুনছে তমাল। কিন্তু আপু আমার তো পড়াশোনা করতে খুব কষ্ট হয়।
পৃথিবীতে সব কাজই কষ্টকর।
ওদের মা রান্নাঘরে রান্না করছেন।
সুমনা উদাহরণস্বরূপ বলে, ওই যে মা রান্না করছেন। এই গরমে। খড়-লাকড়ি দিয়ে রান্না করা কি খুব সহজ।
তমাল বলে, উহু। খুব কঠিন।
আর এই কঠিন কাজটা করতে করতে মায়ের অভ্যাস হয়ে গেছে। আমাদের কাছে খুব কষ্টকর মনে হলেও মায়ের কাছে ওটা খুবই সহজ। এ সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুমনা একটি গল্প বলা শুরু করে।
বিখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) এর ইন্তেকালের পর আমি এক আনসারি সাবাহিকে বললাম, এখনো তো অনেক সাহাবি জীবিত আছে। চলুন আমরা তাদের কাছে ইলম আহরণ করি।
তিনি জবাব দিলেন, আপনার কি মনে হয়, যেকোনো সময় জ্ঞানের বিষয়ে মানুষ আপনার মুখাপেক্ষী হবে?
যা হোক তিনি সম্মত না হওয়ায় একাই আমি এ কাজে নেমে গেলাম। সাহাবায়ে কেরামের কাছে গিয়ে তাদের কাছ থেকে ইলম অর্জন করতে লাগলাম। কোনো ব্যক্তির সূত্রে আমরা নিকট কোনো হাদিস পৌঁছালে আমি দুয়ারে গিয়ে উপস্থিত হতাম। যদি শুনতাম, তিনি দুপুরের বিশ্রামে আছেন, তাহলে চাদর বিছিয়ে দরজার সামনে থাকতাম। বাতাস আমাকে ধুলিমলিন করে দিত। যখন ওই ব্যক্তি ঘর থেকে বের হয়ে আমাকে দেখতেন। তখন বলে উঠতেন রাসূল (সা.)-এর চাচাত ভাই।
কেন কষ্ট করে এসেছেন? খবর পাঠালে আমিই আপনার খেদমতে হাজির হতাম।
আমি বলতাম, না আমার আসাই তো দায়িত্ব। যেহেতু আমি জ্ঞানার্জন করতে চাই। আমি তার কাছে হাদিস জিজ্ঞেস করতাম। এভাবে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হতে থাকে। ওই আনসারি সাহাবী অনেক দিন জীবিত ছিলেন। এমনকী তিনি আমাকে এমন অবস্থায় দেখেছেন যে, মানুষ চারদিকে ভিড় করে আছে। তারা আমার কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন করছে।
তখন তিনি বললেন, এ যুবকটি আমার থেকে বেশি বুদ্ধিমান।