ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্রে রাজনীতিতে উদ্বেগ বাড়ছে


২২ মে ২০২৫ ১৬:৩৬

॥ মতিউর রহমান আকন্দ॥
বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা ও প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন এক দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৫৪ বছরেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহনশীলতা, পারস্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যারাই ক্ষমতায় গেছে তারাই নিজেদের ইচ্ছামতো রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে। আওয়ামী দুঃশাসনের সাড়ে ১৫ বছরে দেশের রাজনীতি এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষকে নির্মূলের সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গ্রেফতার, জেল-জুলুম, গণহত্যা, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন, মিছিল-সমাবেশে গুলি ও বিতর্কিত প্রশ্নবিদ্ধ ট্রাইব্যুনালে দেশপ্রেমিক নেতাদের সাজানো মামলায় ফাঁসি দিয়ে দেশকে নেতৃত্বশূন্য করা হয়েছে। আওয়ামী শাসনামলে সকল প্রতিষ্ঠানকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী ছাড়া আর কারো রাজনৈতিক অধিকার ছিল না। নির্বাচন ব্যবস্থার কবর রচনা করে বিনাভোটে ক্ষমতা দখল করার নেশায় বিভোর হয়ে পড়েছিল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগকে এ আচরণের কঠিন মূল্য দিতে হচ্ছে এবং হবে। ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে বাংলাদেশ ৫ আগস্ট মুক্তি লাভ করার পর জনগণের মধ্যে নতুন বাংলাদেশ তৈরির একটি প্রত্যাশা তৈরি হয়। লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, গায়ক, গবেষক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, প্রযোজক, নায়ক ও নির্মাতাগণ একাকার হয়ে গিয়েছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আওয়ামীবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত প্রয়াসে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়। জনগণের স্বাভাবিক প্রত্যাশা ছিলো গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্রকাঠামোয় ব্যাপক সংস্কার সম্পন্নের পর একটি অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ দায়িত্ব পালন করে দেশে গণতন্ত্রের স্বাভাবিক ধারা ফিরিয়ে আনবে- এটাই সকলের কামনা ছিল।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে ৬টি কমিশন গঠন করা হয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ৫ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করে দলের পক্ষ থেকে সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। ৯ অক্টোবর হোটেল ওয়েস্টিনে দেশের সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও বিশিষ্ট নাগরিকদের উপস্থিতিতে আমীরে জামায়াত জাতির সামনে সংস্কার প্রস্তাব পেশ করেন। জামায়াতের এ সংস্কার প্রস্তাব সর্বমহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ হলো গণহত্যার বিচারের পাশাপাশি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বিষয়ে ঐকমত্য সৃষ্টি ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। ঐকমত্য কমিশন ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে। ৫টি সংস্কার কমিশনের অনেকগুলো সুপারিশ বা প্রস্তাবের বিষয়ে দলগুলো একমত হলেও ক্ষমতার ভারসাম্যসহ মৌলিক প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। ঐকমত্য কমিশন সূত্র থেকে জানা যায়, প্রথম পর্যায়ের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হবে। এ পর্যায়ে মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবগুলো আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। যেসব বিষয়ে মতভিন্নতা আছে, সেসব বিষয়ে আলোচনা হবে। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হতে পারে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করা হবে। আগামী জুলাই মাসে এ সনদ চূড়ান্ত করার লক্ষ্য রয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন সদস্য ইতোমধ্যে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছেন। পাশাপাশি সরকারের কতগুলো পদক্ষেপ ব্যাপক বিতর্ক তৈরি করেছে। বিশেষ করে মানবিক করিডোর নিয়ে সর্বত্রই ক্ষোভ ও বিতর্ক চলছে। করিডোর দিলে বাংলাদেশ নিরাপত্তার ঝুঁকিতে পড়বে কিনা, তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। সকল রাজনৈতিক দল, কূটনৈতিক ও সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞগণ। অন্যথায় এটি বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করবে বলে অনেকে মনে করছেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের রাখাইনের জন্য মানবিক করিডোর দেয়ার নীতিগত সম্মতি দেয়া হয়েছে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বত্র বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। সেই সাথে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়াটাকে নেতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় ও লাভজনক নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে। বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীরা সে সময়ই এর বিরোধিতা করেছিলেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আমলের সেই সিদ্ধান্তই বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে জিটুজি ভিত্তিতে টার্মিনালটি পরিচালনার ভার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)। সবকিছু পরিকল্পনামতো এগোলে দরকষাকাষি করে নভেম্বরে ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে কনসেশন চুক্তি হবে। চুক্তির পর টার্মিনালটি পুরোপুরি ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে চলে যাবে। তারা কনটেইনার ওঠানামার মাশুল আদায় করবে, লোকবল নিয়োগ দেবে এবং বন্দরকে এককালীন, বার্ষিক ও কনটেইনারপ্রতি অর্থ প্রদান করবে।
বন্দরসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এটাকে দেশের স্বার্থবিরোধী বলে মনে করেন। একটি দেশের বন্দর হলো কৌশলগত সম্পদ। যার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার সম্পর্ক রয়েছে। যে ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার ভার তুলে দিতে যাচ্ছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও ভূরাজনৈতিক বিবেচনায় সেই ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র টার্মিনাল পরিচালনার সুযোগ দেয়নি। আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এ কোম্পানি ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৬টি বন্দরের টার্মিনাল পরিচালনার পিঅ্যান্ডও নামের একটা ব্রিটিশ কোম্পানির কাছ থেকে অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়বে- এ করণে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের কৌশলগত গুরুত্ব, ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি ও অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের পরিচালনার ভার বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া কতটা যৌক্তিক, তা অন্তর্বর্তী সরকারকে গভীরভাবে ভাবতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের সেনাবাহিনী, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, গণহত্যার বিচার, সংস্কার, নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের খবর প্রচারিত হওয়ায় জনগণের মধ্যে ধীরে ধীরে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। গণমাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা, রাজনৈতিক বক্তব্য, সংস্কারের ধীরগতি ও নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে তাদের তৎপরতা নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচারের ধীরগতি নিয়ে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চলমান সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ-সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। কেউ কেউ অগ্রসর হয়ে নির্বাচন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণের সময় জনগণের যে আশা ও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল তা ক্রমেই লোপ পাচ্ছে। কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আলোচনা; এমনকি তাদের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। অনেকের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিরও অভিযোগ উঠেছে।
মাঠে-ময়দানে বিভিন্ন ইস্যুতে চলছে আন্দোলন। জাতীয় প্রেস ক্লাব ও শাহবাগে প্রায় প্রতিদিনই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত আড়াই শতাধিক আন্দোলন হয়েছে। কোনো কোনো আন্দোলন ব্যাপক রূপ লাভ করায় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এসব আন্দোলনকে ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করা হলেও তার যৌক্তিকতা রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে উপদেষ্টাদের রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গত ১২ মে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এখন থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে বা সমর্থনে কোনো প্রেস বিবৃতি প্রকাশ নিষিদ্ধ; একইভাবে গণমাধ্যম অনলাইন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে দলের সমর্থনে কোনো ধরনের প্রচারণা চালানো যাবে না। এমনকি মিছিল, সংবাদ সম্মেলন আয়োজন বা জনসম্মুখে বক্তব্য দেয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ গণহত্যার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় জনগণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদনে দলের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে যারা দমন-পীড়ন ও হত্যায় সমর্থন, অংশগ্রহণ করেছে, তাদের দায়ী করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ জুলাই-আগস্টের বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের পর সাড়ে ৯ মাস অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও সরকারের হয়ে বা দলের পক্ষ থেকে দায়দায়িত্ব স্বীকার করেনি কিংবা কোনো ধরনের ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেনি। আত্মসমালোচনা বা সংস্কারের কোনো অভিপ্রায়ও ব্যক্ত করেনি। ভারতে অবস্থান করে শেখ হাসিনা ও তার দোসররা রীতিমতো উত্তেজনাকর বক্তব্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে মূল যুক্তিগুলো হচ্ছে- আওয়ামী লীগ সরাসরি হত্যাযজ্ঞে অংশ নিয়েছে এবং পরে তার কোনো জবাবদিহি করেনি। ফলে দলটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের অধিকার হারিয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে আওয়ামী লীগ তার রাজনৈতিক অধিকার হারাবে। আওয়ামী লীগের পক্ষে যেকোনো মতপ্রকাশ মৌখিক, লিখিত বা অনলাইনে শেয়ার করাও অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। দলটির সমর্থকদের জমায়েত; এমনকি সামাজিক বা আনুষ্ঠানিক বৈঠকও গ্রেফতারের ঝুঁকিতে থাকতে পারে।
বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে। সীমান্ত হত্যা, পুশইন সর্বশেষ স্থল পথে বাণিজ্য বন্ধ ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও অবনতি ঘটাবে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার বাংলাদেশ। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ১২ বিলিয়ন ডলার ভারতের রপ্তানি। বাকি ২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি বাংলাদেশের বাণিজ্য। এই ২ বিলিয়ন ডলারের বেশির ভাগ রপ্তানি আয় আসে পোশাক খাত ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকে। ভারত বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় শতকোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হুমকিতে পড়েছে। আরও প্রায় ১০ কোটি ডলারের খাদ্য প্রক্রিয়াজাত পণ্য বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব দুই দেশের অর্থনীতি, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সংযুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সংকটের শুরু ছাত্র-জনতার ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর থেকে। দুই দেশের সরকারের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ ধীরে ধীরে বাণিজ্যের দিকে মোড় নিচ্ছে। এ সংকট আরও গভীরে রূপ নিতে পারে। নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র, তৎপরতা ও উসকানিতে বাংলাদেশ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্যের সুযোগে আওয়ামী লীগ ভারতের সহযোগিতা নিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম রেখেছিল। আবারো যদি অনৈক্য বা বিভাজনের পরিবেশ তৈরি হয়, তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। জনগণ ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলুপ্তি চায়। জনগণের মনোভাবকে মূল্যায়ন করে অন্তর্বর্তী সরকারকে মৌলিক ও অপরিহার্য সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের দিকে অগ্রসর হতে হবে।