সংবাদ শিরোনামঃ

অর্থ লুটের মহোৎসব ** ভোটে আগ্রহ নেই মানুষের ** সারাদেশে গুম হত্যা আতঙ্ক ** ড. মাসুদের মুক্তির দাবিতে জামায়াতের মিছিল ** প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দায় এই সরকারকেই নিতে হবে : খালেদা জিয়া ** পানির জন্য হাহাকার ** ক্ষমতার নিশ্চয়তা পেলেই আগাম নির্বাচন ** তিস্তা এখন ধু ধু বালুচর ** তেলের দাম কমানোর নামে প্রহসন ** সরকার দায় চাপানোর কৌশল নিয়েছে ** আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই জনগণের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে ** ওনারা বললে দোষ হয় না! ** মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি কি সুদূর পরাহত? ** পার্বতীপুরে পানির জন্য হাহাকার ** টাঙ্গাইলের ছয় উপজেলায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই! ** কুষ্টিয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু বাড়ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ বৈশাখ ১৪২৩, ২১ রজব ১৪৩৭, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

জোবায়েরুল ইসলাম
আল্লাহ বলেন “(স্মরণ কর) যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদের বললেন, যে আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করব” -সূরা বাকারা : ৩০। খলিফা বলতে কি বুঝায়? রিপ্রেজেনটেটি বা প্রতিনিধি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত। যারা একে অপরের পরে আসবে এবং এক প্রজন্ম অন্য প্রজন্মের কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছাবে। আভিধানিক অর্থে বুঝায় কারো কাজ করার জন্য নিযুক্ত ব্যক্তি। আল্লাহ প্রদত্ত আমানত বহনের দায়িত্ব নিয়েছে বলেই মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি।

প্রতিনিধিত্বের সার কথা হলো যারা ইসলামী কৃষ্টি-কালচার, সংস্কৃতি ও সভ্যতার উন্নয়ন বিকাশ, জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধান, প্রতিভার বিকাশ সাধন, সৃজনশীল চিন্তার পুনর্গঠনের মাধ্যমে জ্ঞান-বিজ্ঞান, বীরত্বে নৈতিক উৎকর্ষ সাধন করে ধর্ম-কর্মে  সাধুতা দিয়ে মানব কীর্তিকে সমৃদ্ধ করা। আল্লাহর প্রতিনিধি তার ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, সমাজ জীবন তথা রাষ্ট্রীয় জীবনের যে পদে কিংবা যে পেশায় নিয়োজিত থাকুক না কেন-সর্বাবস্থায় আল্লাহ প্রদত্ত আইন, বিধি-বিধান তথা আদেশ-নিষেধ-উপদেশ কুরআন বর্ণিত দিক-নির্দেশনার প্রচার-প্রসার ও প্রতিষ্ঠায় আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকবে। প্রতিনিধির দায়িত্ব¡ জিনদের উপর নেই তাদের দায়িত্ব হলো শুধু আল্লাহর ইবাদত করা। আল্লাহ ইচ্ছে করলেন তিনি এমন এক জাতি সৃষ্টি করবেন, যার মধ্যে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তিসহ আল্লাহর কিছু গুণ থাকবে, যেমন দেখা, শুনা  ও অনুধাবন করা এবং (আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন তা থেকেই নকল করে অন্য কোন কিছু) আবিষ্কার করা যেমন পাখি দেখে বিমান তৈরি করা, তিমি মাছ দেখে সাবমেরিন তৈরি করা ইত্যাদি। সৃষ্টি ও স্রষ্টার গুণ নামে এক হলেও তার ধরন ভিন্ন  যেমন আল্লাহ পাকের একটি সিফতি নাম ‘আল-বাদি’ই’ আবিষ্কারক বা উদ্ভাবক ইত্যাদি। আরেকটি সিফতি নাম হলো ‘আল-মুবদি’ অর্থাৎ প্রথম আরম্ভকারী স্রষ্টা। এই পৃথিবী তিনি সৃষ্টি করা শুরু করেছেন অন্য কোন নমুনা না দেখেই। অন্য কোন কিছু থেকে নকল না করেই। আর মানুষ যা তৈরি করে সেটা আল্লাহর সৃষ্টি করা জিনিস থেকে নকল করে। মানুষ দেখে আল্লাহও দেখেন কিন্তু স্রষ্টার দেখার পদ্ধতি ও সৃষ্টির দেখার পদ্ধতি এক নয়, কিন্তু কেমন ভালো তিনিই জানেন আর এটাই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের আকিদাহ্। আল্লাহ ইতোমধ্যে ফেরেশতা ও জিনসহ আরো অনেক কিছু সৃষ্টি করেছেন কিন্তু এখন নতুন করে যা সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন সেই সৃষ্টির ধরন ভিন্ন কারণ এই সৃষ্টির মধ্যে থাকবে ব্যক্তি স্বাধীনতা (স্বাধীন ইচ্ছা শক্তি ও আল্লাহর অর্ডার)। আল্লাহ বলেন, “অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের (প্রতি ঝোক প্রবণতা) জ্ঞান দান করা হয়েছে” সূরা শামস ৮। ইবলিস মানুষের সুপ্তিমগ্ন মানসপটে স্বাধীন ইচ্ছা শক্তিকে প্রভাবিত করে পাপ প্রবণতার প্রতি ঝুকিয়ে দিতে পারবে। অজ্ঞানতা কিংবা খেয়াল-খুশীমনে অবহেলা- ঔদাসীন্যের বশবর্তী হয়ে এই ধারণা পোষণ করবে যে, জীবনের আনন্দের মুহূর্ত এবং জীবনের এই ধাপটাই হলো স্বাচ্ছন্দ্য ও সুখ লুটপাটের সময়। কারণ পাপ প্রবণতার বাহ্যিক চাকচিক্য এমন আনন্দদায়ক ও চিত্তাকর্ষক যে, প্রথম দেখার পর তার স্বাদ আস্বাদন করতে ইচ্ছে জাগে অন্তঃকরণে, তখন জীবনের পাড় ঘেষে হাঁটতে গিয়ে অত্যাধিক অনুভূতিপ্রবণ মানুষের যেকোন সময় ঘটে যেতে পারে তুঘলকি কাণ্ড, কোন পাপ করে ফেললে লালসা আরো বেড়ে যায় তীব্রাকারে। কারণ বর্তমান বিশ্বে দর্শকদের প্রলুব্ধ করার নামে গণরঙ্গশালার আধিক্যের কারণে সমাজ সংসার ও রাষ্ট্রে পচন ধরেছে এবং এগুলোর দুর্গন্ধ সমাজ ও রাষ্ট্রকে অক্টোপাসের মতো আঁকড়ে ধরেছে, ফলে ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে জ্ঞানীগুণী, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও সমাজ-রাষ্ট্র তথা দেশ-মহাদেশ। বিপরীতে প্রযুক্তিপ্রেমী, বেহায়াপনা, নোংড়ামী ও বাগাড়ম্বরের সংমিশ্রণে গড়ে উঠা বিমূর্ত কিমাকার নতুন প্রজন্ম নিজেকে গ্লোবাল ভেন্যু চেইনের সঙ্গে মেলাতে গিয়ে ভাবতে শুরু করবে যে, এখন একটু আমোদ-আনন্দ করে নেই বৃদ্ধ হলে আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্য ও তাওবা করে নিব, কিংবা যৌবন কালের সকল ক্ষতিপূরণ করে দেওয়া যাবে। এই বয়সে একটু পাপ-দুষ্টুমী না করলে পরে আফসোস করতে হবে, এখনই তো দুষ্টুমীর বয়স, যখন শ্বশুর হব তখন ভালো হয়ে যাব ইত্যাদি প্ররোচনার মাধ্যমে প্রবঞ্চিত হবে। কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ যখন হাশরের মাঠে সমবেত হবে তখন প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার দুরত্বের সুর্য মাথার উপরে মাত্র এক মাইল দূরে থাকবে, মাথার মগজ ফুটন্ত পানির মতো টগবগ করবে, ঘাঁমতে ঘাঁমতে পায়ের পাতা ও হাঁটু নয় শুধু বরং সেখানে হাবুডুবু খাবে তখন মহান আল্লাহ ‘কয়েক শ্রেণীর লোককে সম্মানের সাথে আরশের নিচে ছায়া দিবেন, তাদের মধ্যে একদল হলো ঐ যুবদল যারা তাদের যৌবনকাল আল্লাহর আনুগত্যে অতিবাহিত করেছে’ -বুখারী। আর যদি কেউ পাপের সাময়িক সুমিষ্ট রস আস্বাদন করে ফেলে  তাহলে তার তিক্ত-বিষাক্ত রস কিংবা কেমো-থেরাপি আস্বাদন করার আগ পর্যন্ত কেউ তা ছাড়তে পারে না। কিংবা মাথার খুলিটি খোলে মস্তিষ্কের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা দু-চারশ কীড়ে বের করা ছাড়া কোন উপায় থাকে না। ফলে অতীতের প্রিয় পাত্র-পাত্রি মহাপুরুষে পরিণত হয়। সুতরাং গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানোর ক্ষেত্রে কোন নৈপুণ্যতা নেই বরং তাতে মানষিক বিলাসিতা ব্যাহত হয়। এমতাবস্থায় ঈমান বাঁচানোর জন্যে এমন একটি নিও-নেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (I.C.U) প্রয়োজন যা শুধু ইসলামই দিতে পারে । সুতরাং চোখকে সংযত রাখতে হবে। আল্লাহ বলেন, “যে মন্দ (পাপাচার অশ্লীল) কাজ করবে, সে তার প্রতিফল পাবে (ই)” -সূরা নিসা : ১২৩। চাই সেটা দুনিয়াতে কিংবা আখিরাতে। তবে আল্লাহ যদি কারো কল্যাণ চান তাহলে দুনিয়াতেই তাকে শাস্তি প্রদান করেন আর যদি কারো অকল্যাণ চান তাহলে তার শাস্তি আখিরাত পর্যন্ত বিলম্বিত করে দুনিয়াতে ছেড়ে দেন, তখন সে ব্যক্তি আস্তিন গুটিয়ে ঔদ্ধত্যের সঙ্গে দাবি করে যে, কোথায় আল্লাহ? কি বিশাল পাপ করে ফেললাম তো, আল্লাহ না বলে শাস্তি দেন, কিছুই তো দেখছি না। এ জাতীয় চিন্তা মাথায় নিয়ে পাপের সেঞ্চুরি পালন নয় শুধু বরং তার ঘোষণা দিয়ে পরস্পরকে মিষ্টিমুখ করাতেও দ্বিধাবোধ করে না। আল্লাহ বলেন,“অবিশ্বাসীগণ (অপরাধীরা) যেন কিছুতেই না ভাবে যে, আমি তাদেরকে যে ছেড়ে দিয়েছি (তাদের পাপাচারে) তা তাদের জন্য কল্যাণকর। আসলে আমি তাদেরকে ঢিল দিয়ে দিয়েছি, যাতে তাদের পাপ বৃদ্ধি পায়। আর তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি” সূরা আল-ইমরান ১৭৮। অন্যত্র “মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ (ই হয়ে থাকে)” -সূরা আশ শূরা : ৪০। অর্থাৎ এক পাপ হাজার পাপের দিকে ধাবিত করে। অল্প পাপে অল্প শাস্তি কিন্তু আল্লাহ অল্প পাপের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে আরো রশি ঢিল দিয়ে দেন যাতে অধিক শাস্তি ভোগ করতে পারে। এমন এক স্বাধীন ইচ্ছা শক্তি নিয়ে ফেরাউনি মনোভাব তৈরি হয়ে যায় যে, ইচ্ছা করলেই আল্লাহর হুকুম মানতে পারবে আবার ইচ্ছা করলেই আল্লাহর হুকুম আমান্য করে নিজেরাই নিজেদের জীবন ব্যবস্থা আইন- কানুন তৈরি করে নিতে পারবে। আল্লাহ নিজে সমস্ত সৃষ্টিকে তাঁর ইচ্ছায় (চন্দ্র, সূর্য, আকাশ, বাতাস ও ফেরেশতাসহ আরো যা আছে) পরিচালনা করেন, কিন্তু মানুষকে পরিচালনার দায়িত্ব তিনি নিজে সরাসরি নিলেন না বরং মানুষকেই আল্লাহর হুকুম মোতাবেক নিজেকে, নিজের পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে এমনকি সমস্ত দেশ-মহাদেশকে পরিচালনার দায়িত্ব দিলেন। মানুষ যদি আল্লাহর হুকুম মোতাবেক তার ব্যক্তিগত, সামাজিক, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন পরিচালনা করে, তাহলেই সে আল্লাহ প্রতিনিধিত্ব করল অন্যথায় আল্লাদ্রোহী হয়ে ফেরাউনী আচরণ করল। কিন্তু আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তার প্রথমেই দরকার আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতা, শক্তি ও তাওফিক আর সেটাকেই বলে ‘রূহ’। আল্লাহ বলেন, “তারা আপনাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, “(হে নবী!) আপনি বলে দিন যে, (রূহ হলো) আমার প্রতি পালকের পক্ষ থেকে (একটি) নির্দেশ (শক্তি-মত্তা) -সূরা ইসরা : ৮৫। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, (হুদ আ. তার জাতিকে বললেন) “আমি তো আমার সাধ্যমত সংশোধন করার ইচ্ছা পোষণ করি (মাত্র), আর আমার সফলতা (তাওফিক) আল্লাহর সাহায্যেই, আমি তাঁরই উপর ভরসা রাখি এবং আমি তাঁরই অভিমুখী” -সূরা হুদ : ৮৮। শুরু হয়ে গেল আল্লাহর অনন্য সৃষ্টি আদম তৈরির ধারাবাহিকতা। আল্লাহ আদম (আ.)কে ‘কূন’ শব্দ দিয়ে নয় বরং নিজ হাতে তৈরি করলেন এবং নিজ আত্মা থেকে ‘রূহ’ আদম আ. এর মধ্যে ফুঁকে দিলেন। আল্লাহ বলেন, “পরে তিনি তাকে (আদম (আ.) সুঠাম করেছেন, এবং তাঁর নিকট হতে তাতে ‘রূহ’ সঞ্চার করেছেন ...” -সূরা সাজদাহ্ : ৯। ফলে আঠার হাজার মাখলুকাতের মধ্যে আদম (আ.) হয়ে গেলেন আল্লাহর কিছু গুণে গুণান্বিত এক অনন্য সৃষ্টি। অতঃপর আল্লাহ ফেরেশতাদের বললেন, “তোমরা আদমকে সাজদাহ কর” -সূরা ইসরা : ৬১। আল্লাহ নিজ আত্মা থেকে আদম (আ.) এর মধ্যে যে ‘রূহ’ ফুঁকে দিলেন, সেটাই আল্লাহ প্রদত্ত শক্তি। মানুষ যখন পাপাচারে লিপ্ত হয় তখন সে রূহের মধ্যে পর্দা পড়ে যায়। যত পাপ করবে তত পর্দা পড়বে, একপর্যায়ে পর্দা পড়তে পড়তে অন্ধ-মূক-বধির হয়ে অন্তর পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়। আল্লাহ বলেন, “তা পাষাণ (পাথর) কিংবা তার চেয়েও কঠিনতর, (অথচ) কিছু পাথর এমন আছে যে, তা থেকে নদী-নালা প্রবাহিত হয়, আবার কিছু পাথর এমন আছে যা বিদীর্ণ হয়ে তার থেকে পানি নির্গত হয়, আবার কিছু পাথর এমন আছে যে, তা আল্লাহর ভয়ে ধসে পড়ে” -সূরা বাকারা : ৭৪। কিন্তু হে মানব জাতি! আমি তোমাদের নিকট শ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব (কুরআন)সহ মহাশূন্যের হাজারো নিদর্শন দেখানোর পরও তোমার পাষাণ হৃদয় বিগলিত হয় না।

পাপ-প্রবণতার মাধ্যমে আল্লাহ প্রদত্ত সেই রূহের মধ্যে আবরণ পড়ে যাওয়ার কারণে বলা হয় ‘রূহানী শক্তি কারো বেশি কারো কম’। প্রত্যেকের আমল অনুযায়ী রূহানী শক্তি বৃদ্ধি পায়, যে যত বেশি আমলে সালেহ করবে একনিষ্ঠতার সাথে, দুনিয়ার কোন মোহ থাকবে না, সে তত রূহানী শক্তিতে বলীয়ান হয়ে থাকে। আর যে যত আমলে ছালেহ (সৎ কাজ) কম করবে কিংবা পাপ করবে কিংবা ভালো কাজ দুনিয়া লাভের উদ্দেশ্যে করবে, সে তত রূহানী শক্তিতে দুর্বল হবে। কাফের, মুশরিক আর মুনাফেকরা আল্লাদ্রোহী হয়ে তাদের কূটচালের মাধ্যমে দুনিয়ার চাকচিক্য মানব সভ্যতার মাঝে তুলে ধরে সেই রূহানী শক্তিকে বিলুপ্ত করে এবং কুরআন, হাদিস ও ইসলামী সাহিত্যের  আলোকেই আল্লাহর জমিন থেকে নির্বাপিত করতে চায়। সেটার মোকাবেলা করার জন্যে ‘আমলে ছালেহ’ সৎ কাজ এর শক্তি কম বিধায় আমরা মোকাবেলা করতে পারছি না উল্টো মার খাচ্ছি। এজন্যই মুমিন ব্যক্তি বাতিলের মোকাবেলা করে রূহানী শক্তিতে, শারীরিক অবকাঠামো কিংবা অস্ত্রের ঝনঝনানীতে নয়। কারণ জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে, অস্ত্রের আধিক্য কিংবা শারীরিক অবকাঠামোর দিকে খেয়াল দেওয়া তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী, যেমন হুনাইনের যুদ্ধ তার সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত। আল্লাহ বলেন, “(স্মরণ কর) যখন তোমাদের সংখ্যাধিক্য (হুনাইনের যুদ্ধে) তোমাদেরকে উৎফুল্ল করছিল, কিন্তু তা (আধিক্য) তোমাদের কোন কাজে আসেনি, পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তা তোমাদের কাছে সঙ্কুচিত হয়েছিল, অতঃপর তোমরা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে পলায়ন করছিলে” -সূরা তাওবা : ২৫। এই আলোচনার প্রেক্ষিতে আমি ব্যক্তিগত একটি মতামত দিতে পারি যে, বর্তমান বিশ্বে যত মুসলমান আছে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে তাদের মধ্যে রূহানী শক্তির সঞ্চয় হলেই একটি ইসলামী বিপ্লব হয়ে যায় আর সংখ্যাধিক্যের প্রয়োজন নেই। আর সেটা হবেও ইনশাল্লাহ। এই পৃথিবীর কানায় কানায় ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবেই। বিশ্বের সমস্ত পার্লামেন্টে একদিন ইসলামের পতাকা উড়বেই। চাই সেটা আল্লাহ আমাদের মাধ্যমে করাবেন কিংবা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মাধ্যমে। কিন্তু কারা হবেন সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তিবর্গ ? যদি আমরা ইসলামের রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে আঁকড়ে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারি তাহলে আল্লাহ আমাদের মাধ্যমেই করাবেন। সুতরাং দাওয়াতী কাজ ও রূহানী শক্তি উভয়টির সমন্বয়ে সামনে এগুতে হবে। সমাজতন্ত্রের বিপ্লব তথা ‘রুশ বিপ্লব’, ‘ফরাসী বিপ্লব’ ও ‘শিয়া বিপ্লব’ পৃথিবী দেখেছে। ১৯৫৯ সালে ফিডেল ক্যাস্ট্রো ও চেগুয়েভারার নেতৃত্বে সংগঠিত হয় কিউবা বিপ্লব। আর আল্লাহ আকাশের ফেরেশতাদেরকে নিয়ে পুরো বিশ্ব অপেক্ষা করছে তাওহীদি বিপ্লব দেখার জন্যে আর সেটা বর্তমান বিশ্বে মুসলমানদের মাধ্যমেই সম্ভব। আদম (আ.) কে সৃষ্টির পর সর্বপ্রথম যে পাপটি সংগঠিত হয় সেটা হলো ‘অহঙ্কার’ “আমি কি এমন জিনিসকে সাজদাহ করব, যাকে তুমি কাদা-মাটি দিয়ে তৈরি করেছ?” -সূরা ইসরা : ৬১। অন্যত্র “আমি তার থেকে উত্তম” সূরা আ’রাফ ১২। এখানে আল্লাহ যখন আদেশ করলেন, তুমি আদমকে সাজদা কর, তখন কে উত্তম কে অধম সেটা দেখার বিষয় নয় বরং দেখার বিষয় হলো আল্লাহ পাকের অর্ডার। কারণ কা’বা শরীফ ইট-পাথরের একটি ঘর বিশ্বের বুকে এতই সম্মানিত যে, কেউ তাঁর দিকে ট্যারা চোখে তাকালে, সে চোখ উপড়ে ফেলা হবে, কেউ তার দিকে হাত তুললে, তার হাত ভেঙ্গে দেওয়া হবে, এর কারণ হলো আল্লাহ মানুষকে কা’বা অভিমুখী হওয়ার নির্দেশ করেছেন বিধায় সে সম্মানিত। বাস্তবে কিন্তু কা’বাকে ভাঙ্গলে ইট-পাথর আর সুরকি পাওয়া যাবে। ঠিক তেমনি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি নির্দেশ হলো এক মুসলমান অন্য মুসলমানের প্রতি সম্মানবোধ থাকা যা ইসলামের ঐক্যের মেরুদণ্ড। আল্লাহর রাসূল (সা.) কা’বা শরিফ তাওয়াফ করার সময় তাঁর প্রতি ইশারা করে বলেছিলেন, হে কা’বা তোমার মর্যাদা কতই না সমুন্নত কিন্তু মনে রেখ একজন মুসলমানের মর্যাদা তোমার চাইতেও হাজার গুণ বেশি” -ইবনে মাজাহ। এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ওলামাগণ বলেন, কাবা শরিফ ভেঙ্গে ফেললে তার মধ্যে থাকবে ইট, সুরকি ও বালু কিন্তু একজন মুসলমানের মধ্যে আছে ‘লা ইলাহা  ই্ল্লাল্লাহ’। কারণ সাত আসমান, সাত জমিন এবং উভয়ের মধ্যবর্তী যা আছে সব কিছু যদি এক পাল্লায় রাখা হয়, আর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এক পাল্লায় রাখা হয় তাহলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লার’ পাল্লাই ভারী হবে। অন্য হাদিসে আছে ‘কাবা শরীফ ভেঙ্গে ফেললে যে পাপ তার চাইতে বেশি পাপ একজন মুসলমানকে তার বাবা-মার নাম ধরে বকা দিলে’। অথচ সেই মুসলমানদেরকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গরু ছাগলের মতো জবেহ করে হত্যা করা হচ্ছে, তাদের উপর জুলুম-অত্যাচারের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে কিন্তু আমরা নিশ্চিন্তে স্ত্রী ছেলে মেয়েকে নিয়ে কালাতিপাত করছি। বিভিন্ন মিডিয়াতে তাদের সেই অসহায় অবস্থা দেখে শুধু মুখ দিয়ে বলি যে, ‘উহ্! কত বড় জালেম কিভাবে মারছে দেখ’ ব্যাস এটুকুই ঈমানের পরিধি এর বিপরীতে আর কিছুই জানি না। কিভাবে ঈমানের অত্যুজ্জল্য আলো নিজের মধ্যে বৃদ্ধি করে, শানিত ঈমান নিয়ে এসব পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে, সেই চিন্তা আমাদের মধ্যে নেই বললেই চলে।

আল্লাহ বলেন, “অবশ্যই মানুষ এমন একটি সময় (পেরিয়ে) এসেছিল, যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না” -সূরা দাহর : ১। কিছুই ছিলনা অথচ মহান আল্লাহ তাকে অস্তিত্ব দান করেছেন। এই আয়াতে মানুষের অহঙ্কার ও দাম্ভিকতা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে, এর পরেও কেউ অহঙ্কার করলে ইবলিসের দলভুক্ত গণ্য হবে। আল্লাহ বলেন, আমার নির্দেশ আসার পর কে উত্তম কে অধম সেই চিন্তা করার সাহস কে দিল তোমাকে। আল্লাহ বলেন, “তুমি তার থেকে (জান্নাত) থেকে বেড়িয়ে যাও নিশ্চয়ই তুমি হীন (তুচ্ছ)” -সূরা আ’রাফ : ১৩। শুরু হলো দ্বন্দ্ব আদম ও ইবলিসের মধ্যে। তুমি যার জন্য আমাকে অভিশপ্ত করলে আমি দেখিয়ে দিব সে তোমাকে ইলাহ (হুকুমদাতা) হিসাবে মানবে না। আল্লাহ বলেন, “যার কারণে তুমি আমাকে বিপদগামী করলে, আমিও তাদের জন্যে তোমার সহজ-সরল পথে ‘ওঁত’ পেতে বসে থাকব” -সূরা আ’রাফ : ১৬। আল্লাহ বলেন, আমি যুগে যুগে নবী-রাসূলগণের মাধ্যমে হেদায়াত (সিরাতে মুসতাকিমের) নীতিমালা তথা দিক নির্দেশনা দিব। যারা সে নির্দেশনা মেনে চলবে তুমি তাদের কোন ক্ষতিসাধন করতে পারবে না। ইবলিস বলে আমি তোমার খলিফাকে ঐ নির্দেশনা মানতে দিব না। কারণ ইসলামের হৃৎপিণ্ড হলো ইসলামের নীতিমালা মানা আর তার বাস্তবায়ন করা। শক্তিশালী ঈমান রোধে ও পৃথিবীর বুকে ইসলামী উত্থান ঠেকাতে আমি তাকে চার দিক থেকে আক্রমণ করব। আল্লাহ বলেন, “সে (ইবলিস) বলল, হে আমার প্রতিপালক! তুমি যার জন্য আমাকে বিপথগামী করলে, তার কাছে আমি পৃথিবীর পাপ-প্রবণতা সু-সজ্জিত করে তুলব, আমি তাদের সকলকেই অবশ্যই বিপথগামী করেই ছাড়ব” -সূরা হিজর : ৩৯। অন্যত্র “আমি তাদের সামনে, পিছনে, ডানে, বামে থেকে আক্রমণ করব, তুমি তাদের অধিকাংশকেই কৃতজ্ঞ পাবে না” -সূরা আরাফ : ১৭। আমি দেখিয়ে দিব সে তোমার খেলাফত করবে না।

আল্লাহ ইবলিসের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেন, কারণ তার খলিফা আদম সৃষ্টির উদ্দেশ্যই ছিল পরীক্ষা করে দেখা যে, স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি নিয়ে সে কোন পথে চলে। শুরু হলো আদম (আ.) এর পরীক্ষা। একদিকে আল্লাহর হুকুম মেনে চলা, অন্য দিকে ইবলিসের প্ররোচনায় সেই হুকুম অমান্য করা। অতঃপর ইবলিসের প্ররোচনায় আদম (আ.) আল্লাহর অবাধ্য হলেন, শাস্তি স্বরূপ আল্লাহ দুজনকেই শত্রু হিসাবে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলেন। আল্লাহ যখন মানব সৃষ্টি সম্পর্কে ফেরেশতাদের অবহিত করলেন, তখন তারা বুঝতে পারল মানুষ স্বাধীন ইচ্ছা শক্তির বলে আল্লাহর হুকুম প্রত্যাখ্যান করতে পারবে। যার ফলে পৃথিবীতে সৃষ্টি হবে ফ্যাসাদ, অন্যায়-অত্যাচার ও অশান্তি। ইবলিসের চ্যালেঞ্জ তাই স্পষ্ট যে, সে মানুষের ইচ্ছা শক্তিকে প্রভাবিত করে মানুষকে দিয়ে আল্লাহর হুকুম অমান্য করাবে। ফলে সে সিরাতে মুসতাকিম থেকে বিচ্যুত হবে। আর এই বিচ্যুতির স্বাভাবিক পরিণতিই হবে অশান্তি, যুদ্ধ-বিগ্রহ, অরাজকতা ও রক্তপাত। আল্লাহ বলেন, “তোমার জন্য যা কল্যাণকর তা আল্লাহর পক্ষ থেকে, আর যা অকল্যাণ হয় সেটা তোমার নিজের (কৃত পাপাচারের) কারণে” -সূরা নিসা : ৭৯।  মানুষ যেন সেই অশান্তিতে না পড়ে সে জন্য আল্লাহ যুগ যুগ ধরে নবী রাসূল প্রেরণ করলেন আর যে জীবন ব্যবস্থা পাঠালেন তার নাম দিলেন দ্বীনুল ইসলাম অর্থাৎ শান্তির ধর্ম। আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই ইসলাম আল্লাহর নিকট (একমাত্র মনোনীত) ধর্ম” -সূরা আল-ইমরান : ১৯। এই জীবন ব্যবস্থার মূল ভিত্তিই হলো তাওহিদ তথা লা-ইলাহা ইল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য হুকুমদাতা, আইন দাতা ও সার্বভৌমত্বের মালিক কেউ নেই। মানুষ হলো একটি বহুমাত্রিক প্রাণী, যার মধ্যে আছে স্বার্থপরতা ও পরার্থপরতা সেটাকে কন্ট্রোল করার জন্যে আল্লাহ ও মানুষের মধ্যে একটি পূর্বপরিকল্পিত চুক্তিপত্র (কোভেন্যান্ট) থাকতে বাধ্য এবং সেই চুক্তিপত্র অনুযায়ী সবাইকে জীবন-যাপন করতে হয়। নতুবা পরকালে কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যিনি দিবেন তিনিই হলেন ইলাহ। সার্বভৌমত্ব না হলে কোন বিষয়ে চূড়ান্ত মীমাংসা হওয়া সম্ভব নয়।  

তাই সব সংবিধানেরই একটি সার্বভৌমত্ব (Sovereignty) থাকতে হয়, যেমন রাজতন্ত্রের সার্বভৌমত্ব রাজা, বাদশাহ বা সম্রাটের। গণতন্ত্রের সার্বভৌমত্ব জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠতার। সমাজতন্ত্র বা সাম্যবাদের (‘সোশ্যালিজম’ সমাজতন্ত্র বা ‘কমিউনিজম’ তথা সাম্যবাদ হলো সমাজভূক্ত সকলের কল্যাণার্থে ভূমি কল-কারখানা প্রবৃত্তি উৎপাদনের সহায়ক সমস্ত কিছু রাষ্ট্রের হাতে ন্যস্ত থাকবে। সেখান থেকে প্রত্যেকের প্রয়োজন অনুযায়ী বণ্টন করা হবে) সার্বভৌমত্ব জনগণের একটি বিশেষ শ্রেণীর। ফ্যাসিবাদের (ফ্যাসিবাদ হলো সমাজের ক্ষমতাসীন, ধনী ও ক্ষমতালোভী সুবিধাভোগীদের তৈরি একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র মেহনতি মানুষগুলোর উপর রাজত্ব অুণœ রাখা যায়) সার্বভৌমত্ব একনায়ক বা ডিকটেটরের। এসব জীবনব্যবস্থায় কেবল জড়ের দিক, দেহের দিক, ভোগের দিক দুনিয়াবী উন্নতির মাধ্যমে বৈষয়িক দিক নিয়েই আলোচনা করে। এমন ভারসাম্যহীন জীবন ব্যবস্থার মানুষগুলো আত্মা হারিয়ে পশুতে পরিণত হয়। তাদের নির্মমতা ও পাশবিকতা বিশ্বরেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। তাদের ভেতর বাহির শূন্য। বাইরে তারা ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ভিতর তাদের দেওলিয়া হয়ে যায়। কিন্তু ইসলামের সার্বভৌমত্ব মহান আল্লাহ তায়ালার। আপনি যে জীবন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না কেন একটি সার্বভৌমত্ব আপনাকে অবশ্যই মানতে হবে অর্থাৎ সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে কোন আপস নেই। প্রতিটি জীবন ব্যবস্থার সার্বভৌমত্বের মালিক ভিন্ন হওয়ায় একসাথে দুটি মানা সম্ভব নয়। তবে পরিবেশ পরিস্থিতির আলোকে স্থান-কাল-পাত্র ভেদে একটিকে সেতু বানিয়ে অন্যটিতে পদার্পণ করতে পারা যায়। হুকুম দেওয়ার অধিকার কেবল মাত্র আল্লাহর। সুতরাং আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মানার অর্থই হলো জীবনের যে অঙ্গনে আল্লাহর সিদ্ধান্ত থাকবে সেখানে অন্য কারো সিদ্ধান্ত মানা যাবে না। আর এটিই হলো সিরাতে মুসতাকিম বা সহজ সরল পথ।

লেখক : দোভাষী রিয়াদ হাইকোর্ট, ঈমাম, জামে আবাল খাইল মসজিদ, বাথা-রিয়াদ, সৌদি আরব।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।