পাখির গ্রাম হিসেবে পরিচিত নওগাঁর মহাদেবপুরে হাসানপুর গ্রাম

নওগাঁর মহাদেবপুরের হাসানপুর গ্রাম এখন পাখির অভয়ারণ্য

তাপস কুমার, নওগাঁ থেকে : যদি পাখির গ্রাম দেখতে চাও তাহলে হাসানপুরে চলে যাও। নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হাসানপুর গ্রামকে গ্রামবাসী  পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তুলেছেন। পাখি গ্রাম হিসেবে সরকারিভাবে ঘোষণা দেয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। ইতিমধ্যে এ গ্রামকে পাখির অভয়ারাণ্য গ্রাম হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় সাবেক এমপি ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী। গ্রামের মানুষের স্ব-উদ্যেগে পাখি শিকার রোধে নেয়া বিভিন্ন শ্লোগান আর নিজ সহায়তায় গড়ে তোলা অভয়ারাণ্যে হাজার হাজার দেশী ও বিদেশী পাখির আগমন ঘটায় পাখির কিচির-মিচির শব্দে এলাকাবাসীর ঘুম ভাঙে। জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মনোরম এ পরিবেশ দেখতে প্রতিদিন শ’ শ’ পাখিপ্রেমিক মানুষ হাসানপুর গ্রামে ভিড় করছে।  গ্রামে ঢুকার আগে গাছে বিভিন্ন পাখির আদলে সাইন বোর্ড লাগিয়ে সেখানে সচেতনামূলক উপদেশ লেখা হয়েছে। পাখি শিকার করবেন না! পাখি মারবেন না! ওরাও আমাদের মতো বাঁচতে চায়। পাখি এ সমাজের পরম বন্ধু। তাদেরকে আগলে রাখতে সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

নওগাঁর মহাদেবপুর সদর ইউনিয়নের সেই পাখির কলতানে মুখর গ্রামটি হাসানপুর। দেখা যাবে বড় একটি সাইন বোর্ড ঝুলানো আছে পাখি শিকার মুক্ত এলাকা হিসেবে গ্রামটিকে ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। স্থানীয় সাবেক এমপি ড. আকরাম হোসেন গ্রামটি পরিদর্শন করে পাখি গ্রাম হিসেবে মৌখিকভাবে ঘোষণা দিলেও গ্রামবাসীর দাবি সরকারিভাবে এ ঘোষণা দেয়া হোক। পানকৌড়ি, ডাহুক, রাতচরা, মাছরাঙাসহ অসংখ্য পাখির বসবাস এ গ্রামের ১০ বিঘা পরিমাণ জলাশয়ে। পাখির মেলায় যেন গ্রামটি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। গ্রামের সব মানুষগুলো যেন এই পাখিদের আগলে রেখেছে। ২০০৬ সালে পাখির প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসা নিয়ে সোনালী সংসদ নিয়ে পাখির অভয়ারণ্য গড়ে তোলার উদ্যেগ নেন সংস্থার সভাপতি মো. হেফজুল ইসলাম। এ গ্রামের ছেলে-মেয়ে, আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবাই যেন এ পাখিগুলোর সাথে ভাব জমিয়েছে। সংস্থার সভাপতি মো. হেফজুল ইসলাম জানান, গ্রামবাসী দীর্ঘদিন থেকে এ পাখিগুলোকে সন্তানদের মতো লালন-পালন করে আসছে। ঝড়-ঝাপটায় কোনো পাখির বাচ্চা পড়ে গেলে গ্রামের যে কোনো ছেলে-মেয়েরা বাচ্চাগুলোকে যতœ সহকারে মা-পাখিদের বাসায় পৌঁছে দেয়।