সংবাদ শিরোনামঃ

মাওলানা সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড ** আমরা আশা করেছিলাম তিনি খালাস পাবেন ** বৃহস্পতি ও রোববার সারাদেশে হরতাল ** ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা : ইমেজ সঙ্কটে মিডিয়া ** সন্ত্রাসবাদের ইস্যুকে উজ্জীবিত রাখতে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্র ** মুক্ত চিন্তা বন্ধ করতেই মাহবুব উল্লাহর ওপর হামলা ** বিরোধী দলের প্রতি সরকারকে আরো সহনশীল হতে হবে ** এবার কোটি কোটি টাকার গালগল্প ** ঈদকে সামনে রেখে দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে চোরাচালান বাড়ছে ** প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে বেঁচে আছে তিস্তাপাড়ের মানুষ ** মৌলভীবাজার মনুব্যারেজ ও লেকে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় ** কাজী নজরুল ইসলামের শিক্ষা ভাবনা **

ঢাকা, শুক্রবার, ৪ আশ্বিন ১৪২১, ২৩ জিলক্বদ ১৪৩৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪

নীলফামারী সংবাদদাতা : কখনো খরা, কখনো বন্যা। আর বন্যা শেষ হতে না হতেই নদী ভাঙ্গন। খরা, বন্যা আর নদী ভাঙ্গন এই তিন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে নীলফামারী জেলার তিস্তা অববাহিকার মানুষ। এসবের যেকোনো একটি দুর্যোগ এলেই এলোমেলো করে দেয় নদী পাড়ের এসব মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কখনো দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে তাদের ভাগ্যে জোটে কিছু সরকারি ত্রাণ, এর বেশি নয়। আর দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে তিস্তাপাড়ের মানুষদের নিয়ে চলে সকল রাজনৈতিক দলের আহামরি ভাষণ। আসে ত্রাণ, যা দিয়ে পকেট ভারী হয় সরকারি দলের নেতা-কর্মী আর প্রশাসনের সকল স্তরের লোকজনের। কিন্তু তাদের ভাগ্যের কাজের কাজ কিছুই হয় না। বার বার প্রতারণার স্বীকার দুর্গত মানুষ এখন অনেকটাই সচেতন হয়ে উঠেছে। তারা আর প্রতারিত হতে চান না। তাদেরকে নিয়ে কেউ ব্যবসা করুক তা আর তাদের পছন্দ নয়। আর এসব নানা কারণে এখন আর তারা ত্রাণ চাননা। ত্রাণ নামের এই সরকারি ভিক্ষার বদলে কাজ করে সম্মানের সাথে বাঁচতে চায় নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে ঘর করা এসব মানুষ।

বছরের বেশিরভাগ সময়ই মরুভূমিতে রূপ নেয়া খরস্রোতা তিস্তা নদী। এরপর বর্ষা এলেই স্বরূপে ফিরে আসে এই নদী। বাড়তে থাকে তিস্তার পানি। তখন নদীর দু’কূল ছাপিয়ে পানি ঢুকে পড়ে লোকালয়েও। শুরু হয় বন্যা। আর নদীর পানি নেমে গেলে শুরু হয় ভাঙ্গন। আর তাতেই ঘর বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফসলী জমি যাকেই পেয়েছে নদীতে নিয়ে গেছে সর্বগ্রাসী তিস্তা। ফলে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষকে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়সিংহের চর এলাকার গাইড বাঁধে আশ্রয় নেয়া সত্তরোর্ধ বাদশা মিয়া বলেন, এক সময় আমার ১৫ বিঘা জমি, বাড়ি, পুকুর সবই ছিলো।

এখন আর কোনো জমিজমা নাই। সব তিস্তা নদীর গর্ভে চলে গেছে। সব কিছু হারিয়ে এখন তিস্তার গাইড বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। ঝাড়সিংহের চর গ্রামের চাঁন মিয়া (৬৫) বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে তিনবার আমার বাড়ি ভাঙ্গতে হয়েছে। আমাদের সারা বছরই সমস্যা হয় তবে বন্যার সময় কষ্ট আরো বেশি হয়। পূর্ব ছাতনাই গ্রামের সিকোস্তি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমি তিস্তা পাড়ের কাশফুল ও ঘাস কেটে তা বিক্রি করে সংসার চালাই। তবে বন্যা এলে সব জায়গায় পানি ওঠে। তখন কাজকর্ম বন্ধ থাকে। এসময়টায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটে আমাদের। দুর্যোগ শেষে সরকারের পক্ষ থেকে এসব মানুষের হাতে তুলে দেয়া হয় কিছু সরকারি ত্রাণ। কিন্তু যতসামান্য এসব ত্রাণে তুষ্ট নন নদী পাড়ের মানুষ। তাইতো এখন আর ত্রাণ নয় তারা চান কর্ম। কাজ করে সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে। পূর্ব ছাতনাই গ্রামের খায়রুল আলম (৪০) বলেন, বন্যা হলে সরকারের পক্ষ থেকে ২০ কেজি চাল দেয়া হয়। এই সামান্য চাল দিয়ে তো আর সারা বছর চলেনা। ফলে বাকী সময়টুকু আমাদের কষ্ট থেকে যায়। একই গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৬৫) বলেন, সামান্য যে ত্রাণ দেয়া হয় তা দিয়ে বড়জোড় ৭/৮ দিন চলে। এর থেকে আমাদের জন্য যদি কাজের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে আমরা মুক্তি পেতাম। কাজ করে সম্মানের সাথে বাঁচতাম।

তাই তিস্তা পাড়ের কর্মহীন এসব মানুষকে তাদের কষ্টগাঁথা জীবন থেকে মুক্তি দিতে দীর্ঘস্থায়ী কর্মসংস্থানের দাবি জানালেন পূর্ব ছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক আব্দুল লতিফ খান। তিনি বলেন, প্রতিবারই বন্যা, খরা আর ভাঙ্গনের ফলে এসব এলাকার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে তাদের হাতে কিছু সরকারি ত্রাণ তুলে দেয়া হয় তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

কর্মহীন এসব মানুষের জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা গেলে তারা হয়তো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন। তিস্তা পাড়ের এসব মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে নীলফামারী জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন জানান, দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে তাদের যে ত্রাণ দেয়া হয় তা স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। এসব মানুষকে টিআর, কাবিখা বা ৪০ দিনের কর্মসূচির মতো আয়মূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা গেলে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।