যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় ৫০ অধ্যাপক গ্রেফতার
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে চলমান ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় অন্তত ৫০ অধ্যাপককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত অনেক শিক্ষককে পুলিশের কাছে মারধর ও হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। পুলিশ, বিক্ষোভ-সম্পর্কিত সংবাদ ও আদালতের নথি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গত ১৭ এপ্রিল গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং ইসরাইলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ছিন্নসহ বেশকিছু দাবিতে বিক্ষোভে নামেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে যুক্তরাষ্ট্রের দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ইউরোপের অন্তত ১২টি দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ বিক্ষোভ থেকে বহু শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৯ এপ্রিল ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময়ে এক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করতে গেলে পুলিশকে বাধা দেন আটলান্টার ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ক্যারলিন ফলিন। এ সময় পুলিশ ওই নারী অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেন। আটকের পর এ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। বিক্ষোভের ভিডিও ধারণ করছিলেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিভ তামারি। এ সময় তাকে শারীরিক হেনস্তার পর আটক করে পুলিশ। পুলিশের মারধরে তার পাঁজর ও ডান হাত ভেঙে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একটি সংগঠন আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি প্রফেসর বলছে, অধ্যাপকদের হাতকড়া পরিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় চলছে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের মৌসুম। তবে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মুখে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এ অনুষ্ঠান বাতিল নয়তো পিছিয়েছে। আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ আয়োজন করা হলেও তাতে বাধা দিচ্ছেন যুদ্ধবিরোধী শিক্ষার্থীরা। যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে স্পেনের মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও ভ্যালেন্সিয়ার মতো বড় বড় শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। এএফপি।
যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরাইলকে যথেষ্ট চাপ দিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ : এরদোগান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান গত ১২ মে রোববার বলেছেন যে, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নেয়ার পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলো গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য ইসরাইলকে চাপ দেয়ার জন্য যথেষ্ট কাজ করছে না।
তুরস্ক গাজায় ইসরাইলের হামলার নিন্দা করেছে, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে এবং পশ্চিমাদের দ্বারা ইসরাইলকে নিঃশর্ত সমর্থন দেয়ার সমালোচনা করেছে। আঙ্কারা ইসরাইলের সাথে সব বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে এবং বলেছে যে, তারা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের গণহত্যার বিচার করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্যোগে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইস্তাম্বুলে মুসলিম পণ্ডিতদের সাথে কথা বলার সময় এরদোগান বলেন, হামাস কাতার ও মিশরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে ‘একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পথে’ গ্রহণ করেছে, কিন্তু ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার যুদ্ধ শেষ করতে চায়নি। ‘নেতানিয়াহু সরকারের প্রতিক্রিয়া ছিল রাফায় নিরপরাধ মানুষের ওপর হামলা করা,’ তিনি বলেন, ‘এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে কে শান্তি ও সংলাপের পক্ষে এবং কারা চায় সংঘর্ষ অব্যাহত এবং আরও রক্তপাত হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবং নেতানিয়াহু কি তার বিকৃত আচরণের জন্য কোনো গুরুতর প্রতিক্রিয়া দেখেছেন? না। ইউরোপ বা আমেরিকা এমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি যা ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করবে।’ এরদোগানের গোয়েন্দা প্রধান ইব্রাহিম কালিন গত ১২ মে রোববার দোহায় হামাস নেতাদের সাথে যুদ্ধবিরতি আলোচনা এবং গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা করার জন্য বৈঠক করেছেন, একটি তুর্কি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে। রয়টার্স।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান
এ পাতার অন্যান্য খবর
এ বিভাগ বা পাতায় আর কোন সংবাদ, কবিতা বা অন্যকোন ধরণের লেখা পাওয়া যায়নি।