সেচ সংকটে ৪৫ হাজার বিঘা জমির বোরো ধান
মান্দার খরস্রোতা আত্রাই নদ যেন মরা খাল
এম এম হারুন আল রশীদ হীরা, মান্দা (নওগাঁ) : পলি পড়ে ও নানা সময়ে নদের ভাঙনে ভরাট হয়ে গেছে নওগাঁর মান্দা উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত একসময়ের প্রবল খরস্রোতা আত্রাই নদের তলদেশ। এখন খরস্রোতা আত্রাই নদ যেন মরা খালে পরিণত হয়েছে। তাই সেচ সংকটে ৪৫ হাজার বিঘা জমির বোরো ধানের আবাদ অনিশ্চয়তার কবলে পড়েছে। এ বছরও কয়েকদিন ধরে নদটির পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। উজানের নিচু এলাকাগুলোয় সামান্য পানি থাকলেও পানিশূন্য হয়ে পড়েছে পুরো ভাটি অংশ।
বন্ধ হয়ে গেছে নদকেন্দ্রিক ভাটি অংশে ৩শ’র বেশি সেচপাম্প। এতে চরম ঝুঁকিতে পড়েছে এসব সেচ পাম্পের আওতায় চাষ হওয়া অন্তত ৪৫ হাজার বিঘা জমির বোরো ধানের আবাদ। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত কিংবা নদে পানি না এলে এ আবাদে ফলন বিপর্যয়ের মুখে পড়বেন কৃষকরা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, আত্রাই নদের পানি দিয়ে দুইপারের শত শত হেক্টর উর্বর জমিতে ধান, গম, সরিষা, আলু, ভুট্টা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষ করেন কৃষকরা। বিল ও মাঠের জমিতে চাষ হয় বোরো, আমন ও আউশ ধান। কিন্তু প্রত্যেক রবি মৌসুমের শুরুতেই অনাকাক্সিক্ষতভাবে নদের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
প্রসাদপুর গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম প্রামাণিক ও আয়েজ উদ্দিন ফকির বলেন, উত্তাল নদটি এখন শুধু নামেই নদ। বাস্তবে পরিণত হয়েছে মরা খালে। খরা মৌসুম শুরু হলেই এর পানি দ্রুত কমতে শুরু করে। চৈত্র ও বৈশাখ মাসে পানি কমে চলে আসে মানুষের হাঁটুর নিচে। এ সময় এলাকার মানুষজন হেঁটেই পারাপার হন নদটি। নদীপাড়ের মানুষের উৎপাদন করা প্রধান ফসলই হচ্ছে বোরো ধান। এবারে সরিষা কাটার পরে রোপণের পর ধানগাছের বয়স মাত্র কোথাও ২০ দিন। আবার যারা সরিষা চাষ করেননি, তাদের ৩৫ থেকে ৪০ দিন হয়েছে। পরিপক্ব ধানগাছ তৈরি হতে এখনো অনেক সময় লাগবে। এ অবস্থায় সেচকাজ ব্যাহত হলে ফলন বিপর্যয় ঘটার সমূহ সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।
নদের পাড়ের বাসিন্দা শতবর্ষী তনজেব আলী বলেন, এখন এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে, একসময় ছোট-বড় নানা প্রজাতির মাছের অফুরন্ত উৎস ছিল এ নদ। এ কারণে নদের পাড়সংলগ্ন আশপাশের এলাকাগুলোয় গড়ে উঠেছিল অসংখ্য জেলেপল্লী। নদের পাড়েই ছিল তাদের পরিবারের বসতি। নদটি শুকিয়ে যাওয়ায় মাছের সেই উৎস এখন যেন শুধুই অতীতকালের জাদুঘরে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, বোরো ধানের আবাদ মূলত সেচনির্ভর। বর্তমানে ধান কুশি পর্যায়ে আছে। এখন সেচ কম হলেও সমস্যা নেই। ফলনেও তেমন প্রভাব পড়বে না। কিন্তু থোড় অবস্থায় সময়মতো সেচ ও জমিতে দুই থেকে তিন ইঞ্চি পানি থাকা জরুরি। না হলে ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা থাকবে।
এ পাতার অন্যান্য খবর
- মাওলানা আব্দুল খালেকের পরিবারের সাথে জামায়াত আমীরের ইফতার
- রমযানের প্রকৃত শিক্ষা হচ্ছে আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জন -মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন
- সংগঠন সংবাদ
- সরকার জাতিকে ধীরে ধীরে ধর্মবিমুখ করছে : মো. শাহজাহান
- ঘোড়াঘাটে লিচু চাষ বাড়ছে
- বরিশালের বানারীপাড়ায় আলী হোসেনের বাড়িতে কান্নার রোল
- চাকসুর সাবেক জিএস আব্দুল গাফফারের দাফন