সংবাদ শিরোনামঃ

মুজাহিদ ও সালাউদ্দিনের শাহাদাত ** মুজাহিদের বিরুদ্ধে সরকারের করা মামলার ইতিহাস ** দুই জাতীয় নেতাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা ** অপরাজিত শহীদ মুজাহিদ পরাজিত সরকার ** শহীদ মুজাহিদের কবরের পাশে অশ্রুভেজা জনতার ঢল ** প্রতিহিংসা চরিতার্থে মুজাহিদকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে সরকার ** মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন মার্সি পিটিশন করেননি ** মুজাহিদকে হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী হরতাল পালিত ** বিরোধী নেতাদের ফাঁসি রাজনৈতিক বিভাজন বাড়াবে ** আওয়ামী লীগকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে ** একজন নির্দোষ মানুষকে হত্যার বিচার আল্লাহ করবেন ** দেশকে এগিয়ে নিতে প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করতে হবে ** ধাওয়া-খাওয়াদের খবর ** নতুন উদ্যোক্তা গড়ায় পিছিয়ে বাংলাদেশ ** শহীদ মুজাহিদের রক্ত এদেশের মাটিকে ইসলামী আন্দোলনের জন্য উর্বর করবে ** প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন মুজাহিদ ** শাহাদাতের মৃত্যু গৌরবের **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪২২, ১৪ সফর ১৪৩৭, ২৭ নভেম্বর ২০১৫

॥ ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম॥
বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি কালো অধ্যায়ের সংযোজন করল বর্তমান আওয়ামী সরকার। ২২ নভেম্বর দিনটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এই দিন দু’জন দেশ প্রেমিক নাগরিককে হত্যা করা হলো। পৃথিবীতে আজ অসংখ্য জায়গায় আইনের দোহাই দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এখন বাংলাদেশ সেই ভয়ঙ্কর সময়টি অতিক্রম করছে। দার্শনিক সক্রেটিসকে হ্যামলক বিষ প্রয়োগে হত্যার রায় দিয়েছিল আদালতেই। জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিওকেও ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয় আদালতের নির্দেশেই। হাজার বছর পর এসে প্রমাণিত হয়েছে আদালতের দুটি রায়ই ভুল ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে হয়ত একদিন এই হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রেও তাই প্রমাণিত হবে। এজন্য অধ্যাপক ম্যাকলোয়েন চার্লস বলেছেন, “আমার মতে ইতিহাসের কোনো যুগেই কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রের প থেকে এত কঠিন বিপদের সম্মুখীন হয়নি, প্রশাসনের সামনে বিচার বিভাগ কখনো এতটা অসহায়ত্ব বোধ করেনি”।  বেকন বলেছিলেন- “আইনের মাধ্যমে অত্যাচার করার চেয়ে বড় অত্যাচার আর নেই।” সেই অত্যাচারের শিকার হয়েছেন জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদও।

পৃথিবীর সব নীতি নৈতিকতা, মানবাধিকারকে উপেক্ষা করে যাকে হত্যা করা হয়েছে তিনি- একজন রাজনীতিবিদ, প্রতিথযশা শিক্ষাবিদ, লেখক, ইসলামী ব্যক্তিত্ব, সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় নেতা। বিশ্বের কোটি-কোটি মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর চোখের অশ্রু সিক্ত হয়ে আমাদের প্রাণ-প্রিয় নেতা আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছেন। বাংলার মানুষের কাছে শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ একটি বিপ্লবী নাম, একটি আন্দোলন, একটি ইতিহাস, একটি আপোষহীন সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি হিসেবে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এ জাতি শ্রদ্ধার সাথে ইসলামী আন্দোলনের এই সিপাহসালারকে হৃদয়ের আবেগ আর ভালোবাসায় সিক্ত করবে শতাব্দী থেকে শতাব্দী। এই ভূখণ্ডে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম, প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামে শহীদ মুজাহিদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। শহীদ মুজাহিদ ছিলেন আধিপত্যবাদ ও সা¤à§à¦°à¦¾à¦œà§à¦¯à¦¬à¦¾à¦¦à§€ চেতনার বিপরীতে একটি বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। ট্রাইব্যুনালের রায় শুনে তিনি বলেছিলেন, “সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে, যে শাস্তির ব্যবস্থা করেছে তার জন্য আমি মোটেই বিচলিত নই। আমি আল্লাহর দ্বীনের উদ্দেশ্যে আমার জীবন কুরবান করার জন্য সব সময় প্রস্তুত আছি।” তাঁর এই সাহসী উচ্চারণ থেকে তরুণ প্রজন্ম, এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার চেতনা খুঁজে পাবে।

বাংলার জমিনে নাস্তিকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীর রক্তচক্ষু মোকাবেলা করে তৃণমূল থেকে গড়ে উঠে আসা একজন সংগ্রামী প্রাণপুরুষ। নীতির প্রশ্নে সদা আপোষহীন এই মানুষটিকে কেবলমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার অপরাধেই আজ হত্যা করা হয়েছ্।ে আল্লাহ বলেন, “তাদের অপরাধ, তারা মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে।” আল্লাহ বলেন, “আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদের মৃত মনে করো না, প্রকৃত পক্ষে তারা জীবন্ত, কিন্তু তাদের জীবন সম্পর্কে তোমরা অনুভব করতে পারো না” (২ ঃ১ ৫৪)। প্রিয় রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘‘শাহাদাত লাভকারী ব্যক্তি নিহত হবার কষ্ট অনুভব করে না। তবে তোমাদের কেউ পিঁপড়ার কামড়ে যতটুকু কষ্ট অনুভব করে, কেবল ততটুকুই অনুভব করে মাত্র।” (তিরমিযী)

এই ক্ষণজন্মা, মহান ব্যক্তিত্বের জন্ম  ১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি। তাঁর পিতা প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা আব্দুল আলীর কাছে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের মধ্য দিয়ে শিক্ষার হাতেখড়ি। জনাব মুজাহিদের পিতা মাওলানা আব্দুল আলী একজন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে আজও ফরিদপুরসহ গোটা অঞ্চলের মানুষের নিকট শ্রদ্ধার পাত্র। ১৯৬২-১৯৬৪ সাল পর্যন্ত প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যও (এমপিএ) নির্বাচিত হয়েছিলেন। জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ফরিদপুর ময়জুদ্দিন স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সর্বশেষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

ছাত্র জীবনে এই মেধাবী চৌকস সচেতন মানুষটি ছাত্র-সমাজের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে শীর্ষে থেকে ছাত্রসংঘের প্রাদেশিক সভাপতি নির্বাচিত হন।  কর্মজীবনে ও রেখেছেন গৌরবজ্জল ভূমিকা। শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ঢাকা মহানগরীর আমীর, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান, শাহাদাতের পূর্ব পর্যন্ত সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে  দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠাসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও তিনি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছেন। শহীদ মুজাহিদ সমাজকল্যাণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করাকালীন তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে জেল, জুলুম এবং নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। এক এগারো সরকার তথাকথিত দুর্নীতির মিথ্যা মামলা দিয়েও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি আবিষ্কার করতে পারেনি। কারণ দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া যাদের মিশন এবং ভিশন। যারা আল্লাহর নিকট প্রতিটি কর্মের জবাবদিহির চেতনা লালন করেন তারা কি দুর্নীতি করতে পারেন?

শহীদ মুজাহিদ ছিলেন ক্ষুধা-দারিদ্র্য মুক্ত একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অনুপম কারিগর। মন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে কায়েম করেছেন সততা, ইনসাফ, সত্যবাদিতার উজ্জল উদাহরণ। আত্মত্যাগ, আন্তরিকতা, নিষ্ঠার মাধ্যমে দেশ প্রেমের সাক্ষর রেখেছেন প্রতিটি ক্ষেত্রে। জনগণের মধ্যে জাগিয়ে তুলেছেন একটি সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন। তাঁদের ঐতিহাসিক ভূমিকা দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাই ষড়যন্ত্র আর কূটকৌশলের মধ্যে দিয়ে চলতে থাকে রাষ্ট্রীয় আয়োজনে হত্যা করার ঘৃণ্য চক্রান্ত।

জনাব মুজাহিদকে হত্যা করে আওয়ামী লীগ নতুন করে আবার হিংসা-বিদ্বেষের বীজ বপণ করল। যা দেশের ঐক্য ও সংহতির জন্য মোটেও কল্যাণকর নয়। বি. সি. রায় বলেছেন- ”ক্ষমতা সবচেয়ে বড় মদের নেশার মতো। যাকে একবার পেয়ে বসে তাকে জীবনে শেষ করে দেয়”। আওয়ামী লীগ আজ অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকা নেশায় মত্ত হয়ে শহীদ মুজাহিদকে হত্যা করেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আর যে ব্যক্তি জেনে বুঝে মুমিনকে হত্যা করে, তার শাস্তি হচ্ছে জাহান্নাম। সেখানে চিরকাল থাকবে। তার ওপর আল্লাহর গজব ও তাঁর লানত এবং আল্লাহ তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।” (৪ ঃ ৯৩)         

এক সময় শহীদ মুজাহিদ সাহেব আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র ছিলেন। রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন একত্রে। একান্ত নিভৃতে রাজনৈতিক শলা-পরামর্শও হয়েছে জামায়াত নেতাদের সাথে। তাই ইবনে মুয়াইদ বলেছেন-” হিংসুক ব্যক্তি সর্বদা তিন প্রকার কষ্টে নিপতিত থাকে-আত্মদহন, মানুষের ঘৃণা এবং আল্লাহর গজব। আর ডন জুয়ান বলেছেন- হিংসা দিয়ে কখনো হিংসাকে হত্যা করা যায় না। আওয়ামী লীগ ঘরে-ঘরে হিংসা বিদ্বেষের বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে।

শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ভাইয়ের অসংখ্য কর্মই এখন স্মৃতি। অনেকের মতো আমিও  অত্যন্ত কাছ থেকে এই প্রিয় মানুষটিকে দেখেছি। মুজাহিদ ভাই ছিলেন নীতির প্রশ্নে আপোষহীন। কিন্তু তিনি ছিলেন যেমন কঠোর উনার হৃদয়টা ছিলো অনেক নরম প্রকৃতির। আমি তাঁর চরিত্রের মধ্যে হজরত ওমর ফারুক (রা.) চরিত্রের ছাপ দেখতে পেয়েছি। বিশেষ করে দেশের সমস্ত ক্যাম্পাসে যখন ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শিকার, নেতাকর্মীদের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতনের বর্ণনা শোনার পর অনেক দিন তাঁর চোখে আমি পানি দেখেছি! তিনি ছাত্রশিবিরকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতেন। তারপরও তিনি সব সময় ছাত্রশিবিরকে সৎ জীবন যাপন ও ধৈর্যের পরামর্শ দিতেন এবং বলতেন তোমরা কোনো বাড়াবাড়ি করো না, তাহলে আল্লাহর সাহায্য পাবে।

মুজাহিদ ভাই আত্মপর্যালোচনার ব্যাপারে ছিলেন আপোষহীন। ক্যাম্পাসের কোনো ঘটনা শুনলেই তিনি বলতেন তোমাদের কোনো ভুল, বাড়াবাড়ি ছিল কি না তা আগে খতিয়ে দেখ। সময়ানুবর্তিতায় তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। মুজাহিদ ভাইয়ের সাথে কোনো মিটিং থাকলে তিনিই আগে উপস্থিত হতেন। তিনি যে মিটিং এ মেহমান থাকতেন সেখানেও তিনি দেরীতে উপস্থিত হয়েছেন বলে আমার জানা নেই।

ব্যক্তি জীবনে অল্পে তুষ্ট, নির্লোভ, পরোপোকারী, দৃঢ়চেতা, ছিলেন শহীদ মুজাহিদ। জীবন-যাপন করতেন অত্যন্ত সাদা-সিধেভাবে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় অফিসে গিয়ে দেখতাম ফোরে মাদুর ফেলে তিনি বিশ্রাম নিচ্ছেন। পোশাক আশাকেও তিনি অত্যন্ত সিম্পল। অনেক সময় দেখেছি তার গায়ের ফতুয়া ছেড়া। আমরা তাকালে হাসতেন আর বলতেন অল্পে তুষ্ট জীবন লালন করতে শিখ। তাহলে জীবনে টেনশন ফ্রি থেকে হালাল পথে থাকতে সহজ হবে। কত মানুষ আছে যাদের একটা জামাও নেই। একবেলা খেতে পায় না। তাদের কথা আমাদের ভাবতে হবে। দেশের মানুষের মুক্তির জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন তিনি।

একদিন মুজাহিদ ভাই আমাকে বললেন তোমরা কি ফুটপাত থেকে অল্প দামে জামা কিন? আমি বললাম মুজাহিদ ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে কিনেছি, এখন অবশ্য কেনা হয়না। তিনি বললেন, অল্প দামে জামা-কাপড় কিনবা তাহলে সাধারণ মানুষের জীবনকে উপলব্ধি করতে পারবা। আর বাকি টাকা দিয়ে যার প্রয়োজন তাকে সহযোগিতা করতে পারবা।  শহীদ মুজাহিদ ব্যক্তি জীবনে তিলে তিলে নিজের জীবনকে গড়ে তুলেছেন। কৃচ্ছ্বতা সাধন করে রাষ্ট্রীয় খরচের ক্ষেত্রেও অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দু’মন্ত্রী দলীয় কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতেন খুব কমই। সরকারি সফরে গিয়ে দলীয় লোক নিয়ে বিরাট খরচের বোঝা না বাড়িয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে খেতেন জামায়াত অফিসে। বাঁচিয়ে দিতেন সরকারি টাকা। তাদের সাথে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিরা আজও তাঁদের এ সততার সাক্ষী। আবার দলীয় কাজে সফরে গিয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিতেন না তারা। তাঁর স্ত্রী বলেছেন, স্ত্রী হিসেবে আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমার স্বামী ঘরে বাইরে, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে আল্লাহর রহমতে অত্যন্ত স্বচ্ছ ও সৎ জীবন যাপন করেছেন।

২০০৯ সালে আমি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি থাকাকালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করি। সম্মেলনে বিশ্বের প্রায় ৬৮ রাষ্ট্রের ছাত্র যুব প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের অতিথি হিসেবে আধুনিক তার্কির রূপকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিম উদ্দিন এরবাকান এসেছিলেন। নাজিম উদ্দিন এরাবানকে ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করার সময় তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে উচ্ছাসের সাথে বললেন, ইয়েস ইউর লিডার মি.নিজামী, মি.মুজাহিদ! তখন নিজেকে অনেক ধন্য মনে করলাম। বুঝতে আর বাকী নেই নাজিম উদ্দিন এরবাকান সত্যিই হৃদয় দিয়ে বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে ভালোবাসেন। এভাবে পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে আমাদের নেতৃবৃন্দ দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছিয়েছেন। আজ আওয়ামী রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কালো কাপড় দিয়ে সব অর্জনকে ঢাকতে চায়। এটি অসম্ভব। 

আন্তর্জাতিক বার এসোসিয়েশন, মানবাধিকার সংগঠন, সংস্থা এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার রিপোর্টে যে আশঙ্কা করা হয়েছে যে, “সরকার তার পরিচিত প্রতিপ এবং রাজনৈতিক শত্রুদের দমন করতেই এ বিচারকে ব্যবহার করছে”। তাই ভলতেয়ার বলতেন-”অস্ত্রের জোরে তুমি সারা পৃথিবী জয় করতে পার, কিন্তু পারবে না একটা গ্রামের মানুষেরও মন বশীভূত করতে।” বিচারের ক্ষেত্রে আজ আওয়ামী লীগ সেই নীতিই অবলম্বন করছে। শহীদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ব্যক্তিত্ব তাদের উদ্বেগ অব্যাহত রেখেছে।

অথচ এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে জেরার সময় স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশের কোথাও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সংঘটিত কোনো অপরাধের সাথে জনাব মুজাহিদ সম্পৃক্ত ছিলেন তার সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ তার হাতে নেই। সম্পূর্ণ ধারণার ও ঢালাও অভিযোগের ভিত্তিতে একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। যাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে তিনি জানতেই পারলেন না কি তার অপরাধ, কি অপরাধে তাঁকে হত্যা করা হলো।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যে অন্যায়ভাবে কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করলো, সে যেন গোটা মানব জাতিকে হত্যা করলো।” রাসূল (সা.)  বলেছেন, বিচারক তিন ধরনের দুই ধরনের জাহান্নামী এক ধরনের জান্নাতী, যে সত্য জেনেও অন্যায় বিচারকার্য করে সে জাহান্নামী, যার বিচারকার্যের জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও বিচারকার্য করল সে জাহান্নামী,  আর যে সত্যকে জানলো এবং সে অনুযায়ী বিচারে রায় দিল সে জান্নাতি (ইবনে মাজাহ)। বিচারের সাথে মিথ্যা সাক্ষ্যদানকে তিনি শিরকের সমতুল্য বড় গুনাহ বলে উলেখ করেছেন। যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়, মিথ্যা সাক্ষ্যদানে উদ্বুদ্ধ করে এবং জেনে-বুঝে এর পাবলম্বন করে এরা সবাই মুশরিক ও জালেম জাহান্নাম ই তাদের ঠিকানা। আয়েশা (রা.) বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, ‘মুসলমানদের ওপর থেকে শাস্তি যতটা পারো রহিত করো। তাকে অব্যাহতি দেয়ার সুযোগ থাকলে অব্যাহতি দাও। কেননা শাসকের জন্য ভুলক্রমে শাস্তি দেয়ার চেয়ে ভুলক্রমে মাফ করা উত্তম।’

আওয়ামী লীগ হয়তো মনে করেছে যুদ্ধাপরাধের বিচারের মাধ্যমে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে একের পর এক হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনকে নিশ্চিহ্ন করে দিবে। কিন্তু আল্লাহর ঘোষণা-“তারা মুখের ফুৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।” (৬১ঃ৮)

রাষ্ট্র পরিচালনায় জামায়াতের অংশগ্রহণ, দু’মন্ত্রীর জনপ্রিয়তা, জনসমর্থন, সাংগঠনিক মজবুতি, আওয়ামী বাম শিবিরকে দিশেহারা করে ফেলেছে। মনে রাখতে হবে, রাজনৈতিক হিসাব কখনো দুয়ে দুয়ে চারের পরিবর্তে অন্য কিছুও হয়। সে বার্তাই উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতকে সমর্থন দেয়ার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।

মিসরের কুখ্যাত প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুন নাসের মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা সাইয়েদ কুতুব, হাসান আল বান্নাকে হত্যা করে তাদের আদর্শকে স্তব্ধ করতে পারেনি। বর্তমানে ইখওয়ানের মুর্শিদে আম ড.বদি, প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড.মুরসিসহ শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির রায় দিয়ে জুলুম-নিপীড়নের সব অস্ত্র ব্যবহার করেও দমাতে পারেনি। বরং অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী পশ্চিমা মদদপুষ্ট জালিম শাসক সিসি সম্প্রতি ব্রিটেন সফরে গিয়ে প্রকাশ্য বলতে বাধ্য হয়েছে যে, ব্রাদারহুড প্রকাশ্য রাজনীতি করতে পারবে। মূলত স্বৈরাচাররা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শক্তি দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী এটি সম্ভব হয়নি।

মুমিনের জীবনে সবচেয়ে বড় সফলতা শাহাদাতের মৃত্যু। এটি কোনো মৃত্যু নয়, এ যেন নতুন জীবনের সূচনা। একেকজন শহীদের সাহসী উচ্চারণ আজ মুসলিম উম্মাহর পাথেয়। শহীদ মুজাহিদ বলেছেন, “আমি আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে বলছি, আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা ও বানোয়াট। ১৯৭১ সালের যুদ্ধকালীন কোনো ধরনের অপরাধের সাথে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম না। শুধুমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার অপরাধে এত বছর পরে আমার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা অভিযোগ সাজানো হয়েছে। তিনি আরো  বলেন, প্রতিদিন বাংলাদেশে শত শত লোক স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করে। এসব মৃত্যুর সাথে ফাঁসির আদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। কখন, কার, কিভাবে মৃত্যু হবে সেটা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা নির্ধারণ করেন। আল্লাহর সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো সাধ্য কারো নেই। সুতরাং ফাঁসির আদেশে কিছু যায় আসে না। আমি মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার ঘোষণায় উদ্বিগ্ন নই।

শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রিয়জন হারানোর বেদনায় জ্বলতে থাকবে প্রতিদিন, প্রতিণ, প্রতিটি মুহূর্ত। মহান রবের দরবারে সন্তান হারা মায়ের আহাজারি, স্বামী হারা স্ত্রীর ফরিয়াদ, বাবা হারা সন্তানদের অশ্রুপাত। আর প্রতিরাতে তাহাজ্জুদের নামাজ শেষে চোখের পানি কি কোনোই কাজে আসবেনা? একদিন তারা পাবেন এই রোনাজারির পুরস্কার। শহীদেরা ৭০ ব্যক্তিকে সুপারিশ করে জান্নাতে নিতে পারবেন। শহীদের রক্ত বিন্দু ঝরতেই তাকে মাফ করে দেয়া হয় এবং জান্নাতে যে তার আবাসস্থল তা চাুস দেখানো হয়। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দুনিয়ার আদালতে না হলেও আল্লাহর আদালত থেকে খুনিরা রেহাই পাবে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে তোমরা মৃত  মনে করো না, বরং তারা জীবিত।”

আদর্শের লড়াইয়ে যারা পরাজিত, তারা আজ হিংস্রতা, পৈশাচিকতা, জঘন্য, মিথ্যা, বানোয়াট, নোংরামি আর কূটকৌশল দিয়ে এই জাতির বীর সৈনিকদের অবদানকে কলূষিত করতে পারবে কি? দেশে-বিদেশে, খানায়ে কাবার আর মসজিদে নববীতে লক্ষ কোটি মানুষের কান্নার আওয়াজ আর জানাজায় উপস্থিতি আওয়ামী লীগ কি বার্তা পাচ্ছে! এত অপপ্রচার, নোংরামি, ভণ্ডামী, আর তামাশা করেও লাখো জনতার গগণবিদারি কান্না, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সমাহিত হওয়াও কি ঠেকাতে পেরেছে সরকার? রাসূল (সা.) বলেছেন, “আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন তখন তিনি ফেরেশতাদের বলেন, দুনিয়ার মানুষকে জানিয়ে দাও তারাও যেন এ বান্দাহকে ভালোবাসেন।

এই জনপদে অধ্যাপক গোলাম আযম, শহীদ মুজাহিদ, শহীদ কামারুজ্জামান, শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা ইসলামী আন্দোলনের যে বীজ বপন করেছেন, তা বিকশিত হয়ে গড়ে উঠেছে একটি তরুণ প্রজন্ম। তাদের নিরলস কর্ম,  বক্তৃতা, লেখনীর মাধ্যমে এই দেশের মানুষ তাদেরকে নিজ গরজেই সম্মান করতে থাকবে। জাতি তাদের ঐতিহাসিক অবদানকে মূল্যায়ন করবে শতাব্দীর পর শতাব্দী। এই বীর সেনানীদের ভালোবাসতে থাকবে আর ঝড়াতে থাকবে চোখের পানি। পৃথিবীর প্রান্তে-প্রান্তে প্রতিনিয়ত তাদের জন্য দোয়া করবে বিশ্ব মানবতা।

এই প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে জাতি নতুন করে আবার জানলো সত্য ইতিহাস। জামায়াত নেতৃবৃন্দ কোনো মানবাতবিরোধী অপরাধ করেননি। তাঁদের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “একজন আইনজীবী হিসেবে আমি বলতে চাই, মানবতাবিরোধী অপরাধে যে চারজনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন আইনের অধীনে বিচার হলে তাদের কারোরই ফাঁসি হতো না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেভাবে বিচার করতে বলেছে, সেভাবে বিচার করা হলে কারোরই ফাঁসি হতো না বলে আমি মনে করি। সকলেই মুক্তি পেতেন।”

শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ শেষ  দেখায় স্ত্রী তামান্না-ই জাহানকে ধৈর্য ধরতে এবং শান্ত থাকতে বলেছেন। তার পুত্র আলী আহমেদ মাবরুর বলেন, বিদায় বেলায় আব্বাকে একেবারেই শান্ত স্বাভাবিক দেখা গেছে। তবে প্রেসিডেন্টের কাছে মা প্রার্থনার বিষয়ে তিনি বেশ রিঅ্যাক্ট করেছেন। তিনি বলেছেন, জীবনের শেষ দিনও সরকার আমাকে নিয়ে জঘন্য মিথ্যাচার করেছে। এর চেয়ে বড় জুলুম আর কি হতে পারে। মুজাহিদ স্বজনদের বলেছেন, আমি কোনো অপরাধ করিনি। সরকার আমার কোনো অপরাধ প্রমাণ করতে পারেনি। তবু বুদ্ধিজীবীদের হত্যার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। হত্যা তো নয়ই, বরং বুদ্ধিজীবী হত্যায় কথিত ষড়যন্ত্র ও সহযোগিতা করার বায়বীয় অভিযোগে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। সাক্ষ্যপ্রমাণ বিহীন এমন ঢালাও অভিযোগ দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। যে রকম অপরাধের কোনো প্রমাণ নেই সে অপরাধের জন্য মা চাইবো কেন। মুজাহিদ বলেছেন, প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণ ভিক্ষার বিষয়টি প্রচার করে সরকার আমাকে কাপুরুষ হিসেবে দেশ জাতি এমনকি বিশ্ববাসীর কাছে প্রমাণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু যারা আমাকে চিনে আমার নীতি আদর্শ সম্পর্কে অবগত তারা কখনো এসব বিশ্বাস করবেনা। মাপ্রার্থনার নাটক করে সরকার দেশবাসী বিশেষ করে আমার দলের লোকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। হাসরের ময়দানে দেখা হবে স্ত্রীকে এমন সান্ত্বনা দিয়ে বিদায়ের শেষ মুহূর্তে মুজাহিদ বলেছেন, সংসার জীবনে তোমার মত ভাল স্ত্রী পেয়ে স্রষ্টার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। প্রতি উত্তরে মুজাহিদের স্ত্রী তামান্না-ই জাহান স্বামীকে একজন ভাল এবং নির্দোষ মানুষ হিসেবে প্রশংসা করেন।”

দ্বীনের যে অকুতোভয় সৈনিক তার সার্বিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পালন করেছেন আপসহীন ভূমিকা। কোনো শক্তির কাছেই তিনি মাথা নত করেননি। আজ আমাদের প্রিয় নেতা জনাব মুজাহিদ ভাই সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কোনো এক ব্যক্তি রাসূলূল্লাহ (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! কবরে সকল মুমিনের পরীক্ষা হবে, কিন্তু শহীদের হবে না, এর কারণ কী? হুজুর (সা.) জবাবে বললেন, তার মাথার ওপর তলোয়ার চমকানোই তার পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট।’

আল্লাহর দ্বীনের দায়ী হিসেবে সারা বাংলাদেশে নয়, বরং ছুটে বেড়িয়েছেন পৃথিবীর অনেক প্রান্তে। মিথ্যা কালিমা আর ষড়যন্ত্রের কালো কাপড় কি সেই আলোচ্ছটাকে আবৃত করতে পারে? যেই শির আজন্ম এক পরওয়ারদিগার ছাড়া কারো কাছে নত হয়নি, ফাঁসির আদেশে সেই শির দুনিয়ার কোনো শক্তির কাছে নতি শিকার করতে পারে?

বাংলার আকাশ, বাতাস নির্যাতিতের করুণ ফরিয়াদে প্রকম্পিত। জালিমের নখরে তিক্ত-বিষাক্ত প্রতিটি জনপদ। কিন্তু তারপরও কি সত্য পথের সৈনিকেরা কি ভীত? না, বরং প্রতিটি মুমিন এই বিপদসঙ্কুল পথ পাড়ি দেয়াকে নিজের ঈমানী দায়িত্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেই এগিয়ে চলছে। এই রকম কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে সকল নবী-রাসূল (সা.)কে। যুগে-যুগে যারাই সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তাদের প্রত্যেককেই একই পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে এটাই স্বাভাবিক। এ পরীক্ষা কোনো কারণে আসেনি। এটি চিরন্তন।  মুমিনরা যদি আল্লাহর ওপরে তাওয়াক্কুল করে দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যেতে পারে তাহলে আল্লাহর সাহায্য অবধারিত।

শহীদের রক্ত আর মজলুমের চোখের পানি কখনো বৃথা যায় না। রাসূল (সা.) মুয়ায (রা.) কে বললেন, হে মুয়ায! মাযলুমের দোয়া থেকে ভীত থাকবে, কারণ মাযলুম যখন আলাহর নিকট দোয়া করে তখন তার এবং আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা থাকেনা। সুতরাং জেল-জুলুম, নির্যাতন, হত্যা, ফাঁসি আমাদের জীবনে নতুন হলেও ইসলামী আন্দোলনে তা একেবারেই পুরাতন। তাই আসুন, শোককে শক্তিতে পরিণত করে শহীদের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করে গড়ে তুলি একটি সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ। মহান পরওয়ারদিগার শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ সকলকে শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন। আমীন।।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।