পড়লে বই আলোকিত হই
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫০
॥ শারমিন আকতার ॥
২০১১ সালে একুশে পদকপ্রাপ্ত পলান সরকার মানুষের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ার জন্য মানুষের বাসায় গিয়ে বই দিয়ে আসতেন। অর্থাভাবে নিজে ক্লাস ফোরের বেশি পড়তে না পারলেও তার আশপাশের মানুষকে জ্ঞানের আলোয় উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন নাটোরে জন্ম নেয়া ও রাজশাহীর বাঘা থানায় নানার বাড়িতে বেড়ে ওঠা এ বাংলাদেশি। তিনি তার বিভিন্ন বক্তব্যে বলতেন, ‘পড়লে বই আলোকিত হই, না পড়লে অন্ধকারে রই’। আসলেই বই পড়লে তথা জ্ঞান অর্জন করলেই জাতি বা ব্যক্তি আলোকিত হয়, নয়তো অন্ধকারে রয়ে যেতে হয় আজীবন।
আমরা ইতিহাস ঘাটলে দেখবো যে জাতি পড়ুয়া; বইয়ের পাতায় নিজেদের সময় ব্যয় করেছে, তারাই সভ্যতার নির্মাণে ভূমিকা রেখেছে এবং শাসন করেছে পুরো পৃথিবী।
যখন মুসলিমরা জ্ঞান অর্জন করতো, তখন জ্ঞান-বিজ্ঞানে তারা ছিল শীর্ষে। ইবনে সিনা, ইবনে খালদুন, জাবির ইবনে হাইয়ান, আল খারেজিমি ছিল তাদের সেরা ব্যক্তিত্ব। মুসলিমরা যখন নিরবচ্ছিন্ন অধ্যয়নের মাধ্যমে জ্ঞানের সাগরে অবগাহন করতো, তখন তাদের হাতেই পৃথিবীর নেতৃত্ব ছিল। তখন শুধু পুরুষরা না নারীরাও জ্ঞানের সাগরে অবগাহন করতো। আন্দালুসের কর্ডোবার দ্বিতীয় উমাইয়া খলিফার সময়েও কর্ডোভা ও গ্রানাডার নারী পুরুষ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ জ্ঞান অর্জনে অনেক আগ্রহী ছিল।
জিয়াউল হক তার ‘বই খাতা কলম’ নামক বইয়ে উল্লেখ বলেন, ‘সে সমাজে কেবল পুরুষদের বেলাতেই যে এরকম মনোজাগতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়ন ঘটেছিল তাই নয়, নারীদের বেলাতেও এরকম উত্তরণ ঘটেছিল তার প্রমাণ পাই খলিফা দ্বিতীয় আল হাকামের আমলে ঘটা এক ঘটনায়।
রাজপরিবারের এক যুবকের বিয়ে দেয়ার জন্য খলিফা উপযুক্ত পাত্রী খুঁজছিলেন। তিনি নিজে ছিলেন অত্যন্ত বিদ্বান ও বিদ্যোৎসাহী, তেমনি তিনি রাজপরিবারের জন্য সেরকমই পাত্রী খুঁজছিলেন। তাই খলিফা বিস্ময়কর ঘোষণা জারি করলেন পাত্রির খোঁজ চেয়ে।
তিনি ঘোষণা করলেন, গ্রানাডা শহরে যে বাড়িতে বিবাহযোগ্য এমন পাত্রী রয়েছে, যে পাত্রী এক দিকে পুরো আল কুরআন মুখস্থ করেছে অর্থাৎ কুরআনের হাফেজ এবং পাশাপাশি ইসলামের যে কোনো একটি হাদিসশাস্ত্রে যার মোটামুটি জানা আছে, সেরকম পাত্রীর অভিভাবকরা যেন তাদের বাড়ির বারান্দা বা ব্যালকনির বাইরে রাতের বেলায় প্রজ্জ্বলমান বাতি টানিয়ে রাখেন।
কেবল খলিফাকেই নয়, পুরো গ্রানাডাবাসীকে অবাক করে দিয়ে সে রাতে শহরের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে প্রজ্জ্বলমান বাতি টানানো হয়েছিল! অর্থাৎ প্রতিটি বাড়িতেই এমন যুবতী মেয়ের উপস্থিতি ছিল, যে মেয়েটি একাধারে কুরআনের হাফেজ, আবার অন্যদিকে হাদিস শাস্ত্রেও তার অগাথ পাণ্ডিত্য ছিল।
আন্দালুসের অধিবাসীরা জ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে এতটা অগ্রসর এবং সেখানে পুরুষের পাশাপাশি নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে তারা এতটা এগিয়েছিলন বলেই বিশ্বে আধুনিক রেঁনেসার জন্ম দিতে পেরেছিলেন।’ [জিয়াউল হক, বই খাতা কলম, পৃষ্ঠা : ৪৮-৪৯]।
ইসলামের স্বর্ণযুগে বাগদাদ ও স্পেনের গ্রানাডা থেকে মূলত বিশ্বকে নেতৃত্ব দিত মুসলিমরা। আব্বাসীয় খেলাফতের সময় (ঞযব অননধংরফং) বুদ্ধিবৃত্তিক এবং অর্থনৈতিক উৎকর্ষের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। বিজ্ঞানচর্চায় তাদের অর্থায়নের অন্যতম উদাহরণ বাগদাদের বিখ্যাত লাইব্রেরি, বাইতুল হিকমাহ। বায়তুল হিকমাহ ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লাইব্রেরী। এরপরে বড় লাইব্রেরি ছিল গ্রানাডায়। গ্রানাডার লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা ছিল চার লক্ষের বেশি। আর সেই সময় পুরো ইউরোপ জুড়ে চারশত বই ছিল কিনা সন্দেহ।
পরবর্তীতে চেঙ্গিস খানের নেতৃত্বে মঙ্গলরা বাগদাদে আক্রমণ করে। মুসলমানদের কচুকাটা করে রক্তের বন্যা বইয়ে দেয় এবং লাশের স্তূপে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করে বাগদাদ। বাইতুল হিকমাহকে মুসলমানদের উন্নয়নের চাবিকাঠি মনে করে সেই লাইব্রেরি ধ্বংস করে দেয়। কথিত আছে যে বাগদাদের লাইব্রেরির এত বই নষ্ট করে নদীতে ফেলে দেয়া হয় যে নদীর পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে রানী ইসাবেলা ও ফার্ডিনান্দের হঠকারিতা ও খ্রিস্টানদের ক্রুসেডের ফলে গ্রানাডা ও কর্ডোভায় মুসলিমদের হার শুরু হয়। এখানকার লাইব্রেরিগুলো ধ্বংস করা হয় এবং লাইব্রেরির কিছু বই লুট করা হয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাইতুল হিকমাহ ও গ্রানাডার লাইব্রেরি হারানো জাতি আস্তে আস্তে জ্ঞান অর্জনে বিমুখ জাতিতে পরিণত হয়ে শৌর্য-বীর্যের চরম পর্যায় থেকে দুর্বল জাতিতে পরিণত হয়।
মুসলিমদের পতনের সমসাময়িক সময়ে অবহেলিত ইউরোপে ইউরোপীয় রেঁনেসার জনক ইংরেজ দার্শনিক রজার বেকন বিপ্লব ঘটান। গ্রানাডার মাটিতেই তিনি মুসলিমদের অধীনেই জ্ঞান অর্জন করেন। সেখান থেকে অর্জিত জ্ঞানের আলোকে তিনি পুরো ইউরোপকে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করেন। আজেক যে ইউরোপ উন্নত হয়েছে তা বলতে গেলে গ্রানাডা বা কর্ডোভার অবদান।
যে জাতির ধর্মগ্রন্থের নির্দেশবাচক প্রথম শব্দই হচ্ছে ‘ইকরা’ বা পড় সে জাতি কি আদৌ এখন পড়ে? তারা তো রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরী বলে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।
একসময়ের পৃথিবীর সবচেয়ে পড়ুয়া জাতিরা তাদের ঐতিহ্য হারিয়ে সবচেয়ে অলস ও অকর্মণ্য জাতিতে পরিণত হয়ে গেছে। জ্ঞান অর্জনে তাদের সবচেয়ে অনীহা। তারা ভুলে গেছে তাদের রবের প্রথম আদেশ ‘পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন কলমের মাধ্যমে।’ (সূরা আলাক : ১ ও ৫)।
মিশরীয় লেখক ড. রাগিব সারজানি তার ‘পড়তে ভালোবাসি’ বইয়ে বলেছেন, ‘এই উম্মতের উন্নতির একমাত্র চাবিকাঠি হল একটি মাত্র শব্দ, ইকরা-পড়। আহা! কেউ কি বুঝবে না! পড়ালেখা ছাড়া এ উম্মতের উন্নতি করা কোনো কালেই সম্ভব নয়…। অথচ পড়ালেখা থেকে আজ কতো দূরেই না সরে গেছে এ উম্মত!! একবার এক ইহুদিকে আরবদের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল। ইহুদি উত্তরে বলেছিল “আমরা আরব জাতিকে ভয় করি না কারণ, আরবজাতি পড়ালেখা করে না।’ [ড. রাগিব সারজানি, পড়তে ভালোবাসি, পৃষ্ঠা-২৪]।
এখন মুসলিমরা জ্ঞান অর্জন থেকে দূরে সরে গেছে। তারা জ্ঞান অর্জনের চেয়ে নানা ধরনের বিনোদনকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়। আমরা অনেক সময় অভিযোগ করে থাকি যে, আমাদের অধঃপতনের মূল কারণ হচ্ছে ইহুদি খ্রিস্টানের ষড়যন্ত্র। নিজেদের জ্ঞান অর্জনের অনীহা যে আমাদেরকে অধঃপতনের অতল গহ্বরে নিয়ে গেছে তা আমরা স্বীকারই করতে চাই না। আমরা আমাদের অবনতির দায় ইহুদি ও খ্রিস্টানদের ওপর দিয়ে নিজেদের দোষগুলোকে জায়েজ করে ফেলি। মুসলিম জাতির অধঃপতনের দায় অন্য জাতির ওপর দিয়ে একটা যৌক্তিক কারণ দাঁড় করিয়ে নিজেদের মিথ্যে সান্ত্বনা দিই।
আমরা আমাদের জ্ঞান অর্জন যদি অব্যাহত রাখি, তাহলে কোনো ষড়যন্ত্র আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। নিজেরা যদি জ্ঞানের মশাল হাতে নিয়ে চলি কুরআনকে যদি নিজেদের জীবনের পাথেয় বানাতে পারি, তাহলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে দিবে না।
১৮৩২ সালে এক ছোট্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুসলিম দেশ আল আলজেরিয়ায় ফ্রান্স সামরিক আগ্রাসন চালায় এবং দখল করে। ১৩০ বছর ফ্রান্সের অধীনে থেকে ১৯৬২ সালে স্বাধীনতা লাভ করে আলজেরিয়া।
আলজেরিয়া দখল করার পরই শুরু হয়ে যায় ধর্মভীরু মুসলিমদের ইসলাম বিমুখ করার পাঁয়তারা। আলজেরিয়ায় নারী মুক্তির নামে তাদেরকে তাদের ইসলামের দেয়া সম্মানজনক অবস্থান থেকে বের করে অশ্লীলতা ও বেহাপনার শিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে ইসলামী মূল্যবোধ নস্যাৎ করে দেবার পাঁয়তারা চালায় ফরাসিরা। আলজেরিয়ার সমাজ থেকে ইসলামী মূল্যবোধ দূর করার জন্য তারা প্রথম নারীদের টার্গেট করে। কারণ কোনো সমাজের বা জাতির নারী জাতিকে যদি আদর্শচ্যুত করা যায়, তাহলে খুব সহজেই পুরো জাতিকে আদর্শচ্যুত করা যাবে।
স্বনামধন্য লেখক জিয়াউল হক এ বিষয় নিয়ে সুন্দর একটা কাহিনী তুলে ধরেন তার ‘ইতিহাসের অলিগলি’ বইয়ে। তিনি বলেন, ‘আলজেরিয়া থেকে কয়েকডজন মুসলিম ছাত্রীকে ফরাসি সরকারের বিশেষ বৃত্তি প্রদান করে উচ্চশিক্ষার জন্য প্যারিসে এনে বিভিন্ন স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলেন। মুসলিম এসব মেয়েরা ফরাসি ছাত্রীদের সাথে একই হোস্টেলে, একই সমাজে একই পরিবেশে থেকে লেখা পড়া করে বছরের পর বছর। গ্রীষ্মের ছুটিতে মাস দেড়েকের জন্য এসব ছাত্রীরা আলজেরিয়ায় তাদের বাবা মার কাছে যাবার সুযোগ পেতো। এভাবে এক নাগাড়ে তারা তের বছর প্যারিসের সেকুলার পরিবেশে থেকে গ্রাজুয়েশন করে।
শিক্ষাবর্ষ শেষে এ ছাত্রীদের আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ প্রদানের আয়োজন করা হলো। উক্ত অনুষ্ঠান প্যারিসের সুশীল সমাজের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ, প্রেস, সাংবাদিক, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দসহ অনেক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। গোল বাঁধলো যখন আলজেরিয়ায় মুসলমান ছত্রীরা দলবেঁধে উপস্থিত হলো, তখন। সকলে অবাক বিস্ময়ে, একরাশ হতাশামাখা দৃষ্টি নিয়ে লক্ষ করলো প্রতিটি আলজেরীয় ছাত্রীই পরিপূর্ণ ইসলামী পোশাক ও হিজাব পরেই অনুষ্ঠান স্থলে এসে হাজির হল।
দীর্ঘ তের বছর ফরাসি খ্রিস্টান মেয়েদের সাথে থেকে পড়াশোনা ও বসবাস করেছে তারা। স্কুল ও কলেজে শিক্ষকদের সুপরিকল্পিত ও সযত্ন প্রয়াস সত্ত্বেও এসব মেয়েরা কেউই ইসলামী সংস্কৃতি ও পোশাক ছেড়ে খ্রিস্টবাদী ফরাসি, তথাকথিত আধুনিক সংস্কৃতি ধারণ করেনি!
এ অবস্থা দেখে ভেতরে ভেতরে চরম অসন্তুষ্ট ফরাসি সুশীল সমাজ। মন্ত্রীর কাছে এর জবাব চাইলে মন্ত্রী এক চমৎকার জবাব দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমার কি দোষ? মুসলমানদের কুরআন পুরো ফ্রান্সের সকল সম্পদ ও শক্তির চেয়েও শক্তিশালী হলে আমি কি করবো?’
ইতিহাসের আরও এক ঘটনা আমাদের জানা দরকার। ব্রিটিশরা যখন মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা যেমন ভারতীয় উপমহাদেশে উপনিবেশ স্থাপন ও উসমানী সাম্রাজ্যের বিলোপ সাধনের চেষ্টায় ব্যস্ত ছিল, তখন তারা খেয়াল করলো যে অন্যান্য ধর্মের রাজা ও জমিদারদের সহজে বশে আনা গেলেও মুসলিম রাজা, প্রশাসক এমনকি সাধারণ মানুষকে বাগে আনা যাচ্ছিল না। মুসলিমরা সহজে ব্রিটিশদের আধিপত্য মেনে নিচ্ছিল না। কিন্তু মুসলিমদের পরাজিত করে ব্রিটিশ উপনিবেশ মজবুতভাবে কীভাবে স্থাপন করা যায়, তা নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আলোচনা চলছিল। কীভাবে মুসলিমদের বশ্যতা স্বীকার করানো যাবে, কীভাবে তাদের পরাজিত করে পৃথিবীজুড়ে ব্রিটিশ উপনিবেশের পরিসর বাড়ানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। তখন ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বার প্রধানমন্ত্রী হওয়া গ্ল্যাডস্টোন পার্লামেন্টে কুরআন হাতে নিয়ে হাত উঁচিয়ে বললেন, ‘মুসলমানদের এ কুরআন থেকে দূরে রাখতে হবে। এ কুরআন তাদের কাছে থাকলে তাদের কখনো বশ্যতা স্বীকার করানো যাবে না।’
অথচ আজ আমরা কুরআন থেকে বহু দূরে চলে গেছি। প্রয়োজনীয় বই পড়ার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনের অভ্যাস ত্যাগ করেছি বহু আগেই। পৃথিবীতে সবচেয়ে দুর্ভাগা ও হতভাগা জাতিতে পরিণত হয়েছি। আজ শুধু পোশাকি ইসলাম নিয়ে বেঁচে আছি। আনুষ্ঠানিক ইসলাম, দাড়ি, টুপি, বোরখা জুব্বা। শুধুমাত্র একটি অভ্যাস তথা পড়ার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনের অভ্যাস যখন আমরা ত্যাগ করেছি আমরা হারিয়ে গেছি সময়ের আবর্তনে।
অথচ আল্লাহ তায়ালা কুরআনে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, ‘হে নবী! আমি তোমার প্রতি কুরআন এজন্য নাজিল করিনি যে, এটা থাকা সত্ত্বেও তুমি হতভাগ্য হয়ে থাকবে।’ [সূরা ত্ব-হা : ২]।
আল্লাহর এই বিশাল ঘোষণার পরও তাহলে মুসলিম জাতি আজকে হতভাগ্য কেন? কারণ তারা এখন পড়তে জানে না। বিনোদন ও আরাম আয়েশ নিয়ে তারা এত মত্ত যে জ্ঞান অর্জনের সময় তাদের কোথায়?
আমাদেরকে আবার জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হতে হবে। গ্রানাডা ও বাগদাদের মতো পুরো পৃথিবীর মুসলিমরা যদি তাদের স্রষ্টার করা প্রথম নির্দেশ ‘ইকরা’ পড় মানতে শুরু করে, তাহলে তাদের উন্নয়ন অবশ্যম্ভাবী।
লেখক : একটি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা, লেখক ও সম্পাদক, মহীয়সী ডটকম।