আমাদের মোল্লা ভাই
১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:০১
॥ আলী আহমাদ ॥
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা ভাইকে আমরা সবাই মোল্লা ভাই বলে ডাকতাম। সেজন্য তিনি সকলের কাছে মোল্লা ভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাকে প্রথম দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে শবে মেরাজ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেছিলেন। প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযমের ছোট ভাই ডা. গোলাম মোয়াজ্জাম। ডা. গোলাম মোয়াজ্জাম ও শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা দুজনেই খুব সুন্দর জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেছিলেন। উপস্থিত ছাত্ররা সকলেই অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে তাদের আলোচনা শুনেছিলেন।
শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা ভাইয়ের পরনে ছিল ফুল প্যান্ট ও গায়ে ফ্রাইং শার্ট। তিনি ফিজিক্সের ছাত্র ছিলেন। তিনি একজন বিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে রাসূল (সা.)-এর মেরাজের ঘটনা নিয়ে অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ আলোচনা করেছিলেন। আমরা তাঁর আলোচনা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছিলাম। রাসূল (সা.) মেরাজ নিয়ে এত সুন্দর ও যুক্তিপূর্ণ আলোচনা আমি আর কখনো শুনিনি। সেদিন থেকেই মোল্লা ভাইয়ের প্রতি আমার ভক্তি ও শ্রদ্ধা আরো বেড়ে যায়।
শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা ভাইয়ের সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেলাম ১৯৮২ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের কাজ করার সুবাদে। মোল্লা ভাই তখন ঢাকা মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তখন সামরিক শাসন জারি থাকার কারণে রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধ ছিল। তিনি মাঝেমধ্যেই দৈনিক সংগ্রাম অফিসে আসতেন, সেখানেই তার সাথে দেখা ও কথাবার্তা হতো। তাঁর বাড়ি ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলায় এবং আমার বাড়ি ফরিদপুর জেলার কালকিনি উপজেলায়। দু’জনেই ফরিদপুর জেলার লোক হওয়ার কারণে তাঁর সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা আরো বেড়ে যায়। এখন অবশ্য আমার বাড়ি মাদারীপুর জেলায় পড়েছে। মোল্লা ভাইকে অতি আপনজন হিসেবেই মনে করতাম। তাঁর সাথে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগ পেলাম যখন ১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি হলেন। তাঁর সাথে প্রায় দশ বছর কাজ করেছি। কখনো কোনো মনোমালিন্য হয়নি। ভাইয়ের মতো মিলেমিশে প্রচার বিভাগের কাজ করেছি। তাঁর সাথে সব বিষয়ই খোলামেলাভাবে আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ করে কাজ করেছি। কোনো বিষয়ই কখনো বিরক্তি প্রকাশ করেননি। তিনি অত্যন্ত ধৈর্য ও মনোযোগ সহকারে কথা শুনতেন এবং খুবই স্পষ্টভাবে জবাব দিতেন। কোনো বিষয় জানতে চাইলে তিনি বুঝিয়ে দিতেন। কিন্তু কখনো রাগান্বিত হতেন না। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি যেমন স্পষ্ট বক্তা ছিলেন, তেমনি তাঁর লেখনীও ছিল অত্যন্ত ধারালো।
তিনি জনসভার বক্তার চাইতে সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামে নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনায় বেশি দক্ষ ছিলেন। তিনি অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ ভাষায় আলোচনা করতেন। তাঁর আলোচনা শুনে সবাই মুগ্ধ হতেন। তিনি অত্যন্ত সাধাসিধাভাবে চলাফেরা করতেন। সকল মানুষকেই তিনি সহজে আপন করে নিতে পারতেন। তাঁর সহজ, সরল ও সুন্দর ব্যবহার ও চরিত্র মাধুর্য সবাইকে মুগ্ধ করত।
তিনি ছিলেন একজন পরোপকারী ব্যক্তি। তাঁর নিজ উপজেলা সদরপুরের অনেক গরিব-দুঃখী মানুষকে তিনি সাহায্য সহযোগিতা করতেন। অনেক গরিব লোককে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়ে দিতেন। সদরপুর থেকে মাদরাসা ও এতিমখানার সাহায্যের জন্য লোকেরা তাঁর কাছে আসত এবং তিনি সাহায্যের ব্যবস্থা করে দিতেন। তাঁর সাথে ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, ডাক্তার, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের বন্ধুত্ব ছিল। তিনি ধনী লোকদের কাছে থেকে টাকা সংগ্রহ করে মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় দান করতেন। তিনি বহু অভাবী লোককে সাহায্য করেছেন। বহু লোককে তদবির করে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তিনি এমন সুন্দরভাবে মানুষের কাছে কোনো কিছুর জন্য আবেদন করতেন যে মানুষ তাঁর আবেদনে সাড়া না দিয়ে পারতেন না। বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের সময় জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী ফান্ডের জন্য টাকা সংগ্রহ করতে তিনি বড় ধনী ব্যবসায়ীদের কাছে যেতেন এবং অনেক টাকা সংগ্রহ করে আনতেন।
ঈদুল ফিতরের পূর্বে তিনি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগে কর্মরত লোকদের কার কী অবস্থা, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিতেন এবং অভাবী লোকদের সাহায্য করতেন। অফিসের সমস্যার ব্যাপারে তাঁকে জানানো হলে তিনি তা সমাধানের জন্য অত্যন্ত আন্তরিকভাবে চেষ্টা করতেন। তাঁর আয়ত্তের মধ্যে থাকলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবেই সমাধান করে দিতেন। তাঁর আয়ত্তের বাইরের ব্যাপারেও সমাধানের চেষ্টা করতেন। সমাধান না করতে পারলে তিনি সরাসরি বলে দিতেন যে, আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। কিন্তু সমাধান করা সম্ভব হলো না।
তিনি অত্যন্ত উদার গণতন্ত্রমনা, সৎ, রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি সবার সাথে অতি সহজেই মিশতে পারতেন। যে কোনো লোক তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে আসলে তিনি তাকে সাক্ষাৎ দিতেন এবং তার কথা ধৈর্য সহকারে শুনে তাকে যথোপযুক্ত পরামর্শ দিতেন। তাঁর উত্তম ব্যবহারে সবাই সন্তুষ্ট হতেন।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগে কর্মরত কারো কোনো ভুলত্রুটি লক্ষ করলে তিনি তাঁর রুমে ডেকে এনে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তা সংশোধনের পরামর্শ দিতেন। প্রত্যেককেই নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিতেন। তিনি বলতেন যে, আমি সবসময় বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকি। আমিও অনেক সময় প্রয়োজনীয় কাজের কথা ভুলে যাই। আপনারা আমাকে স্মরণ করিয়ে দিবেন। কোনো ভুলত্রুটি হলে তিনি তা স্বীকার করে নিতেন। তাঁকে কোনো ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি তা সহজেই মেনে নিতেন।
তিনি ছিলেন একজন নির্ভীক সাহসী লোক। বিভিন্ন সংকট মুহূর্তে তাঁকে দেখেছি সাহসের সাথে সামনে এগিয়ে যেতে। তিনি কখনো মৃত্যুর ভয়ে ভীত ছিলেন না। তিনি সবসময়ই ইসলামের জন্য শহীদ হওয়ার আকাক্সক্ষা পোষণ করতেন। তিনি বলতেন যে, রাসূল (সা.) ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন। এরকম বয়সে মৃত্যুই আমারও কাম্য। তিনি সুন্দর সুন্দর গল্প জানতেন। অবসর সময় অফিসে বসে তিনি আমাদের সামনে অনেক সুন্দর সুন্দর উপদেশমূলক গল্প বলতেন।
তিনি ছিলেন উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিক রোগী। ১৯৯৯ সালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাঁর হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার করা হয়। প্রায় ৩ মাস চিকিৎসার পরে তিনি আস্তে আস্তে সেরে ওঠেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করতেন। হৃদরোগী বলে তিনি কখনো শঙ্কিত হতেন না। তিনি বলতেন স্বাভাবিকভাবে কাজকর্মে তৎপর থাকার মধ্যেই জীবনের সার্থকতা। কর্মতৎপর থাকলে অসুখ-বিসুখ মানুষকে সহজে কাবু করতে পারে না। তিনি বলতেন যে, আল্লাহর ওপর অগাধ বিশ্বাস থাকার কারণেই আমি হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের সময় ভয় পাইনি। অস্ত্রোপচারের পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমার জ্ঞান ফিরে এসেছে এবং আমার বুকের অপারেশনের ঘা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে গেছে। আল্লাহ যতদিন হায়াত রেখেছেন, ততদিনই দুনিয়ায় থাকব, তার বেশি থাকতে পারব না। সুতরাং ভয় করে কোনো লাভ নেই।
ডিসেম্বর মাস এলেই ইসলাম বিরোধী দু-একটি সংবাদপত্রে আবদুল কাদের মোল্লা সাহেবকে নিয়ে ভিত্তিহীন মিথ্যা রিপোর্ট প্রকাশ করত। তখন তিনি তাঁর প্রতিবাদ জানিয়ে বলতেন যে, ১৯৭১ সালে তিনি ঢাকায় ছিলেন না। তিনি ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার আমিরাবাদ গ্রামে তাঁর নিজ বাড়িতেই ছিলেন। সেখানে তিনি ছোট-খাটো ব্যবসা করে নিজে টাকা উপার্জন করতেন। তিনি শুধুমাত্র আগস্ট মাসে একবার ঢাকা এসেছিলেন। তখন কখনোই মিরপুরে যাননি। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী মহাজোট সরকার ভিত্তিহীন মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাঁকে মিথ্যা সাক্ষীর ভিত্তিতে মিরপুরের কসাই সাজিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে শহীদ করে দিল। অথচ তিনি রাজাকার, আলবদর, শান্তি কমিটির কোনো কিছুর সাথেই জড়িত ছিলেন না।
২০১০ সালের ১৪ জুলাই তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে গেলে সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে তাঁর বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করে। সে মামলায় তাঁকে ফাঁসি দেয়া হয়। তিনি সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। তাঁর নিজ উপজেলা সদরপুরের অনেক মুক্তিযোদ্ধাও তার কাছে বিভিন্ন কাজে আসত এবং তিনি তাদের কাজ করে দিতেন। অনেক হিন্দুও তাঁর কাছে আসত। কিন্তু কেউই কখনো বলেননি যে, তিনি স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন। শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার ছোট ভাই মাঈনউদ্দিন মোল্লা ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দাঁড়িয়ে তাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। যদি আবদুল কাদের মোল্লা স্বাধীনতাবিরোধী হতেন, তাহলে কি জনগণ তাঁর ভাইকে ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতেন? মোল্লা সাহেবদের পরিবারকে সে ইউনিয়নের মানুষ ভালোবাসে বলেই মাঈনউদ্দিন মোল্লাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছে। তিনি এখনো চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, তিনি স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন না। রাজনৈতিক কারণেই সরকার তাঁকে হত্যা করেছে।
তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে কুরআন-হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করে নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং ইসলামী আন্দোলনে যোগদান করেন। পর্যায়ক্রমে তিনি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের কারণে জামায়াতে ইসলামীর নেতা হন। জামায়াতে ইসলামীর নেতা হওয়ার কারণেই তিনি আওয়ামী মহাজোট সরকারের রুদ্ররোষে পড়েন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই সরকার শহীদ আবদুল কাদের মোল্লাসহ শীর্ষনেতাদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই সরকার আবদুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে।
শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের একজন আপসহীন সাহসী নেতা। তিনি স্বৈরশাসকদের সাথে কখনো আপস করতে রাজি হননি। তিনি বিশ্বাস করতেন, ইসলামী আন্দোলনের পথ ফুল বিছানো থাকে না। এই পথ দুঃখ, কণ্টকাকীর্ণ ও বন্ধুর। এ পথে দুঃখ, বেদনা, গ্রেফতার, কারাগারের অত্যাচার-নির্যাতন আছে, আছে মৃত্যু, ফাঁসি ও অগ্নিপরীক্ষা, ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। ইসলামী আন্দোলনের পথ ত্যাগ-তিতিক্ষার। দুঃখ ও বেদনাকে হাসি মুখে বরণ করে নিতে হয়। পরকালের মুক্তি ও জান্নাত লাভই ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের কাম্য।
শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তিনি ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন চিরদিন। তিনি ইসলামের জন্য জীবন দিয়েছেন। যারা আল্লাহর দীনের জন্য জীবন দিয়ে শহীদ হন তাদের জীবন সার্থক। আল্লাহ তাদের জান্নাতবাসী করবেন। পরকালে জান্নাতই একজন মুমিনের কাম্য হওয়া উচিত। এ দিক থেকে শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা সার্থক হয়েছেন।
মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী। মানুষ মরণশীল। সবাইকে মরতে হবে। তবে আল্লাহর দীনের জন্য মৃত্যুই সর্বোত্তম। ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের জীবন দানের ফলেই এ আন্দোলন টিকে আছে এবং থাকবে। শহীদ আবদুল কাদের মোল্লাকে আমরা যারা ভালোবাসি ও পছন্দ করি তাদের সকলের উচিত ইসলাম কায়েমের আন্দোলন আরো বেগবান করে সামনে এগিয়ে নেয়া। আমাদের সকলের কুরবানির বিনিময়ই আল্লাহ বাংলাদেশের এ জমিনে তাঁর দীনকে বিজয়ী করবেন। তাঁর এ ত্যাগ কিছুতেই বৃথা যাবে না, যেতে পারে না।
যারা ষড়যন্ত্র করে শহীদ আবদুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিয়েছে তাদেরও একদিন বিচার হবে। দুনিয়ায় তারা পার পেলেও আখিরাতের আদালতে তাদের অবশ্যই বিচার হবে। সে বিচার কেউই এড়াতে পারবে না। আখিরাতের বিচারই সত্যিকারের বিচার।
আমরা শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার ত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং দোয়া করছি যে, আল্লাহ তাঁকে একজন সাচ্চা শহীদ হিসেবে কবুল করে জান্নাতুল ফেরদাউসে দাখিল হওয়ার তাওফিক দান করুন। তিনিসহ এদেশে যারা আল্লাহর দীনের জন্য শহীদ হয়েছেন, তাদের রক্তের বিনিময় আল্লাহ যেন বাংলাদেশের এ জমিনে দীন কায়েম করার জন্য আমাদের তাওফিক দান করেন- এ কামনাই করি।