অপশক্তি রুখতে প্রয়োজন জুলাই চেতনার ঐক্যবদ্ধতা


২৯ মে ২০২৫ ০৯:৪৭

॥ জামশেদ মেহদী॥
ভয়াবহ দুর্যোগের কবলে নিক্ষিপ্ত হয়েছে বাংলাদেশ। এ দুর্যোগ কোনো সাধারণ দুর্যোগ নয়। এটি একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মতো দুর্যোগ। আর এ সতর্কবার্তা কোনো পলিটিশিয়ানের নয়। এ সতর্কবার্তা স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। এ সতর্কবার্তা এতই আশঙ্কাজনক যে, সেটি ইংরেজি ডেইলি স্টারের মতো পত্রিকা তাদের লিড নিউজ করেছে। গত ২৬ মে সোমবার ডেইলি স্টারের প্রথম পৃষ্ঠার লিড নিউজের শিরোনাম, “We are in war- like situation: Yunus/At talks with parties, organisations, CA cites plots at home, abroad since AL ban”.
অর্থাৎ “আমরা একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে আছি। রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনসমূহের সাথে আলোচনার সময় প্রধান উপদেষ্টা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পর থেকে দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ পরিস্থিতি আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করছে। ফলে সবকিছু ভেঙে পড়ছে এবং আমরা গোলামির দিকে ধাবিত হচ্ছি।” গত ২৫ মে রোববার রাতে প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ড. ইউনূস বলেন, গত ১২ মে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর থেকেই পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার বিরতিহীন প্রচেষ্টা চলছে। এ চক্রান্ত থেকে আমাদের নিজেদের রক্ষা করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা সকলকে এ আশ্বাস দেন যে, তিনি এমন কিছু করবেন না, যার ফলে দেশের ক্ষতি হতে পারে। যদি আমি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হই, তাহলে আমি নিজের কাছেই অপরাধী হয়ে থাকবো। প্রেস সচিব আরও বলেন যে, রোববার যেসব দল তার সাথে বৈঠক করতে গিয়েছিলো, তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। জুলাই গণহত্যার বিচার এবং একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রচেষ্টার প্রতিও তারা সমর্থন জানান। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে ড. ইউনূস দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন যে, নির্বাচন কোনো অবস্থাতেই ৩০ জুনের পরে যাবে না।
গত রোববার (২৫ মে) যেসব রাজনৈতিক নেতার সাথে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেন, তারা বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বৈঠক সম্পর্কে অবগত করেন। প্রায় সব নেতাই গতানুগতিক মন্তব্য দেন। তবে দৈনিক আমার দেশ গত ২৬ মে সোমবার প্রথম পৃষ্ঠায় প্রধান সংবাদ অত্যন্ত ফলাও করে প্রকাশ করে। ঐ সংবাদের শিরোনাম ছিলো, “ডান বাম উভয় শিবিরের সমর্থন ড. ইউনূসকে”। ঐ খবরের এক স্থানে বলা হয়, এ সময় রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদ বাংলাদেশের পরিবর্তনকে স্বীকার করতে চায় না। আমরা অনেক বড় সংকটের মধ্যে আছি। ভারতীয় আধিপত্যবাদ আমাদের এ পরিবর্তনকে একেবারেই স্বীকার করতে চায় না। পারলে আমাদের একদিনে ধ্বংস করে দিতে চায়। সেজন্য যা যা করা দরকার, তারা সব করছেন।
দৈনিক আমার দেশের সংবাদ মোতাবেক, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। মান্না জানান, এ সংকট বলতে ড. ইউনূস প্রধানত ভারতীয় আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন। প্রধান উপদেষ্টাকে বেশ চিন্তিত মনে হয়েছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, এজন্য পুরো জাতির ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য দরকার। কিন্তু দিন দিন ঐক্যটা দুর্বল হচ্ছে। এজন্য উনি চিন্তিত। তিনি বেশখানিকটা হতাশ। আমাদের ভিন্নতা থাকলেও আমরা সবাই একমত হয়ে বলেছি, এ প্রশ্নে আমরা সবাই এক থাকব।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, আমরা তাকে বুঝিয়েছি- আপনার বেশি করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ করতে হবে, কথা বলতে হবে, মতবিনিময় করতে হবে। আপনি কেমন করে নির্বাচন করতে চান, তা সবার সঙ্গে শেয়ার করবেন। আপনার সেক্ষেত্রে দেখতে হবে কোনটা সংস্কার না করলেই নয়, শুধু সেটিই করবেন। সেক্ষেত্রে যদি সময়ক্ষেপণ হয়, তাহলে নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, জুনের পর কোনোভাবেই আর সময় গড়াবে না। উনি বলেছেন, আমি কোনোভাবেই আমার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাই না। উনি অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আর বাড়াতে চান না।
মান্না বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাদের স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, কম সংস্কার হলে ডিসেম্বরে আর বেশি সংস্কার হলে জুনে নির্বাচন হবে। এ সময় প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগপত্রে লিখে দিতে চেয়েছেনÑ কোনোভাবেই নির্বাচন জুনের পর যাবে না। (আমার দেশ, ২৬ মে, সোমবার)।
প্রশ্ন হলোÑ হঠাৎ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস সব রাজনৈতিক দলের সাথে দুই দিন ধরে টানা বৈঠক করলেন কেন? এমন কী পরিস্থিতির উদ্ভব হলোÑ তাকে বলতে হলো যে, দেশ যুদ্ধ পরিস্থিতির সম্মুখীন। এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দেশের ভেতর এবং দেশের বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
গভীর অনুসন্ধানের পর জানা যায় যে, গত ২০ মে মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করেন সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধানগণ। এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। অকস্মাৎ তিন বাহিনীর প্রধান সাথে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হলো কেন- সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং অথবা আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) থেকে কোনো কিছু বলা হয়নি। এখানে আরও উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ২০ মে সেনাবাহিনীর সর্বস্তরের সদস্যদের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারের এ্যাড্রেস করার কথা ছিলো। এ ধরনের অ্যাড্রেসকে বলা হয় দরবার। কিন্তু ২০ তারিখে দরবার অনুষ্ঠিত হয়নি। কারণ তিন বাহিনী প্রধানদের সাথে ড. ইউনূসের বৈঠক ছিলো।
রাজনীতি সচেতন মানুষ- যারা রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রতিদিনের খবরাখবরের ওপর চোখ রাখছিলেন, তারা মনে করেন যে, ২০ তারিখের ঐ শীর্ষ বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। হয় প্রধান উপদেষ্টা তার কোনো বিশেষ বার্তা বাহিনী প্রধানদের কাছে দিতে চেয়েছিলেন অথবা বাহিনী প্রধানরা তাদের বিশেষ কোনো বার্তা প্রধান উপদেষ্টাকে দিতে চেয়েছিলেন। যেটিই হোক না কেন, সেই বার্তা দেওয়া বা নেওয়ার পর সেই জরুরি প্রয়োজনটি শেষ হয়েছে বলে রাজনীতি সচেতন মহল ধারণা করেছিলেন।
কিন্তু তাদের ধারণা ভুল প্রমাণ হয়। পরদিন অর্থাৎ ২১ মে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় সেনাপ্রধান ঐ দরবার অনুষ্ঠান করেন। তিনি সর্বস্তরের সেনা অফিসার ও অন্যান্য সদস্যকে কম্ব্যাট ড্রেসে অর্থাৎ যুদ্ধ সাজে সজ্জিত হয়ে দরবারে আসার নির্দেশ দেন। আর যারা ঢাকার বাইরে থাকবেন, তারাও যুদ্ধ সাজে সজ্জিত হয়ে অনলাইনে এ দরবারে অংশগ্রহণ করবেন। হয়েছিলও তাই। রাজনীতি সচেতন মানুষ প্রথমে মনে করেছিলেন যে, এটি হয়তো সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সেনাপ্রধান তার বাহিনীর সকল সদস্যের সাথে মতবিনিময় করবেন। কিন্তু দেখা গেল, দরবার চলাকালেই বিশেষ বিশেষ মহলে দরবারের কার্যবিবরণী আসা শুরু হয়। রাজনীতি সচেতন বেসামরিক মানুষ অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করেন, সেনাপ্রধান বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলছেন। সেনাপ্রধানের বক্তব্য শেষ হলে শুরু হয় প্রশ্ন এবং উত্তর। অবাক ব্যাপার হলো, এ প্রশ্নোত্তরও কেন্দ্রীভূত হলো দেশের রাজনৈতিক বিষয়ে।
কাতারভিত্তিক বিশ্বখ্যাত টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সামি প্রধান উপদেষ্টার ভাষণকে সারসংক্ষেপ করে ২৫টি প্যারাগ্রাফে সংকলিত করেছেন। ঐ ২৫টি পয়েন্ট যারা তাদের কম্পিউটারে সংরক্ষণ করেছেন, তারা দেখতে পান যে, এগুলোর মধ্যে অধিকাংশই রাজনীতি সম্পর্কিত। সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে ছিলেন অংংবৎঃরাব, অর্থাৎ অত্যন্ত দৃঢ়চিত্ত। যেমন তিনি বলেন, নির্বাচন আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে হবে। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি তিনি দেশে নতুন নির্বাচিত সরকার দেখতে চান। তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই করিডোর দেওয়া চলবে না। তিনি আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই বন্দর বিদেশিদের হাতে দেওয়া চলবে না। কোনো বিদেশি যাতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করতে না পারে, সে ব্যাপারে সেনাবাহিনীকে সজাগ থাকতে হবে।
দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিদেশি ইউটিউবার কনক সরওয়ার, ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ তাদের ইউটিউবে বা ব্লগে প্রশ্ন তুলেছেন যে, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা দরবার অনুষ্ঠান করতে পারেন। কিন্তু সেখানে তারা রাজনৈতিক বিষয় আলোচনা করতে পারেন কি না। আলোচ্য দরবারে সেনাপ্রধান যেসব প্রশ্ন উত্থাপন করেন, সেসব ইস্যু বেশ কিছুদিন ধরে বিএনপি বলে আসছে। করিডোর, বন্দর এবং ড. খলিলুর রহমানের অপসারণ ইত্যাদি বিষয়ও বিএনপি বলে যাচ্ছে। তবে দরবারে ড. খলিলুর রহমানের প্রসঙ্গ আলোচিত হয়নি।
ঐ দরবারে প্রদত্ত সেনাপ্রধানের বক্তব্য সরকার খুব ভালোভাবে নেয়নি। সেটি প্রতিভাত হয়েছে পরদিন উপদেষ্টা পরিষদের এক বিবৃতিতে। লক্ষ করার বিষয় হলো, দেশে যখন যে সমস্যার উদ্ভব ঘটে, তখন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে সে সম্পর্কে বক্তব্য দেওয়া হয়। কিন্তু এবারই প্রথম দেখা গেল যে, প্রধান উপদেষ্টাসহ সমগ্র উপদেষ্টা পরিষদ একটি বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতির অংশবিশেষ নিম্নে তুলে ধরা হলো।
গত ২৪ মে শনিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভা শেষে উপদেষ্টা পরিষদের এক অনির্ধারিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর অর্পিত তিনটি প্রধান দায়িত্ব (নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার) বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এসব দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও এখতিয়ারবহির্ভূত বক্তব্য এবং কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে তোলা হচ্ছে এবং জনমনে সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি করা হচ্ছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে।
দেশকে স্থিতিশীল রাখতে, নির্বাচন, বিচার ও সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে এবং চিরতরে এদেশে স্বৈরাচারের আগমন প্রতিহত করতে বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন বলে মনে করে উপদেষ্টা পরিষদ।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য শুনবে এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করবে।
উপদেষ্টা পরিষদের ঐ বিবৃতিতে আরো বলা হয় যে, শত বাধার মাঝেও গোষ্ঠীস্বার্থকে উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকার তার ওপর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। যদি পরাজিত শক্তির ইন্ধনে এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের ওপর আরোপিত দায়িত্ব পালনকে অসম্ভব করে তোলা হয়, তবে সরকার সব কারণ জনসমক্ষে উত্থাপন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের জনপ্রত্যাশাকে ধারণ করে। কিন্তু সরকারের স্বকীয়তা, সংস্কার উদ্যোগ, বিচার প্রক্রিয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ড অর্পিত দায়িত্ব পালন করাকে অসম্ভব করে তুললে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
এই ছিল উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতির অংশবিশেষ। ইংরেজিতে একটি ইডিয়ম আছে, জবধফ নবঃবিবহ ঃযব ষরহবং, অর্থাৎ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়া। যদি উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়া হয়, তাহলে দেখা যাবে যে, সরকার দেশের সাম্প্রতিক অশান্তি ও অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশক্তির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করেছেন। এ অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশক্তির কারা, সেটি বুঝতে অভিজ্ঞ রাজনৈতিক মহলের কষ্ট হয় না। কথায় বলে, ‘বুঝহ সুজন, যে জানো সন্ধান’।
মানুষের দৃষ্টি যদি সীমান্তের ওপারে নিবদ্ধ হয়, তাহলে তারা দেখবেন যে, ওপারের দাদারা তাদের অসংখ্য ইংরেজি ও বাংলা পত্রিকা, অসংখ্য টিভি চ্যানেল ও অসংখ্য ইউটিউবে অষ্টপ্রহর অপচেষ্টা করছে, কীভাবে বাংলাদেশের সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের মধ্যে একটি ঝামেলা বাধানো যায়। ওরা সাংবাদিকতার নিম্নতম নিয়মনীতি বিসর্জন দিয়ে প্রতিদিন তাদের বিষাক্ত বক্তব্য উগরে দিচ্ছে। তাদের ঔদ্ধত্য এতদূর পৌঁছেছে যে, তারা প্রতিদিন সেনা অভ্যুত্থান করে ড. ইউনূসকে হটানোর জন্য উসকানি দিচ্ছে।
ওপরে যে পরিস্থিতি বর্ণনা করা হলো, সেটি দেশের জন্য সুখকর নয়। তবে জনগণ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকেন, তাহলে অপশক্তি যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তারা জিল্লতির সাথে পরাজয়বরণ করে। জুলাই বিপ্লব তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ঐ সব অপশক্তির বিরুদ্ধে এখন প্রয়োজন বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, অন্যান্য ইসলামী দল এবং দেশপ্রেমিক মধ্যবামরা ঐক্যবদ্ধ হোন। এটি সম্ভব হলে জনগণও জুলাই বিপ্লবের মতো ঐক্যবদ্ধ হবেন। আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসন এবং ভারতীয় প্রভুত্ব মিসমার করে দেওয়ার এটিই হলো একমাত্র পন্থা।