আলোকে তিমিরে : সব নয়, মূল স্তম্ভগুলোর সংস্কার জরুরি

মাহবুবুল হক
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০০

মাহবুবুল হক : সংস্কার নিয়ে বেশ কথাবার্তা হচ্ছে। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও। কারণ বাংলাদেশ ছোট। কিন্তু এর জাতি বড়। লোকসংখ্যা অনেক। এ লোকসংখ্যার ৯০ শতাংশ আবার মুসলিম। এছাড়া চাকরি-বাকরির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের মানুষ দুনিয়ার সমৃদ্ধ দেশগুলোয় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এসব কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে খুব পরিচিত দেশ। বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়েছিল, তখন বিশ্বের মানুষ বাংলাদেশকে হয় পাকিস্তানের অংশ অথবা ভারতের অংশ বলে মনে করত। সাথে সাথে দারিদ্র্য, ঝড়, বন্যাসহ নানামাত্রিক রাজনৈতিক উত্থান-পতনের কারণে দেশটি দ্রুতবেগে পরিচিতি লাভ করেছিল। সেই পরিচিতি থেকে সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশের নতুন নতুন নানা পরিচিতির উদ্ভব হয়। কিন্তু এসবের মধ্যেও বাংলাদেশসহ বিশ্বের মানুষ আশা করেছিল, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত হবে এবং ধীরে ধীরে এ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ধর্ম ও সংস্কৃতি নিয়ে সুরভিত হবে।
সময়টা ছিল সমাজতন্ত্র ও কমিউনিজমের পতনের যুগ। ততদিনে সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙে আপন আপন জাতিসত্তা নিয়ে পুনরুত্থানে চলে গেছে। যুগোস্লাভিয়া ভেঙে কয়েকটি দেশে খণ্ডিত হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুগোস্লাভিয়ার বিভক্তি থেকে নতুন যে ট্রেন্ড পরিলক্ষিত হচ্ছিল, তাতে বিশ্ব উপলব্ধি করছিলÑ দুনিয়ার দেশগুলো সংস্কারের মাধ্যমে আপন আপন জাতিসত্তায় ফিরে যাবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে গভীরভাবে অনুমিত হচ্ছিল মুসলিম অধ্যুষিত এ দেশটি গণতন্ত্রের পথে চলবে। কিন্তু সময় সে আলো ফেলেনি। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরই গণতন্ত্রকে বাংলাদেশে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যার পর নানারকম হত্যা সংঘটিত হয়।
একজন সেনাশাসক এসে একদলীয় দেশকে বহুদলীয় দেশে পরিণত করার চেষ্টা করেন। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু প্রতিবেশী দেশের প্ররোচনায় আরেক সামরিক শাসক এসে গণতন্ত্রের দেহকে নানাভাবে ক্ষত-বিক্ষত করে অনেকটা বছর অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একনায়কতন্ত্র ও স্বৈরাচারী শাসন বজায় রাখেন।
এ সময় দেশটি দুর্নীতির কবলে পড়ে যায়। কিছু পরে জনগণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে মাথা তুলে দাঁড়ায়। ১০ বছরের ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক সংগ্রামের ফলে স্বৈরাচার চলে যায়। গণতন্ত্র কিছুটা উঁকি-ঝুঁকি দেয়। কিন্তু দুর্নীতি আর লেজ গুটায় না। পরপর রাজনৈতিকভাবে নানা উত্থান-পতন ঘটলেও জাতিসত্তা ও গণতন্ত্র অথবা আগে গণতন্ত্র পরে জাতিসত্তা আর ফিরে আসে না।
গত ১৫ বছর জাতি শুধু গণতন্ত্র ও জাতিসত্তা হারায়নি, জীবন ও জগৎ এবং এর সাথে সাথে ইহকাল ও পরকালও হারিয়েছে। নামমাত্র স্বাধীনতা থাকলেও এর সার্বভৌমত্ব এবং এ জাতির আত্মপরিচয় সম্পূর্ণভাবে ভূলুণ্ঠিত হয়। জাতি বেঁচে থাকা আর মরে যাওয়ার মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পায় না। বাংলাদেশ যে একটা দেশ বা একটি জাতিরাষ্ট্র, তার আর কোনো পরিচয় অক্ষুণ্ন থাকে না। এদেশের পূর্বপুরুষেরা কালে কালে স্বাধীনতা দেখেছে, জাতিসত্তা দেখেছে, আত্মপরিচয় অনুধাবন করেছে। এর পরম্পরায় তারা কলোনিয়াল অপশাসন নির্মমভাবে ভোগ করেছে।
কিন্তু গত ১৫ বছরে দেশের মাটি ছাড়া আর কোনো কিছুর অস্তিত্ব বজায় থাকেনি। পর্যবেক্ষক মহলের বিশ্লেষণে এসেছে যে, আর সামান্য ক’টা বছর স্বৈরাচার ক্ষমতায় থাকতে পারলে এ দেশের মাটি ও সামুদ্রিক অঞ্চল হাতছাড়া হয়ে যেত।
অবশেষে মহান আল্লাহ মজলুম জাতির দিকে তাকিয়েছেন। জালিমদের পরাজিত করে জাতির বিপ্লবী শক্তিকে বিজয় দান করেছেন। যেহেতু দেশ ও জাতির সব ইনস্টিটিউশন ধ্বংস হয়ে গেছে, সে কারণে ন্যাশনাল রিকনস্ট্রাকশনের প্রশ্ন উঠেছে। ঘরবাড়ি ভেঙে গেলে কিছু অর্থ প্রাপ্তি ঘটলেই তা অল্পসময়ের মধ্যে গড়ে তোলা যায়। কিন্তু জাতির মনন ভেঙে গেলে সেটা সহজে পুনর্গঠন করা যায় না। মননের পুনর্গঠন অনেক বড় বিষয়। যে জাতি সবকিছু হারিয়েছে, তাকে এখন কীভাবে তুল্যমূল্য করা যাবে? খুব কাছাকাছি সময়ের দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে আছে। সেটা হলো ‘অসুস্থ বানভাসি মানুষ’ সর্বহারা। এ সর্বহারাদের ত্রাণের জন্য প্রথমে কী নিয়ে তাদের সামনে হাজির হতে হয়? অবশ্যই সবাই বলবেন খাবার। কিন্তু বিপ্লবোত্তর মানুষ আমোদিত হলেও প্রয়োজনীয় খাবার সংগ্রহ করতে পারছে না। কারণ দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী। এ বিষয়ে নতুন করে কোনো সংস্কার ব্যবস্থা গঠন করা হয়নি। এর সাথে সাথে যে সংস্কার প্রয়োজন ছিল, তা হলো বিপ্লবে হতাহত ও পরিবারবর্গের সুচিকিৎসা ও টেকসই পুনর্বাসন। সেক্ষেত্রেও আশানুরূপ কিছু করা যায়নি। যাদের নিয়ে সরকার গঠন করা হলো (এখনো সেই প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে), তাদের মাঝেও নানা বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে। যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে বিপ্লবীরা জীবন দিল বা হতাহত হলো, তা যে অন্তর্বর্তী সরকার সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারছে না, সেটা এখন সবার বোধগম্য।
কোনো বিপ্লবী সরকারের নানা আদর্শের ও নানা মতের লোক থাকে না। আনুপাতিক হারেও না। বিপ্লব ইজ বিপ্লব। একমতের জাগ্রত জনসাধারণই সেখানে অবস্থান করে। বিপ্লবীরা মোটাদাগে এক আদর্শে না থাকলেও একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত একমতে থাকে। এ ঐকমত্য দরকার হয় লক্ষ্য অর্জনের জন্য। বিপ্লব অর্জনের পর কেউ লক্ষ্য অনুসন্ধান করে না। সেটা বিপ্লবের প্রস্তুতি সময়ের বিষয়।
আসলে পূর্ববর্তী সরকারের প্রেসিডেন্টের হাতে শপথ নেয়ার সাথে সাথে বিপ্লব হারিয়ে যায়। ফলে আমরা এখন নানা লেজেগোবরে বা সমাধানের অনুসন্ধান পর্বে আছি। সমাধান ছিল বিপ্লবী সরকারে। তাদের মতো তারা দেশ ও জাতিকে সাজাতে পারতো। তারা যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিপ্লব যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, বিজয় লাভের পর সেই লক্ষ্যানুযায়ী সংস্কারেই তাদের মনোনিবেশ করতে হতো। তাহলে একটু দেরিতে হলেও মূল অবকাঠামো গড়ে উঠতো।
অন্তর্বর্তী সরকার ৬টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। যথা- ১. নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্থার কমিশন; ২. পুলিশ সংস্কার কমিশন; ৩. বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন; ৪. দুদক সংস্কার কমিশন; ৫. জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও ৬. সংবিধান সংস্কার কমিশন।
কমিশনের নাম ও প্রকৃতি দেখলে বিস্ময় লাগে। বিপ্লবী সরকারের সমালোচনা করা যায় না, কিন্তু এ অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করা যায়। সেই সুবাদে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, বিষয়টি সঠিকভাবে সাজানো হয়নি। মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টি করে দুনিয়া ও আখিরাতে কীভাবে চলবে তার বিধিবিধান দিয়েছেন। এরই নাম বিশেষজ্ঞরা বলেন আসমানি কিতাব। আসলে এটাই হলো শাসনতন্ত্র বা সংবিধান। তাহলে দেখা যায়, সংবিধানের প্রশ্নটাই প্রথম। অথচ সংবিধান সংস্কারের তালিকা ৬ নম্বরে। সংবিধানে দেশ ও জাতির স্বপ্ন, আশা, আকাক্সক্ষা, উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও গন্তব্য সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে লিখিত থাকবে। এসবই হলো সংবিধানের মূলনীতি। যেমন- বিরাজিত সংবিধানে দেশ ও জাতির চারটি মূলনীতি উল্লেখ করা আছে। যদিও সেসব মূলনীতি সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়নি। যেসব কারণে সরকার উৎখাত করার জন্য বিপ্লব করা হলো, সেসব যদি সঠিকভাবে সংবিধানে উল্লেখ করা না হয়, তাহলে তো বিপ্লব স্বাভাবিকভাবেই ব্যর্থ হয়ে যাবে।
একটি সুখবর হলো কতিপয় অপরিণামদর্শী ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সংগঠন ছাড়া সচেতন দেশবাসীর অধিকাংশই বলছেন এ বিপ্লবকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এটা যদি দেশ ও জাতির আন্তরিক অভিলাষ হয়, তাহলে তো সংবিধান সংস্করণের কাজটি এক নম্বরে আনতে হতো। গন্তব্য সঠিকভাবে নির্ধারণ করা হয়ে গেলে সেখানে কখন কোন বাহনে বা মাধ্যমে যেতে হবে, সেটা স্বাভাবিকভাবে নির্ধারিত হয়ে যাবে। তার অর্থ এ নয়, অন্য কমিশনগুলো আপাতত বন্ধ থাকবে। যে কয়টি কমিশন করা হয়েছে এর বাইরে প্রয়োজনে আরো কিছু কমিশন হয়তো গঠন করতে হবে। সব কমিশনের রিপোর্ট একই সাথে প্রস্তুত করা যাবে। কারণ ভিন্ন ভিন্ন বিশেষজ্ঞ দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন কমিশন রিপোর্ট তৈরি করা হবে। নতুন অন্য কোনো কমিশন গঠন করা না হলেও অন্তত শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট তো তৈরি করতে হবে। কারণ বেশকিছু গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তান আমল থেকে এ যাবত যত শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, কোনটাই একটি মহান জাতি গঠনের জন্য যথাযথ বা উপযোগী হয়নি।
অন্য দেশ ও জাতির শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট দেখে দেখে সেসব নকল করে দুই আমলেই শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। এতে না হয়েছে, ঘোড়ার কমিশন না গাধার কমিশন। এর মাথা, ওর হাত, এক দেশের পা, ভিন্ন দেশের হৃদয় এসবের মিল করে শংকর জন্তুর মতো একটা কিম্ভুতকিমাকার রোবট জন্তু বানানো হয়েছে। ফলে পাকিস্তানি বা বাংলাদেশি কোনো মহান জাতি তৈরি হয়নি। এসব কমিশন রিপোর্টের গবেষণায় যা উল্লেখ করা হয়েছে, দুটি দেশের বা জাতির ব্যর্থ হওয়ার পেছনে প্রধান কারণ হলো দু’দেশের শিক্ষানীতি। সুষ্ঠু জাতি তৈরির লক্ষ্যে কোনো শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়নি। এখনো যদি আমরা পূর্বের মতো শিক্ষা কমিশন গঠন করি বা রিপোর্ট তৈরি করি তাহলে, ‘আমও যাবে ছালাও যাবে।’ নিশ্চিতভাবে বিপ্লব ব্যর্থ হবে।
সুতরাং সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে যুৎবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। জাতির স্টেকহোল্ডার হলো জনগণ। জনগণের সম্পৃক্ততা বা অংশগ্রহণ শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট তৈরিতে অনিবার্য করতে হবে। এ অংশগ্রহণ শুধু শিক্ষাবিদদের দ্বারা নয়, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদেরও কোনো না কোনোভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের যেমন অনেক এক্সারসাইজ করতে হবে, তেমনি বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী শ্রেণিসহ বিভিন্ন টেকনিক্যাল পেশা ও চিন্তা জগতের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
যেসব শিক্ষানীতি ও ব্যবস্থার কারণে মানুষ সত্যিকারভাবে মানুষ হতে পারেনি, সুনাগরিক হতে পারেনি সৎ ও দেশপ্রেমিক হতে পারেনি, সেসব শিক্ষানীতি কাটাছেঁড়া করে কোনো লাভ হবে না। মানুষকে ভালো মানুষ করতে হলে একটু সময় দিয়ে আহোরিত নলেজের সাথে প্রতি স্তরে রিভিল্ড নলেজ সংযোগ করতে হবে। ধর্মবোধ, মনুষ্যত্ববোধ, মানবিকবোধ এবং দেশাত্মবোধ জাগ্রত করতে হলে শিশু শ্রেণি থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সকল স্তরে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও শিক্ষার ইনপুট দিতে হবে। এটা আসলে বিশাল ক্যানভাস এর কাজ। সকল কমিশনে যে মেধা ও শ্রম দিতে হবে, তার চেয়ে অন্তত ১০ ভাগ বেশি মেধা, অভিজ্ঞতা ও শ্রম এখানে সন্নিবেশ করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজাতে হবে, যাতে কোনো শিক্ষার্থী কর্মজীবনে দুর্নীতিগ্রস্ত না হয়। ভবিষ্যতের নাগরিক যেন সুনীতি প্রবণ হয়।
মোটাদাগে গত অর্ধশতাব্দীকালের বেশি সময় ধরে একটি জাতির শুধু সরকারগুলো নয়, ধীরে ধীরে ৯০ শতাংশ থেকে ৯৫ শতাংশ মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। পূর্বে আমরা জানতাম অভাবগ্রস্ত ও মূর্খ মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু বর্তমানের অভিজ্ঞতা হলো যিনি যত বেশি শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত, তিনি তত বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি।
আমরা বেশ কয়েক বছর সুস্পষ্টভাবে অবলোকন করছি, সংসদের এমপিগণ ব্যবসায়ী হচ্ছেন, আবার অন্যদিকে ব্যবসায়ীগণ এমপি হিসেবে নির্বাচিত হচ্ছেন। এ অবস্থা ও ব্যবস্থা কী প্রমাণ করে? এটাই প্রমাণ করে যে, অর্থ এবং আর্টিফিসিয়াল সম্মানই সব। কিছু অর্থ দিয়ে সম্মান কেনা যায় এবং সম্মান বর্গা দিয়ে অর্থ উপার্জন করা যায়। এটাই যেন বর্তমানের রাজনীতির মূল কথা। পূর্বে বিশেষ কিছু পেশার বিষয়ে ভাবা হতো। বর্তমানে কোনো পেশাকে দুর্নীতিহীন ভাবা বোকার স্বর্গে বাস করার শামিল। সরকার ও দেশবাসীকে এ বিষয়ের দিকে অবশ্যই দৃষ্টি ফেরাতে হবে। যেসব কারণে জুলাই-আগস্টে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হলো সরকারসহ সর্বজনীন দুর্নীতি। দুর্নীতির মানে শুধু অর্থ আহরণ নয়, মাইন্ড সেটের দুর্নীতি এবং আর একটা বড় অর্থ হলো স্বার্থপরতা। আমরা আমাদের জনগোষ্ঠীকে নিঃস্বার্থ নাগরিক বানাতে চাই। দুর্নীতির যোগসূত্র থাকলে সেই অভীষ্ট লক্ষ্যে আমরা পৌঁছাতে পারব না।