গাজায় ‘যুদ্ধ থামাও, গণহত্যা বন্ধ করো’ দাবিতে হোয়াইট হাউস ঘিরে বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউস সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার (৮ জুন) যুদ্ধবিরোধী ‘রেড লাইন’ শীর্ষক এ কর্মসূচিতে অংশ নেয় কয়েক হাজার মানুষ। তাদের অনেকের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা। বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা বিভিন্ন প্লাকার্ডে লেখা ছিল ‘যুদ্ধ থামাও, গণহত্যা বন্ধ করো’, ‘ইসরাইলে মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধ করো’ ইত্যাদি। এ সময় গাজায় গণহত্যা সত্ত্বেও ইসরাইলের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নমনীয় আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা। জো বাইডেন এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে খুনি হিসেবে আখ্যায়িত করে বিক্ষোভকারীরা। ইসরাইলি বাহিনীর হাতে নিহত ফিলিস্তিনিদের নাম লেখা দীর্ঘ ব্যানার বহন করে অনেকে। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে এদিন পুরো হোয়াইট হাউস এলাকার নিরাপত্তা জোরদারের পদক্ষেপ নেয় কর্তৃপক্ষ। গাজা উপত্যকার রাফা শহরে ‘রেড লাইন’ বা চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করেনি ইসরাইল। হোয়াইট হাউসের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা। ভার্জিনিয়া থেকে আসা জায়েদ মাহদাবি (২৫) বলেন, ‘বাইডেনের কোনো কথাই আর আমি বিশ্বাস করি না। রেড লাইনের বিষয়টি তাঁর ভণ্ডামি ও কাপুরুষতা।’
এনবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রায় সবার পরনে ছিল লাল রঙের পোশাক। তাঁরা বলছিলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের রেড লাইন মিথ্যা এবং শিশুদের ওপর বোমা হামলা চালানো কখনো আত্মরক্ষা হতে পারে না। এ গণহত্যা লুকানোর সুযোগ নেই, বাইডেন এটি লুকাতে পারবেন না।
রব স্টিফেন্স নামে এক বিক্ষোভকারী তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদলু এজেন্সিকে জানান, তিনি হলোকাস্টের ভয়াবহতা থেকে বেঁচে যাওয়া এক নারীর সন্তান। ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনের হয়ে প্রচারে অংশ নেওয়া স্টিফেন্স ইসরাইলে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের দাবি জানান। তিনি বলেন, ইসরাইলের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র যা করছে, তা ভুল। ফিলিস্তিনে যে গণহত্যা চালানো হচ্ছে, তা বন্ধ করতে হবে। মারিয়া লোপেজ-সিলভেরো নামে আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, তিনি চান যুক্তরাষ্ট্র যেন ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে। কেননা এসব অস্ত্র ব্যবহার করে ফিলিস্তিনে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। আনাদলু এজেন্সি।
দক্ষিণ চীন সাগরে বাইরের হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয় : আনোয়ার ইব্রাহিম
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুতে বাইরের কোনো শক্তির হস্তক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য। তিনি সম্প্রতি ৩৭তম এশিয়া-প্যাসিফিক গোলটেবিল বৈঠক চলাকালে ফিলিপিন্সের এক প্রতিনিধির সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ, এখানকার পরিস্থিতি বরং আরও জটিল করে তুলছে। দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রশ্নে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো ও চীন যৌথ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২৫ সালে আসিয়ানের পালাক্রমিক সভাপতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করবে মালয়েশিয়া। আল-জাজিরা।
ভারতে ২ মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা
ভারতের ছত্তিশগড়ে গরু পাচারকারী আখ্যা দিয়ে দুই মুসলিম ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী ‘গোরক্ষক’রা। এ ঘটনায় গুরুতর আহত আরো একজনের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। গত শুক্রবার (৭ জুন) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে ছত্তিশগড়ের আরাংয়ে।
জানা গেছে, ট্রাকে করে মহিষ নিয়ে যাচ্ছিলেন তিন ব্যক্তি। কিন্তু গরু পাচার করা হচ্ছে সন্দেহে ১৫-২০ জনের একটি ‘গোরক্ষক’ দল ট্রাকটির পিছু ধাওয়া করে। পাটেয়া থেকে মহাসমুন্দ-আরাং রোড পর্যন্ত ট্রাকটিকে ধাওয়া করে ওই দলটি। মহানদীর ওপর একটি সেতুতে সেই ট্রাকটিকে আটকায় তারা। তারপর ট্রাকে থাকা মহিষ উদ্ধার করে। পাচারের অভিযোগ তুলে এরপরই চালক এবং তার দুই সঙ্গীকে ট্রাক থেকে নামিয়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। হামলার মুখে পড়ে পালানোর চেষ্টা করেন ট্রাকচালক এবং তার সঙ্গীরা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
তিনজনকে টানতে টানতে নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করা হয়। সেই হামলায় প্রাণ হারান দুজন। শুধু হত্যা করাই নয়, দুজনের লাশ নদীতে ছুড়েও ফেলা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ জুন শুক্রবার রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। পরে মহানদীর পাড় থেকে তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুজনের। এ ঘটনায় নিহতরা হলেন চাঁদ মিঞা ও গুড্ডু খান। আহত হয়েছেন সাদ্দাম কোরেশি। তারা উত্তর প্রদেশের সাহারনপুর জেলার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয়দের নামে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। রাইপুরের পুলিশ সুপার সন্তোষ সিংহ জানিয়েছেন, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আনন্দবাজার পত্রিকা, হিন্দুস্তান টাইমস।
পার্লামেন্ট ভেঙে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন ম্যাক্রোঁ
ফ্রান্সে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। একইসঙ্গে দেশটিতে আগাম নির্বাচনের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। সদ্যসমাপ্ত ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের নির্বাচনে খারাপ ফলের জেরেই হঠাৎ সংসদীয় নির্বাচনের এ ঘোষণা দেয়া হলো। গত ১০ জুন সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইইউ নির্বাচনে নিজের মধ্যপন্থী জোটকে অতি ডানপন্থীরা পরাজিত করার পরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত ৯ জুন রোববার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি আগাম আইনসভা নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেছেন। হঠাৎ এ ধরনের সংসদীয় নির্বাচনকে স্ন্যাপ লেজিসলেটিভ ইলেকশন বলা হয়। জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, আগামী ৩০ জুন ফ্রান্সে প্রথম দফায় সংসদের নিম্নকক্ষের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর দ্বিতীয় দফায় ভোট হবে আগামী ৭ জুলাই।
সংবাদমাধ্যম বলছে, সদ্যসমাপ্ত ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের নির্বাচনে খারাপ ফলের কারণেই হঠাৎ করে পার্লামেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা করা হয়েছে। ইইউ’র ওই নির্বাচনে ন্যাশনাল র্যালি থেকে শুরু করে কট্টর ডানপন্থী দলগুলো প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। এ কথা কার্যত স্বীকারও করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, ‘যারা ইউরোপকে রক্ষায় কাজ করতে চায়, সেই সব দলের জন্য এটা মোটেও ভালো ফলাফল নয়। অতি ডানপন্থী দলগুলো... মহাদেশের সর্বত্রই ভালো করছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে।’ তার ভাষায়, ‘এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যেখানে আমি নিজেও পদত্যাগ করতে পারছি না। আমি আপনাদেরই (জনগণ) বেছে নেওয়ার অধিকার দিতে চাই। তাই আজ (৯ জুন) রাতে পার্লামেন্ট ভেঙে দিচ্ছি।’ ফরাসি এই প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কঠোর সিদ্ধান্ত। কিন্তু একইসঙ্গে এটা আত্মবিশ্বাসের পদক্ষেপও। আমার আপনাদের ওপরে আস্থা রয়েছে। ফ্রান্সের জনগণ নিজের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সেরাটাই বেছে নেবেন।’ এএফপি।
পতনের মুখে ইউক্রেনের আরো একটি শহর
দুই বছরেরও বেশি পুরনো সংঘাতের উভয় পক্ষের গত ৯ জুন রোববারের প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ান বাহিনী কৌশলগত ইউক্রেনীয় শহর চাসিভ ইয়ার দখলে তাদের দীর্ঘস্থায়ী লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। চাসিভ ইয়ার বাখমুতের পশ্চিমে প্রায় ২০ কিমি (১২ মাইল) উচ্চ ভূমিতে অবস্থিত, শহরটি রাশিয়ান বাহিনী এক বছর আগে কয়েক মাস যুদ্ধের পরে দখল করেছিল, যা পরে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী মুক্ত করে। উভয় পক্ষই এটিকে রাশিয়ার ক্রামতোর্স্ক এবং সেøাভিয়ানস্কের প্রধান শহরগুলোয় অগ্রসর হওয়ার জন্য একটি সম্ভাব্য স্টেজিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছে।
ইউক্রেনের মিডিয়া আউটলেট ইউক্রেনস্কা প্রাভদা একটি সামরিক সূত্র এবং একজন ব্লগারকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে, রুশ বাহিনী একটি খালের পাশ থেকে শহরের এলাকা দখল করতে শুরু করেছে। ‘গত সপ্তাহে, উত্তর থেকে দক্ষিণে চাসিভ ইয়ারের উপকণ্ঠে গোলাগুলির ১,৫০০টিরও বেশি ঘটনা ঘটেছে,’ এটি তার উৎসকে উদ্ধৃত করে বলেছে। সূত্রটি বলেছে যে, রাশিয়ান সৈন্যরা একটি প্রধান রাস্তার পাশের এলাকাগুলো থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের তাড়াতে গাইডেড এরিয়াল বোমা ব্যবহার করছে’ এবং একাধিক দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং... ড্রোনের সমর্থনে তারা এগিয়ে যেতে শুরু করেছে। উভয় পক্ষের দ্বারা পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, রাশিয়ার সৈন্যরা একটি নগর কেন্দ্রের কার্যত ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকাগুলোর মধ্য দিয়ে তাদের পথ তৈরি করছে এবং ভবনগুলো পরীক্ষা করছে। ফেব্রুয়ারিতে আভদিয়েভকা শহরটি রাশিয়ান সৈন্যদের হাতে পড়ার পর থেকে রাশিয়ান বাহিনী পূর্ব ফ্রন্টের এলাকায় ধীরে ধীরে অগ্রযাত্রা করছে। তারা উত্তর-পূর্ব খারকিভ অঞ্চলের কিছু অংশে আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশও শুরু করেছে, যদিও ইউক্রেন বলছে যে অগ্রযাত্রা বন্ধ করা হয়েছে। রয়টার্স।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান
এ পাতার অন্যান্য খবর
এ বিভাগ বা পাতায় আর কোন সংবাদ, কবিতা বা অন্যকোন ধরণের লেখা পাওয়া যায়নি।