উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন মানবাধিকার কর্মী
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৫তম সাধারণ অধিবেশনে সামাজিক ও মানবাধিকার অ্যাক্টিভিস্ট শুনিচি ফুজিকি চীনাদের কারণে জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর সম্প্রদায় যে নির্মমতার শিকার হচ্ছে, তার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি তার বক্তব্যে জিনজিয়াংয়ে সংঘবদ্ধ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি ওই অঞ্চলে প্রবেশ করতে চীনাদের অস্বীকৃতি জ্ঞাপন, সংঘবদ্ধ বৈষম্য নিয়ে নিরপেক্ষ যাচাইয়ের ব্যবস্থা না থাকা, নির্বিচারে আটক, বাধ্যতামূলক শ্রম ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন। তিনি তার বক্তব্যে উইঘুরদের পরিচিতি ও সংস্কৃতির অনন্যতা মুছে ফেলার চীনা প্রয়াসের কথাও বলেন। তিনি বলেন, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো কার্যত বন্দিশিবির হিসেবে কাজ করছে। এসব স্থাপনায় মগজ ধোলাইয়ের ব্যবস্থা রয়েছে, সাংস্কৃতিকভাবে একীভূত হওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। ডেভডিসকোর্স।
ভারতে ইসলামিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ নিষিদ্ধ করল আদালত
ভারতের জাতীয় নির্বাচনের আগে সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যে ইসলামিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করেছে দেশটির একটি আদালত। উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট গত ২২ মার্চ শুক্রবার রাজ্যেটির মাদরাসা ও ইসলামিক স্কুলগুলো পরিচালনাকারী ২০০৪ সালের একটি আইন বাতিল করে লাখ লাখ শিক্ষার্থীকে প্রচলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় স্থানান্তরিত করার আদেশ দিয়েছে। ভারতীয় আদালত বলেছে যে, ইসলামিক স্কুল সংক্রান্ত আইন সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষতা লঙ্ঘন করেছে। তবে, উত্তরপ্রদেশের মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ইফতেখার আহমেদ জাভেদ বলেন, এ পদক্ষেপ ২৫ হাজার ইসলামিক স্কুলের ২৭ লাখ শিক্ষার্থী এবং প্রায় ১০ হাজার শিক্ষককে বিচ্যুত করবে।’ সমালোচকরা এটিকে এমন একসময়ে মুসলমানদের আরও কোণঠাসা করার একটি পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন, যখন ভারত আগামী মাসে শুরু হওয়া সাধারণ নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে চাইছেন। ভারত গত বছরের আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ঘৃণাত্মক বক্তব্যগুলোর শীর্ষে ছিল, এমন একটি সময়কাল যা দেশটিতে চারটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রচারণা এবং ভোটের পর্যায়গুলোর সাথে মিলে যায়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়া হেট ল্যাব (আইএইচএল) দ্বারা গত সপ্তাহ থেকে প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত ২০২৩ সালে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুটি মুসলিমবিদ্বেষী ঘৃণামূলক বক্তব্যের ঘটনা অবলোকন করেছে, এ ঘটনাগুলোর একটি গরিষ্ঠ অংশ ঘটেছে উগ্রপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি দ্বারা শাসিত রাজ্যগুলোতে। সিয়াসত ডেইলি।
হারাম শরীফে সেলফি ও ভিডিও করতে ব্যস্ত না হওয়ার পরামর্শ কাবার ইমামের
পবিত্র রমযান উপলক্ষে সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অসংখ্য মুসল্লি আগমন করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এসব মুসল্লিদের অনেকে মক্কা-মদিনায় ছবি ও ভিডিও করে সময় নষ্ট করেন। এ বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত হয়েছেন কাবার ইমাম আব্দুল-রহমান আল সুদাইস। তিনি মুসল্লিদের ছবি ও ভিডিও করতে ব্যস্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং বলেছেন, ‘সময় এবং ইসলামের পবিত্র-স্থানগুলোকে মূল্য দিন।’ কাবার ইমাম ছাড়াও দুই পবিত্র মসজিদ বিষয়ক জেনারেল প্রেসিডেন্সির প্রেসিডেন্টের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। গত ২৪ মার্চ কাবার এ ইমাম জানিয়েছেন, রমযান মাস উপলক্ষে কাবা ও মসজিদে নববীতে আরও বেশি বেশি ধর্মীয় আলোচনা এবং ধর্মবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। বাইরে থেকে মক্কা ও মদিনায় যেসব মুসল্লি আসেন তারা চান এ মুহূর্তটিকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে। এ কারণে অনেকেই মোবাইল ফোনে নিজের ছবি তোলেন এবং আশপাশের ভিডিও করে রাখেন। কিন্তু পবিত্র স্থানে সেলফি ব্যস্ততা ইবাদতের উদ্দেশ্যের পরিপন্থী। এ থেকে বিরত থাকা উচিত। গত ১১ মার্চ সৌদি আরবে পবিত্র রমযান মাস শুরু হয়। এরপর থেকে গত ১৪ দিনে কাবা শরীফের কাছে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ৭৫ লাখ মুসল্লি। অপরদিকে একই সময়ের মধ্যে মসজিদে নববীতে গেছেন ১ কোটি মুসল্লি। মানুষের ভিড় বেশি থাকায় এবারের রমযানে একজন ব্যক্তিকে শুধুমাত্র একবারই ওমরাহ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ভিড় সামলাতে অন্যান্য আরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আরব নিউজ।
আসামের বাসিন্দা হতে হলে মুসলিমদের ‘শর্ত’ পালন করতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী
ভারতের আসাম রাজ্যের বাসিন্দা হতে হলে মুসলিমদের কয়েকটি শর্ত পালন করতে হবে বলে জানিয়েছেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এসবের মধ্যে রয়েছে দুইয়ের বেশি সন্তান না থাকা, সন্তানদের মাদরাসায় না পড়ানো। চলতি মাসেই ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু হয়েছে। সিএএ নিয়ে ইতোমধ্যেই বিজেপি বিরোধীদলগুলো সুর চড়াতে শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গ, কর্নাটকে সিএএ চালু হতে দেবেন না, বলে দাবি করেছেন ওইসব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। এ আবহেই মুসলিমদের নিয়ে মন্তব্য করে লোকসভা ভোটের আগে নতুন বির্তক উসকে দিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাস করিয়েছিল ভারতের মোদি সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি ওই দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে ভারতে আশ্রয় চান, তাহলে তা দেবে ভারত। কিন্তু সিএএ-তে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হলেও সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্তদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ ‘বৈষম্য’ কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিরোধীদলগুলো।
উল্লেখ্য, মুসলিমরা আসামে ‘মিঞা’ নামে পরিচিত। তারা বাংলাদেশ থেকে গেছে বলে বলা হয়ে থাকে। ওই ‘মিঞা’ সম্প্রদায়কে স্বীকৃতি দেয়ার প্রসঙ্গে হিমন্ত বলেন, ‘আসামিয়া সমাজের কিছু সাংস্কৃতিক নিয়ম এবং ঐতিহ্য রয়েছে। যদি আসামের অধিবাসী হতে হয় তবে সেই সব মেনে চলতে হবে।’ আনন্দবাজার পত্রিকা।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান
এ পাতার অন্যান্য খবর
এ বিভাগ বা পাতায় আর কোন সংবাদ, কবিতা বা অন্যকোন ধরণের লেখা পাওয়া যায়নি।