সংবাদ শিরোনামঃ

বহুমুখী প্রভাবের আশঙ্কা ** শেখ হাসিনা-মোদি বৈঠক ২৭ মার্চ ** দেশে-বিদেশে চলছে নানা অপপ্রচার ** গণমানুষের মুক্তির জন্য কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই জামায়াতের লক্ষ্য : সেলিম উদ্দিন ** দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার করুণ হাল: দায়ী কারা? ** উন্নয়ন ও স্থানীয় সরকারের একাল-সেকাল ** পাপুলের কারাদণ্ডের মতো লজ্জা থেকে বাঁচতে দেশের রাজনীতির দুষ্টক্ষত বন্ধ করতে হবে **

রেজি: ডিএ ৫১৭।। ৫৯ বর্ষ : ৪৩তম সংখ্যা ॥ ঢাকা শুক্রবার ২২ মাঘ ১৪২৭ ॥ ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪২ : Friday 5 February 2021

ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম
আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ। এই জনপদকে গঠনের লক্ষ্যে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠার ৪৪ বছরে এসে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে ছাত্রশিবিরকে মুখোমুখি হতে হয়েছে অনেক অনাকাক্সিক্ষত পরিবেশ-পরিস্থিতি ও বিপদসঙ্কুল অবস্থার। নানা ঘটনা-রটনা, অপপ্রচার ও অপশক্তির নৃশংসতা এবং নিষ্ঠুরতা উপেক্ষা করে এ সুন্দর মিছিল আজ এক গর্বিত আঙিনায়। এই দীর্ঘ পথ অঙ্কিত হয়েছে শহীদী রক্ত আর আহত পঙ্গুত্ববরণকারীদের আহাজারি এবং মজলুমের বিনিদ্র রজনীর চোখের পানিতে। এ পথ একটি সাহসী পদভারে উজ্জ্বলতায় চিহ্নিত। এ মনজিল একটি চিরন্ময়তায় উদ্ভাসিত। সকল বিপত্তির মোকাবিলায় এ কাফেলার দৃষ্টি জান্নাতের দিকে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির একটি আদর্শিক আন্দোলন ও মেধাবী ছাত্রদের সাহসী ঠিকানার নাম। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ। অন্যায়, অসত্য ও জীর্ণতার বিরুদ্ধে এক প্রচ- বিদ্রোহ। মেধা ও নৈতিকতার সমন্বয়ে সমৃদ্ধ দেশ গড়ার অঙ্গীকার। সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরির স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই হতাশার গুহায় আশার আলো জ্বালিয়ে নির্ভেজাল করে আগামীর রাজপথ। ইসলামী ছাত্রশিবির ছাত্রদের সংগঠন হলেও ৪৪ বছরে সাহিত্য, সাংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক ও শিক্ষাক্ষেত্রসহ দেশীয় ও আন্তঃদেশীয় বহুবিধ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের রাজনীতির উত্থান-পতন ও ভাঙা-গড়ার এক সাহসী ও উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে ছাত্রশিবির।
এছাড়া ছাত্রসমাজের দাবি আদায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমস্যা সমাধান, ছাত্রদের নানান সুবিধা আদায়ের সংগ্রামে শিবির ছিল সদাসচেতন ও তৎপর। বিগত ৪৪ বছরে শিবিরকে প্রতিপক্ষের অপপ্রচার মোকাবিলা করতে হয়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, বক্তৃতা, বিবৃতি ও লেখনীর মাধ্যমে শিবিরকে যেমন হয়রানি ও অবদমনের অপচেষ্টা চলেছে, তেমনি বারুদের নির্মমতা ব্যবহার করে শত্রুপক্ষ থামিয়ে দিতে চেয়েছে এ সাহসী পথচলা। এসবের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে শিবির এ স্বর্ণালি ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রচনা করেছে। যে ইতিহাস প্রেরণা জোগায় ভবিষ্যতের পথ চলায়। এদেশের মাটি ও মানুষ ইসলামের জন্য বরাবরই অবারিত ও নিবেদিত। অসংখ্য মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক ইসলামী ছাত্রশিবির। শহীদের পিতা-মাতা, ভাই-বোনের বিনিদ্র রজনীর চোখের পানি ও দেশবাসীর ভালোবাসাই আমাদের প্রেরণা। তাই প্রতিষ্ঠার ৪৪তম সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আমরা দেশবাসীকে জানাচ্ছি আন্তরিক অভিনন্দন ও ফুলেল শুভেচ্ছা।
ছাত্রশিবির একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এমন এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে একজন শিক্ষার্থী তার মেধা, মনন ও প্রতিভা বিকাশের যাবতীয় উপকরণ পেয়ে থাকে। শিক্ষার যে মূল লক্ষ্য- Hermonius Development of Body, Mind and Soul- এ সবগুলো শর্তই শিবিরের কর্মসূচি, পরিকল্পনা কার্যক্রমে বিদ্যমান। বর্তমান সময়ে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের মাধ্যমে এ কথা খুব পরিষ্কার যে, জাতিকে এর হাত থেকে রক্ষা করতে হলে নৈতিক শিক্ষার প্রসার ও মূল্যবোধের ভিত্তিকে আমাদের স্বতন্ত্র জাতিসত্তার বিকাশ ঘটানোর কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া শিবিরের বিভিন্ন কর্মসূচি ও কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে সিলেবাস, নিয়মিত পাঠচক্র, সামষ্টিক পাঠ, স্টাডি সার্কেল, স্টাডি ক্লাস, নিয়মিত অধ্যয়ন, শিক্ষা কারিকুলাম, শিক্ষা মূল্যায়ন ও পরীক্ষা, শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ব্যবস্থা, শিক্ষাঙ্গনে পরিবেশ, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক বৃদ্ধি ও লাইব্রেরি ব্যবস্থা। এককথায় নিম্নোক্ত কর্মসূচিগুলোর মাধ্যমে ইসলামী ছাত্রশিবির ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্রীয় আন্তর্জাতিক পরিম-লে ঐতিহাসিক অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে।
সৃষ্টি-স্রষ্টা সম্পর্ক অধিকার ও দায়িত্ব সচেতন : মানুষ একটি নৈতিক জীব। মানুষের বিবেক যদি দেহকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তাহলে দেহ শুধু ভালো কাজই করে। কিন্তু প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির সম্পর্ক জানার সুযোগ নেই। অন্যদিকে ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীকে স্রষ্টার সাথে সম্পর্ক স্থাপন ও দায়িত্ববোধ শিক্ষা দিয়ে থাকে।
মেধা ও নৈতিকতার সমন্বয় : একটি সমন্বিত সিলেবাস পদ্ধতির মাধ্যমে জাগতিক মানোন্নয়ন ও মূল্যবোধ বিকাশের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। নবী করীম (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয়, যার চরিত্র বা আখলাক সর্বোৎকৃষ্ট।’ গ্রিক দার্শনিক প্লেটো, এরিস্টটল তাদের দর্শনচিন্তায়ও সত্যিকারের সৎ ও নিষ্ঠাবান নাগরিক তৈরি করতে নৈতিকতার প্রয়োজন বলেছেন। বস্তুবাদী শিক্ষার অন্যতম দার্শনিক স্ট্যানলি হল বলেন, ‘If you teach your children the three R’s (Reading, Writing and Arithmatics) And leave the fourth ‘R’ (Religion) you will get fifth ‘R’ (Rascality).

দেশাত্মবোধ : এ প্রজন্মে তরুণ-তরণী ও কিশোর-কিশোরীরা যখন চরিত্রহীনতা, হীনম্মন্যতা, সন্ত্রাস, আর সর্বনাশা নেশার নীল মৃত্যুর ভয়ঙ্কর শিকারে পরিণত হচ্ছে। তখন বুক ফেটে আর্তনাদ আকারে এ পরিণতির কারণ হিসেবে একটি উত্তর বেরিয়ে আসে আর তা হচ্ছে ‘ঐতিহ্যের বিচ্যুতি ও দেশপ্রেমের অভাব।’ সততা ও নিষ্ঠার দৃষ্টান্ত স্থাপন : ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে পারে à¦¶à¦¿à¦¬à¦¿à¦°Ñ à¦à¦‡ দৃষ্টান্ত স্থাপনে চমৎকার সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। আদর্শিক মোটিভেশনই যে এর প্রধান কারণ অনেকেই তা উপলব্ধি করেছেন এবং এর স্বীকৃতি দিয়েছেন। তাছাড়া বিগত দিনে সরকারের অংশীদারত্ব থাকলেও শিবিরের বিরুদ্ধে চড়বিৎ চড়ষরঃরপং-এর কোনো অভিযোগ নেই।
ভারসাম্যপূর্ণ জীবন : ইসলামী ছাত্রশিবিরের জনশক্তিদের প্রতিদিন ব্যক্তিগত জবঢ়ড়ৎঃ-এর মাধ্যমে প্রতিটি কর্মকে জ্ঞান ও আমলের দিক থেকে যোগ্য করে গড়ে তোলা, তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে উপযোগী করা, নৈতিক ও আত্মিক দিকসহ সকল দিক থেকে পরিশুদ্ধ করার জন্য যে জবঢ়ড়ৎঃ-এর ব্যবস্থা আছে, তা আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা ছাত্রসংগঠনে নেই।
ছাত্রকল্যাণ ও সমাজকল্যাণমূলক কাজ : দেশ-জাতির সংকট ও দুর্যোগ মুহূর্তে ত্রাণ বিতরণ, উদ্ধারকাজ, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, শীতবস্ত্র বিতরণ বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ, পরিষ্কার-পরিছন্নতা অভিযান, বাঁধ নির্মাণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, ডেঙ্গু প্রতিরোধ, সবার জন্য শিক্ষা, নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ, পথশিশুদের আশ্রয়দান, রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিংসহ নানাবিধ সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে শিবির সাধারণ ছাত্রজনতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রসমাজের অধিকার ও দাবি-দাওয়া আদায়ের প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। শিক্ষা উপকরণ বিনামূল্যে বিতরণের দাবিতে জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে বহু কর্মসূচি পালন ও ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
ছাত্রশিবির যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে, সেখানেই শিবির আরো বেশি ছাত্রছাত্রীর প্রিয় ঠিকানায় পরিণত হয়েছে। ৮০-র দশকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এককভাবে শিবিরের প্যানেল বিজয়ী হয়। এতে বাতিলের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে à¦ªà§œà§‡Ñ à¦¶à¦¿à¦¬à¦¿à¦°à§‡à¦° ওপর জুলুম-নির্যাতন বেড়ে যায়। শিবিরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে তারা প্যানেল দেয়। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঐকব্যবদ্ধ প্যানেলের বিরুদ্ধে এককভাবে শিবির বিজয়ী হয়। ছাত্রদের কল্যাণমুখী কর্মকা- পরিচালনায় শিবির তৎপর।
ছাত্র আন্দোলনে গঠনমূলক কর্মসূচি প্রবর্তন : আত্মগঠন, চরিত্র গঠন, পড়ালেখায় যতœà¦¬à¦¾à¦¨ হওয়া, ইসলামী আদর্শের অনুশীলন, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি, গণতান্ত্রিক সহনশীলতা ও সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টির ব্যাপারে শিবিরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজদের প্রতি সাধারণ ছাত্রসমাজের অনীহা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সন্ত্রাসী তৎপরতা হ্রাস পাওয়ার এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞানভিত্তিক পাঁচ দফা কর্মসূচি : কুরআন-সুন্নাহ ও যুগে যুগে ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার এ যুগের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট সামনে রেখে রচিত হয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক পাঁচ দফা কর্মসূচি।
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক : প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক কাক্সিক্ষত মানের হওয়া উচিত। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেই প্রত্যাশিত কোনো সম্পর্ক নেই। প্রতিনিয়ত যখন শিক্ষক-শিক্ষিকা লাঞ্ছিত হচ্ছে, সেখানে ছাত্রশিবির শিক্ষকদের সম্মানের মুকুট বানিয়েছে।
শিক্ষানীতির জন্য আন্দোলন: শিক্ষাব্যবস্থা একটি জাতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল্যবোধ ও চেতনার আলোকে দেশে কোনো শিক্ষানীতি প্রণীত হয়নি, বরং ধর্মহীন শিক্ষনীতি চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। শিবির এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতাকে সচেতন করে জনমত সংগ্রহের জন্য জাতীয় শিক্ষা সেমিনারের আয়োজন, স্থানীয় সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, গোলটেবিল বৈঠক, বুকলেট প্রকাশ, পুস্তিকা প্রকাশ, শিক্ষা স্মরণিকা প্রকাশ ও ডড়ৎশংযড়ঢ়, গ্রুপ মিটিং ইত্যাদি কমসূচি গ্রহণ করে থাকে।
এক অপূর্ব সমন্বয়
ইসলামী ছাত্রশিবির এসে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ছাত্ররা সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে ইসলামী জ্ঞানে। আবার মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত ছাত্ররা সুযোগ পেয়েছে আধুনিক বিষয়ে শিক্ষা লাভের অর্থাৎ শিবির আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ধর্মীয় ইসলামী শিক্ষার এক যুগোপযোগী সমন্বয় ঘটিয়েছে।
নকলপ্রবণতা থেকে মুক্ত : ইসলামী ছাত্রশিবির ছাত্রদের নকলপ্রবণতা থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করে। শিবিরের সাথী ও সদস্য কেউ নকল করলে তার সাথী বা সদস্য পদ বাতিল করা হয়। কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নিলেও শিবির তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট: সাংগঠনিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব তৈরির জন্য এবং কর্মীদের যোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য লিডারশিপ ট্রেনিং ক্যাম্পসহ বহুবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
সৃজনশীল প্রকাশনায় শিবির: আধুনিক রুচিসম্মত তথ্যবহুল দাওয়াতী কার্যক্রম উপহার আদান-প্রদান এবং সুস্থ বিনোদন চর্চায় শিবিরের প্রকাশনাসামগ্রী অনন্য। নববর্ষের ক্যালেন্ডার, ডায়েরি, অসংখ্য ক্যাসেট এবং বহু রকমের কার্ড, ভিউ কার্ড, স্টিকার, মনোগ্রাম, কোটপিন, চাবির রিং, চিঠির প্যাড ইত্যাদি প্রকাশনীর মাধ্যমে ছাত্র আন্দোলনের মাঝে একটি বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। তথ্যবহুল, গবেষণালদ্ধব্ধ বহু রং ও ডিজাইনের ক্যালেন্ডার ও ডায়েরি দেশ ও বিদেশে ব্যাপকভাবে সমাদৃত। মনোরমা সমসাময়িক প্রচ্ছদ নিয়ে মাসিক ছাত্রসংবাদ, স্টুডেন্ট ভিউজ, ত্রৈমাসিক- অঃ ধ এষধহপব বের হয়, যা ইতোমধ্যেই পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
বিজ্ঞানসামগ্রী প্রকাশনা : দেশের শিক্ষার পশ্চাদপদতা দূর করার জন্য ইসলামী ছাত্রশিবির প্রকাশ করেছে বিজ্ঞানের ওপর রেফারেন্স বই ও চার্ট পেপার। বহুরঙ্গা ও দ্বিমাত্রিক চিত্রসহ সম্পূর্ণ ডিটিপিতে ও ইলাস্ট্রেটেড ডিজাইনে ছাপানে এ উচ্চমানের বইগুলো বাংলা ভাষায় ইতঃপূর্বে প্রকাশিত হয়নি। ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহ প্রয়োজন এবং একাডেমিক শিক্ষার যথার্থ তথ্য উপকরণ দিয়েই এই টহফবৎংঃধহফরহম ঝপরবহপব ঝবৎরবং প্রকাশিত হয়েছে।
সাহিত্য সাংস্কৃতিক অঙ্গনে: একটি দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সাংস্কৃতিক পরিবর্তন। অপসংস্কৃতির সয়লাব থেকে ছাত্র ও যুবসমাজকে রক্ষা করে তাদের ইসলামী মূল্যবোধে উজ্জীবিত করতে হলেও প্রয়োজন পরিশীলিত সংস্কৃতির আয়োজন। সাহিত্য সাংস্কৃতি মানেই অশ্লীলতা-বেহায়াপনা, পাশ্চাত্য ও ব্রাহ্মণ্যবাদের অন্ধ অনুকরণ এই ধারণার পরিবর্তন করতে শিবির বদ্ধপরিকর। ইসলামী সাংস্কৃতির ধারা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে গান, কবিতা, নাটক রচনা ও সংকলন এবং ক্যাসেট, সিডি, ভিসিডি প্রকাশের ব্যবস্থা করেছে থাকে।
 à¦¦à¦•à§à¦· জনশক্তি সরবরাহ : জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ সময়ের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ জনশক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে। রাজনীতি, শিক্ষা-সংস্কৃতি, অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংকিং, সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন পেশার এবং চিকিৎসা ও সমাজসেবা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেশপ্রেমিক একদল দক্ষ লোক তৈরিতে শিবির অবদান রেখেছে। এসব ব্যক্তিবর্গ নিজস্ব কর্মক্ষেত্রে সততা ও কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। উচ্চশিক্ষিত পর্যায়ে সৎ মানুষের অভাব যে দেশে, সে দেশে কিছু সৎ মানুষ উপহার দিতে পারাটা কম কথা নয়। সমাজদেহে আজ যে দুর্নীতি, তার উৎস সাধারণ নিরক্ষর মানুষগুলো নয়। সমাজের ওপরের স্তরে শিক্ষিত দুর্নীতিবাজ আছে বলেই দুর্নীতি এক সর্বগ্রাসী রোগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
 à¦…ভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক পরিবেশ : শিবিরের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ জান্নাতি পরিবেশ। এদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অস্ত্রের ঝনঝনানি, সন্ত্রাস, ছিনতাই, সংঘাত, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। একজন ছাত্র আরেকজন ছাত্রকে নির্দ্বিধায় আঘাত করতে দ্বিধাবোধ করে না। ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীদের মাঝে রয়েছে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস, প্রেরণা ও উৎসাহ, সহযোগিতা ও সহমর্মিতা, শুভাকাক্সক্ষা ও ভালোবাসা।
নেতৃত্বের সাথে সম্পর্ক : ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য চাটুকারিতা, গ্রুপিং-লবিং আর অভ্যন্তরীণ সংঘাত আজ ছাত্ররাজনীতির বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। à¦†à¦²à¦¹à¦¾à¦®à¦¦à§à¦²à¦¿à¦²à§à¦²à¦¾à¦¹Ñ à¦‡à¦¸à¦²à¦¾à¦®à§€ ছাত্রশিবির তা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত। ইসলামী আন্দোলনে নেতার আদেশ ও কর্মীর হক আদায় ও মর্যাদাদানকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অনন্য নির্বাচন পদ্ধতি : ছাত্রশিবিরের রয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী নির্বাচন পদ্ধতি। এখানে কোনো প্রার্থী থাকে না; সবাই ভোটার সবাই প্রার্থী। কারো পক্ষে বা বিপক্ষে গ্রুপ সৃষ্টি করা যায় না। কারো জন্য ভোট চাওয়া যায় না। নিজেকে ভোট দেয়া যায় না, নিজের জন্য চাওয়াও যায় না। এ ধরনের অনন্য নির্বাচন পদ্ধতি অন্য কোনো সংগঠনে কল্পনাও করা যায় না। রাসূলের নির্দেশ অনুযায়ী পদের আকাক্সক্ষী ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেয়া যায় না।
নেতৃত্ব ও আনুগত্যের ভারসাম্য : নেতৃত্ব ও আনুগত্যের ভারসাম্য ইসলামী সংগঠনের বৈশিষ্ট্য। এটি ইসলামী ছাত্রশিবির অনুসরণ করে থাকে। অন্ধ আনুগত্য নয়, বরং সৎকর্মের ক্ষেত্রে আনুগত্য। ব্যক্তির পরিবর্তনে আনুগত্যের পরিবর্তন এখানে হয় না। এটি শিবিরের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।
গঠনমূলক সমালোচনা : প্রচলিত রাজনীতিতে অনেকে সংশোধনের উদ্দেশ্যে কাউকে কিছু বলতে ভয় পায়। না জানি তিনি কীভাবে  নেবেন। কিন্তু ইসলাম গঠনমূলক সমালোচনাকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছে। একসাথে কাজ করলে ভুল-ত্রুটি হতে পারে, এজন্য একে অপরকে পরিশুদ্ধ করার জন্য গঠনমূলক সমালোচনা করা যায়।
জবাবদিহি : এই সংগঠনে প্রতিটি কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহির চেতনা থাকে। সংগঠনের জনশক্তি, সম্পদ, সংগঠনের মর্যাদা ইত্যাদি আমানত। সে আমানতের খিয়ানত যেন না হয়, সেজন্য দায়িত্বশীলগণও জবাবদিহির চেতনা নিয়েই দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
লেজুড়বৃত্তিতা নেই : ছাত্রশিবির কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করে না। আজকের ছাত্ররাজনীতিতে সন্ত্রাসের জন্য লেজুড়বৃত্তিকে দায়ী করা হয়ে থাকে। কিন্তু শিবিরের নেতা নির্বাচন বা কমিটি গঠন সদস্য ভাইদের প্রত্যক্ষ ভোটের ফলের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। সংবিধানে কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচনের জন্য একটি নির্বাচন কমিশন আছে। নির্বাচন পরিচালনা ও ফল ঘোষণায় তারা ভূমিকা রাখেন।
আত্মসমালোচনা : আমাদের এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিটি ছাত্র প্রতিদিনই নিজেই নিজের সমালোচনা করে থাকে। মানুষ ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। প্রতিদিনের ত্রুটির জন্য সে আল্লাহর কাছে তাওবা করে, ক্ষমাপ্রার্থনা করে। পরবর্তী দিনগুলো যেন আরো সুন্দর হয়, এজন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। এভাবে সে নিজেকে ব্যক্তিগতভাবে পরিশুদ্ধ করে।
ত্যাগ ও কুরবানির এক অনুপম নাজরানা : শিবির ত্যাগ ও কুরবানির এক অনুপম নাজরানা পেশ করছে। ত্যাগ ও কুরবানির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ছাড়া আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব নয়। মহান রাব্বুল আলামিন বলেছেন, ‘তোমরা কি এমনিতেই জান্নাতে চলে যাবে? অথচ তোমাদের পরীক্ষা করা হবে না যে কারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করেছে, আর কারা ধৈর্য ধারণ করেছে।’
এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর যে জুলুম-নির্যাতন চালানো হয়েছে, তা যদি অন্য কোনো সংগঠনের ওপর চালানো হতো, তবে সেই সংগঠনকে খুঁজে পাওয়া যেত না। জুলুম-নির্যাতন, নিষ্পেষণ, হত্যা শিবিরকে আরো অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে। বিগত ৪৪ বছরে শিবিরের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এই শহীদদের সকলেই ছিলেন মেধাবী এবং সচ্চরিত্রবান। তাদের সহপাঠীগণ ও শিক্ষকবৃন্দ এর সাক্ষী। তাদের অপরাধ ছিল à¦à¦•à¦Ÿà¦¾à¦‡Ñ à¦¤à¦¾à¦°à¦¾ ইসলামের পক্ষে অত্যন্ত শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন।
জাতীয় রাজনীতি ও ইস্যুতে ভারসাম্যমূলক ভূমিকা : জাতীয় রাজনৈতিক ইস্যুতে শিবির গঠনমুখী এক দৃঢ় ভূমিকা পালনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশের প্রতিটি সংকট, গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম ও জাতীয় নির্বাচনকে সফল করে তোলার ক্ষেত্রে শিবির অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য রাজনৈতিক দলসমূহের আন্দোলনকে গতিশীল করে আওয়ামী দুঃশাসনের অবসানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। ২৮ অক্টোবর’০৬ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঐতিহাসিক ভূমিকা তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তৈরিতে শিবির : বিশ্বমুসলিম যুব সংস্থা (ওয়ার্ল্ড এসেম্বলি অব মুসলিম ইয়োথস), ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ফেডারেশন অব স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের সদস্য হিসেবে আন্তর্জাতিক ময়দানে শিবিরের সরব ভূমিকা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের গৌরব বৃদ্ধি করেছে।
 à¦†à¦¸à§à¦¨, দেশ ও জাতির প্রয়োজনে এই প্রিয় কাফেলাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য আমরা স্ব-স্ব অবস্থান থেকে দোয়া, ভালোবাসা আর সহযোগিতার হাতকে প্রসারিত করি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ৬০ বছর আগে ১৯৬১ সালে তার অভিষেক ভাষণে দেশবাসীর উদ্দেশে বলেছিলেন- not what your country can do for you, ask what you can do for your country. অর্থাৎ “তোমার জন্য তোমার দেশ কী করবে, তা জানতে চেয়ো না, বরং তোমার দেশের জন্য তুমি কী করবে সেটাই বলো”।

এ পাতার অন্যান্য খবর

এ বিভাগ বা পাতায় আর কোন সংবাদ, কবিতা বা অন্যকোন ধরণের লেখা পাওয়া যায়নি।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।