সংবাদ শিরোনামঃ

অর্থ লুটের মহোৎসব ** ভোটে আগ্রহ নেই মানুষের ** সারাদেশে গুম হত্যা আতঙ্ক ** ড. মাসুদের মুক্তির দাবিতে জামায়াতের মিছিল ** প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দায় এই সরকারকেই নিতে হবে : খালেদা জিয়া ** পানির জন্য হাহাকার ** ক্ষমতার নিশ্চয়তা পেলেই আগাম নির্বাচন ** তিস্তা এখন ধু ধু বালুচর ** তেলের দাম কমানোর নামে প্রহসন ** সরকার দায় চাপানোর কৌশল নিয়েছে ** আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই জনগণের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে ** ওনারা বললে দোষ হয় না! ** মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি কি সুদূর পরাহত? ** পার্বতীপুরে পানির জন্য হাহাকার ** টাঙ্গাইলের ছয় উপজেলায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই! ** কুষ্টিয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু বাড়ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ বৈশাখ ১৪২৩, ২১ রজব ১৪৩৭, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ওআইসির সম্মেলনে মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কট সমাধানে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি মুসলিম বিশ্বের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ

মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম
মধ্যপ্রাচ্য মুসলিম উম্মাহর প্রাণকেন্দ্র। ইতঃপূর্বে মুসলিম জাতির উত্থান-পতন এই অঞ্চলকে ঘিরেই সংঘঠিত হয়ে গেছে। যদিও মুসলিম উম্মাহকে কোন অঞ্চলে আবদ্ধ করা যায় না। মুসলিম উম্মাহ একটি দেহের মতো। সারা বিশ্বের যেখানেই মুসলিম জনগোষ্ঠী থাকুক না কেন তাদের ভালো-মন্দ, দুঃখ-দুর্দশা সমস্ত মুসলিম উম্মাহর মধ্যে অনুভূত হওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমানে সর্বত্রই এর অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। মুসলিম উম্মাহ আজ দ্বিধাবিভক্ত এবং পরস্পরে সংঘাতে জড়িত। তবে প্রাণকেন্দ্রের সংহতি নিঃসন্দেহে গোটা উম্মাহকে প্রভাবিত করবে এটাই স্বাভাবিক। তাই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নিরসন এবং বিরোধ ঝেড়ে ফেলে উম্মাহর ঐক্য ও সংহতির প্রচেষ্টা এখান থেকেই শুরু হোক এটাই আমাদের কামনা।

মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান বড় সমস্যার মধ্যে রয়েছে সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরাকে যুদ্ধ, ফিলিস্তিনে ইসরাইলী দখলদারদের নির্যাতন-নিপীড়ন, মিসরে গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে সেনাসমর্থিত সরকারের নিবর্তনমূলক প্রশাসন পরিচালনা। এছাড়াও রয়েছে আইএসের মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়াই। এসব সংঘাতে আঞ্চলিক শক্তিগুলোর পাশাপাশি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তিগুলোও জড়িত। মুসলিম উম্মাহর এখন প্রয়োজন এসব যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা।

অতি সম্প্রতি তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার(ওআইসি) শীর্ষ সম্মেলন, সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার (জিসিসি) সম্মেলন এবং সৌদি আরবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সফর অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। এসব উদ্যোগ কি আদৌ ফলপ্রসূ হবে অথবা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির বার্তা বয়ে আনবে। আসুন আমরা এখানে সেগুলোই খতিয়ে দেখার চেষ্টা করি।

মোট ষোলটি দেশ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য। সেগুলো হলো মিসর, ইরান, তুরস্ক, ইরাক, সৌদি আরব, ইয়েমেন, সিরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইসরাইল, জর্ডান, ফিলিস্তিন, লেবানন, ওমান, কুয়েত, কাতার ও বাইরাইন। এ অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪২ কোটি। মধ্যপ্রাচ্য আন্তঃমহাদেশীয় অঞ্চল। পশ্চিম এশিয়া, সাইপ্রাস (দক্ষিণপূর্ব ইউরোপ) ও মিসর (উত্তর আফ্রিকা) ঘিরে এই অঞ্চল। ইউরোপীয়রা এ অঞ্চলকে নিকট প্রাচ্যও বলে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যে সাধারণত গরম ও শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজমান। এ অঞ্চলের পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী দেশগুলোতে অশোধিত তেলের বিশাল মজুদ রয়েছে। ইসলাম, খ্রিষ্টধর্ম ও ইহুদিধর্মসহ বেশ কয়েকটি ধর্মের উৎপত্তিস্থল এই অঞ্চল। বতর্মানকালে কৌশলগত, অর্থনীতিগত, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয়ভাবে মধ্যপ্রাচ্য খুবই সংবেদনশীল হয়ে আছে।

মুসলিম বিশ্বের এক চরম সঙ্কটকালে আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ওআইসির ত্রয়োদশ শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলনে ওআইসির নতুন সভাপতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ইসলামী দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের ধর্ম ইসলাম, শিয়া বা সুন্নী নয়। এই ঐক্য কি আসলেই কার্যকর হবে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে-এ প্রশ্ন সব সময় ছিল কিন্তু এখন এটি খুব বড় হয়ে দেখা দিয়েছে ইসলামকে বিশ্ব সভ্যতার মুখোমুখি দাঁড় করাতে একটি মহলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে।

ওআইসির জন্ম হয় ১৯৬৯ সালের আগস্টে। এই উদ্যোগের প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সল বিন আব্দুল আজিজ। তিনি মুসলিম দেশগুলোকে একটি অভিন্ন ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। ইসলামী বিশ্বের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত কমিয়ে এনে সহযোগিতার সম্পর্ক নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। তখন ছিল সোভিয়েত-মার্কিন ¯œà¦¾à¦¯à¦¼à§ যুদ্ধের সময়। এর উদ্যোগে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছিল, যেটি বিশ্বে পৃথক ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।

কিন্তু ১৯৭৯ সালে ইরানে আয়াতুল্লাহ খোমেনীর নেতৃত্বে ইসলামী বিপ্লবের পর এক ধরনের ¯œà¦¾à¦¯à¦¼à§à¦¯à§à¦¦à§à¦§ শুরু হয় এই সংস্থার মধ্যে। ইরাক-ইরান যুদ্ধে এটি বিশেষভাবে চাঙ্গা হয়। আট বছর ধরে চলা সেই যুদ্ধ ওআইসির ঐক্যে প্রথম একটি ক্ষত হয়ে দাঁড়ায়। যদিও এই যুদ্ধ বন্ধে ওআইসির ভূমিকা ছিল মুখ্য। ইরানের ধর্মীয় নেতৃত্বের বিপ্লব রফতানির ঘোষণা এবং এর বিরুদ্ধে আরব দেশগুলো অনেকটা সম্মিলিত প্রতিরোধ কার্যক্রম ইসলামী বিশ্বে ঐক্যের পরিবর্তে জাতিতাত্ত্বিক বিভক্তিকে চাঙ্গা করে। গত এক দশকে জাতিতাত্ত্বিক সংঘাতে অধিক অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ইরান। এই জাতিতাত্ত্বিক সংঘাত সিরিয়া-ইয়েমেন হয়ে আরব দেশগুলোতে চড়িয়ে পড়েছে। শুধু সিরিয়ায় পাঁচ লাখের মতো মানুষ মারা গেছে এই সংঘাতে।

আঙ্কারার ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের ঐক্যের ডাকটা প্রধানত এই জাতিতাত্ত্বিক সংঘাত বন্ধের জন্য দেয়া হয়। কেননা, এই সম্মেলন চলাকালেই আলেপ্পো দখলের জন্য বাশার আল আসাদের সরকারি বাহিনী নিজ দেশের প্রতিপক্ষ জনগণের বিরুদ্ধে নতুন করে লড়াই শুরু করে।

এবারের ওআইসি সম্মেলনে দু’টি সুনির্দিষ্ট বক্তব্য উঠে এসেছে। এর একটি হলো সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ইসলামী বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা গ্রহণ এবং এই লক্ষ্যে ওআইসির একটি নিজস্ব ইন্টারপোল পুলিশ সংস্থা গঠন। প্রেসিডেন্ট এরদোগান নিজেই এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তার দ্বিতীয় প্রস্তাবটি ছিল একটি ইসলামী দেশকে জাতিসংঘে স্থায়ী সদস্যপদ দেয়া। বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের ধর্মবিশ্বাস ইসলাম হলেও জাতিসংঘের স্থায়ী পরিষদে এর কোন প্রতিনিধিত্ব নেই। এমনকি বিশ্ব শক্তিগুলো যাদের নতুন করে সদস্যপদ দেয়ার কথা ভাবছে, সেই তালিকায়ও নেই কোনো ইসলামী দেশের নাম।

বিশ্বের এক সময়ের একক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিজেকে গুঁটিয়ে নিতে শুরু করেছে। বুশ আমলে সন্ত্রাস বিরোধী আগ্রাসী যুদ্ধ চালাতে গিয়ে অর্থনৈতিক ও সামরিক চাপের মধ্যে পড়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে বারাক ওবামা ঠিক উল্টো পথে যাত্রা শুরু করেছেন। যুদ্ধে সরাসরি নিজে না জড়িয়ে আঞ্চলিক দেশগুলোকে সামনে ঠেলে দিয়েছেন। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে এক ধরনের শক্তির শূন্যতা। এই শূন্যতা পূরণে এগিয়ে এসেছে রাশিয়া। এই অবস্থায় আমেরিকার নিরাপত্তা ছায়ার ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোকে নিজ ভূখন্ড ও সরকারকে টিকিয়ে রাখতে নিজস্ব হিসাব-নিকাশ ও নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করতে হচ্ছে। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন ৩৪ জাতিগোষ্ঠীর সামরিক জোট ছিল তারই একটি অংশ। এই জোট গঠনের পর প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো ওআইসির।

একথা ঠিক, সিরিয়া-ইয়েমেন নিয়ে তুরস্ক ও সৌদি আরবের মধ্যে যে ঐক্য রয়েছে তা বিভক্তিতে রূপ নিয়েছে মিসর নীতি নিয়ে। মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি বিদায়ী ওআইসি চেয়ারম্যান হওয়ার পরও আঙ্কারা সম্মেলনে যোগ না দিয়ে তার বাণী দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন। জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ওআইসি সম্মেলনে যাননি।

মধ্যপ্রাচ্যে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে তুরস্ক, সৌদি আরব, মিসর ও পাকিস্তানের বিশেষ ঐক্য প্রয়োজন। এর সাথে প্রয়োজন জাতিতাত্ত্বিক সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসা। এ জন্য ইরানের সাথে শান্তি সমঝোতার একটি ব্যবস্থায় সব পক্ষকে পৌঁছতে হবে। ওদিকে সিসির প্রান্তিকতা এবং ব্রাদারহুডের প্রতি নির্মম আচরণের বাস্তবতা একটি সমঝোতা প্রতিষ্ঠার পথে এখনো বাধা হয়ে রয়েছে। এ বাধা দূর করতে উভয় পক্ষকে ছাড় দিতে হবে। সিসিকে ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি এবং শাসনতান্ত্রিক রাজনীতি করার অধিকার মেনে নিতে হবে। নিপীড়ন ও ফাঁসির কারবার থেকে নিজেকে সহিষ্ণুতা ও সহাবস্থানের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। মুক্তি দিতে হবে মুরসি বদিইসহ শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের। আর ব্রাদারহুডকে মিসরের সামরিক অভ্যুত্থান-উত্তর বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে।

এই ধরনের সমঝোতা একেবারে কোনো সহজ বিষয় নয়। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এখন যে অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার সঙ্কটে পড়েছে, তা থেকে উত্তরণে সমঝোতা, সহাবস্থান ও ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। এই পথে যতটা অগ্রগতি হবে সেটাই হবে ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের সার্থকতা। 

ওবামার সৌদি আরব সফর

আইএসের হুমকি মোকাবেলায় আরব মিত্র দেশগুলোর কাছে আরো সহযোগিতা চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। গত ২১ এপ্রিল সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সম্মেলনে ওবামা এ সহযোগিতা চান। সম্মেলনে ইরান, সিরিয়া, ইরাকসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ইরান ও সিরিয়া নিয়ে আরব মিত্রদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কে দৃশ্যত যে চিড় ধরেছে, ওবামা এ সম্মেলনে যোগদানের মধ্য দিয়ে সেটি ‘মেরামত’ করার চেষ্টা করেন বলে ধারণা করা হয়।

এ ছাড়া উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর ওপর ইরানের যেকোনো রকম হামলা ও আগ্রাসন রুখতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা। সিরিয়া ও ইরাকে আইএসবিরোধী অভিযানে পশ্চিমাদের আরো সহযোগিতা করতে জিসিসির প্রতি আহ্বান জানান তিনি। জিসিসিভুক্ত দেশগুলো হলো সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান।

এর আগে ২০ এপ্রিল সৌদি আরব সফরের প্রথম দিনে ওবামা সৌদী বাদশাহ সালমানের সাথে বৈঠক করেন। দুই নেতার আলোচনায় ইরান, সিরিয়া, ইয়েমেন ও আইএস ইস্যুতে মতপার্থক্য ছিল। জিসিসি বৈঠকে জোটটির নেতারা অভিযোগ করেন, সংঘর্ষের উসকানি এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজনের মাধ্যমে ইরান সরকার ঐ অঞ্চলের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। এ ছাড়া ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেনে ইরান হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করে আসছে জিসিসি। তারা ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার পক্ষে হলেও যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ইরান ও উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনার অবসান হোক।

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে মধ্যে সম্পর্ক এখন এতটাই খারাপ যে, এ ধরনের অবস্থা এর আগে খুব কম সময়েই হয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরব এখনো একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মিত্র হিসেবে গণ্য। বিশ্বব্যাপী যে তেল ব্যবহৃত হয় তার প্রতি ৯ ব্যারেলের মধ্যে এক ব্যারেলের উৎস সৌদি আরব। এটি শুধু বিশ্ব অর্থনীতির একটি অপরিহার্য অংশ নয়; একই সাথে এ কারণে দেশটির সরকারের স্থায়িত্ব আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মূলত মার্কিন-সৌদী সম্পর্কের অবনতির প্রধান কারণ হলো মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সরাসরি সম্পৃক্ততা কমানোর ব্যাপারে বারাক ওবামার সিদ্ধান্ত। সাংবাদিক জেফ্রি গোল্ডবার্গের সাথে এক সাক্ষাৎকারে ওবামা এর আগে আশা প্রকাশ করেন যে, সৌদি আরব যেন তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সাথে এই অঞ্চলকে প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে ভাগাভাগি করে নেয়। উল্লেখ্য, ওবামা ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছতে বহু সময় ও রাজনৈতিক পুঁজি ব্যয় করেছেন।

সিরিয়ায় রাশিয়ার সর্বশেষ সামরিক অভিযানের উদ্দেশ্য নিয়ে খোদ মার্কিন প্রশাসনে বিভক্তি রয়েছে। পুতিন কি সেখানে জাতিসংঘের উদ্যোগকে সমর্থন দিয়ে গৃহযুদ্ধ বন্ধ করতে চান, নাকি প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের জন্য সামরিক সহায়তা বাড়ানোর বিষয় আড়াল করতে শান্তি আলোচনাকে ব্যবহার করছেন-এ নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে মার্কিন প্রশাসন।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংঘাতময় শহর আলেপ্পোর কাছে রাশিয়া আবার কামান স্থাপন করেছে। রাশিয়া গত মার্চে সিরিয়া থেকে কিছু বিমান প্রত্যাহার করলেও হেলিকপ্টার গানশিপ পাঠিয়ে সৈন্যদের শক্তি বৃদ্ধি করেছে এবং বিরোধীদের ওপর নতুন করে হামলা শুরু করেছে।

সিরিয়ার সরকারি বাহিনীকে রাশিয়ার সমর্থন জোরদারের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক মার্কিন কর্মকর্তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, এসব পরিস্থিতিতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হলে তা মস্কোর কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ভীরুতা বলে মনে হবে। আর তা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে বিমান ও নৌ তৎপরতা বাড়ানোর মাধ্যমে রাশিয়াকে উস্কানি সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ করবে। এর সাথে ওয়াশিংটনের সাথে সৌদি আরব, অন্যান্য উপসাগরীয় মিত্র দেশ ও তুরস্কের সাথে সম্পর্ক খারাপ হবে। এসব দেশ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার পক্ষপাতী।

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার আলোচনার মধ্য দিয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সিরিয়ায় আংশিক অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়। এতে ইসলামিক স্টেট গ্রুপকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অস্ত্রবিরতি কার্যকরের পর থেকে সিরিয়ার অধিকাংশ এলাকায় নাটকীয়ভাবে সহিংসতা ফিরে আসে। ফলে জেনেভায় চলমান শান্তি আলোচনা নিয়ে সবার মাঝে আশা দানা বাঁধে যে এর মধ্য দিয়ে হয়তো দেশটিতে রক্তঝরার অবসান হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পরিস্থিতি উল্টো দিকে মোড় নেয়। এদিকে সহিংসতা বেড়ে যাওয়া এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহে ব্যর্থতার কারণে সিরিয়ার প্রধান বিরোধী হাই কোয়ালিশন্স কমিটি (এইচএনসি) হতাশ হয়ে চলতি সপ্তাহে জেনেভায় চলমান শান্তি আলোচনায় যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকছে।

২০১১ সালের মার্চে স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে  দেশটির অর্ধেকের বেশি মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।