সংবাদ শিরোনামঃ

বিএনপি জামায়াতের জনসমর্থন বাড়ছেই ** জামায়াত গণতন্ত্র শান্তি সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে ** বাংলাদেশের ভারত জয় ** মধ্যবর্তী নির্বাচন কতদূর! ** ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় মাহে রমজানের শিক্ষা কাজে লাগাতে হবে : নুরুল ইসলাম বুলবুল ** প্রতিবেশী বন্ধুরা আমাদের গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে না ** কূটনীতিতে চরম ব্যর্থ বাংলাদেশ ** বাংলাওয়াশ : হজম করতে কষ্ট হচ্ছে ভারতের! ** রমজানে সারাদেশে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে ** ধর্মীয় মূল্যবোধের চর্চাই রক্ষাকবচ **

ঢাকা, শুক্রবার, ১২ আষাঢ় ১৪২২, ৮ রমজান ১৪৩৬, ২৬ জুন ২০১৫

‘সেই ভয়ের টুঁটিই ধরব টিপে, করব তারে লয়’

মধ্যবর্তী নির্বাচন কতদূর!

॥ হারুন ইবনে শাহাদাত॥
আন্দোলনের ভয়ে সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক সকল অধিকার হরণ করে জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে বিরোধীদলকে দাবিয়ে রেখে দেশ শাসন করছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়,‘তোমরা ভয় দেখিয়ে করছ শাসন, জয় দেখিয়ে নয়/  সেই ভয়ের টুঁটিই ধরব টিপে, করব তারে লয়’। জনগণ কখন সেই ভয়ের টুটি চেপে ধরে সেই আতঙ্কে আছে সরকার ও আওয়ামী লীগ। রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, সেই আতঙ্কে তাড়িত হয়েই সরকার বিরোধীদলের ঘরোয়া মিটিং, ইফতার মাহফিল ও গণসংযোগের মতো নিরূত্তাপ কর্মসূচিকেও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের মোড়কে মুড়িয়ে বিরোধীদলের শীর্ষ নেতা থেকে নিয়ে সমর্থকদের পর্যন্ত জেল-জুলুম, নির্যাতন এমন কি ক্রসফায়ারের নামে হত্যা পর্যন্ত করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

 à¦¦à§‡à¦¶ চালাতে রাজনীতিকের প্রয়োজন

সরকারের অব্যাহত আতঙ্ক আর ষড়যন্ত্রের কারণে জামিন পাওয়ার পরও বিরোধীদলের জনপ্রিয় নেতাদের মুক্তি মিলছে না। জেলগেট থেকে আবার গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমন কি জেলগেট থেকে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার পর অস্ত্রসহ গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। যাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন তারা জামিনে মুক্তি পেলেও প্রকাশ্যে চলা-ফেরা করতে এমন কি সামাজিক অনুষ্ঠানেও উপস্থিত হতে পারছেন না। নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসতে পারছেন না। এত কিছু করেও সরকার ভরসা পাচ্ছে না। কারণ পুলিশ আর প্রশাসন নির্ভর হয়ে পড়ার কারণে সরকার দিন দিন গণ-বিচ্ছিন্ন হয় পড়ছে। গত বছরের ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠান ফ্লপ করার খবর বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশের পর দলের অভ্যন্তরে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। এই প্রসঙ্গে গত ২০১৪ সালের ২৬ জুন দৈনিক প্রথম আলো লিখেছিলো,‘ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির প্রথম অনুষ্ঠান ছিল প্রায় কর্মীশূন্য। আসেননি প্রধান অতিথি সজীব ওয়াজেদ জয়ও।’ ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত ২৫ জুন বুধবার থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত টানা তিন দিনের কর্মসূচি নিয়েছিলো আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে প্রতিদিন বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিলো উল্লেখযোগ্য। এসব কর্মসূচি সফল করতে প্রায় দুই মাস ধরে দলটি বিভিন্ন বৈঠক করেছে। প্রথম দিন থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি আলোচনা সভায় কর্মীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।  এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, তাড়াহুড়ো করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় লোক সমাগম হয়নি। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সরকার দলছুট হলে দল আমলানির্ভর হয়ে পড়ে। দেশ চালাতে হলে রাজনীতিকদের প্রয়োজন।’ 

আর গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসতে পারবে না

গত ২৩ জুন মঙ্গলবার পালিত হলো আওয়ামী লীগের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকী। এবার  সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নয় প্রথম দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। এই অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া জাতীয় সংসদেও প্রধানমন্ত্রী এই দিন ভাষণ দিয়েছেন। জাতীয় সংসদে তিনি বলেছেন,‘অতীতে বহুবার আওয়ামী লীগকে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন করার অনেক ষড়যন্ত্র ও চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু কেউই সফল হয়নি। আগামীতেও কেউ সফল হবে না। কারণ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শক্তিই হচ্ছে জনগণ।’  রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, শুধু আওয়ামী লীগ নয় সকল রাজনৈতিক দল ও সরকারেরই মূল শক্তি জনসর্মথন। কিন্তু বর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন যে সরকার ক্ষমতায় আছে তা জনসমর্থনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নয়। জাতীয় সংসদের ৩শ’ আসনের মধ্যে ১৫৪টিতে কোন নির্বাচনই হয়নি। বাকী যে কয়টি আসনে নির্বাচন হয়েছে তাতে ৫ ভাগের বেশি ভোট পড়েনি বলে মতামত দিয়েছে দেশী পর্যবেক্ষকরা। নেপাল, ভারত ছাড়া বিদেশী সকল পর্যবেক্ষক সংস্থা বিরোধী দলবিহীন জাতীয় নির্বাচন বর্জন করেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্যদিয়ে শুধু গণতন্ত্র হত্যার ঘটনাই ঘটেনি। আওয়ামী লীগও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আ স ম আবদুর রব বলেছেন, আওয়ামী লীগ আর গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসতে পারবে না।

মধ্যবর্তী নির্বাচন কত দূর

একটি জাতীয় দৈনিক সরকারের একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে লিখেছে, গত বছরের ৫ জানুয়ারির একতরফা ও বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকার দেশে-বিদেশে সমালোচনার মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে ১৫৪ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এ সরকার নৈতিকভাবে দুর্বল অবস্থার মধ্যে আছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যবর্তী নির্বাচনের চিন্তা করা হচ্ছে। এতে বিএনপির একাংশসহ অন্য দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রভাবশালী একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য আগামী বছরের শেষের দিককে সুবিধাজনক সময় মনে করা হচ্ছে। কারণ, তাঁরা আশা করছেন, চলতি বছরের মধ্যে অন্তত দুটি মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সাজা হয়ে যাবে। তাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য হয়ে পড়লে বিএনপি আরও চাপে পড়বে। ওই অবস্থায় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি হবেন না। তখন দলটির একটি অংশকে নির্বাচনে আনা সহজ হবে। সেই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কিছু তৎপরতা শুরু হয়েছে। তবে এ চিন্তা ও পরিকল্পনার কথা কৌশলগত কারণে এখনই প্রকাশ করতে রাজি নন সরকারের নীতিনির্ধারকেরা। আগামী বছরের শেষের দিকে অথবা ২০১৭ সালের শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার লক্ষ্য সামনে রেখে এ রাজনৈতিক অঙ্ক কষা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ছোট ছোট কিছু রাজনৈতিক দলকে দিয়ে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি তোলানোর চিন্তা রয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কিছু যোগাযোগও হয়েছে। বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, তাঁরাও আগামী দেড় বছরের মধ্যে একটা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখছেন। তার আগে বিএনপিতে ভাঙন ধরানোসহ বড় ধরনের ঝড়ের আশঙ্কাও করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নেতাদের ফোনালাপ ফাঁস, দল ভাঙার তৎপরতা নতুন করে জোরদার এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বিভিন্ন মামলার দ্রুতগতি সে ঝড়েরই আলামত হিসেবে দেখছেন বিএনপির নেতারা।’

জামায়াতে ইসলামীর একটি সূত্র জানায়, সরকার ২০ দলীয় জোটকে দুর্বল করতে অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে। তারা এমন একটি নির্বাচন চায় যে নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় আসতে পারবে। আওয়ামীলীগ ভালোভাবেই জানে জামায়াতে ইসলামী  ২০ দলীয় জোটের একটি শক্তিশালী শরীক।  ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে বিচ্ছিন্ন করতে ব্যর্থ হলে তারা কোনো নিরপেক্ষ অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই তারা জেল-জুলুম, হত্যা-নির্যাতনের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীকে ধবংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু তারা জানে না, হত্যা নির্যাতনের মাধ্যমে কোনো আদর্শবাদী দলকে শেষ করা যায় না। বরং তা আরো শক্তিশালী হয়। জামায়াতে ইসলামীর লক্ষ্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। দেশে এখন গণতন্ত্র নেই। ২০ দলীয় জোট গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছে। এজন্যই জামায়াত ২০ দলীয় জোটের সাথে এক জোট হয়ে আন্দোলন করছে। এ নিয়ে অপপ্রচার করে ভুল-বোঝাবুঝি বা দূরত্ব সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। জামায়াত মনে করে কেয়ারকেটার সরকারের অধীনে সকল দলের অংশ দ্রুত মধ্যবর্তী নির্বাচন ছাড়া সঙ্কটের সমাধান সম্ভব নয়।

বাংলাদেশে চীনের প্রভাব রুখতে ভারতের কৌশল

 à¦«à§‹à¦°à§à¦¬à¦¸ এশিয়া ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর নিয়ে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে চীনের প্রভাব কমানোর কৌশল হিসেবে ভারত দেশটির প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছে। তাদের স্বার্থ উদ্ধার করতেই তারা চাচ্ছে তাদের মিত্র কোনো শক্তিকে ক্ষমতায় রাখতে। তবে এজন্য বাংলাদেশকে উচ্চ মূল্য দিতে হচ্ছে।

 à¦«à§‹à¦¬à¦°à§à¦¸à§‡à¦° প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সফলতা নির্ভর করবে ভারত তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে কতটা সুযোগ সুবিধা দিতে ইচ্ছুক তার ওপর। এ লক্ষ্যে চলার পথে ভারত যদি হোঁচট খায়, তাহলে বেইজিং দ্রুতই পরিস্থিতি পাল্টে নিজেদের জন্য সুবিধাজনক করে নেবে। এমন ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল তিস্তা নিয়ে চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়ার প্রতিবেদনে। এর শিরোনাম ছিল - ‘বাংলাদেশকে তৃষ্ণার্ত রেখে সফর শেষ করলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী’। রাজনীতি পর্যবেক্ষরা মনে করেন, দেশের স্বার্থ বিরোধী সরকার জনবিচ্ছিন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক। সরকারের জুলুম নির্যাতনের ভয়ে সাময়িকভাবে জনগণ মুখ বন্ধ রাখলেও শেষ পরিণতি ভালো হয় না। বিষয়টি সরকার যত দ্রুত উপলদ্ধি করতে পারবে ততই মঙ্গল।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।