সংবাদ শিরোনামঃ

জনগণের আন্দোলন সফল হবেই ** কোকোর জানাজায় লাখো মানুষের আহাজারি ** সঙ্কট সমাধানে প্রয়োজন সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন ** বিরোধী দলের আন্দোলনে শঙ্কিত সরকার ** সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত অবরোধ-হরতাল চলছে ** সংহতি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে আরব নেতাদের ** দেশের মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত সরকার দেখতে চায় ** শওকত মাহমুদের মামলা প্রত্যাহার ও বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়া না হলে সরকার পতনের আন্দোলন ** সংলাপেই সমঝোতা করুন ** আবারও দৃশ্যপটে ভারতের সেই ঝানু কূটনীতিক ** কান্নাভেজা চোখে ছেলেকে শেষ বিদায় জানালেন খালেদা জিয়া ** ভারতবর্ষে শিক্ষা বিস্তারে মুসলমানদের অবদান ** জনপ্রতিরোধে রাজধানী ঢাকার সাথে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ** কার্পেটিং জুট মিলের স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণকারীদের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মাঘ ১৪২১, ৯ রবিউস সানি ১৪৩৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৫

কান্নাভেজা চোখে ছেলেকে শেষ বিদায় জানালেন খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার : চিকিৎসা শেষ হলেই দেশে ফিরবেন, এমন কথাই মা বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বলেছিলেন আদরের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। দেড়বছর আগে ব্যাংককে এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালের ২৬ রমজানে সৌদি আরবে ওমরা করতে গিয়ে মা খালেদা জিয়াকে এমনই আশার বাণী শুনিয়েছেন তিনি। যখনই দু’জনের সাথে মোবাইলে কথা হয়েছে তখনই ছেলেকে দেখার আকুতি ছিল মায়ের। আর কতদিন লাগবে সুস্থ হতে এমন প্রশ্ন থাকতো আলাপজুড়ে। সুস্থ না হলেও আদরের ছেলে কোকো মায়ের কথা রেখেছেন।

কোকো মায়ের কাছে ঠিকই ফিরেছেন তবে লাশ হয়েই। আর কোনোদিন মাকে তার অসুস্থতার কথা জানানোর প্রয়োজন হবে না। তিনি চিরকালের জন্য সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। এভাবে ছেলের অকালমৃত্যু হবে তা একবারের জন্যও কল্পনা করেননি মমতাময়ী মা বেগম জিয়া। তাইতো ছেলের মৃত্যুর চারদিন পরও বাকরুদ্ধ তিনি। ছেলের নিথর মুখ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন খালেদা জিয়া। ছেলের মুখে হাত দিয়ে অঝোর ধারায় কাঁদলেন তিনি। দুই নাতনীর সঙ্গে দাদীর কান্না যেন একাকার হয়ে গেছে। পুরো পরিবেশটাই যেন কান্নার ভারে নুইয়ে পড়ার এক অজানা দেশের পরিবেশের মতো মনে হয়েছে। সেখানে যারা ছিলেন, তারাই এই দৃশ্যপট অনুধাবন করতে পারবে। গুলশানে বেগম জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দিনভর নেতাকর্মীদের আনাগোনায় মুখরিত থাকে। তিনি কখনো ভাবেননি তার সাথে দেখা করতে আসবেন তাঁর আদরের ছোট ছেলে কোকো। কিন্তু ছেলে এসেছেন। যে কার্যালয়ে সবসময় একটা আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করতো কাল সেখানে নেমে এসেছে নীরবতা। এমন নীরবতা ভবিষ্যতে আর আসবে কিনা কেউ জানে না। ছেলের আগমনে মা বেগম জিয়ার খুশি হবারই কথা। কিন্তু তিনি হয়ে গেলেন বাকরুদ্ধ। তার কান্না যেন থামছেই না। তারতো অঝোর ধারায় কান্না করারই কথা। কারণ তার ছেলে যে তাকে আর মা বলে ডাকবেন না। কখনো কোনো কিছুর জন্য আবদার করবেন না।

গত ২৪ জানুয়ারি শনিবার মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। গত ২৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তার লাশ আসে ঢাকায়। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে বিদায় জানাতে গিয়ে অঝোর ধারায় কাঁদলেন বেগম খালেদা জিয়া। ছেলের নিথর মুখ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে কোকোর লাশ গুলশান কার্যালয় থেকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে বের করার সময় দরজায় দাঁড়িয়ে তাকে বিদায় জানান খালেদা জিয়া। এ সময় তার চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরছিল। এর আগে সেখানে উপস্থিত হাজারখানেক কর্মী-সমর্থকের ভিড় ঠেলে বেলা ১টা ৪০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স থেকে খয়েরি রঙের কফিনটি নামিয়ে কার্যালয়ের নিচতলার একটি কক্ষে নেয়া হয়। কফিন খোলার পর একটি গিলাফ দিয়ে কোকোর লাশ ঢেকে দেয়া হয়। তার স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে নিয়ে ওপরে যান, যেখানে অপেক্ষা করছিলেন পুত্রশোকে কাতর খালেদা জিয়া। কিছুক্ষণ পরই খালেদা জিয়ার দুই ভাইয়ের স্ত্রী নাসরিন সাঈদ ইস্কান্দার ও কানিজ ফাতেমা দুই পাশ থেকে ধরে অশ্রুসিক্ত নয়নে খালেদা জিয়াকে নিচে নামিয়ে আনেন। ঘিয়ে রংয়ের শাড়ি পরিহিতা বেগম জিয়া যখন ওই কক্ষে প্রবেশ করেন, তখন উপস্থিত সবাই ডুকরে কেঁদে ওঠেন। ছেলের কফিনের সামনে এসে কিছুক্ষণ নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন খালেদা জিয়া। এরপর গুমরে কেঁদে ওঠেন তিনি। অঝোর ধারায় কাঁদলেন আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়া।  নিচতলার ওই কক্ষে আত্মীয় ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। খালেদা জিয়া কফিনের দিকে ঝুঁকে ছেলের মুখ দুই হাতে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরিবারের সদস্যদের শেষবার দেখার জন্য কোকোর কফিন ওই কক্ষে রাখা হয় প্রায় এক ঘণ্টা। ৩৫ মিনিট খালেদা জিয়া সেখানে ছিলেন।

পরে কফিনের পাশে বসেই তিনি ছেলের জন্য মোনাজাতে হাত তোলেন। তিনি বার বার কফিনে শোয়ানো ছেলের মুখের দিকে তাকান এবং দুই নাতনীকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে ওঠেন। তাকে দুই পাশ থেকে ধরে রাখেন দুই ভাইয়ের স্ত্রী এবং কোকোর স্ত্রী শর্মিলা। কোকোর শ্বশুড়বাড়ির লোকজন, খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানের মা সৈয়দা ইকবালমান্দ বানু, জোবাইদার বড় বোন শাহিনা খান জামান বিন্দু, খালেদার দুই ভাইয়ের পরিবারের সদস্য, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস এবং সেনা, বিমান ও নৌ বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন কর্মকর্তা এ সময় সেখানে ছিলেন। পরে খালেদা জিয়ার সামনেই কফিনটি ঢেকে দেয়া হয়। অশ্রুসিক্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন দাঁড়িয়ে থেকে ছোট ছেলেকে শেষ বিদায় জানান। একদিকে লাশের কফিন অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়, অন্যদিকে খালেদা জিয়াকে দুই পাশ থেকে ধরে দোতলায় নিয়ে যান তার দুই ভাইয়ের স্ত্রী। বেলা পৌনে ৩টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কোকোর কফিন নিয়ে যাওয়া হয় বায়তুল মোকাররমের দিকে। সেখানে জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর জন্ম ১৯৭০ সালে কুমিল্লা সেনানিবাসে। জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদার সঙ্গে তার ছেলে কোকোও সেনানিবাসের বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন। পরের বছর ১৭ জুলাই তখনকার সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যান কোকো। সেখান থেকে তিনি পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে কুয়ালালামপুরে একটি ভাড়া ভাসায় তিনি থাকছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২০০৯ সালে ক্ষমতা নেয়ার পর কোকোর সাময়িক মুক্তির মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর আদালতের ডাকে না ফিরলে তাকে পলাতক দেখিয়েই মুদ্রা পাচারের অভিযোগে দুদকের করা একটি মামলার বিচার শুরু হয়। ওই বছরের ২৩ জুন মুদ্রা পাচারের মামলার রায়ে আরাফাতকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেয় বিচারিক আদালত; সেই সঙ্গে ১৯ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। ২০১১ সালের ২৩ জুন ওই মামলার রায়ে কোকোর সাজার রায় হয়; পলাতক থাকায় আপিলের সুযোগ পাননি তিনি। তবে বিএনপির দাবি, এই মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।