সংবাদ শিরোনামঃ

জনগণের আন্দোলন সফল হবেই ** কোকোর জানাজায় লাখো মানুষের আহাজারি ** সঙ্কট সমাধানে প্রয়োজন সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন ** বিরোধী দলের আন্দোলনে শঙ্কিত সরকার ** সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত অবরোধ-হরতাল চলছে ** সংহতি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে আরব নেতাদের ** দেশের মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত সরকার দেখতে চায় ** শওকত মাহমুদের মামলা প্রত্যাহার ও বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়া না হলে সরকার পতনের আন্দোলন ** সংলাপেই সমঝোতা করুন ** আবারও দৃশ্যপটে ভারতের সেই ঝানু কূটনীতিক ** কান্নাভেজা চোখে ছেলেকে শেষ বিদায় জানালেন খালেদা জিয়া ** ভারতবর্ষে শিক্ষা বিস্তারে মুসলমানদের অবদান ** জনপ্রতিরোধে রাজধানী ঢাকার সাথে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ** কার্পেটিং জুট মিলের স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণকারীদের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মাঘ ১৪২১, ৯ রবিউস সানি ১৪৩৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৫

প্রতিবিপ্লব ও অভ্যুত্থানে ক্ষতবিক্ষত ইয়েমেন

সংহতি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে আরব নেতাদের

॥ খন্দকার মহিউদ্দীন আহমদ॥
চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট ও হুতি বিদ্রোহীদের অস্ত্রের মুখে গত ২২ জানুয়ারি রাতে পদত্যাগ করেছেন ইয়েমেনের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আব্দুরাবুহ মানসুর হাদি। সঙ্কটের অবসান ঘটাতে এর পূর্বে তিনি শিয়াপন্থী হুতি বিদ্রোহীদের সাথে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। টানা দুইদিনের সংঘর্ষের পর প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বাহিনী পিছু হটলে ইয়েমেনের রাজধানী সানার সব কিছুই হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এর পূর্বে হাউসি বিদ্রোহী নেতা আব্দুল মালেক আল-হাউসি প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদির ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তি বাস্তবায়ন, জাতীয় নীতিনির্ধারণী পরিষদের সংস্কার এবং খসড়া সংবিধান বাতিলের দাবি জানিয়েছিলেন। এই মুহূর্তে হুতিরা ইয়েমেনের সবচেয়ে দাপুটে শক্তি। তবে দৃশ্যত তারা সরকারকে উৎখাতের পরিবর্তে চাপে রেখে সুবিধা আদায়ের কৌশল নিয়েছে। মনে করা হচ্ছে ক্ষমতা দখলের দায় না নিয়ে দেশের নেতাদের নিজেদের করুণার ওপর রাখতেই এই কৌশল। তবে দেশটির প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ কার হাতে, তা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ইয়েমেনের প্রস্তাবিত সংবিধানের মাধ্যমে দেশকে দরিদ্র ও ধনী অঞ্চলে বিভক্ত করা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে হুতি যোদ্ধারা গত সপ্তাহে সানায় সশস্ত্র তৎপরতা শুরু করে সরকারি বাহিনীর সাথে। মাত্র দুইদিনের লড়াইয়ের পর তারা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের ও সরকারি দফতরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। হুতিদের দাবি অনুযায়ী খসড়া সংবিধানে পরিবর্তন আনতে এবং ক্ষমতা ভাগাভাগির ফর্মুলায় রাজি হন প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদি। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী হুতি যোদ্ধারা সরকারি ভবন থেকে সরে না যাওয়ায় দেশের অচলাবস্থার দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী খালিদ বাহাহর মন্ত্রিসভা প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেয়। এর কিছুক্ষণ পরই প্রেসিডেন্ট হাদির পক্ষ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা আসে। পদত্যাগের কারণ হিসেবে হাদি বলেন, দেশ যখন সম্পূর্ণ অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে সেখানে তিনি আর দায়িত্বে থাকতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যে লক্ষ্য নিয়ে দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তা আমি পূরণ করতে পারছি না’। প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার পদত্যাগের সিদ্ধান্তে শিয়াপন্থী হুতিরা খুশি হলেও বাস্তবে কি হতে যাচ্ছে তা এখনও অস্পষ্ট। হুতিদের আদর্শিক নেতা আবু আলি মালেক আল ফিশি, এ পদক্ষেপে সব ইয়েমেনী নাগরিকদের জন্য খুশির খবর বললেও পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট হাদির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি। প্রেসিডেন্ট এখনও তার সরকারি বাসভবনে অবস্থান করছেন। পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। বিশেষ অধিবেশনে সিদ্ধান্ত হবে প্রেসিডেন্টের ভাগ্য। তবে ধারণা করা হচ্ছে পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ গ্রহণে সম্মত হবে না।

প্রশ্ন হলো ইয়েমেনে কি সরকার বিদ্রোহী সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে? সরকারি বাহিনীর কর্তৃত্ব কোথাও নেই। কার্যত ইয়েমেনের রাজধানী সানার নিয়ন্ত্রণ হুতি বিদ্রোহীদের হাতে। বিদ্রোহীরা দেশটির সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে যা রাজধানী সানার একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। গোষ্ঠীটি সানার বেশিরভাগ গণমাধ্যমের কার্যালয় দখল করে নিয়েছে। বিদ্রোহীদের ঘোষণা মতে পরবর্তী নোটিশ না পাওয়া পর্যন্ত দেশটি স্থল, জল, নৌ ও আকাশসীমা অবরুদ্ধ থাকবে। কার্যত দেশটি বর্তমানে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বলতে কোথাও কিছু নেই। ইতোমধ্যে দেশটির পথেঘাটে বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘাত বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সানার অধিবাসীদের নিকট এ ধরনের সংঘর্ষ নতুন নয়। এর পূর্বে কয়েক মাসের লড়াইর পর গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজধানী সানার দখল নেয় হাউসি বিদ্রোহীরা। এর পর রাজধানী থেকে বিদ্রোহীরা তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করে নেবে এমন আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ঐ সময়ে ইয়েমেনে একটি নতুন ঐকমত্যের সরকার গঠনের চুক্তিতে পৌঁছে সরকার ও বিদ্রোহী গ্রুপ। কিন্তু হাউসিরা রাজধানী থেকে তাদের সশস্ত্র যোদ্ধাদের সরায়নি এবং নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে ফলে চুক্তিও কার্যকর হয়নি।

কি ছিল চুক্তিতে? চুক্তিতে ক্ষমতার ভাগাভাগি এবং নতুন সংবিধান প্রণয়নের অঙ্গীকার করা হয়েছিল। ক্ষমতায় শিয়াপন্থী হুতিদের অংশগ্রহণের বিষয়টি তেমন বিস্তৃতি লাভ না করলেও নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ চলছিল ধীরগতিতে। নতুন সংবিধানে দেশকে ছয়টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। হুতি বিদ্রোহীরাও এই প্রস্তাবকে দেশকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। এর প্রতিবাদে তারা প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদির চিফ অফ স্টাফকে অপহরণ করে। তাদের বক্তব্য এ পদক্ষেপ দেশকে ধনী ও দরিদ্র অঞ্চলে বিভক্ত করে ফেলবে। মূলত হাউসিরা ইয়েমেনকে উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে বিভক্ত করতে চায়। ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলে শিয়া মতাবলম্বী হাউসি অধ্যুষিত। এরা দেশের জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ এবং দক্ষিণাঞ্চল সুন্নি মতাবলম্বীদের দখলে রয়েছে। শিয়ারা মনে করে দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে বিভক্ত করা হলে তুলনামূলকভাবে উভয়াঞ্চলে তাদের অবস্থান সংহত হবে। সরকার মূলত দেশকে ৬টি প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত করার মাধ্যমে শিয়া আধিপত্য বিস্তার রোধ করতে চায়। এটা সুস্পষ্ট হওয়ার পরই হুতিরা সানা দখল করে নেয়। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসলমানরা মনে করে থাকে, বস্তুতপক্ষে দেশকে দু’টি অঞ্চলে বিভক্ত করার হুতি বিদ্রোহীদের প্রস্তাব ভবিষ্যতে দেশকে টুকরো করারই অংশবিশেষ। এর ফলে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা হয়তো এক সময়ে উত্তরাঞ্চলে নিজস্ব শক্ত ঘাঁটি গেড়ে সহিংসতা ও অস্ত্রের মুখে সুন্নিদের বেদখল করার নীতি গ্রহণ করলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।

২০১১ সালে শুরু হওয়া আরব বসন্তের ঢেউ এ ইয়েমেনে বিক্ষোভ শুরু হলে প্রাথমিক পর্যায়ে আরবের একমাত্র দেশ হিসেবে চুক্তির মাধ্যমে রক্তপাতহীন সফল বিপ্লবে ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটে। পরে নতুন একটি সংবিধান প্রণয়নের বিষয়টি সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছিল। সে সময়ে বিপ্লবকে ময়দান থেকে সফলভাবে আলোচনার টেবিলে নিয়ে যেতে সফল হয়েছিল ইয়েমেন। কিন্তু ৪ বছরেও আলোচনার সেই প্রক্রিয়াকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে ব্যর্থ হয়েছে দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্ব। দারিদ্র্যপীড়িত এবং গোষ্ঠীগত ও আঞ্চলিকভাবে বিভক্ত রাষ্ট্র ইয়েমেনে সঙ্কট দিন দিন আরও ঘনীভূত হচ্ছে। আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেনাবাহিনী ও ইসলামপন্থীদের সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েছিল দেশটি। উত্তর ইয়েমেনের আলী আব্দুল্লাহ সালেহ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ২০১১ পর্যন্ত তিনিই দেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার সময়ে বিভক্তি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। পাশাপাশি আল কায়েদার জঙ্গিদের ঘন ঘন হামলা, দক্ষিণে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষ এবং  উত্তরে হাউসিদের দফায় দফায় হামলায় ক্ষতবিক্ষত এবং অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে দেশটির সরকারি বাহিনী। এসব অস্থিরতা ও অশান্তির ফলে দেশটির  বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিটাবাড়ি ধ্বংস হয়েছে ও মরেছে, বেড়েছে বেকারত্ব। বেড়েছে সহিংসতা। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ও অবকাঠামো ধ্বংস এবং সম্পদের ধ্বংসের কারণে সহিংসতাই যেন এখন দেশটির নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। শান্তির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না ইয়েমেনে।

দেশটিকে উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে বিভক্ত করতে বদ্ধপরিকর শিয়া জনগোষ্ঠী। তাদের হাতে রয়েছে অস্ত্র। এ অস্ত্রের যোগান আসছে ইরান থেকে। ইরান প্রকাশ্য না হলেও দেশটির শিয়া হাউসি বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও অর্থের যোগান দিয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ইরান-সৌদি আরবের পুরানো প্রতিদ্বন্দ্বী। ইয়েমেনের প্রতিবেশী সৌদি আরবকে অস্থির রাখতেই ইরানের এই কৌশল। লেবাননের পর ইয়েমেনই হচ্ছে ইরানপন্থী শিয়াদের বড় আস্তানা। ইরান এখানে সহিংসতা জিইয়ে রাখতে বরাবরই বড় ভূমিকা রাখছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের অভিমত। ইয়েমেনের নোবেল বিজয়ী মানবাধিকার কর্মী তাওয়াক্কুল কামরান সম্প্রতি এক বক্তব্যে বলেছেন, ইয়েমেনে প্রতিবিপ্লব ও সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানো হয়েছে। এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহ এবং তা বাস্তবায়ন করছে ‘ইরান’ সমর্থিত শিয়াপন্থী হাউসি বিদ্রোহীরা। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ইয়েমেনের জনগণ ইরানী ও হাউসিদের নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেছে। তার মতে এই অভ্যুত্থানের লক্ষ্য হচ্ছে ইয়েমেনবাসীর স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করা এবং ২০১১ সালের বিপ্লবকে ধ্বংস করা।

হাউসি বিদ্রোহীদের সাম্প্রদায়িক রূপ সংক্রামক ব্যাধির মতো অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অব্যাহত অরাজক পরিস্থিতি উগ্রবাদীদের জন্য দেশটি একটি উর্বর ক্ষেত্রে পরিণত হওয়ার আশঙ্কাও অমূলক নয়। হাউসি বিদ্রোহীদের চাপে ইয়েমেন সরকারের পদত্যাগ আরব উপদ্বীপ এলাকায় আল কায়েদা এবং ইয়েমেনের আল কায়েদার বিরুদ্ধে পাল্টা সন্ত্রাস মোকাবেলার কৌশলে জোর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের কর্মকর্তারা। তবে মার্কিন বিরোধী মনোভাব এবং ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে তারাও একরকম দ্বিধায় ভুগছে। বিষয়টি সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চরম উদ্বেগের তাতে সন্দেহ নেই। বিশ্লেষকদের মতে ইয়েমেনের ক্ষমতা কাঠামোর ভবিষ্যৎ এখনও পরিষ্কার না হওয়ায় পাল্টা কৌশল গ্রহণে অপেক্ষা করার নীতি অবলম্বন করছে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদির পদত্যাগের পর পরই ইয়েমেন জুড়ে হাউসি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা প্রয়োগের এবং পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট হাদির পদত্যাগপত্র গৃহীত হলে দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার না হওয়ায় সন্দেহ সংশয় বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র হাউসিদের বৈধ রাজনৈতিক শক্তি এবং অংশীদার মনে করে থাকে। আল কায়েদা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র বিদ্রোহী হাউসিদের সমর্থন দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এমনটি করা হলে তা হবে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ভুল। এর ফলে এই এলাকায় ইরানের প্রভাব বাড়বে যা নাকি যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরব উভয়ের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এডেন সাগর পাড়ে অবস্থানের কারণে ইয়েমেনের ভূ-কৌশলগত ও ভৌগোলিক গুরুত্ব অপরিসীম। তাছাড়া বিশ্বের বৃহত্তর তেল রফতানিকারক দেশ হিসেবে সৌদি আরবের সাথে ইয়েমেনের রয়েছে দীর্ঘ সীমান্ত। নিরাপত্তা দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মোটেও উপেক্ষা করার মতো নয়। আল কায়েদা ইয়েমেনী শাখার প্রতি নজর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। হুতিদের উত্থানের প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার পদত্যাগের ঘোষণার পর ইয়েমেনে কার্যত এখন কোনো সরকার নেই। এই নেতৃত্বের শূন্যতার সুযোগ নিয়ে  দেশটিতে আগে থেকেই সক্রিয় আল কায়েদা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে হাউসিপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর  নেতা আবুল মালিক হাউসি ইয়েমেনবাসীর ঐক্যের কথা বলেছেন। পাশাপাশি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারের উপর চাপ প্রয়োগের কথাও বলেছেন। এই মুহূর্তে বিষয়টি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বলে ধরা যেতে পারে। আরব নেতাদের উচিত সংলাপের পথ প্রশস্থ করে এবং পূর্বের চুক্তির ধারাবাহিকতায় হাউসি বিদ্রোহীদের দাবি-দাওয়া পূরণে এগিয়ে আসা। ইয়েমেনের রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা রক্ষায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে। সঙ্কট সমাধানে এটাই উপযুক্ত পন্থা হতে পারে। সহিংসতা থামাতে ব্যর্থ হলে বিপদে পড়তে হবে সৌদি আরবসহ যুক্তরাষ্ট্রের।

লেখক : কলামিস্ট ও বিশ্লেষক। Email : mohi_ahmad15@yahoo.com

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।