সংবাদ শিরোনামঃ

জনগণের আন্দোলন সফল হবেই ** কোকোর জানাজায় লাখো মানুষের আহাজারি ** সঙ্কট সমাধানে প্রয়োজন সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন ** বিরোধী দলের আন্দোলনে শঙ্কিত সরকার ** সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত অবরোধ-হরতাল চলছে ** সংহতি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে আরব নেতাদের ** দেশের মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত সরকার দেখতে চায় ** শওকত মাহমুদের মামলা প্রত্যাহার ও বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়া না হলে সরকার পতনের আন্দোলন ** সংলাপেই সমঝোতা করুন ** আবারও দৃশ্যপটে ভারতের সেই ঝানু কূটনীতিক ** কান্নাভেজা চোখে ছেলেকে শেষ বিদায় জানালেন খালেদা জিয়া ** ভারতবর্ষে শিক্ষা বিস্তারে মুসলমানদের অবদান ** জনপ্রতিরোধে রাজধানী ঢাকার সাথে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ** কার্পেটিং জুট মিলের স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণকারীদের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মাঘ ১৪২১, ৯ রবিউস সানি ১৪৩৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৫

২০ দলের ডাকা অবরোধ চলাকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পল্টন থানা রাজধানীতে মিছিল বের করে

স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের অত্যাচার নির্যাতন-গণগ্রেফতার, গুলি উপেক্ষা করে সারাদেশে চলছে সরকার বিরোধী আন্দোলন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে সরকারের দমননীতির প্রতিবাদ, গ্রেফতার করা নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে ৬ জানুয়ারি থেকে চলছে টানা অবরোধ, এরমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় সকাল-সন্ধ্যা এবং বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সারাদেশে ৩৬ ঘণ্টা হরতাল পালিত হয়েছে। সরকার বিরোধী এইসব কর্মসূচিতে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। জন-প্রতিরোধে রাজধানী ঢাকার সাথে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অচল দেশ। গত ২৭ জানুয়ারি আরাফাত রহমান কোকোর নামাজে জানাজায় লোকসমাগম ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশ দিয়ে যানবাহন চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করে অবরোধে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সহিংসতায় নিহত হয়েছে ৪০ জন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতারের পর গত ২৭ জানুয়ারি নিহত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মেধাবী ছাত্রনেতা ইসলামী ছাত্রশিবিরের স্থানীয় কলেজ শাখা সভাপতি আসাদুল্লাহ তুহিন। ২০ দলীয় জোটের একটি সূত্র জানিয়েছে, চলমান আন্দোলনে কেবল মাত্র পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের গুলিতে অন্তত ১৩ জন বিরোধীদলীয় নেতা নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় দেশের সুশীল সমাজ ও পেশাজীবীসহ সব শ্রেণীর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রাজধানীতে ৩১ নেতাকর্মী আটক : রাজধানীর বিভিন্নস্থান থেকে বিএনপি-জামায়াতের বহু নেতাকর্মীকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ । গত ২৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্নস্থান থেকে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। এর আগের দিন একই কায়দায় বিএনপি-জামায়াতের ২২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

পোস্তগোলা : রাজধানীর দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হলো এই পোস্তগোলা। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের প্রবেশদ্বারও এটি। পুরান ঢাকার অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা হিসেবেও এটি খ্যাত। অবস্থা স্বাভাবিক থাকলে প্রতিদিন এ রাস্তায় হাজারো গাড়ি প্রবেশ করে। কিন্তু টানা অবরোধের কারণে এই কর্মব্যস্ত এলাকায় নেমে আসে নীরবতা। আরাফাত রহমান কোকের জানাজাকে কেন্দ্র করে সরকার ঢাকার সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে ঢাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই এলাকার অধিকাংশ কলকারখানা ছিল বন্ধ। অবরোধের ২২তম দিনেও এখানে কোনো পাবলিক এবং প্রাইভেট কার চলতে দেখা যায়নি। অধিকাংশ মার্কেট ছিল বন্ধ। তবে ফুটপাতের চায়ের স্টল চালু ছিল।  এখানে অবরোধের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো ধরনের মিছিল মিটিংয়ের খবর পাওয়া যায়নি। যাতায়াতে এই এলাকার লোকজন রিকশা ব্যবহার করেছে বেশি।

যাত্রাবাড়ী : পুলিশের রায়টকারের শব্দে এখানের মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। তল্লাশির নামে পুলিশি হয়রানি এখানের মানুষের নিত্য দিনের সঙ্গী। এই এলাকার রয়েছে পুলিশের একাধিক চেক পোস্ট। এখানকার চেক পোস্টে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় ঢাকার প্রবেশ পথ হিসেবে খ্যাত এই যাত্রাবাড়ীতে ঢাকার বাইর থেকে কোনো যান প্রবেশ করেনি। একইভাবে এখান থেকে কোনো ধরনের যান ছেড়েও যায়নি। স্বাভাবিক অবস্থায় এই যাত্রাবাড়ীতে যদি কেউ রাস্তা পার হতে চাইতেন তাহলে তাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো। এখন আর রাস্তা পারাপার হতে মানুষকে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয় না। টানা অবরোধে এ এলাকায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। আর অবরোধের কারণে এই এলাকার সব ধরনের মার্কেট বন্ধ ছিল। একই সাথে এসব এলাকার ফুটপাতগুলোও বন্ধ ছিল। অবরোধের পক্ষে বিপক্ষে কোনো মিছিল মিটিং না হলেও এখানে মানুষের মধ্যে ছিল এক ধরনের আতঙ্ক। আর এ কারণেই মানুষ বিনা প্রয়োজনে বের হয়নি। রাস্তা ঘাটে মানুষের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।

সায়েদাবাদ : মূলত: এই সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের কারণেই বেশি পরিচিত। অবস্থা স্বাভাবিক থাকলে প্রতিদিন এখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় হাজারো গাড়ি ছেড়ে যায়। আর এ কারণেই এই এলাকায় ব্যাংক বীমা এবং হোটেল আর রেস্টুরেন্ট ব্যবসা গড়ে উঠেছে। টানা অবরোধের কারণে এই এলাকায় অবস্থিত সব কয়টি হোটেলেই কোনো রকম যাত্রী ছিল না। এতে করে প্রতিদিন তাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। আর এই কারণেই গত ২৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার এখান থেকে কোনো ধরনের দূরপাল্লার যান ছেড়ে যায়নি।  সারিসারি দূরপাল্লার যান এখানে দিনের পরদিন দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর দূরপাল্লার যান না পাওয়ার কারণে অনেক যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছে। প্রতিদিন এসব গাড়ি ধোয়া মোছা করলেও তা ছাড়তে পারছে না। এ অবস্থা গত ২২ দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। এর আগে দু’একটি দূরপাল্লার বাস ছাড়ার চেষ্টা করলেও গত ২৭ জানুয়ারি কোকোর জানাজাকে কেন্দ্র করে সরকার সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে করে গোটা দেশ থেকে ঢাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অনেক গাড়ির হেলপার এবং ড্রাইভারকেও দেখা যায়নি। তবে এখানে অবরোধের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে কোনো ধরনের মিছিল মিটিং করতেও দেখা যায়নি।

মতিঝিল : গত ২৭ জানুয়ারি বিকেলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের জানাজা উপলক্ষে গোটা এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এতে করে মতিঝিলের পাশাপাশি গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, দৈনিক বাংলা, পল্টন, ফকিরাপুল, আরামবাগ, কাকরাইল ও বিজয়নগর এলাকায় সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এসব এলাকার প্রতিটি মোড়ে ছিল পুলিশ র‌্যাবের সরব উপস্থিতি। ছিল রায়টকার, প্রিজনভ্যান, জলকামান আর পুলিশি গাড়ি। এসব এলাকায় বেশ কয়েকটি পুলিশি চেক পোস্টও বসানো হয়েছিল। তল্লাশির নামে পথচারিকে করা হয়েছে নানাভাবে হয়রানি।

গাবতলী : এই টার্মিনালে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি বাস। চারদিকে নিস্তব্ধতা। রাজপথে খেলায় ব্যস্ত রয়েছে এলাকার শিশু-কিশোররা। রাজধানীর অত্যন্ত ব্যস্ততম এলাকা গাবতলীর চিত্র এটি।

পল্লবী : পল্লবী হচ্ছে রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে অন্যতম। সকাল থেকে এখানে হাজারো মানুষের বিচরণ দেখা যায়। অবরোধের দিন মঙ্গলবারের চিত্র ছিল উল্টো। সকালের দিকে তেমন মানুষজন দেখা যায়নি। প্রতিদিন গাড়ির হর্নের আওয়াজে এই এলাকার মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। এখান থেকে অনেক বাস নগরীর বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশে ছেড়ে গেলেও মঙ্গলবার তেমনটি দেখা যায়নি। তবে পুলিশ প্রহরায় কয়েকটি বাস ছেড়েছে বলে জানা গেছে। এসব গাড়িতে তেমন কোনো যাত্রী ছিল না। পুলিশি প্রহরায় এসব গাড়ি একাধিকবার বিনা কারণেই আসা যাওয়া করতে দেখা গেছে।

মিরপুর : মিরপুর  ১ থেকে ১০ নম্বর পর্যন্ত এলাকায় রিকশা ছিল একমাত্র মাধ্যম। এক নম্বর গোল চত্বরের দুই পাশে সরকারদলীয় ক্যাডারদের দেশীয় লাঠিসোটা নিয়ে মিছিল করতে দেখা গেছে। এ সময় পথচারীদের হয়রানি করারও অভিযোগ রয়েছে। মাজার রোড এলাকায় দেখা যায়, একজন ভ্রাম্যমাণ ক্যানভাচার রাস্তায় ওষুধ বিক্রি করছেন। চারদিকে মানুষ জড়ো হয়ে তার বক্তব্য শুনছে। ১০ নম্বর গোল চক্করে গিয়ে কিছু লোকাল গাড়ির দেখা মিলে। কিন্তু গাড়িগুলো ছিল যাত্রীশূন্য। মানুষকে পায়ে হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। এছাড়া মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় সরকার দলীয় ক্যাডারদের লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশ প্রহরায় রাস্তায় মহড়া দিতে দেখা গেছে। এদিকে মিরপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে মিছিল করেছে জামায়াত শিবির।

ফার্মগেইট : কর্মব্যস্ত এই ফার্মগেইট এর আগে এ রকম ফাঁকা আর দেখা যায়নি। এ যেন এক নতুন ফার্মগেইট।

মহাখালী : অবরোধের কারণে এই আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল মহাখালি থেকে কোনো দূরপাল্লার যান ছেড়ে যায়নি।  (আরো খবর ও ছবি গ্রাম বাংলার পাতায় দেখুন)

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।