সংবাদ শিরোনামঃ

জনগণের আন্দোলন সফল হবেই ** কোকোর জানাজায় লাখো মানুষের আহাজারি ** সঙ্কট সমাধানে প্রয়োজন সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন ** বিরোধী দলের আন্দোলনে শঙ্কিত সরকার ** সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত অবরোধ-হরতাল চলছে ** সংহতি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে আরব নেতাদের ** দেশের মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত সরকার দেখতে চায় ** শওকত মাহমুদের মামলা প্রত্যাহার ও বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়া না হলে সরকার পতনের আন্দোলন ** সংলাপেই সমঝোতা করুন ** আবারও দৃশ্যপটে ভারতের সেই ঝানু কূটনীতিক ** কান্নাভেজা চোখে ছেলেকে শেষ বিদায় জানালেন খালেদা জিয়া ** ভারতবর্ষে শিক্ষা বিস্তারে মুসলমানদের অবদান ** জনপ্রতিরোধে রাজধানী ঢাকার সাথে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ** কার্পেটিং জুট মিলের স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণকারীদের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মাঘ ১৪২১, ৯ রবিউস সানি ১৪৩৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৫

॥ এম. গজনবী॥
আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পরও বিএনপি আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহার না করায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহল শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। শঙ্কিত এ জন্য যে, কোকোর মৃত্যু বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি পরিবারের জন্য বড় ধরনের শোক। এতো বড় শোক সামাল দিয়ে আন্দোলনের প্রশ্নে বেগম জিয়া ছাড় না দিয়ে তার দৃঢ় ও অটল অবস্থান থেকে একচুলও সরে যাননি। তার এ দৃঢ়তা আপসহীন মনোভাবে আওয়ামী লীগকে ভাবিয়ে তুলেছে। শুধু আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহার নয়, বায়তুল মোকাররম মসজিদে কোকোর নামাজে জানাজায় বিপুল জনসমাগম দেখে আওয়ামী লীগ রীতিমতো বিস্মিত হয়েছে। দলটির বিভিন্ন স্তরের একাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে কথা বললে তাদের ভেতরকার অবস্থা জানা গেলো। তারা জানলেন, পুলিশ ও যৌথবাহিনী দিয়ে এতো দমন-পীড়ন, গ্রেফতারের পরও কোকোর জানাজায় লাখ লাখ লোকের উপস্থিতি বিস্ময়কর ঘটনা। বিএনপির যে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে সেটাই প্রমাণ করেছে।

সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের শীর্ষ মহলের ধারণা ছিল কোকোর মৃত্যুতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনে ভাটা পড়বে। একটানা অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি হয়তো স্থগিত করতে পারে। আন্দোলনের কর্মসূচি একবার স্থগিত করা হলে ফের তা চাঙ্গা করা কঠিন হয়ে পড়বে। কিন্তু বেগম জিয়া সেটা না করে পুত্র শোকের পাশাপাশি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। তার এ অটল মনোভাবের কারণ খুঁজতে অঙ্ক কষেও হিসেব মেলাতে পারছে না। বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সমর্থনের জন্য বেগম জিয়ার মধ্যে দৃঢ় মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে বলে তারা মনে করছেন। নাম প্রকাশ করতে চাননি আওয়ামী লীগ সমর্থিত দু’জন সিনিয়র আইনজীবী এ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে বলেন, নির্যাতন চালিয়ে জোর করে কোনোদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না। কোনো সামরিক শাসকও পারেনি। এমন নজির দুনিয়ার কোথাও নেই। ফলে বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ কাজটি যত তাড়াতাড়ি করা হবে ততই জাতির জন্য মঙ্গলনজনক হবে। তারা আরো বলেন, পুত্র শোকের পরেও বেগম জিয়ার আপসহীন মনোভাব সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমবেদনা জানাতে তার গুলশানস্থ কার্যালয়ে গিয়ে ফেরত চলে এলেন। তাকে বাসায় ঢুকতে দেননি। আবার আন্দোলনের কর্মসূচিও প্রত্যাহার করলেন না। এতে প্রমাণিত যে, বেগম জিয়া সরকারকে একচুলও ছাড় দিতে রাজি না।

শঙ্কা এবং দ্বন্দ্ব

আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর গত কয়েকদিনের ঘটনা প্রবাহ এবং বিএনপি বা ২০ দলীয় জোটের কর্মকাণ্ড সরকারের হিসেব নিকেশে গড়মিল দেখা দিয়েছে। দলটির একাধিক সূত্রের খবরে জানা গেছে, টানা অবরোধ চালিয়ে যাওয়া বিএনপির পক্ষে সম্ভব হবে না এমন ধারণা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কতিপয় নেতাদের ধারণা ছিল। এক সময় আন্দোলন ঝিমিয়ে পড়বে। কিন্তু কোকোর মৃত্যুর পরও যখন আন্দোলন ঝিমিয়ে পড়ছে না তখন বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসা ছাড়া কোনো পথ নেই।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ নেতা এ প্রতিনিধিকে বলেন, একতরফা নির্বাচন করে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা যাবে à¦¨à¦¾Ñ à¦à¦Ÿà¦¾ আমরা অনেক আগে থেকে শীর্ষ নেতাদের বলেছি। সরকারের জনপ্রিয়তাও এখন আর নেই। অসম্মানিত হয়ে বিদায় নেয়ার আগে বিএনপিসহ সকল দলের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করলে ভালো হতো। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এটা চায়। কিন্তু কতিপয় সুবিধাবাদী নেতার জন্য সংলাপের পথ বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, শুধু বিএনপি বা ২০ দলীয় জোট নয়, এর বাইরে অনেক গণতান্ত্রিক দল রয়েছে। তারাও সংলাপের কথা বলছে। সুতরাং সংলাপ ছাড়া  বর্তমানে সহিংসতার সমাধান হবে না। সহিংস ঘটনা যত চলতে থাকবে সরকারের অবস্থা তত নড়বড়ে হয়ে যাবে। এক সময় জনগণ বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমে যাবে। যে এরশাদকে নিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছে সেই এরশাদ স্বৈরশাসক হয়েও ৯০ সালে গণআন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় এবং তাকে জেলেও যেতে হয়েছিল। সুতরাং জনগণই ক্ষমতার রদবদলের প্রধান হাতিয়ার। সেই জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেয়ে কোনো লাভ হবে না ক্ষতি ছাড়া।

জানা গেছে, বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য দলের মধ্যে একটি বড় অংশ বিদ্যমান পরিস্থিতি দেখে বিশেষ করে বিএনপি নেত্রীর অটল মনোভাব লক্ষ্য করে এই মুহূর্তে আলোচনার জন্য নতুন করে চাপ দিচ্ছে। দলের মধ্যে এই দ্বন্দ্বের জন্য আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাস্তায় নামতে অনীহা দেখাচ্ছে। যারা নামছেন তারা অনেকটা চাপে পড়ে। এভাবে চাপ দিয়ে নেতাকর্মীদের বেশিদিন ধরে রাখা যাবে না। পুলিশ বা বিজিবির যে জনশক্তি আছে তা দিয়ে সারাদেশকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না। এক সময় তাদের মধ্যেও অনীহা দেখা দিতে পারে। পরিস্থিতি সেদিকে গড়াচ্ছে বলে অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হচ্ছে।

মানসিক দুর্বলতা বৃদ্ধি

মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারে বিএনপি বা ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের মধ্যে যে দৃঢ় মনোবল লক্ষ্য করছি তা আমাদের মধ্যে নেই। শুধু কর্মীরা নয়, কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের মনোবলও ভেঙ্গে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আর বেশিদিন হয়তো ক্ষমতায় থাকা যাবে না।

নাম প্রকাশ করতে চাননি যুবলীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা জানালেন, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর মতো একটি শক্তিশালী বড় দল রয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাথে ওই রকম কোনো বড় দল নেই। জাতীয় পার্টি নামেমাত্র বড় দল। তাদের কোনো সাংগঠনিক শক্তি নেই। যেটুকু আছে তাও দুইভাগে বিভক্ত। বিরোধী দলকে রাজপথে মোকাবেলা করতে জাতীয় পার্টিকে পাওয়া যায় না। তারা আওয়ামী লীগের বি-টিম হয়ে গেছে। রওশন এরশাদ ক্ষমতা ভোগ করছেন বলে আমাদের জিন্দাবাদ দিচ্ছেন। অন্য দিকে দলীয় প্রধান জেনারেল এরশাদের মতের কোনো ঠিক নেই। পরিস্থিতি খারাপ দেখলে আগেভাগেই কেটে পড়বেন।

এছাড়া সরকারের সঙ্গে রয়েছে নামসর্বস্ব বামপন্থী দল। তারা আরো দুর্বল। রাজপথে মারপিট দেখলে তারা পালিয়ে যায়। ১৪ দলের বৈঠক হলে চেয়ারে বসে বক্তৃতা দেন। কিন্তু রাজপথে অবরোধে তাদের ডেকেও নামানো যায় না।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, মহাজোট বা ১৪ দলের শরিকরা দুর্বল হওয়ায় বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতোসব দুর্বলতার মধ্যে আওয়ামী লীগও এখন ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে। বিএনপির দৃঢ় অবস্থান দুর্বলতার প্রধানতম কারণ।  এ কারণে কেন্দ্রীয় নেতারা সঠিক কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছেন না। বিএনপির দাবি মানতে গেলে সংলাপে বসতে হবে। আর সংলাপে বসলে নতুন করে নির্বাচনের কথা এসে যাবে। নির্বাচন না দিলে আবার অবরোধ-হরতাল। এ কারণে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধাকরা যেমন দুর্বল হয়ে পড়েছেন তেমনি সিদ্ধান্তহীনতায়ও ভুগছেন বলে জানা গেছে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।