সংবাদ শিরোনামঃ

অনিশ্চিত তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তি ** স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আরেকটি বিজয় অর্জনের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে ** সিআইএ’র বর্বর নির্যাতন সন্ত্রাসবাদকে উস্কে দিয়েছে ** শেখ মুজিব বাংলাদেশের অন্যতম রাজাকার : তারেক ** নির্বাচনের চতুর্মুখী চাপে সরকার ** শাহাদাতের প্রেরণায় দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের আহ্বান ** বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ মানেই রাজনীতি, অর্থনীতি এবং ব্যবসা ** জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা চাই ** মুসলিম ব্রাদারহুড কি ব্যর্থ? ** দেশব্যাপী আলোচনা সভা দোয়া মাহফিল এতিম ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ ** রায়ের জন্য বিচারকদের আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে ** আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ **

ঢাকা, শুক্রবার, ৫ পৌষ ১৪২১, ২৫ সফর ১৪৩৬, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪

২০ দলীয় জোটের সরকার পতন আন্দোলনে ভীত আ’লীগ
॥ এম. গজনবী॥
নতুন বছরের শুরুতে ২০ দলীয় জোটের সরকার পতন আন্দোলনের সিদ্ধান্তে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। রাজপথের দুর্বার আন্দোলনে এবার সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে উঠবে। পুলিশ দিয়েও ঠেকাতে পারবে না। দেশে বিরাজমান অরাজক পরিস্থিতি এবং ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে এমন ধারণা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের। পর্যবেক্ষক মহলের বিশ্লেষণ হলো : প্রশাসন  সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে  চলে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সুবিধাবাদী নেতাকর্মী এবং সরকারের কতিপয় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, বেসামাল পর্যায়ে চলে গেছে। দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী সরকারের উপর বিরূপ ধারণা পোষণ করছে। ফলে বেসামাল পরিস্থিতি পুলিশ দিয়েও সামাল দেয়া সম্ভব হবে না। শুধু রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল নয়, খোদ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বললে তারা তাদের আশঙ্কার কথা জানালেন।

বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, সরকারের অত্যাচার নির্যাতনে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। পেছনে ফেরার আর সুযোগ নেই। জনগণকে সাথে নিয়েই রাজপথের আন্দোলন জোরদার করা হবে। আমাদের  দলের চেয়ারপার্সন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরকার পতনের আন্দোলন গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন। একতরফা নির্বাচন করে অবৈধ পন্থায় এক বছর ক্ষমতায় থেকেছে। আর সময় দেয়া যাবে না। বেগম জিয়া গত ১৩ ডিসেম্বর কাঁচপুরে এক বিশাল সমাবেশে বলেছেন, আলোচনা করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকাররকে ১২ মাস সময় দেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। এ অবস্থায় বসে থাকার আর সময় নেই। রাজপথে নামতে হবে। দেখবো পুলিশ কিভাবে গুলি চালায়।

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন, সরকারের এক বছর পূর্তি শেষে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকেই সরকার পতনের আন্দোলনের ব্যাপারে জোটের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বেগম জিয়া এ জন্য জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন। অবৈধ সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দিলে দেশের অর্থনীতি, সামাজিক পরিবেশ আরো বিনষ্ট হবে।

ভীত সন্ত্রস্ত নেতাকর্মীরা

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, রাজপথের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ পরীক্ষিত। কিন্তু দল আগের অবস্থানে এখন আর নেই। সরকার পরিচালনায় চরম ব্যর্থতা, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, ছাত্রলীগের তাণ্ডব, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রক্তারক্তি, কতিপয় সুবিধাভোগী মন্ত্রীর অসংলগ্ন কথাবার্তা, সর্বোপরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অযোগ্যতার কারণে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। রাজপথের পরীক্ষায় কেউ আর অংশ নিতে চাচ্ছে না। ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে যেসব আসনে নির্বাচন হয়নি সেসব আসনে চরম অরাজকতা চলছে। প্রকৃত আওয়ামী লীগারদের পাত্তা নেই। সুবিধাবাদীরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগকে গিলে ফেলেছে। অটোপাস সংসদ সদস্যরা নিজস্ব রাজত্ব কায়েম করেছেন। তাদের খবরদারির মাত্রা এতোটাই বেসামাল পর্যায়ে চলে গেছে যে, কিছু সংখ্যক পুলিশ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন তাদের পক্ষে থাকতে চাচ্ছে না। তারা আরো বলেন, সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী ছাত্রলীগ। এখন পেটুয়া বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ড বুমেরাং হচ্ছে। অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে নিজেরাই নিজেদের গুলি করে হত্যা করছে। এখন একমাত্র পুলিশই শেষ ভরসা। কিন্তু ২০ দলীয় জোটের আন্দোলন চাঙ্গা হলে পুলিশও বেঁকে বসতে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। নাম প্রকাশ করতে চাননি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সদস্য এ প্রতিনিধিকে বলেন, যারা বিগত ৬ বছরে দু’হাতে লুটপাট করে টাকার পাহাড় গড়েছে সেসব সুবিধাভোগী নেতাকর্মীরা রাজপথে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের আন্দোলন মোকাবেলা করবে। আমরা যারা সংগঠনকে গড়ে তুলতে ত্যাগ স্বীকার করেছি, তারা যাবো না। মহাজোটের চেয়ে ২০ দলীয় জোটের বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী অত্যন্ত শক্তিশালী। তৃণমূল পর্যায়ে তাদের সংগঠন রয়েছে। জেলা ও থানা পর্যায়ে পুলিশ সাথে থাকলেও বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের আন্দোলন দমানো যাবে না।

জোটের পাল্লা ভারী : আলোচনার মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিটি আরো জোরালো হচ্ছে। ২০ দলীয় জোটের এ দাবিটি এখন জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিকে ইস্যু করে বিএনপির নেতৃত্বে একটি বৃহৎ বলয় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ইস্যুতে ইতোমধ্যে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা জেএসডি, গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ঐক্যসহ বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন। তারা ঐকমত্যে পৌঁছতে পারলে অভিন্ন কর্মসূচিও আসতে পারে। যার যার অবস্থান থেকে একই কর্মসূচি পালন করা হবে। এর বাইরে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাংবাদিকসহ সকল শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও পর্যায়ক্রমে বিএনপি বৈঠক করবে। অর্থাৎ জানুয়ারিকে টার্গেট করে ২০ দলীয় জোটের সরকার পতন আন্দোলনের যে উদ্যোগ তা সফল করতে বৃহৎ বলয় গড়ে তোলা হচ্ছে। দলীয় আদর্শগত পার্থক্য থাকলেও অন্তত নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে সকলে অভিন্ন মত পোষণ করতে বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, বৃহৎ আন্দোলনকে দেশের আপামর জনগণকে সম্পৃক্ত করতে নির্বাচন ইস্যু ছাড়াও জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত যেমন, বিদ্যুৎ, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবেশ বিপর্যয় এগুলোও আন্দোলনের ইস্যু থাকবে। এক তরফা নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারকে আর সময় দিতে চাচ্ছে না ২০ দলীয় জোট। আর এ জন্য মহাজোটের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনের জোর প্রস্তুতি চলছে।

আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি : আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরকারের অবস্থান আরো খারাপের দিকে চলে গেছে। বিদেশীরা চাচ্ছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। গণতন্ত্রকে টেকসই করতে হলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই। সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সকল দল অংশ নেয়নি। যে কারণে বহিঃবিশ্বে নির্বাচন গ্রহণয্যোতা পায়নি। আর এজন্য তারা যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ বৃদ্ধি করে চলেছে।

৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন করার পর থেকে দেশীয় চাপের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চাপও সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও বলেছে, যেভাবে নির্বাচন হয়েছে তা আওয়ামী লীগের জন্য লজ্জাজনক ঘটনা। স্বাধীনতার এত বছরে যে কয়টি জাতীয় নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনটি কলঙ্কের দিক থেকে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। আওয়ামী লীগের নেতাদেরও ধারণা সরকার ৫ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এক বছর যেভাবে পার করেছে দ্বিতীয় বছরে পা দিয়ে সেভাবে সরকার চালাতে পারবে না। বিরোধী দলের আন্দোলনের ধাক্কা এবং বিদেশীদের চাপ সামাল দিতে পারবে বলে মনে হয় না। আর এ কারণে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল বিচলিত এবং সন্ত্রস্ত বলে জানা গেছে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।