সংবাদ শিরোনামঃ

নির্বাচনী বৈধতা চ্যালেঞ্জের মুখে ** ত্রুটিপূর্ণ আইনে জামায়াত নেতাদের বিচার করা হচ্ছে ** রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিন ** সরকার দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে ** দেশ আজ গভীর সঙ্কটে॥ প্রয়োজন দ্রুত একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ** জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি নয় উৎপাদন বাড়ান ** আরো এক কাপুরুষ জেনারেলের কাহিনী ** দুঃস্থ সাংবাদিকতা ** নির্দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ** সিলেট বগুড়া ও রাজশাহীতে শিবিরের মিছিলে পুলিশের গুলি ** কবি ফররুখ আহমদ এক দুঃসাহসী সিন্দাবাদ **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪২১, ২৭ মহররম ১৪৩৬, ২১ নভেম্বর ২০১৪

দেশ আজ গভীর সঙ্কটে॥ প্রয়োজন দ্রুত একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন

॥ কামরুল হাসান॥
বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কোনো আভাস নেই এবং দেশ গভীর সঙ্কটে পুরোপুরি নিমজ্জিত। ১৯৭৫ সালে যেমন বাকশাল বাংলাদেশের রাজনীতিকে অস্থির করেছিল, বর্তমানেও আওয়ামী লীগ তার সেই রূপ বহাল রেখেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হাত-পা বেঁধে রেখে। বাকশালের সময় সাধারণ জনগণের মধ্যে রাগ, ক্ষোভ ধূমায়িত অবস্থায় ছিল। বর্তমানেও বাংলাদেশে মতপ্রকাশের কোনো সুবিধা নেই। শুধু তাই নয় আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বারা এখন ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েমের পাঁয়তারা চলছে।

গত ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতা ও সাবেক মন্ত্রী এডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী চ্যানেল আইয়ের ‘তৃতীয়মাত্রা’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

নিতাই রায় বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ তাদের ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় মাটি নেই তা তারা বর্তমানে উপলব্ধি করতে পেরেছে এবং এর প্রতিচ্ছবি প্রকাশ পায় এইভাবে যে- আওয়ামী লীগ বিএনপিকে মিছিল-মিটিং থেকে একেবারেই বিরত রেখেছে। আওয়ামী লীগ সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে এবং তাদের জোর প্রকাশ করছে নিজস্ব পুলিশ বাহিনী তথা প্রশাসনের কুব্যবহারের দ্বারা। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলোর এখন একটাই প্রশ্ন রাজনীতির নামে কী চলছে, কী হচ্ছে দেশে? সাধারণ জনগণের স্বাধীনতা বলতে বর্তমানে কিছুই নেই। যার দরুন দেশ এখন অন্যদিকে মোড় নিতে চলেছে। অর্থনীতি, রাজনীতি, প্রশাসন এবং সর্বোপরি সবজায়গায় সর্বগ্রাসী সঙ্কটে নিমজ্জিত বর্তমানের বাংলাদেশ।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডই বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদে পরিণত করছে। আওয়ামী লীগ নামক ফ্যাসিবাদী সরকারের মোকাবেলা একমাত্র বিএনপিই করতে পারে এবং বিএনপি তা করতে চায়। কিন্তু বিএনপিকে তা করতে দেয়া হচ্ছে না। যার ফলে বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন সঙ্কট দেখা দিয়েছে এবং এই সঙ্কট নিরসনে আজই বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন হওয়া উচিত।

নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সবসময় সহনশীল, উদার এবং গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে। দেশে রাজনৈতিক আন্দোলন থাকবেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ তার অপকর্ম ঢাকার জন্য বিএনপিকে আন্দোলনে বাধাপ্রদান করছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সঙ্কট নিরসনে যদি উদার গণতান্ত্রিক সহনশীল রাজনীতির ধারা অব্যাহত না রাখা হয়, তবে দেশে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের উদয় হবেই এবং এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ বর্তমান আওয়ামী শাসন।

বাংলাদেশের ধর্মতত্ত্ব সম্পর্কে রাজনীতিবিদদের ধারণা থাকতে হবে

পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে শতকরা নব্বই ভাগ মানুষই মুসলমান। মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ সেই দেশে রাজনীতি করতে হলে তাকে অবশ্যই কুরআন, ইজমা, কিয়াসসহ ইসলামের অনেক বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে হবে। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের ধর্মতত্ত্ব সম্পর্কে যদি রাজনীতিবিদের ধারণা না থাকে, তবে সেই রাজনীতিবিদের নেতৃত্ব নিয়ে অনেক প্রশ্ন ওঠবে। যদি সেইসব রাজনীতিবিদ ৫৬, ৬২ কিংবা ৮৬ সালের রেকর্ড বারবার জনগণকে শোনানোর চেষ্টা করা হয়, তবে জনগণ সেই রাজনীতিবিদের নেতৃত্ব বাধ্য হয়ে মেনে নিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে অন্তরের অন্তঃস্থল দিয়ে কখনই স্বীকার করবে না। গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি চ্যানেল আইয়ের ‘তৃতীয়মাত্রা’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

গোলাম মাওলা রনি বলেন, বাংলাদেশে যদি রাজনীতি করতে হয় তবে সর্বাগ্রে বাংলা এবং বাংলা ভাষাকে জানতে হবে। বাংলার ইতিহাসে অনেক বড় বড় রাজা বাংলাকে শাসন করলেও কেউ বেশি দিন টিকতে পারেনি। ক্ষমতা স্থির নয় এটা সবসময় ঘুরতে থাকে। কেউ আজীবন তার চেয়ারে বংশপরম্পরায় টিকে থাকতে পারে না। তাই বাংলাদেশের গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটবে এবং একটি বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আগামী দিনে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে যে রাজনীতি চলছে তা থেকে উত্তরণ দুভাবে হতে পারে। প্রথমত ধীরগতি অথবা ঘটনা-দুর্ঘটনা, অনুঘটনার মাধ্যমে পরিবর্তন আসতে পারে। এই পরিবর্তন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ভৌগোলিক, ভূতাত্ত্বিক অথবা বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করছে। সব শেষ কথা বর্তমানে বাংলাদেশে যে রাজনীতির আবহাওয়া বিরাজ করছে তা এরকম কখনই থাকবে না।

জামায়াত সংগঠন হিসেবে আ.লীগ-বিএনপির চেয়ে শক্তিশালী

জামায়াত সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ-বিএনপির চেয়ে শক্তিশালী। কিন্তু স্বাধীনতার ভূমিকার কারণে ৪৩ বছর পরেও মানুষ তাদেরকে গ্রহণ করতে পারেনি। তবে সংগঠনিকভাবে তাদের শক্তি বেড়েছে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না গত ১২ নভেম্বর রাতে এসএটিভি’র ‘লেট এডিশন’ টকশোতে এসব কথা বলেন। আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষ সরকারকে পছন্দ করছে না। বিরোধী দলের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না। জামায়াতকে বিবেচনার মধ্যেই নিচ্ছে না। এর ফলে দেশে নতুন কিছুর জন্ম নিতে পারে। অথবা এই পরিস্থিতি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে।

স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের শাসন আমলের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এই দেশে আইয়ুব খান ১০ বছর এবং এরশাদ ৯ বছর শাসন করেছেন।

কে ১৯৬ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদেরকে বিমানের টিকেট কেটে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিয়েছে?

দালাল আইন কখন প্রত্যাহার করা হয়েছে তা জানতে হবে। কে ১৯৬ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদেরকে বিমানের টিকেট কেটে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিয়েছেন? আর এখন যারা যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত তারা কি সেই সময় যুদ্ধাপরাধী ছিলেন কি-না তা জানতে হবে?

গত ১২ নভেম্বর বুধবার রাতে মাছরাঙা টেলিভিশনে ‘চারদিক’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু।

তিনি বলেন, ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সংবিধানকে গণতান্ত্রিক চরিত্র দেয়া হয়েছে। সেই গণতান্ত্রিক চরিত্রে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সকল রাজনৈতিক দলকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে যা শেখ মুজিব বাতিল করে ছিলেন। এই কারণে শেখ মুজিব যা বাতিল করেছেন তা জিয়াউর রহমান ফিরিয়ে দিয়েছেন। জিয়া ছিলেন উদার মনের মানুষ।

শামসুজ্জামান দুদু আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করা হয়েছে। একদল করা মানে কি মুক্তিযুদ্ধকে প্রশংসিত করা? ৪০ হাজার বিরোধী দলের কর্মীকে হত্যা করা কি মুক্তিযুদ্ধকে প্রশংসিত করা? লাখ লাখ মানুষকে না খেয়ে মারা কি মুক্তিযুদ্ধকে প্রশংসিত করা? রক্ষীবাহিনী করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা কি মুক্তিযুদ্ধকে প্রশংসিত করা?

দুদু বলেন, জামায়াতের সঙ্গে অন্য সকল রাজনৈতিক দলের আলাদা আদর্শিক লড়াই রয়েছে। জামায়াতের রাজনীতির অধিকার আমি কেন বাতিল করব? এই অধিকার বাতিল করবে জনগণ। মাওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান মুসলিম লীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জনগণ সেই রাজনৈতিক দলকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলে সেটা রাজনৈতিক দল নয়।

আমাদের শ্রদ্ধার মানুষগুলো কারা তা নিশ্চিত করতে হবে

প্রত্যেক জাতিসত্তার একটা পরিচয় ও শ্রদ্ধার জায়গা রয়েছে। পৃথিবীতে এমন কোনো স্বাধীন সার্বভৌম জাতি নেই, যাদের শ্রদ্ধার জায়গায় এক-দুই কিংবা তিনজন মানুষ রয়েছে। আমাদের শ্রদ্ধার মানুষগুলো কারা তা নিশ্চিত করতে হবে। কার স্থান কোথায় হবে তাও নির্ধারণ করতে হবে। এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক করা যাবে না। সরকার দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি গত ১৫ নভেম্বর শনিবার রাতে মঞ্জুরুল আলম পান্নার উপস্থাপনায় একুশে টেলিভিশনে ‘একুশের রাত’ টকশোতে এ মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন, ’৭১-এ সমস্ত জাতি বঙ্গবন্ধুর ডাকে একত্রিত হয়েছে। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু দেশ শাসন করেছেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানও দেশ শাসন করেছেন। তাদের শাসনকার্য নিয়ে সমালোচনা হতে পারে। কিন্তু স্বাধীনতার আগে তাদের অবস্থান কোথায় ছিল তা নিশ্চিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যখন প্রশ্ন তোলা হয় তখন সার্বভৌমত্বের ওপর ঝাঁকুনি লাগে। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছাত্রলীগ, কিংবা যুবলীগকে ছোট করা নয়। এটা বাংলাদেশের অস্তিত্বের মূলে আঘাত দেয়া হয়।

বিএনপির প্রসঙ্গে রনি বলেন, বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে কী কী করবে তা এখন জাতির কাছে পরিষ্কার নয়। ক্ষমতায় যাওয়ার পরে আওয়ামী লীগের মতো তারাও যে এ ধরনের কাজ করবেন না এর নিশ্চয়তা কী?। যে কারণে বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে সেই সম্পর্কেও পরিষ্কার ধারণা জনগণ জানে না।

দেশে গণতন্ত্র নেই : দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রের সঙ্কট চলছে। এটা আওয়ামী লীগ স্বীকার করুক বা না করুক দেশের জনগণ অনুধাবন করছে। গত ১৬ নভেম্বর রোববার রাতে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে ‘আজকের বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি। সরকারের সমালোচনা করে শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিকও নয়, অগণতান্ত্রিকও নয়। ৩২ থেকে ৩৫ বছর দেশে গণতান্ত্রিক সংসদ চলেনি। এই সময়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশ না চলার কারণেই আজকে গণতন্ত্রের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এখন সংসদ আছে বলেই গণতন্ত্র রয়েছে তা বলা যাবে না। তিনি আরো বলেন, বর্তমান যারা সংসদ সদস্য রয়েছেন তারা নিজেরাই জানেন তাদের এলাকার কতজন ভোটারের ভোটে এমপি হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার কথা বিরোধী দল গাইবে এটাই নিয়ম

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সমালোচনা গণতন্ত্রের একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। বিরোধী দল সরকারি দলের সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক এবং সচরাচর প্রক্রিয়া। গণতন্ত্রের রাজনীতিতে সরকারি দলের সমালোচনা এবং বিরোধিতাকে কখনই তথ্য বিকৃতি বলা যায় না। শেখ মুজিবুর রহমান একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন, দার্শনিক নয়। তিনি শাসক ছিলেন এবং তার সাফল্যের কথা আওয়ামী লীগ সবসময় বলবে এটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে তার ব্যর্থতার কথা বিরোধী দল গাইবে, এটাই নিয়ম।

গত ১৭ নভেম্বর সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু আরটিভি চ্যানেলের ‘আওয়ার ডেমোক্রেসি’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলকে বাতিল ঘোষণা করেছিল। শুধু তাই নয় তার জামানায় একটা পেটুয়া বাহিনী ছিল যা আধা সামরিক রক্ষীবাহিনী হিসেবে পরিচিত। সেই বাহিনী অসংখ্য বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। এটা সত্য কথা যা মোটেও তথ্য বিকৃতিতে পড়ে না। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সরকারি দলের সমালোচনা এবং বিরোধিতাকে কখনই তথ্য বিকৃতি বলা যায় না। তবে সমালোচনার মধ্যে যদি নর্দমার মতো খারাপ ভাষা ব্যবহার করা হয়, তবেই তাকে বিকৃত তথ্য বলা হয়। à¦¯à§‡à¦®à¦¨Ñ à¦°à¦£à¦¾à¦™à§à¦—à¦¨à§‡à¦° বীর উত্তম এবং স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানের এজেন্ট বলা। এটা তথ্য বিকৃতির সামিল। কারণ বাংলাদেশের ইতিহাসে শহীদ জিয়াউর রহমানের মতো বড় মাপের মুক্তিযোদ্ধা দ্বিতীয় আর একজন নেই।

আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্যই ২০১৯ এর মধ্যে মধ্যবর্তী নির্বাচন দরকার

আওয়ামী লীগ অনেক পুরোনো রাজনৈতিক দল এবং গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য তারা অনেক সংগ্রাম করছে। কিন্তু বড়মাপের রাজনৈতিক দল হওয়ার পরেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে তারা তৃপ্তিতে আছে আমি তা বিশ্বাস করি না। বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং আওয়ামী লীগের নিজস্ব রাজনীতির জন্যই ২০১৯ এর মধ্যেই একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন দরকার।

গত ১৪ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ চ্যানেল আইয়ের ‘তৃতীয়মাত্রা’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

ড. মামুন আহমেদ বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন একটি অস্বাভাবিক, অনৈতিক এবং নির্বাচনের নামে পুরোপুরি অনির্বাচিত সংসদ গঠিত হয়েছে। এই সংসদের ভিত্তি একেবারেই দুর্বল এবং বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ এই অবস্থান থেকে মুক্তি চায়।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বিএনপি মধ্যবর্তী নির্র্বাচনের জন্য যে দাবি করছে তা ষোলকোটি মানুষের অধিকার। এই সংসদে দেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছে। তাই বাংলাদেশের সকল মানুষকে সম্পৃক্ত করে দেশের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য অবশ্যই অতিশীঘ্র একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন দরকার।

সাম্প্রতিককালে আমাদের সমাজে সহিংসতা বেড়েছে

যেকোনো হত্যা বেদনাদায়ক। একজন শিক্ষক দুর্বৃত্তদের হাতে আহত কিংবা নিহত হবেন এটা কল্পনা করা কষ্টকর। সাম্প্রতিককালে আমাদের সমাজে সহিংসতা বেড়েছে। টেলিভিশন দেখলে তা বোঝা যায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন খুন বা মেরে ফেলার সংবাদ পাওয়া যায়। এই সহিংসতা অত্যন্ত বিপদজনক।

গত ১৫ নভেম্বর গোলাম মোর্তোজা’র উপস্থাপনায় বাংলাভিশন টেলিভিশনে ‘নিউজ অ্যান্ড ভিউজ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ। আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক ভোরের কাগজ’র সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

শ্যামল দত্ত বলেন, পরিবারের মধ্যে সহিংসতা, পুলিশকে পিটিয়ে মেরে ফেলা, পুলিশ আবার পিটিয়ে মেরে ফেলছে। এই ধরনের ঘটনা সমাজে বেশি ঘটছে। এই সব কী আধুনিকতার ফসল নাকি এর পেছনে আরো কোনো কারণ রয়েছে তা গবেষণা করা দরকার।

আওয়ামী লীগের স্থানচ্যুত হয়েছে

একসময় আওয়ামী লীগ ছিল গণমানুষের দল এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া একটি রাজনৈতিক দল। কিন্তু বর্তমানে আওয়ামী লীগ সেই স্থান হতে বিচ্যুত হয়েছে। গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান চ্যানেল আইয়ের ‘আজকের সংবাদপত্র’ অনুষ্ঠানে একথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী।

পীর হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হলেও বর্তমানে আওয়ামী লীগ তার অতীত ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। সাম্প্রতিককালে বর্তমান সরকারের প্রধান রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের একটি বক্তব্য আওয়ামী লীগ সরকারকে বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা নিয়ে তার বক্তব্য বেফাঁস। সরকারের উচিত হবে এই বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত নেয়া। অন্যদিকে বর্তমান সরকারের কিছু সচিব বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করে সার্টিফিকেটস জালিয়াতি করেছে। সরকার যদি অতিশীঘ্র এদের শাস্তির আওতায় না আনে তবে আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের যে আস্থা ছিল তাও ধীরে ধীরে বিলীন হবে।

ইমামকে আওয়ামী লীগের পুরস্কৃত করা উচিত

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী নিয়ে যে সত্যি কথা বলেছেন তার জন্যে তাকে সাধুবাদ দেয়া উচিত। তার বক্তব্যে যদিও তার দলের ৬ মন্ত্রী তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তবে ইমামের বক্তব্য দেশের জন্য ভালো। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে যে সত্য জানত দেশের মানুষ তা এতদিন প্রকাশ করত না, এটা এইচ টি ইমাম সাহেব বলে দিয়েছেন। ওনার ধন্যবাদ প্রাপ্য।

গত ১৬ নভেম্বর বাংলাভিশনের ফ্রন্টলাইন অনুষ্ঠানে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ডক্টর তুহিন মালিক এসব কথা বলেছেন।

তুহিন মালিক বলেন, যেহেতু উনি রাজনীতিবিদ নন বা এখনো রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠেননি তাই হয়ত সত্যি কথা বলে দিয়েছেন। রাজনীতি শেখেননি। কৃতিত্ব নিতে গিয়ে ছাত্রলীগের সামনে যা বলার বলে দিয়েছেন। লাখ লাখ টাকা দিয়ে তাকে উপদেষ্টা করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দেয়ার জন্যে। এখন উনি প্রধানমন্ত্রীর উপদেশ নিয়ে কথা বলছেন। এখন জনগণ কার কথা বিশ্বাস করবে। জনগণকে ধোঁকা দেয়া তো সম্ভব নয়।

ডক্টর তুহিন মালিক বলেন, নির্বাচনের সময় এইচ টি ইমাম তার দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান ছিলেন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে উনি আওয়ামী লীগের পক্ষে ইমামতি করেছেন। এ ইমামতিটা কেমন ছিল, যে নির্বাচনী ফর্মুলাটা এমনভাবে উনি তৈরি করেছেন, পিএসসি ও ইসি অকার্যকর কারণ উনিই বলছেন, ছাত্রলীগকে উনি রিক্রুট দিচ্ছেন। প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা বা অন্যান্য কোটা আছে। কিন্তু এইচ টি ইমাম একশ’ভাগ কোটাই নির্ধারিত করে দিয়েছেন ছাত্রলীগের জন্যে। মানুষ পড়াশুনা করবে কেন? উনি ভয়ঙ্করভাবে বলেছেন পুলিশ ও প্রশাসনে ছাত্রলীগকে রিক্রুট করেছেন। মোবাইল কোর্টে বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে ছাত্রলীগ থেকে। সেই অনুসারে তারা জেল, জরিমানা দিয়েছে। উনি বলেছেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা প্রশাসনে, পুলিশে গিয়ে বুক পেতে দিয়েছে। আমাদের পাশে থেকেছে। এর সাংবিধানিক ব্যাখ্যা হচ্ছে এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের নীল নকশা উনি তৈরি করেছেন এবং অনেক কিছু জানেন, এটা জানার জন্যে ওনাকে এ্যারেস্ট করে রিমান্ডে  নেয়া উচিত। জনগণের দাবি ও সাংবিধানিক শ্রেষ্ঠত্বের জন্যে ওনাকে রিমান্ডে  নিলে আসল তথ্য বের হয়ে আসবে। নির্বাচনের সময় অনেক জ্বালাও পোড়াও হয়েছে, হত্যা হয়েছে তা নীল নকশায় ছিল কি না তা গ্রেফতার করলেই বের হয়ে আসবে।

তিনি আরো বলেন, এইচ টি ইমামকে আওয়ামী লীগ তিরস্কার কেন করবে, ওনাকে পুরস্কৃত করা উচিত। উনি নির্বাচনের সময় যথেষ্ট দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। ৫’শ উপজেলা উনি সফর করে রিক্রুট করেছেন যারা নির্বাচনে বুক পেতে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে উল্লেখ করে উনি বলেছেন, তোমরা কি মনে কর প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে অন্য কারো তোমাদের প্রতি দরদ আছে, যখনই আমি কোনো কাজ, সুপারিশ ও বায়োডাটা নিয়ে যাই তখনি উনি বলেন, উনি কি ছাত্রলীগের, কি করত, কোন পোস্টে ছিল, এখন কি করছে, যেভাবে হোক আপনি ছাত্রলীগের ছেলেদের ব্যবস্থা করে দেন। পুরো নীল নকশাটা উনি প্রধানমন্ত্রীর কাঁধে দিলেন।

ডক্টর তুহিন মালিক বলেন, এইচ টি ইমাম বলছেন দলের ভেতরে একটি মুখ চেনা গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে বলছেন। তাহলে আওয়ামী লীগের ভেতরে কারা ওই গোষ্ঠী তা বের করে আনা দরকার। এজন্যে ওনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। হাতির দাঁত বের হয়ে গেলে ওটাকে আর ভেতরে ঢুকানো যায় না। কথা বলে ফেললে তা ফেরত নেয়া যায় না। উনি জনপ্রশাসন যেভাবে ঢেলে সাজিয়েছেন, যেভাবে ইমামিকরণ করেছেন, আপনি জনপ্রশাসন সচিবালয়ে গেলেই ওনাকে সবাই ‘ক্যাশ’ ইমাম বলে চেনে। এগুলো এখন প্রকাশ হচ্ছে। ওনার চেয়ে ওনার দলের ক্ষতি বেশি হয়ে যাচ্ছে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।