ঝিনাইদহে সরকারি বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে আওয়ামী লীগ নেতার মার্কেট

ঝিনাইদহে সরকারী স্কুলের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ শুরু করেছেন স্থানীয় আওয়ামী গীল নেতা

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা : স্কুলের জায়গা দখল করে নিজস্ব মার্কেট নির্মাণ করতে সেখানে থাকা তিনটি টোং দোকান ভেঙ্গে দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা বাজারের পাশে বালিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত এই টোং দোকানগুলো গত ১০ অক্টোবর শুক্রবার সকালে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর সেখানে পাঁকা দোকান নির্মাণ শুরু করলে এলাকাবাসী বাধা দেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা রহমান জানান, তাদের স্কুলটি ১৯২১ সালে স্থাপিত। সে সময় স্থানীয় এক হিন্দু বৃদ্ধা ২৩ শতক জমি দান করেন। কিন্তু স্কুলটি সরকারি হওয়ার সময় আরো জমির প্রয়োজন হলে এলাকার লোকজন ৭৬ শতক জমি দেন। সিএস রেকর্ডের সময় ৭৬ শতক জমিই স্কুলের নামে রেকর্ড হয়েছে। তিনি আরো জানান, চলতি আর এস রেকর্ডের সময় মাঠ জরিপে ৭৬ শতক স্কুলের নামে রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত পর্চা প্রকাশের সময় দেখা যায় ৪ শতক জমি বিপুল কুমার নামের এক ব্যক্তির নামে রেকর্ড হয়েছে। এই বিপুল কুমারের ঠাকুরমা স্কুলের নামে ২৩ শতক জমি দান করেন।

প্রধান শিকিক্ষা আরও জানান, এ সকল বিষয় তিনি লোক মারফত শুনে ভূমি অফিসে খবর নিয়েছেন। সেখান থেকে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। বর্তমানে রেকর্ড সংশোধনের মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। ঠিক সেই সময় জমিটি দখলের চেষ্টা করা হয়েছে। বিপুল কুমার নিজে দখলে যেতে না পেরে স্থানীয় ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক সাবেক মেম্বর আনোয়ার হোসেনের সহযোগিতা নেন। ওই আওয়ামী লীগ নেতাও অল্প মূল্যে জায়গাটি ক্রয় করে দখলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। স্কুল কর্তৃপকে কিছু না বলেই তিনি স্কুল নিয়ন্ত্রিত দোকানগুলো ভেঙ্গে দিয়েছেন।

বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত ১০ অক্টোবর সকালে হঠাৎ করে ওই স্থানে থাকা তিনটি দোকান ভেঙ্গে দিয়েছে। ওই স্থানে উসমান আলী, আব্দুর রহমান, মহির উদ্দিন, মনু মিয়া, জালাল উদ্দিন, দীলিপ কুমারের ৬টি দোকান ছিল। যারা স্কুলকে নিয়মিত ভাড়া দেন। এই ভাড়ার টাকা স্কুলের নানা উন্নয়ন কাজে ব্যবহার হয়। এই দোকানের মধ্যে তিনটি ভেঙ্গে সেই স্থানে পাঁকা দোকান নির্মাণের চেষ্টা করা হয়। যাদের দোকান ভেঙ্গে দিয়েছে তাদের একজন নাম প্রকাশ না করে জানান, তাদের কিছু না বলেই হঠাৎ করে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। দোকানে থাকা সমস্ত মালামাল নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি জায়গা ক্রয় করে দখলে গেছেন। ইতঃপূর্বে বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। শেষে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দপ্তরে বসার কথা ছিল। সেই বসার পূর্বে নানা কথার কারণে তারা দখলে যাবার চেষ্টা করেছেন। তবে বর্তমানে তিনি কাজ বন্ধ রেখেছেন।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বি এম মাহাবুব হাসান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।