সংবাদ শিরোনামঃ

গণআন্দোলনের ডাক ** সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও ব্যর্থতার কারণে দেশজুড়ে গণঅসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে ** বিচারপতিদের অভিশংসন, সম্প্রচার নীতিমালা গণতন্ত্রের ওপর ডেমোকিসের ছুরি ** ইরাকে পশ্চিমাদের হোলি খেলা ** অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন ** সরকার স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ভিত্তিমূলে আঘাত করছে ** বন্যাকবলিতদের দুর্দশা লাঘবে সরকারের যথাযথ উদ্যোগ প্রয়োজন ** হীনম্মন্যতাবোধ এবং সেবাদাসদের দৌরাত্ম্য ** সাম্রাজ্যবাদ ও কাজী নজরুল ইসলাম ** পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেভাবে উদযাপিত হলো ঈদুল ফিতর ** উপমহাদেশে রেল দুর্ঘটনার শীর্ষে বাংলাদেশ, ক্ষয়ক্ষতিতে ভারত ** বন্যাপরিস্থিতির চরম অবনতি ** মুসলমানদের অনৈক্যের কারণেই ইসরাইল গাজায় নির্বিচার গণহত্যা চালাচ্ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪২১, ২৫ শাওয়াল ১৪৩৫, ২২ আগস্ট ২০১৪

দেশের বিভিন্ন জেলায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী

বন্যাপরিস্থিতির চরম অবনতি

নীলফামারী : বন্যাদুর্গত একটি পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে এবং গাইবান্ধা : বন্যায় প্লাবিত বসত বাড়ি

সোনার বাংলা ডেস্ক : সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। টানা চার দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা তলিয়ে গেছে। তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ তিন জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এ সব এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার সঙ্কট ও নিরাপদ খাবার পানির অভাব। মিলছে না পর্যাপ্ত সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ সাহায্য। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে গ্রাম-বাংলা ডেস্ক।

গাইবান্ধা : প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘটসহ নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ২০ সহস্রাধিক মানুষ। ফলে স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। দেখা দিয়েছে প্রয়োজনীয় খাবার সঙ্কট ও নিরাপদ পানির অভাব।

এদিকে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে দাবি করেছেন অনেকেই। গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ ও ফুলছড়ি উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো হল- বেলকা ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ, পঞ্চানন, মধ্য বেলকা, পূর্ব বেলকা, রামডাকুয়া, হরিপুরের চর চরিতাবাড়ী, কানি চরিতাবাড়ী, রাঘব, গেন্দুরাম, লখিয়ারপাড়া, পাড়া সাদুয়াসহ গোটা ইউনিয়ন। এ এলাকাগুলো পুরো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া কাপাশিয়ার ভাটি কাপাশিয়া, কাপাশিয়া, পূর্ব কাপাশিয়া, পোড়ার চর, কাজিয়ার চর, বাদামের চর, পূর্ব লাল চামার, লালচামার, উজান বুড়াইল, ভাটি বুড়াইলসহ গোটা ইউনিয়ন পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

অপরদিকে অস্বাভাবিক মাত্রায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রহ্মপুত্রের পানি হু হু করে বাড়ছে। তবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনো বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও রেলওয়ে মেরিন বিভাগ জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের ফুলছড়ি উপজেলার বালাসী ও তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ৬৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের গলনা, ঝানঝাইর, জিয়াডাঙ্গা, কটকগাছা, বাড়ইকান্দি, নীলকুঠি, নামাপাড়া, কাতলামারী, ফুলছড়ি ইউনিয়নের গাবগাছি, সরদারের চর, পিপুলিয়া, দেলুয়াবাড়ি, ফজলুপুর ইউনিয়নের দণি খাটিয়ামারী, কৃষ্ণমণি, চিকিরপটল, এরেন্ডবাড়ি ইউনিয়নের দণি হরিচন্ডী, ধলিপাঠাধোয়া, আলগারচর, উড়িয়া ইউনিয়নের কালাসোনা, রতনপুর, কাবিলপুর, পূর্ব গুণভরি, কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর, রসুলপুর, কাইয়ার হাট, কেতকির হাট এবং উদাখালী ইউনিয়নের সিংড়িয়াসহ ২৫টি নিম্নাঞ্চল গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এ সব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মঞ্জু মিয়া জানান, গত ১৫ আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে এ সব নদী বিধৌত ইউনিয়নে মানুষজন পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া হরিপুরের হাজির হাট, ছয় ঘড়িয়া, পূর্ব লাল চামার ও ভাটি কাপাশিয়ার আবাদি জমিসহ বাস্তুভিটা নদীতে বিলীন হচ্ছে।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাফা মোহাম্মদ আরিফ জানান, উপজেলা ত্রাণ বিভাগের তালিকা মতে দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়েছেন। তাদের জন্য মুড়ি, গুড়, বিস্কুট, মোমবাতি, দিয়াশলাই, খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট

তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতির অবনতিতে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে তিস্তা পাড়ের হাজারও মানুষ। খাদ্য সঙ্কটের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নিরাপদ পানীয় জলের অভাব। তাই অনাহার-অর্ধাহারে ও বিভিন্ন আতঙ্ক নিয়ে অনিদ্রায় জীবন কাটাতে হচ্ছে তাদের। এদিকে বানভাসীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করলেও এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি ও বেসরকারি সাহায্য বন্যায় তিগ্রস্ত পরিবারগুলো পায়নি।

সরেজমিন দেখা যায়, উজানের ঢলের সঙ্গে প্রবল বর্ষণ কাবু করে রেখেছে তিস্তা পাড়ের অসহায় পরিবারগুলোকে। এ বন্যায় গত চার দিন থেকে তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এতে তিস্তা পাড়ের মানুষরা চরম আতঙ্কে নিদ্রাহীন রাত্রিযাপন করছে। এ ছাড়া তাদের খাদ্য সঙ্কটের সঙ্গে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব। চাল-চুলো সবই বন্ধ। শিকের হাঁড়িতে চাল থাকলেও চুলা জ্বালানোর উপায় নেই। তাই অনাহার-অর্ধাহারে বানভাসী মানুষ। টিউবওয়েলগুলো বানের পানির নিচে। এতে করে নারী-শিশু ও গবাদিপশু নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপাকে বানভাসীরা।

জনপ্রতিনিধিরা জানান, বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে তিগ্রস্ত পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে। বন্যাকবলিতদের জন্য সরকারিভাবে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে অভিযোগ করেন তারা। তবে বরাদ্দ করা ত্রাণ তারা এখনও হাতে পাননি বলে উল্লেখ করেন।তবে বন্যায় তিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত কোনো জনপ্রতিনিধিরা ভালোভাবে তাদের খোঁজ-খবর নেয়নি।

ডালিয়া ডিভিশনের পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, তিস্তার ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ৩ ঘণ্টা পর পর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তিস্তার পানি পরিমাপ করা হয়ে থাকে। ১৪ আগস্ট বিকেল ৩টায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫২.৪০ মিটারের চেয়ে ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে।

এ অবস্থায় তিস্তার পানি গত ১৫ আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপরে চলে যায়। প্রচণ্ডভাবে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকায় গত ১৫ আগস্ট শুক্রবার রাত ১০টায় বিশেষ ব্যবস্থায় তিস্তার পানি পরিমাপ করা হলে দেখা যায় বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার (৫২.৭৮) উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ব্যারেজের উজান ও ভাটিতে অসংখ্য গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। ব্যারেজ হুমকির সম্মুখীন হওয়ায় সব গেট খুলে দিয়ে পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ ছাড়াও ব্যারেজ রার্থে ফাড ফিউজের আশপাশে বসতবাড়ির লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়। এ জন্য এলাকাজুড়ে মাইকিং করে মানুষজনকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়। এ জন্যই ১৫ আগস্ট শুক্রবার রাতে ব্যারেজ এলাকায় রেডএলার্ট জারি করা হয়েছিল। তবে শনিবার সকালে তিস্তার পানি কমে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। রোববার সকাল তিস্তার পানি আরও কমে এসে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকাল ৩টায় তা আরও ৯ সেন্টিমিটার কমেছে।

কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমর, ফুলকুমরসহ নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার দেড় শতাধিক গ্রাম, চর ও দ্বীপচর। এ সব এলাকার ২৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গ্রামীণ জনপদের কাঁচা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ২০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন। এদিকে ভুরুঙ্গামারীর সোনাহাট ব্রিজটির সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় সোনাহাট স্থলবন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডে (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে তিন সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ২১ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়েছে। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ফারাজীপাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘বাড়ি এক জায়গা থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় এনেছিলাম। ভাবছিলাম এখানে পানি উঠবে না। কিন্তু বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় আর বাড়িতে থাকতে পারছি না। রান্না করতে না পারায় খাওয়া-দাওয়া বন্ধ রয়েছে। যাত্রাপুর ইউনিয়নের আরেক বাসিন্দা মেহের জামাল বলেন, ছয় বিঘা জমিতে রোপা আমন লাগিয়েছিলাম, সব পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি দ্রুত নেমে না গেলে সব নষ্ট হয়ে যাবে। এ সময়ে চারার অভাবে আর রোপা আমন লাগানো সম্ভব হবে না। তাই না খেয়ে থাকতে হবে। চিলমারী উপজেলার রমনার চর এলাকার সুবল জানান, বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। এ পর্যন্ত ত্রাণ সামগ্রী পাননি তিনি।

হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় রেডএলার্ট

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় রেডএলার্ট জারি করা হয়েছে। গত ১৫ আগস্ট শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেকর্ড অনুযায়ী তিস্তায় বিপদ সীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিনিয়তই পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজ নিয়ে অনেকটাই শঙ্কায় পড়েছে কর্তৃপ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। এতে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় পানি বিপদ সীমার ৫৫ সে মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ব্যারাজের উজান ও ভাটিতে অসংখ্য গ্রামের মানুষজন পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ব্যারাজ হুমকির মুখে পড়ায় সব গেট খুলে দিয়ে পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। ব্যারাজ রার্থে বাইপাসের আশপাশে বসত বাড়ির লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে। পানির গতি বেড়ে যাওয়ায় যে কোনো মুহূর্তে বাইপাস কেটে দেয়া হতে পারে। ওই বাইপাস কেটে দেয়া হলে গোটা লালমনিরহাট জেলা পানিবন্দী হয়ে পড়বে। এজন্যই শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্যারাজ এলাকায় রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, পানি প্রবাহ আর একটু বেড়ে গেলেই বাইপাস কেটে দিয়ে ব্যারাজকে রা করা হবে। বাইপাস কেটে দিলে লালমনিরহাট জেলার লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ার আশঙ্কাও করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। গত দুদিনের ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তাসহ লালমনিরহাটের সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার প্রায় অর্ধ লাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে। তিস্তা পাড়ের মানুষরা চরম আতঙ্কে নিদ্রাহীন রাত কাটাচ্ছেন।

এদিকে, তিস্তা সেচ প্রকল্প রার্থে তিস্তা ব্যারাজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘুমহীন রাত যাপন করছেন হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু। ব্যারাজের বাইপাস এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় উপস্থিত হাতীবান্ধা উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু বলেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আতঙ্কের কিছু নেই। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, তিস্তা ব্যারাজ রার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্বদাই সজাগ রয়েছেন।

দিনাজপুর

দিনাজপুর পিডিবির সূত্রগুলো বলেছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে খোলা রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইস গেটের সবগুলো। ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়াডের্র সদস্য রমজান আলী বলেন, তিস্তার পানি পশ্চিম বাইশপুকুর, পূর্ব বাইশপুকুর ও ছোটখাতাসহ বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত করেছে। লোকজন হাঁটু থেকে বুক সমান পানি ভেঙে চলাফেরা করছেন।

ডিমলা উপজেলার খাগাখাড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিফান বলেছেন, ফুলে ফেঁপে ওঠা তিস্তার পানিতে প্লাবিত হয়ে বিচ্ছিন্ন রয়েছে তার ইউনিয়নের ৩০০ পরিবার।

এছাড়া ডিমলা উপজেলা, দাউবাড়ি-শোলমারি, পূর্ব ছাতনাই, তেপাখাড়িবাড়ি, খাগাখাড়িবাড়ি-গোয়াবাড়ি, খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছি চাপানিসহ ১৫টি গ্রামের ৭০০ পরিবার, জলঢাকা উপজেলার দাউয়াবাড়ি-শোলমারি, কোইমারি ইউনিয়ন পানিতে নিমজ্জিত হয়ে বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

টেপাখাড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন বলেন, পানিবন্দী হয়ে আছেন তার ইউনিয়নের চাকরখাড়িবাড়ি, উত্তর-খাড়িবাড়ি ও পূর্ব-খাড়িবাড়ি গ্রামের কয়েকশ’ মানুষ।

ময়মনসিংহ

জেলার ধোবাউড়া উপজেলার প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। উপজেলার গোয়াতলা ইউনিয়নের ঘাগডিয়ার পাড়, ছনাটিয়া, রঘুরামপুর, হরিপুর, পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি এবং গামারীতলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে কংশ নদী প্লাবিত হওয়ায় এই বন্যা দেখা দেয়। এতে ধানের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি পুকুর ডুবে যায়।

রংপুর

রংপুর সংবাদদাতা জানান, জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার ১৫টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে আমন তে, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। শুক্রবার গভীর রাতে হঠাৎ করে উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে অসহায় হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের লোকজন। দেখা দিয়েছে নিরাপদ পানি ও খাবারের সঙ্কট। এছাড়াও মার্জিনাল ডাইক ভেঙে গেছে, ব্রিজ হুমকির মুখে পড়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় নৌকায় করে বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছে।

কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মমিনুর ইসলাম জানান, হঠাৎ করে উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলের কারণে আমার ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুল ইসলাম জানান, পানিবন্দী মানুষের জন্য সরকারি সহায়তা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপকে জানানো হয়েছে।

ঝালকাঠি

বিষখালী ও সুগন্ধা নদীর জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝালকাঠির কাঠালিয়া, রাজাপুর ও নলছিটির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চলের কাঁচা ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, েেতর শাকসবজি, গবাদি পশুর খাবার, পুকুর ও জলাশয়ের ব্যাপক তি হয়েছে। ভাটির সময় পানি তেমন একটা না কমায় এসব নিম্নাঞ্চলের মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।

ফেনী

ফুলগাজী উপজেলার ১২ গ্রামের লাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। মুহুরী নদীর উত্তর শ্রীপুর, কহুয়া নদীর উত্তর দৌলতপুর ও বৈরাগপুর অংশে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করায় গ্রামীণ সড়ক ও ছোট ছোট কালভার্ট তিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের দুটি বেড়িবাঁধ এলাকায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অর্ধলাধিক মানুষ। জলাবদ্ধতার কারণে ১০টি উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি। রূপগঞ্জের দুটি বেড়িবাঁধের পানি নিষ্কাশন খাল ভরাট হয়ে যাওয়া এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

নরসিংদী

নরসিংদী (এনএনডি) সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধের দুটি পানি নিষ্কাশনের পাম্প দিয়ে গত চার দিনে কোনো পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ােভে ফাটছে এলাকাবাসী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন দুটি প্রকল্পের ভেতর খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনের পাম্পগুলো ঠিকমতো নিষ্কাশন করতে পারছে না।

কক্সবাজার

সীমান্ত উপজেলা উখিয়ায় নাফ নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফাইশ্যাখালী ৩শ’ মিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে প্রায় ১২শ’ একর চিংড়ি চাষ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় কোটি টাকার গলদা চিংড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সাগরে ভেসে গেছে।

গত ১৬ আগস্ট শনিবার উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের চিংড়ি চাষাবাদ অধ্যুষিত এলাকা আনজুমান পাড়া ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ চিংড়িঘের পানির সঙ্গে একাকার হয়ে পড়েছে। স্থানীয় চিংড়ি চাষিরা জানান, এখানে প্রায় ৭৫০ একর জমি রয়েছে। হাজারো পরিবার চিংড়ি চাষাবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। চিংড়ি চাষিদের অভিযোগ, নাফ নদী ও তৎসংলগ্ন ফাইশ্যাখালীর ৩শ’ মিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধটি স্থানীয় চাষিরা নিজ উদ্যোগে প্রতি মওসুমে সংস্কার করলেও পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানিতে বারবার বাঁধ ভেঙে চিংড়ি চাষিদের অপূরণীয় তি হয়।

স্থানীয় চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্বারস্থ হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

সুনামগঞ্জ

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে জেলার তাহিরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ। পানিবন্দী হয়ে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে লাধিক মানুষ। উপজেলার ২৩টি হাওর ও নদনদীতে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সীমান্তের ছোট-বড় ২০ ছড়া দিয়ে প্রবল বেগে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে পাহাড় ধসের আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে চাঁনপুর, টেকেরঘাট, লাকমা, লালঘাট, চারাগাঁও, বাগলী সীমান্তে বসবাসকারী হাজার হাজার পরিবার।

জেলা শহরসহ আশপাশের উপজেলাগুলোর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে মৎস্য চাষের পুকুর ও অনেক ফসলি জমি। নদীর তীর সংলগ্ন বীজতলা, আবাদি জমিগুলোর ব্যাপক তি হয়েছে।

জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার একর জমির রোপা আমন চারাসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। টিলাগাঁও রাবার ড্যাম পড়েছে হুমকির মুখে।

খাসিয়ামারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রচ বেগে রাবার ড্যামের নিকটবর্তী-বক্তারপুর সড়কের দুই স্থানে অন্তত দেড়শ’ ফুট করে দুই জায়গা ভেঙে বহু গ্রাম তলিয়ে গেছে। এতে রাবার ড্যামের অন্তত ২০টি পরিবারের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

আলীপুর সড়কের বালিজুড়ী স্কুলের নিকটবর্তী দেড় ফুট বেড়িবাঁধ ও টিলাগাঁও-টেংরাটিলা বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে পশ্চিম টিলাগাঁও, আলীপুর, গিরিশনগর, পূর্ব টিলাগাঁও, কাওয়াঘর, শিমুলতলা, মহব্বতপুর, রাজনগর, কইয়াজুড়ি, কোনাবাড়ী, বৈঠাখাই, নূরপুর, সোনাপুর, শরীফপুর, ভুজনা, কালিকাপুর, কদমতলীর বেশ কয়েকটি গ্রাম। একই ইউনিয়নের চিলাই নদীর শাখা নদী ডুমুরিয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে বরকতনগর, মারপশি, খাগুড়াসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

একই নদীর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়ের ইদ্রিস মিয়ার বাড়ির নিকট অন্তত ২শ’ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ৫-৬টি গ্রাম। বোগলাবাজার ইউনিয়নের চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে ওই ইউনিয়নের ২০-২৫টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। গুরুতর তি হয়েছে সদ্য রোপা আমনের।

শেরপুর

অব্যাহত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে ভোগাই, মালিঝি, মহারশি, সোমেশ্বরী ও পাগলা নদীর পানি অস্বভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব নদীর ছয়টি স্থানে তীর রা বাঁধের ভাঙন অংশ দিয়ে প্রচণ্ড বেগে পানি লোকালয়ে ঢুকছে। এতে নালিতাবাড়ী পৌরসভার একাংশসহ চারটি ও ঝিনাইগাতী উপজেলার চারটি ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এতে ৫০০ হেক্টর জমির আমন ধানসহ অন্যান্য ফসলের তে তলিয়ে গেছে। ভেঙে গেছে রাস্তাঘাট। সেই সঙ্গে ওইসব এলাকার রাস্তাঘাট ও ব্রিজ কালভার্টের ব্যাপক তি হয়েছে। বেশ কিছু এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।