সংবাদ শিরোনামঃ

গাজায় ইসরাইলি হামলা : বিপন্ন মানবতা ** ঈদের পর আন্দোলন ** ঈদবাজারের সিংহভাগই বিদেশী পণ্যের দখলে ** দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও দেশ গড়তে হলে রোজার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করতে হবে : মাওলানা আব্দুল হালিম ** রাজনীতিতে বদ্ধ ও গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে ** ঈদের আনন্দ সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে ** এ যেন সেই ‘ভাতে মারবো, পানিতে মারবো’র মতো ব্যাপার-স্যাপার! ** সারাদেশে বিভিন্ন সংগঠনের ইফতার মাহফিল ** ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ ** ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য ** সেকালের ঈদ **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ শ্রাবণ ১৪২১, ২৬ রমজান ১৪৩৫, ২৫ জুলাই ২০১৪

ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য

শাহ্ সূফী হজরত মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল জব্বার
ঈদ শব্দের অর্থ খুশি। এটি মুসলমানদের জন্য বড় ও অতি পবিত্র দিন। অত্যন্ত মর্যাদাশীল ও খুশির দিবস। অবশ্য রমজানের পবিত্রতা রা করে যারা রোজা রেখেছেন প্রকৃত খুশি একমাত্র তাদেরই জন্য। খোদাদ্রোহী ফাসিক ফাজিলের জন্য নয়।

ঈদুল ফিতরের খুশির পিছনে তাৎপর্য হচ্ছে- মহান রাব্বুল আলামিন ঈমানদারদের জন্য পুরো একটি মাস দিনের বেলায় পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা ফরজ করে দিয়েছেন। কিন্তু ঈদুল ফিতরের দিন সে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

ঈদুল ফিতর এমন খুশির দিনে যে, সাধারণত বছরের অন্যান্য দিনে দেখা যায় একমাত্র সামর্থ্যবান ও সম্পদশালী লোকেরাই বিভিন্ন সাজ-সজ্জা, নতুন পোশাক-পরিচ্ছদ ও উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করে, কিন্তু পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন এর ব্যতিক্রম। দরিদ্ররাও সম্পদশালী লোকদের ন্যায় সামর্থ্য অনুযায়ী রুচিশীল নতুন পোশাক পরিচ্ছদ ও সাজ-সজ্জা গ্রহণ করে এবং উন্নতমানের খাবার গ্রহণ করে। ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে পার্থক্য থাকেনা সে দিন বিন্দুমাত্র। দরিদ্র লোকেরা যাতে ধনীদের পাশাপাশি সকল আনন্দে শরীক হতে পারে সে জন্য ধনীদের উপর শরীয়ত কর্তৃক এ নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে যে, তারা যেন ঈদের নামাজের পূর্বে রোজার জাকাত হিসেবে ‘সদকায়ে ফিতর’ আদায় করে দেয়। এটি তাদের উপর ওয়াজিব করা হয়েছে।

ঈদুল ফিতরের অন্যতম তাৎপর্য হচ্ছে- এটি মুসলিম সমাজের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ইসলামের দৃষ্টিতে যারা বিভিন্ন কারণে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে একত্রিত হয় না বা জুমার নামাজেও একত্রিত হতে পারে না, কিন্তু তারাও পবিত্র ঈদের দিনে বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্রিত হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে ঈমানী ভ্রাতৃত্ব উন্মুক্ত ও অনাবিল মনে অন্তরভরা মায়া ও মমতা নিয়ে পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতা পরিহার করে একে অপরের সাথে সালাম বিনিময় ও কোলাকুলি করে। এই ভাবে ইসলামে সাম্যের নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় পবিত্র হাদিসের মর্মানুযায়ী যারা পবিত্র রমজান মাস পাওয়ার পরও স্বীয় জীবনকে পাপসমূহ থেকে পবিত্র করতে পারেনি প্রকৃত অর্থে তারাই অভিশপ্ত। এই জন্যই বুজুর্গানে দ্বীনেরা বলেছেন-

শুধু নতুন কাপড় পরিধান করলেই ঈদ হয়না এবং যারা পরকালের শাস্তির ভয়-ভীতির দরুণ আল্লাহর নাফরমানী থেকে বেঁচে রয়েছে তাদের জন্য প্রকৃত ঈদ। যে খানাপিনায় লিপ্ত তার জন্য ঈদ নয়, প্রকৃত ঈদ হচ্ছে ঐ সকল লোকের জন্য যারা একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহর জন্য কাজ করেছে।

সূফী মনীষীরা এবং ওলামায়ে উম্মতরা পবিত্র ঈদের দিন সম্পর্কে বলেছেন- যারা রমজানের পবিত্রতা পালন করেছেন তাদের জন্য মুবারকবাদ-এর দিন এবং যারা রমজানের পবিত্রতা রা করেনি তাদের জন্য চিন্তা ও সমবেদনা প্রকাশের দিন।

সেই দিকে ল্য করে দেখা যাচ্ছে যে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) পবিত্র ঈদের দিনে স্বীয় ঘরের দরজা বন্ধ করে ক্রন্দন করছিলেন অথচ তাঁর রাষ্ট্রের অন্যান্য সবাই ঈদের আনন্দ ভোগ করছিলেন বিশেষ ভাবে। উক্ত ঈদের দিনে একজন সাহাবী তাঁর নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন যে, হে আমিরুল মুমেনীন! সকল লোক আজকে একান্তভাবে আনন্দ উপভোগ করছে আর এমন খুশির দিনে আপনি কেন কাঁদছেন? উত্তরে তিনি বললেন, যারা আল্লাহ দরবারে পবিত্র রমজানের মধ্যে আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জন করে আল্লাহ মকবুল বান্দাদের তালিকাভুক্ত হয়েছেন তারাই শুধু আনন্দ উপভোগ করবেন আর যারা মকবুলিয়তের লিষ্টিভুক্ত হতে পারেনি তাদের ক্রন্দন করা উচিত। আমিত জানি না আমি কি আল্লাহ মকবুল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত না আল্লাহ রহমত হতে বঞ্চিতদের অন্তর্ভুক্ত।

উপরোল্লিখিত আলোচনার নিরিখে আমরা একথা বলতে চাই যে মুসলমানদের ঈমান হচ্ছে আল্লাহ রহমতের আশা এবং ভয়-ভীতির মধ্যখানে। অতএব আমাদের উচিত আমরা যাতে নিজকে এমন আনন্দ ও বিলাসিতায় লিপ্ত না করি, যদ্বারা ইসলামের সীমালংঘন হয় ও আল্লাহ অসন্তুষ্টি প্রকাশ পায়। যার পরিণতি হিসেবে পরকালীন শাস্তি অবশ্যাম্ভাবী হয়। তাই মুসলমানদের পবিত্র ঈদের দিনে খুশি ও আনন্দ শরীয়তের সীমার মধ্যে থাকা আবশ্যক।

ঈদের দিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ৩০ দিন কঠোর সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জিত সাফল্য বছরের বাকি ১১ মাস জারি রাখা। অর্থাৎ দৈনন্দিন কাজে-কর্মে, অফিস-আদালতে, লেনদেন, আচার-ব্যবহারে খারাপ কাজগুলো পরিহার করে ভালো কাজগুলো গ্রহণ করতে হবে। সাথে সাথে রমজানের মহান শিা খোদা ভীতির উজ্জ্বল নিদর্শন স্বরূপ আমাদের সামাজিক ও জাতীয় জীবনে খোদাহীন সকল কর্মপন্থার বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম করে কুরআন ও সুন্নাহ আইন বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এটা প্রত্যেকের ঈমানী দায়িত্ব।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে শরীয়ত সম্মত পন্থায় ঈদের খুশি উদযাপনের তৌফিক দান করুন।

রাসূলে পাক (সা.) এরশাদ করেছেন : ঈদের দিন আল্লাহতা’য়ালা বেহেশত সৃষ্টি করেছেন এবং ঈদের দিনেই ‘তুবা’ নামক বৃ বেহেশতের মধ্যে রোপন করা হয়েছে, ঈদের দিনই হজরত জিবরাঈল (আ.)কে ওহী বহন করার জন্য মনোনীত করা হয়েছে এবং এই ঈদের ফেরাউন পরে যাদুকরগণ হেদায়তের নূর প্রাপ্ত হয়েছিল। (গুনিয়াতু-ত্তালেবীন ১ম খণ্ড)

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।